somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি কিন্তু আলাদা নারী দিবস পালনের পক্ষে (উৎসর্গ প্রিয় ব্লগার লীনা ফেরদৌস)

০৮ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ১২:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমে ব্লগের চলমান একটি বিতর্ক প্রসঙ্গে আমার নিজস্ব অবস্থান দিয়ে শুরু করি। আলাদা নারী দিবসের প্রয়োজন আছে কিনা এ প্রসঙ্গে অনেক ব্লগারই নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছেন। তারা বলেছেন, আলাদা দিবসের প্রয়োজন নেই। যারা বলেছেন, তারা যে, নারী বিদ্ধেষী তাও নয়। কেউ কেউ হয়তো আছেন। তবে বেশির ভাগই নারীর পক্ষে বলে মনে হয়েছে। তবু তারা আলাদা দিবস চান না। কারণ এ ধরনের আনুষ্ঠানিকতা অনেক দিন ধরে পালিত হচ্ছে। কিন্তু নারীর সত্যিকার উন্নয়ন হয়নি। আমরা করতে পারিনি। আমাদের এ সম্মিলিত ব্যর্থতার প্রতি ক্ষোভ-আবেগ তাড়িত হয়ে কেউ কেউ আলাদা দিবস পালনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এ সুযোগে যারা নারীর যেকোন প্রাগ্রসরমান অবস্থান সহ্য করতে পারেন না, আগাগোড়া পুরুষতান্ত্রিক, মননে শিশ্নবাদী তারাও মওকা পেয়েছেন এবং নির্দ্বিধায় বলে যাচ্ছেন, আলাদা নারী দিবসের কোন দরকার নেই। আমি সবিনিময়ে এ সব মতামতের বিপক্ষে অবস্থান নিতে চাই এবং বলতে চাই নারী দিবস পালনের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্তেও আলাদা নারী দিবস পালনের প্রয়োজন আছে। কেন??????
নারীর অধ:স্তনতা ঐতিহাসিক। সমাজতাত্ত্বিক ইতিহাস বলে, ব্যক্তিগত সম্পত্তির উৎপত্তি আর নারীর অধ:স্তনতা যুগপৎ ঘটনা। কিন্তু এ ঘটনা সেখানেই থেমে থাকেনি। সরল থেকে জটিলতর হয়েছে। ডাল-পালা গজিয়ে এর মাত্রিকতা বেড়েছে। গভীর হয়েছে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্থানান্তরিত হচ্ছে। ফলে নারীর আর্থনীতিক-সামাজিক-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিত অধস্তনতার সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হযেছে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বেশির ভাগ মানুষের কাছে। এ হালালীকরণ প্রক্রিয়াটি সংঘটিত হচ্ছে মূলত সমাজিকায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। যেখানে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সিনেমা, শিল্প সাহিত্য, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি আবার সক্রিয় ভূমিকা রাখছে। সুতরাং এটি অবশ্যই যৌক্তিক যে এ গভীর ক্ষত'র বিরুদ্ধে লড়াই একটি দিন যথেষ্ঠ নয়, এর জন্য প্রয়োজন প্রতিদিনের সংগ্রাম। ঘরে-বাইরে, সর্বত্র। কিন্তু এ লড়াইটার বিশেষ সামাজিকায়ন প্রক্রিয়া এবং সে প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করবার জন্য আলাদা দিবসেরও প্রযোজন রযেছে। যেটি বিকল্প সামাজিকাযন প্রক্রিয়া চালু করতে পারে। চালু করবে। নারীর অধ:স্তনতার এবং অধ"স্তন করে রাখার মনোজগতটি যেহেতু সামাজিকায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয় সেহেতু নারী দিবসের বিশেষ উৎযাপনগুলো অবশ্যই আমাদের মনজগতে কিছু নতুন ম্যাসেজ দিতে সক্ষম হবে। আলাদা দিবস উৎযাপনের সম্ভাবনা এবং গুরুত্বএখানেই। আমি নিশ্চিত আজ সারা বিশ্বে অনেক মানুষ নারী-পুরুষের সমতা এবং বৈষম্যহীন সমাজ নির্মানের কথা নতুন করে শুনবে। এ যে শোনা বা শুনানো এটির গুরত্বও কম নয়। বরং অনেক বেশি। তাছাড়া সমাজের গুণগত পরিবর্তনগুলো ধীরে ঘটে। সুতরাং অসংখ্যা অনুষ্ঠান, আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে সমাজ ক্রমাগত সে পরিবর্তনের দিকে এগোই। সুতরাং জেন্ডার বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণের লড়াই যেমন প্রতিদিনের লড়াই তেমনি এ লড়াই-য়ে বিশেষ মাত্রা যোগ করার জন্য আলাদা ৮ই মার্চ উৎযাপনও গুরুত্বপূণ। সবাইকে নারী দিবস ২০০৯ এর শুভেচ্ছা। আসুন এবারের বিশেষ শ্লোগানকে আমাদের প্রতিদিনের প্রতিজ্ঞায় পরিণত করি.............'কন্য ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই নারী-পুরুষ এক সাথে'।

পুনশ্চ: নারী দিবসের কর্পোরেট ভার্সন অবশ্যই দিবসটির জন্য ক্ষতিকর। এটি কখনও প্রান্তিক নারীদের অন্তর্ভূক্ত করে না। মূল্য লক্ষ্য যেহেতু পণ্যের প্রসার সেহেতু তা নতুন করে পুরুষতন্ত্রকে নির্মাণ করে। এর খাঁটি উদাহরণ 'রাধুনী। এ ধরনের প্রবনতার নিন্দা জানাই......................।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ৯:৪১
১৯টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আজ রমনায় ঘুড়ির 'কৃষ্ণচূড়া আড্ডা'

লিখেছেন নীলসাধু, ১৮ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৬




আজ বিকাল ৪টার পর হতে আমরা ঘুড়ি রা আছি রমনায়, ঢাকা ক্লাবের পর যে রমনার গেট সেটা দিয়ে প্রবেশ করলেই আমাদের পাওয়া যাবে।
নিমন্ত্রণ রইলো সবার।
এলে দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×