somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তালেবান এবং কিছু কথা

০৮ ই মার্চ, ২০০৯ সকাল ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গাজায় ইসরাইলী বাহিনী নির্বিচারে শিশুদের উপর গুলি চালিয়েছে, মারা গিয়েছে শত শত শিশু, শত শত শিশু আহত হয়েছে, মা - বাবা হারিয়েছে তার বুকের ধনকে, ঠিক তেমনি অনেক শিশুও হারিয়েছে তার মা বাবাকে। অনেক মা-বাবা তার আহত সন্তানদের ঠিকমত চিকিৎসাও দিতে পারছে না। গাজার কথা আমরা সকলেই জানি, প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল সারা বিশ্ব বিবেক। কী নিষ্ঠুর কী নির্মম এই পাষান্ডরা যারা আগামী ভবিষ্যৎকে গলা টিপে হত্যা করেছে এবং এখনও করে চলেছে।

পৃথিবীর অনেক রাষ্ট্রই আছে যেখানে শিশুদের অধিকারগুলি পদদলিত হচ্ছে। তাদের মধ্যে এমন একটি রাষ্ট্রের নাম মনের পর্দায় ভেসে উঠছে ------ সেই রাষ্ট্রের নাম পাকিস্তান। পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চীয় একটি প্রদেশের নাম সোয়াত উপত্যকা। সেখানে নির্বিচারে শিশুদের গুলি করে না মারা হলেও তাদের গতিশীলতা, মতামত প্রকাশ, শিার অধিকার থেকে তাদেরকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে।

মধ্যযুগীয় আঁধার যেন নেমেছে সোয়াত উপত্যকায়। তালেবান জঙ্গিরা পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এই এলাকায় তাদের কালো থাবা বসিয়েছে। বন্ধ করে দিয়েছে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া। শরিয়া আইনের জোরে গত বছর তারা ১৫০টি স্কুল তারা বন্ধ করে দেয়। এছরও আরো ৫০টির বেশি স্কুল তারা ইতিমধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে এবং আরো বন্ধ করে দিবে বলে হুমকি দিয়েছে। গত বছরও তারা অধিকাংশ স্কুলই গুঁড়িয়ে দিয়েছে এবং এর ধারাবাহিকতা এখনও চলছে। সভ্যতার আলো প্রবেশের দ্বারগুলো তারা একে একে বন্ধ করে দিচ্ছে।

জঙ্গিরা স্কুলগুলো গুঁড়িয়ে দিচ্ছে অথচ সেনারা তাকিয়ে তাকিয়ে শুধু দেখছে, কিছুই বলছে না। ৩০ জানুয়ারী, প্রথম আলোতে এক কিশোরীর আর্তনাদ লিপিবদ্ধ হয়েছে এভাবেই “ ১৯ জানুয়ারী.২০০৯ আমার চোখের সামনেই ৫টি স্কুল গুঁড়িয়ে যেতে দেখলাম”। তার ভাষায় “সেনারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমুচ্ছে”। সে আরো বলেছে এভাবে “ স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে বাড়িতে বন্দী জীবন-যাপন করছি। আমার কিছু বন্ধু পরিবার পরিজনসহ সোয়াত ছেড়ে চলে গেছে। কারণ এখানকার পরিস্থিতি দিন দিন বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। রাতে মাওলানা শাহ দুরান মেয়েদের স্কুলে না যাওয়ার ব্যাপারে আবারও হঁশিয়ার করে দিয়েছেন। তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর লোকেরা যেসব স্কুলে আস্তানা গেড়েছে সেসব স্কুল উড়িয়ে দেয়া হবে” ।

অভিভাবকদের মুখ খুলতে দেয়া হচ্ছে না দেয়া হচ্ছে না। এদিকে পাকিস্তানের সোয়াতে ইসলামি শরিয়া আইন চালু করতে সরকার ও তালেবানের মধ্যে চুক্তির খবরে বিভিন্ন মহল আশংকা ব্যক্ত করেছেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, সরকারের এই নতিস্বীকারের ফলে দেশটির অন্যান্য অংশেও একই দাবি উঠতে পারে। এছাড়া চুক্তিটির সুবাদে তালেবান জঙ্গিরা আবার সংগঠিত হবে। যার প্রভাব দেশের অন্যান্য অংশেও পড়বে।
কয়েক বছর ধরে সোয়াত কার্যত তালেবানপন্থী মোল্লা ফজলুল্লাহর নেতৃত্বে জঙ্গি সংগঠণ তেহরিক-ই-তালেবানের নিয়ন্ত্রনাধীন। অবৈধ এফএম রেডিও চ্যানেলের কারণে মোল্লা ফজলুল্লাহ মোল্লা রেডিও নামেই বেশি পরিচিত। ইতিমধ্যে তারা মেয়েদের ২০০ শতাধিক এর বেশি স্কুল ধ্বংস করেছে, গানের ক্যাসেট,সিডি, ভিডিও, ভিডিওর দোকান পুড়িয়ে দিয়েছে। কোমলমতি ছেলে শিশুদেরকে স্কুলের পরিবর্তে মাদ্রাসায় পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। মা বোনদের স্বাধীন ভাবে চলাফেরা করতে দিচ্ছে না। বোরকা পড়তে বাধ্য করা হচ্চে। প্রগতিশীল লোকদের তারা টার্গেট করছে এবং অনেকের উপর নির্যাতন করছে। এর ফলে হাজার হাজার লোক তাদের ঘর ছেড়ে পালিয়েছে। সরকারী কর্মকর্তাগণও জঙ্গিদের ভয়ে আত্মগোপন করেছেন। সেখানে নিরাপত্ত্বা বাহিনী কার্যত এ পরিস্থিতি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছেন। কার্যতঃ মনে হচেছ সোয়াত যেন ধীরে ধীরে অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছে।

আমার কথা হচ্ছে পৃথিবী যেখানে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে এই ধরণের নির্যাতন, নিপীড়ণএর মাধ্যমে নারী শিাকে পদদলিত করা হচ্ছে। প্রগতিশীল লোকদের কন্ঠ রোধ করা হচ্ছে। নবী করীম (সাঃ) বলেছেন “জ্ঞান অর্জনের জন্য সুদূর চীন দেশে যাও”। তখন চীন দেশ ছিল আরব দেশ হতে অনেক দূরে। ইসলাম কখনো শিাকে নিরুৎসাহিত করে না। আমার জানা মতে কোন ধর্মই শিাকে অবহেলার চোখে দেখে না। গরুর গাড়ীর দুটি চাকা, একটি যদি খুব ছোট হয় এবং অন্যটা যদি বড় হয় তাহলে সেই গাড়ী স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে না এক সময় সেটা থুবড়ে পড়বেই। তালেবানরা যে ভাবে মেয়ে শিশুদের শিার অধিকার হনন করছে সেখানে উন্নয়নের চাকা থুবরে পড়তে কার্যত বাধ্য হবেই।
আমরা দেখেছে আফগানিস্তানে তালেবানরা কীভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছে মেয়েশিশু ও নারীদের উপর। আমি পত্রিকাতে এক ভারতীয় নারীর সাাতকার পড়েছিলাম। তিনি এক আফগান মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করে আফগানিস্তানে গিয়েছিলেন। তার বর্ণনায় সেখানে তালেবানগণ হিন্দু নারীদের বোরকা পড়তে বাধ্য করেছিল এবং তারা যাতে করে বাইরে না যায় অর্থাৎ অবাধে চলাফেরা না করে এ জন্য হুসিয়ার করে দিয়েছিল।

আমরা চাই বিশ্বের সকল শিশু তাদের মৌলিক অধিকার শিার ভোগ করুক। শুধু শিা কেন তাদের সকল অধিকার যাতে তারা (শিশুরা) সঠিকভাবে পায় এ জন্য স্ব স্ব রাষ্টের চেষ্টা থাকবে নিরন্তর।


২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্টে যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×