একটা নাটক বা চলচ্চিত্রের চেয়ে সংলাপ অনুষ্ঠান হঠাৎ হঠাৎ বেশী আকর্ষনীয় হয়ে ওঠে পছন্দের চেতনায় । সাগরে এক বিন্দু জল ফেললে কি পরিবর্তন সাগরের মাঝে অনুভূত হয় আমি জানিনা, কিন্তু আমার জ্ঞানে এক বিন্দু বাড়তি যুক্ত হলে আমি আন্দোলিত হই।
সংলাপের হাস্যরস আর বাস্তবতা থেকে ইদানিং শিখলাম সত্য দুইপ্রকার- স্বঃত সিদ্ধ সত্য এবং স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্য।
উপদেশ কেউ আজকাল শুনতে চায়না, আজকাল কেনো- কসসিন কালেও কেউ উপদেশ শুনতে চাইতো এমন কোন বিশ্বাস এ আমি বিশ্বস্ত নই। তাই আবার আমার এই কথাগুলো উপদেশ ভাববেন না। নিছক এক প্রলাপ ভাবতে পারেন।
দেখেন না সংলাপের ঘোরটোপে যে যার মত উপদেশ এর ফুলঝুড়ি ঝরিয়ে যায় মিডিয়ায় আজকাল। নিরিখ নাই কারও -- প্রচারের লালসা আছে বোঝা যায়।
সত্য প্রকার বিশ্লেষনে ফিরি আবার। প্রথমেই স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্য কথাই বলব। ইহা এমন যে চরম সত্যবাদী যুঠিষ্টর সাহেবও সেই সত্যই বলেন যে সত্য বললে নিজের পায়ে কাদা লাগেনা। স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্যতে তাই সত্য একরকম পঙ্গুর মত। অধিকাংশ মানুষ ( সত্যবাদি যদি কেউ ভেবে থাকে নিজেকে তারা) এই স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্যর আওতাবদ্ধ।
উদাহরণ সরূপ
মাস খানেক আগে কোন এক দেশে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের চেয়ার লইয়া মানে সামনের চেয়ার দখল পাওয়া নিয়া এক ক্যাচাল চলেছিল।
তখন ঐ দেশের সরকারী দলের এক সংসদ সদস্যকে এক মিডিয়া সাংবাদিক জিজ্ঞাস করলেন...
জনাব স্যার, আপনারা বিরোধী দলকে সামনের সারিতে যে কয়খানা চেয়ার দিয়াছেন , তাহা কি সঠিক হইয়াছে। আর হইলে আর একটা দুটো বেশী দিলে কি ক্ষতি হবে কোন?
উত্তর আসিয়াছিল সত্যিকার [ সংসদ সদস্য কি মিথ্যা বলতে পারেন!]
ঃ আসলে দেখেন আমরা যখন বিরোধী দল ছিলাম আমাদের কে প্রাপ্য চেয়ার থেকেও কম দেয়া হইয়াছিল, আমরা কিন্তু কম দেই নাই, আমাদের অনুপাতের হিসাব তাদের অনুপাতের হিসাব অপেক্ষা বেশী ই আছে।
উনি কিন্তু সত্য বলিলেও সে সত্যর মাঝে নিজ দলের স্বার্থকথা নিহিত।
এ তো গেলো এক কঠিন উদাহরণ
একটু সহজ উদাহরণ দিলে এমন দাঁড়ায়।
>>> এক দূর্নীতিবাজ সাবেক আমলা[ দুর্নীতি অপ্রমানিত বাস্তবতায়] কোন এক দুর্নীতি বিরোধী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিচ্ছেন
“ দেখেন, আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অবক্ষয়ের পেছনে মূল কারন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি । স্বল্প বেতন দুর্নীতির প্রাথমিক কারন হলেও আসলে বেতন বৃদ্ধিই দুর্নীতি দূর করার উপায় নয়। কারন দুর্নীতিবাজের কাছে দুর্নীতি এক সময় নেশার মত হয়ে যায়। সে নিজেকে সমাজে খুবই মহৎ প্রমান করার কাজও দুর্নীতির মাধ্যমে করে ফেলে একসময়। এবং মনে রাখতে হবে দুর্নীতিবাজরাই পরবর্তী জীবনে বড় বড় কথা বলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে । তবে দুর্নীতি করলে ধরা পড়তেই হয় , তবে সবাই ধরা পড়েনা। আইন দূর্বলতার কারনে দুর্নীতিবাজরা অনেকেই বড় বড় বটবৃক্ষ হয়ে সমাজে সমাজসেবক হয়ে ছায়া দিতে থাকে। দুর্নীতবাজ সেইসব মানুষের ছায়ায় থেকে দুর্নীতিবাজ মুক্ত সমাজ গড়া খুবই কঠিন। তবুও আমাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে, আসুন আমরা একতাব্ধ হই।”
একটু ভেবে দেখুন ...ঐ সাবেক দুর্নীতিবাজ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সত্য কথাগুলোর সাথে কেবল যদি একটা কথা বলত- ‘আমি নিজে একজন দুর্নীতিবাজ ছিলাম’ --তাহলে পুরো কথার আবেদন অন্যরকম হতো।
আর সেটাই হতো স্বতঃসিদ্ধ সত্য।