somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবনের গল্প ৩

০৯ ই মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনের গল্প ১ Click This Link

পূর্বের পর্ব Click This Link

আমি ভোরে ঘুম থেকে উঠি। দেখি সবাই ঘুমিয়ে আছে। সকালে অফিসে চলে গেলাম। আমি বিকেল চারটার আগে ঘরে ফিরতে পারিনা কিন্তু সেদিন বারটায় ফিরলাম। আমি মনে করেছিলাম ওরা মনে হয় চলে যাবে। ঘরে যেয়ে দেখি মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে। উঠেই মদ চাচ্ছে। কানর, আমার ঘরের চাকর এসে বলে- “এখন কি করি।” আমি নিজেই ওদের কাছে গেলাম।
“কি খবর আমার দেশের সোনার ছেলেরা।”
একজন বলে- “মাল কই।”
“কত লাগবে।”
” সকালে প্রতিজেনর দুইটা বাংলা দিলেই হবে, ওই বিদেশীতে আমাদের হয় না।”
“সেটা তো এখন ঘরে নেই ঘরে নাস্তা আছে তা আজ একটু কষ্ট করে খাও। তোমাদের চাহিদার ব্যবস্থা করছি।”
“মাল ছাড়া আমার গলা দিয়ে কিছুই তো নামবেনা।”-একজন বল্ল।
“চেষ্টা কর। একটা দিন মাত্র । তোমাদের চাহিদাটা জানিয়ে দিও। সেভাবেই আনা হবে। ”
”এই তুই ফকফক বেশি করছ। যা বলছি তাই কর যেখান থেকে পারিস বাংলা নিয়ে আয়।” -অন্য আরেকজন বল্ল।
ওদের মধ্যে একজন বল্ল, “ঠিক আছে আমরা নাস্তাই করছি।” তারা কিজানি আলোচনা করছে বুঝতে পারছিনা।”
আমি তার নাম জিজ্ঞেস করলাম যে নাসতা খাওয়ার জন্য সবাইকে মানাল।

আমার নাম জামাল। সেদিন রাত্রে আমি বাকি তিনজনের কমান্ড করছিলাম। আমরা চারজন ভালো বন্ধু ছিলাম। সবাই আমাকে বেশি মানত। আমাদের চারজনের দু:খ ছিল চাররকম। দু:খ আমাদের বন্ধুত্বের উতস। এই দু:খ কমানোর জন্যই আমরা মাদককে আমাদের সাথি করে নিয়েছিলাম। আমি বাকি তিনজনের সাথে পরামর্শ করে, রাজি করিয়ে এখানে এসেছিলাম। আমার টাকাপয়সার কোন দরকার নেই। আমার এই মানুষটাকে মারা দরকার ছিল। আমি ছোট থাকতেই আমার বাবাকে হারাই। এর পর আমার বড় ভাই আমাদের সংসারের হাল ধরেছিল। আমার বড়ভাই সত ছিল, সবার উপকার করে বেড়াত বলে এমনই বড়লোকের পালা কুত্তাদের গুলিতে মরে গিয়েছিল। আমার বড় ভাই শিক্ষক ছিল। আমার বড় ভাই , গার্মেন্টস মালিকের ছেলে রকির একটা অপরিস্থিতিকর ঘটনা দেখে ফেলেছিল। মেয়ে ঘটিত ব্যপার ছিল। মেয়েটি গরিব ছিল বলে তার পক্ষে বলার কেও নেই। আমার ভাই প্রতিবাদ করতে চাইলে রকির বাবা আমার ভাইকে মেরে ফেলে তার সাঙ্গপাঙ্গ দ্বারা। আমি এমন মানুষকে মেরে ফেলতে চাই যারা আমাদের মত যুবকের হাতে বন্দুক তুলে দেয়। এই ক্ষভেই আমি এখানে এসেছিলাম। ওর বন্দুক নিয়ে ওকেই প্রথমে মারব । আমার যা হবে হোক। আমি ছাড়া আমার ঘরে মা আর বোন আছে। আমি বেচে থেকেই বা কি উপকার করছি এর চেয়ে মরাও ভালো। কিন্তু আমি অবাক হয়ে গেলাম লোকটিকে দেখে। আমি ভাবতেও পারিনি লোকটি এমন ধরনের হবে। তৌশিক না থাকলেতো আমি এই মানুষকে চিনতেই পারতামনা। আমরা চারজনই খাবার টেবিলে এসে নাসতা খেতে বসি, আমাদের সাথে স্যারও বসেন। তবে উনি আমাদের সাথে খান না।

আমি তৌশিক। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আমার বাবা সরকারি নিম্নপর্যায়ের কর্মকর্তা। আমার ছোটবোনের হৃদরোগ ছিল। আমার বাবার সামার্থ ছিলনা চিকিতসা করানোর। আমি আমার ছোট বোনকে অনেক ভালোবাসি। আমি চোখের সামনে ছোট বনকে এভাবে দেখতে পারবনা তাই রাজনীতির সাথে জড়িয়ে গিয়েছিলাম। একজনের পাল্লায় পড়ে মদ, গাজা আর বন্দুক চালানো, সেখান থেকেই শিখেছি। কিন্তু কেওকে মারিনি। সেখানে গিয়ে পড়ে থাকতাম ফ্রি মদ, হেরোইন আর গাজা পেতাম তাই। আমার মনে বিশাল ব্যথা ছিল। এই ব্যথা দমানোর জন্য আমি সেবন করতাম এই মরণপানীয়। আমি এমনটি হতে চাইনি। আমাকে সময় বাধ্য করেছে এমনটি হতে। আমি ভালো হতে চেয়েছিলাম। আর্থিক অভাব আর সংসারের বিভিন্ন সমস্যা আমাকে ব্যথিত করে তুলেছে। সেদিন আমার মনে একটা কথা বলার ইচ্ছা ছিল, নাসতা খাবার সময় ভাবছিলাম লোকটাকে বলব কিনা।
সাহস করে বলেই ফেল্লাম, “আমার লাখ বিশেক টাকা লাগবে। আপনি আমাকে এখন দেন আমি সারা জীবন আপনার এখানে গোলামি করব।”

পররে পর্ব Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মার্চ, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×