somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন ভদ্র নাস্তিক নাজিম উদদীন এর প্রতি (আসলেই ভদ্র পোস্ট)

১২ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নাজিম ভাই, খারাপ ভাবে নেবেন না ব্যাপারটাকে। আপনাকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি না। আর আপনার সাথে আমার কোনও শত্রুতা নেই। আপনার ‘পৌরাণিক জীবন’ নিয়ে কতগুলো ব্লগ পড়লাম। ওখানে মন্তব্য লিখতে যেয়ে এত বড় হয়ে গেল যে, ভাবলাম এটাকে একটা ব্লগ হিসেবেই পাবলিশ করব।

ব্লগটাকে আপনার ব্লগের মন্তব্য হিসেবেই ধরবেন।

সবার জন্য উন্মুক্ত।

[প্রথমে হয়ত কারো ভাল নাও লাগতে পারে, কিন্তু প্রথম দিকের কথাগুলো লেখাগুল পড়াটা জরুরি। শেষের দিকে অনেক যুক্তি দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি, পুরোটা কারো খারাপ লাগবে না। যদিও মানুষ এই বিষয়ক ব্লগ পড়তেই চায় না। ]


আপনাকে কোন নির্দিষ্ট ধর্মের প্রতি আমি ডাকছি না। কিন্তু, আপনাকে কেউ না কেউ তো সৃষ্টি করেছেন। তাঁর কাছে তুমি ভুল ধর্ম পালন কর আর কোন ধর্ম পালন নাই কর, সবই এক। যে তোমাকে সৃষ্টি করেছে, তাকে অস্বীকার করা কি বেঈমানী না ? এখন কথা হল, তাঁর সত্যকারের পরিচয় তুমি কীভাবে জানবে, সেটার জন্য খোঁজ নাও। সৃষ্টিকর্তা সত্য হয়ে থাকলে উনি নিশ্চয়ই জানেন যে তুমি সত্য পথ খুঁজতেছ। যেভাবেই হোক তাহলে সত্য ধর্মটা তোমার সামনে আসবেই।

যখনই তুমি কোন বিপদে পড়বা, কোন কিছু নিয়ে সংশয়ে থাকবা, তখন তাঁর সমাধান খুঁজবা । সত্যি ধর্মে সবকিছুর সমাধান থাকবে।

তাই বলে তুমি কোন ধর্মে থাকবানা, আবার সৃষ্টিকর্তাকে খুঁজবানা, সেটা সত্যিকারের সৃষ্টিকর্তার প্রতি বেঈমানী।

শুনতে খারাপ হলেও একটা বাস্তব উদাহরণ দেই।
তোমার বউ আর মা কে নিয়ে তুমি হাসপাতালে তোমার বাবাকে দেখে রাত ১২ টায় বাসায় ফিরে যাচ্ছ। আমার দুজনকেই ঝাক্কাস লাগলো। আমি আর আমার ৬ টা দোস্ত চেগায়া দাঁড়ায়া আছি। তুমি বের হওয়ার সময় আমি কেন তোমাকে কোপানি দিয়ে তোমার মা আর বউকে তুলে নিয়ে যাব না, সেই কারণটা আমি জানতে চাই।

তুমি ভাব আমি দেশের পুলিশকে ডরাই, যেখানে আমার একমাত্র সাক্ষী তোমাকে মেরে ফেলবো ? একটা কারণ হতে পারে যে, আমার ফ্যামিলি আমাকে এই ধরণের আচরণ শেখায়নি। ছোট থেকে আমাকে জানানো হয়েছে যে এসব খারাপ। কিন্তু আমি ঠিক করলাম যে, আমি খারাপ কাজটাই করব। তাছাড়া, আপনাকেও আপনার ফ্যামিলি একটা ধর্ম ঠিকই শিখিইয়েছে। কিন্তু ফ্যামিলির শেখানো কোন কিছুর অবাধ্য হওয়া আপনার জন্য অসম্ভব হয়নি। তাহলে?? আমি কেন আপনার মা আর বউ কে ধরে নিয়ে যাবনা?

এখন যদি আমার মাথায় এমন কারো কথা থাকে, যে এই মুহুর্তেও আমাকে দেখতেছে, আর যিনি আমাকে শাস্তি দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন, তাহলে আমি থিকি ইতস্তত করব। আমি বাজী ধরে বলতে পারি, আমি যদি আসলেই আপনাকে খুন করি, সেই মুহুর্তে আমার কখনই সৃষ্টিকর্তার কথা মনে আসবেনা। তাকে তখন আমি ভয় পেলে আমি এই কাজ করতে পারতাম না।


এখন ধরেন, আমি এমন এক ধর্ম মানি, যেখানে প্রকৃতিকে পূজো করা হয়। সেখানে যার যাকে ভালো লাগে তার সাথেই যৌন মিলনের অনুমতি আছে, তাহলে কী আপনার মা আর বউ সেফ ? তাহলে সেই ধর্ম কি ভূল না? সাধারণত, আমরা কোন কিছু বিবেচনা না করে এই টাইপ ধর্মকে পছন্দ করি। ভাবি, এটাই তো ভাল। প্রকৃতির সাথে থাকা। একাত্ম হওয়া। ইচ্ছামত মজা। আপনি খুঁজে পেতে এই ধর্মকে বেছে নিয়ে বললেন, এইটাই আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লেগেছে। আর, ভাব্লেন যে,আকাশ তো বললই, অনুসন্ধানে যেটাকে সবচেয়ে আকর্ষণীয় লাগবে,ওটাই সত্যি, তাহলে তো হবেনা। কারণ, শুনে রাখেন ওটা আপনাকে সেই মুহুর্তে আমার কাছ থেকে সেইফ করবেনা। আপনার মা আর বউকেও না।


এখন ভাবেন যে, আমি আর আপনি এমন ধর্মের অনুসারী যেখানে আপনি আমার নিচু জাতের। আর, আপনার সাথে যা ইচ্ছা করার ক্ষমতা আমার আছে, তাহলে ? তখন কী আপনি আমার কাছ থেকে নিরাপদ ? তাহলে, এসব জাত-পাত অয়ালা ধর্মও বাতিল।


এমন একটা ধর্মই সত্য হবে যেটা যে কোন পরিস্থিতি তেই হোক না কেন, আমার কাছে আপনাকে অন্তত নৈতিক ভাবে নিরাপদ রাখবে।
ভাবেন, আমি এমন এক ধর্মের যেখানে আপনি অন্য ধর্মের বলে আপনার উপর অত্যাচারে আমার কোন বিচার হবে না। তাহলে কি আপনার মা নিরাপদ আমার থেকে? তাহলে অন্য ধর্মকে মারতে বলে এমন ধর্মও বাদ।


এখন ধরেন, আমি এমন ধর্মের অনুসারী যেখানে আমি নিশ্চিত যে আমি আপনার সাথে যাই-ই করে, আমার সৃষ্টিকর্তা আমাকে মাফ করবেন। হয়ত উনি কষ্ট পাবেন, কিন্তু আমাক কিছু বলবেন না। তাহলে ? নাহ, এই ধর্মও বাতিল।


ধরুন, দিনটা ইংরেজ আমলের। হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা হচ্ছে। ইংরেজ্রা দফায় দফায় সুযোগ নিচ্ছে । আমি কোন ধর্মের হলে আপনি সেইফ হবেন ? আমি হিন্দু হলে আপনি ম্লেচ্ছ জাতি হবেন। অতএব, এইবার আপনি শেষ। আমি খ্রিষ্টান হলে যীশু তো আছেনই আমাকে নরক থেকে বাঁচানোর, আর তাছাড়া আপনার বউটাও সুন্দর। সুতরাং আপনি শেষ।ইসলাম এ বলা আছে যে, “তোমরা অন্য ধর্মকে গালি দিও না,কারণ তাহলে তারা তোমার সৃষ্টিকর্তাকেও গালি দেবে।” আরো আছে, “অন্য ধর্মের উপরে তোমাদের কোন অধিকার নেই, তোমাদের উপরেও অন্য ধর্মের কোন অধিকার নেই।” এরপরেও কি মুসলমানের হাতে দাঙ্গায় হিন্দুরা মরেনি ? মরেছে। কিন্তু সেটা ধর্মের দোষে নয়,ব্যক্তির দোষে। সে যে ভুল, এটা অন্তত আপনি বুঝতে পারেন। আপনি ভুল ধর্মের হলে, আপনার মনে হত যে, ও ঠিকই তো করল আবার, নিজের বেলাতে মেনেও নিতে পারতেন না।


ঈমানে ভুল নেই, ভুল আমলনামায়।

আমি বলতে চাই, ধর্ম আমাকে বুঝাবে যে, কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ। পরিবারও কিন্তু সেই দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু, চোর তার ছেলেকে চুরি শিখায়। ছেলে ধর্মে এলে জানতে পারবে যে চুরি ভালো না খারাপ।

আমিও মানুষ। যদি ঠিক করি যে, কিছুক্ষণের জন্য্য অমানুষ হব ? তখন ? খেয়াল কৈরা, এইটা কিন্তু ইন্দ্রিয়ের ব্যাপার।
যতই ধর্মে থাকুক, কিছুক্ষণের জন্য যদি ভুলে যাই বা তখন যদি ভাবি যে, দোযখে গেলে যাব, ডরাই না। তখন ? সেটা আমার দোষ হবে, ধর্মের না।

ধর্ম আমার মধ্যে এই বোধটা তৈরি করবে যে কোনটা খারাপ। আমি যা করতে চেয়েছিলাম, অনেকের কাছে মনে হতেই পারে যে, এতে সমস্যাটা কী? অই মেয়ে তার জামাই এর সাথে এসব করতে পারলে আমার সাথে পারবে না কেন ? এই টাইপ। হা হা হা হা। এ রকম এক লোকের সাক্ষাতকার যায়যায়দিনের মৌচাকে ঢিল এ পড়ছিলাম। হা হা হা ।

সব ধরণের পরিস্থিতিতে আপনার মা আর বউকে আমার কাছে নিরাপদ রাখবে, এমন ধর্ম লাখ লাখ নাই। আবার, বিলুপ্ত যে তাও না। আপনি খুঁজুন। না পেলে আমাকে জানাবেন।


[একটা সত্য কথা বলি, এই ব্লগটা লেখার সময় শেষ হওয়ার ১০-১২ লাইন আগে আমার বাসায় ইলেক্ট্রিসিটি চলে যায়। আমি হতাশ হয়ে যাই, কারণ সেইভ করিনি লেখাটা। আর, আমি টাইপিং এ স্লো। লেখাটা খুব কষ্ট করে লিখেছি। মেজাজটা এমন খারাপ হল, ধূররর। পরে ভাবলাম, সৃষ্টিকর্তা বোধহয় দেখতে চান যে, আসলেই উনার কথা বা সত্যটা আরেকজন ব্যক্তিকে বোঝানোর জন্য আমার আগ্রহ কতখানি, আমার বিশ্বাসের প্রতি আমার দায়িত্ববোধ কতটুকু। তাই মনস্থির করলাম, যত কষ্টি হোক আবার লিখব। এখন যদি আপনি ধরেন এতক্ষণ আমি কোন রাজনীতিক দলের প্রপাগান্ডা লিখতাম, তাহলে কী আমি আবার এমন কষ্ট করতে চাইতাম ? হয়ত ভাবতাম, পরে আরেকদিন লিখব। আমার মতে, এটাই তো ধর্মের সাথে মতবাদের পার্থক্য।]


[সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবাণী যে, আমাকে আবার পুরোটুকু লিখতে হয়নি। বেশ খানিকটা অটোসেইভ হয়েছিল।]

ঘুমন্ত মানুষকে জাগানো যায়, কিন্তু যে ঘুমের ভান করে আছে তাকে জাগাবো কি করে ? আর, আমি আশা করি, আপনি জেগেই আছেন। সবারই ভুল হতে পারে, নিজে কোন কথা বলেছি বলেই যে সেটা ঠিক, তা ভাবাটাই গোঁড়ামী। অন্যের কথা একবার বিবেচনা করে দেখতে দোষ কী ?

[বাই দ্য অয়ে, কোন ছাগু আবার আমাকে নিজের দলে ভাইবেন না।]

প্লিজ রেটিং দিবেন। ২২১ বার না পড়া হইসে এটা। আর রেটিং ১০ টা !!

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১১:৩৮
৭৫টি মন্তব্য ৫৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×