somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমরা ১০০টি বিষয়ের ৯৯টিতে একমত, তবু কেন ঐক্য নেই?

১১ ই মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই ব্লগে আমি নতুনের দলে। তবে পাঠক হিসাবে অনেক দিন হল। বিভিন্ন দল, মত আর আদর্শের মানুষের সম্মিলন এই ব্লগে। ব্লগটি যেন এদেশটিরই একটি প্রতিচ্ছবি। নানা পরিচয়ের ভেতরেও আমাদের কিছু পরিচয় এক। আমরা সবাই বাংলাদেশের গর্বিত সন্তান, বাংলাভাষায় কথা বলি, ব্লগ লিখি। পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকি না কেন, নিজের দেশের মানুষ পেলে বুকে জড়িয়ে নেই, বাংলায় কথা বলে তৃষ্ণা মেটাই। যখনই কেউ বিপদাপন্ন হয়, সামান্য হলেও পাশে দাঁড়িয়ে অনুভব করি ভালোবাসার অনির্বচনীয় অনুভূতি। বাংলায় লেখে শুধুই যে নিজেকে প্রকাশ করা, তা কিন্তু নয়। এ যেন হাজারেরও মাঝে নিজেকে খুঁজে পাওয়া । ভিন্ন এক জগত থেকে অপার্থিব এক শিরা উপশিরায় হেঁটে গিয়ে আপনের কোলে মাথা রাখা। খানিকটা সময় ডিল্যুশন-হ্যালুসিনেশনে ভোগা। এহেন মানুষগুলোর এ দেশটি এখনও কেন দুঃখী? এখনও কেন আমার দেশটি গর্বিত দেশ গুলোর পাশে থেকে নিজেকে উচ্চ স্বরে জানান দিতে পারছেনা? কেন বার বার ঘুরে ফিরে মাথা ঝুঁকে বলতে হয় আমি তৃতীয় বিশ্বের নাগরিক? কারণটাও ঘুরে ফিরে চলে আসে একটাই। তিনযুগ পরেও জাতি হিসাবে আমরা আসলে এক হতে পারিনি? আমরা এক করতে পারিনি আমাদের বিশ্বাস, আমাদের বলা আর আমাদের কর্মগুলোকে । বলবেন আবারও সেই আজাইরা পুরান প্যাচাল। অবাস্তব, অসম্ভব। অথচ একটু ভাবুন না খানিক। অথচ যদি দল মত নির্বিশেষে ১০০ শত জন মানুষকে সাতটি প্রশ্ন করা হয়-

১. আপনি এদেশকে ভালোবাসেন? সকলের উত্তর হবে, এটা কোন প্রশ্ন হল? নির্বিঘ্ন উত্তব: অবশ্যই। কোন সন্দেহ আছে?

২. আপনি কি এদেশের ভাষাকে ভালোবাসেন? নিসন্দেহে সকলের উত্তর হবে,অবশ্যই।

৩. এ মাটি, এ ভাষা, এদেশে জন্ম নিয়ে আপনি কি গর্ব অনুভব করেন? ১০০ জনেই উত্তর দেবেন, আমি গর্বিত।

৪. যদি দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকারের প্রশ্ন আসে, আপনি কি প্রস্তুত? দু এক জন উত্তর দিতে দেরী করলেও আমি নিশ্চিত সকলের উত্তর হবে, নিসন্দেহে।

৫. আপনি কি বিশ্বাস করেন যোগ্য ব্যক্তিকে রাষ্ট্র কিংবা গুরুত্বপূর্ণ পদে না বসালে এ দেশের উন্নতি গতিশীল হবে না? এক্ষেত্রে আমার বিশ্বাস সকলের উত্তর হবে একই। কিন্তু দেখুন সেই একমত লোক গুলোর কেউ কেউ যখন ক্ষমতায় আসেন, পদায়নের কর্তৃত্ব নেন, তখন দলীয় পরিচয়ই হয়ে ওঠে মুখ্য। যোগ্যতা, দক্ষতা, সততার প্রশ্ন তখন পেছনে পড়ে যায়। তাহলে এ বিষয়ে সত্যিই আমাদের জবাব ও বাস্তবতাকে মিলাতে পারিনি। দেশ কি করে গতিশীল হবে?

৬. যদি প্রশ্ন করা হয়, এদেশে একজন নিরপেক্ষ শাসক থাকলে বা যিনি শাসক তিনি নিরপেক্ষ থাকলে দেশ বদলে যেত? এ প্রশ্নেও সকলের উত্তর হবে, অবশ্যই। তাহলে আমাদের হাতে যখন সিদ্ধান্তের সর্বময় ক্ষমতা অর্পিত হয়, তখন কেন আমরা ডানে বা বামে হেলে যাই। নিজের বিশ্বাসকে গলা টিপে হত্যা করি।

৭. আপনি কি বিশ্বাস করেন এদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া সত্যিই উন্নতি করতে পারবেনা, তাই এ দেশের জন্য, আমাদের সন্তানদের জন্যই আমাদের বিভেদ ভুলে এক হতে হবে? আমার বিশ্বাস তিনি যে দলই করেন না কেন, সকলের উত্তর হবে,অবশ্যই।
এভাবে একটি প্রশ্ন করুন দেশকে নিয়ে, যাকে খুশী তাকে করুন, জবাব সবার একই। তবে কেন আমরা এক হতে পারিনা? কেন আমার বিভেদ ল্গাাই? কেন পরষ্পরকে ভালোবেসেও অমর্যাদা করি? কেন এই দেশের জন্য ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত বলেও সামান্য মতটাকে প্রেষ্টিজ বলে ছাড় দিতে পারিনা?

সমস্যা আসলে একটাই। আমরা যা বিশ্বাস করি, পছন্দ করি, ভালোবাসি, তার বিপরীতে কোন কিছুকেই আমরা গ্রহণ করতে রাজি নই। চাই সেটা সঠিক হোক আর বিবেক সমর্থিত হোক। বিশ্বাস করুন কারো প্রতি আমার কোন অশ্রদ্ধা নেই। কিন্তু এটি তো সত্যি, আমরা সব কিছুতেই একমত হই কিন্তু সেটা যদি আমার দল বা আদর্শের বাইরে যায় তবে ধ্রুব সত্য হলেও তার কোন গ্রহণ যোগ্যতা আমার কাছে নেই। আমরা এতটাই বেশি কাঠিন্যে ভুগছি যে, আমি যেটা মানি, সবাইকে সেটাই মানতে হবে। আমি যাকে আরাধ্য মানি, তাকে যে মানে না, সে হীন, অচ্ছুৎ। তিনি সমাজের যেই হন না কেন, অমর্যাদা, অসম্মানই তার প্রাপ্য। পাঠক, হয়ত আপনি এ চিন্তা থেকে মুক্ত, কিন্তু আমাদের দেশের নেতৃবৃন্দ বা তাদের সমর্থকরা, আমাদের দেশের কর্মজীবি মানুষগুলো? এমনকী যারা ইসলামের তল্পীবাহক বলে তারস্বরে চিৎকার করেন, সেই মওলানারা তো এক অপরকে কাফের বলে ফতোয়া দিয়ে অসম্মান করতেও ছাঁড়েন না? অথচ এদের সকলেই সামান্য একটু ত্যাগের মানসিকতা রাখলেই কিন্তু এদেশটির চেহারা বদলে যেত, কারণ আমরা সবাই তো দেশের স্বার্থে শতকরা ৯৯টি বিষয়ে একমত। তবে কেন একটি মতের জন্য বা কয়েকটি প্রশ্নের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়াতে আটকে থাকা? আপনারাও নিশ্চয়ই আমার মতোই ভাবেন....... কিংবা আমার চাইতেও বেশি। আপনাদের একজন হয়েই বলব, কয়েকটি প্রশ্নে আমরা পুরোপুরি নয়, তার সামান্য একটু অংশে একমত হতে পারলেই সকলেই ঐক্যবদ্ধ হতে পারি। সেগুলো না হয় পরের পোষ্টের জন্য রেখে দিলাম। তবে যাবার আগে বলতে চাই এক হবার আগে ছোট্ট একটা শর্ত, অন্তত মানুষ হিসাবে প্রাপ্য সম্মানটুকু দেবার ব্যাপারে কার্পণ্য চলবেনা।(২য় অংশে সমাপ্য)
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০০৯ বিকাল ৫:৫৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×