somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘর-মন-জানালা

০৬ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘর-মন-জানালা......২// "হাতেখড়ি"

আজ প্রথম-আলো পেপারের সাহিত্য সাময়িকীতে আধুনিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী 'মান্না দে'র এক সাক্ষাৎকার প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। শুয়ে শুয়ে চুল শুকাতে শুকাতে ওটাই পড়ছিলাম। আর পড়তে পড়তে হঠাৎ নিজের একটা কথা মনে মনে পড়ে গেল।

মান্না দে বলেছেন, উনি ষাট বছর ধরে গান শিখেই যাচ্ছেন। প্রতিবেদক অবাক হলে বললেন, আসলে সারা জীবণই শিখতে হয়। প্রতিদিন রেওয়াজ না করলে চলে না।

এই পরিপ্রেক্ষিতে, আমার নিজের কথাটা বলি।

আমি ছবি আঁকার উপর চার বছরের ডিপ্লোমা করেছি। ২/৩ টি এক্সিবিশনে পার্টিসিপেট করেছি। আমি মূ্লত আঁকি রিয়েলিস্টিক পেইন্টিং। যেহেতু ওটাই বেশি করা হয়, তাই এই কাজই ভাল পারি। আর, আমার ছবি আঁকা শেখা শুরুর আগে আমি সব ধরনের পেইন্টিং নিয়ে কাজ করলেও, যখন, একাডেমিক শিক্ষা নিতে গেলাম আমার সামনে অনেক বাঁধা দেখা দিয়েছিল। আমার পরিবার আর আমার পরিচিত এবং আত্মীয়-স্বজনদের ভেতর অনেকেই আমাকে নানা রকম বাধ্যবাধকতা দিতে শুরু করেছে। ফিগার আঁকবানা। প্রাণির ছবি আঁকবেনা ইত্যাদি নানা রকম জ্ঞান্দান চলতেই থাকে। আমি শান্তি মত ক্লাসও করতে পারিনা, এমন অবস্থা। আর, পেইন্টিং এমন একটা বেপার, যা মনের উপর প্রভাব ফেলে।

এই রকম পরিবেশের মধ্য দিয়ে আমি চারটা বছর পার করেছি। এর ভেতর অনেক ঝড়-ঝঞ্ঝা পেড়িয়ে আমি এক্সিবিশনেও অংশ নিয়েছি। কারণ ব্যক্তিগতভাবে, আমি যা বিশ্বাস করিনা তা আমার মনে অন্যের কথাইয় বাঁধা ফেলতে পারেনি। তারপরও অন্যদের কারনে আমি যেটুকু প্রাকটিস করা দরকার তাতে অপারগ হয়েছি। এই করে করে আমার এতক্ষানি আসা।

সে যাই হোক, কথায় কথায় মূল কথা থেকে অন্যখানে এসে পড়ছি। যা বলতে চাইছিলাম। কয়েকদিন আগে আমার এক প্রিয় বন্ধু বলছিল, আমি কেন শুধু, প্রকৃ্তি আঁকি! কেন আমি এবস্ট্রাক্ট মুডের ছবি আঁকিনা! আমার মনে খুশির দোলা থাকলেও ভাব না-কি খুব কম আছে! এইসব।

তার শিল্পী মনিরুল হক-এর পেইন্টিং খুব ভাল্লাগে। আমার সাথে প্রথম পরিচয়ের সময় থেকেই আমার এই প্রিয় বন্ধুটি আমার কাছে আমার হাতে আঁকা একটি পেইন্টিং দাবি করেছে। খুব করে গাঢ় লাল আর নীল রঙ দিয়ে একটা ছবি এঁকে দিতে হবে। আমার ও ইচ্ছা আছে, দেব তাকে। কিন্তু, শিল্পীর নিজেরও মনের নির্দিষ্ট রঙ থাকে।সে অন্যের ভাব আনবে কি করে! আমার প্রিয় রঙ মিষ্টি কমলা, হলুদ, আকাশি নীল, হাল্কা গোলাপী, ইত্যাদি ইত্যাদি। তাইতো, একজন কিভাবে পারবে অন্যের মুডে ছবি আঁকতে!

আর, আমার হয়েছে মাত্র আঁকাআঁকির হাতেখড়ি। মাত্র শিখতে শুরু করেছি। কোর্স কমপ্লিট করার পর আস্তে আস্তে আমার চোখ ফুঁটতে শুরু করেছে। আমি ছবি আঁকার ভাব-রস উপলব্ধি করতে শুরু করেছি মাত্র। আমাকে আরও বহুদুর পথ অতিক্রম করতে হবে একজন মনিরুল ইসলাম, অথবা একজন কামরুল হাসান, কিংবা একজন কাইয়ূম চৌধুরী হবার জন্য।

তবে, আমার ওই বন্ধুই আমার চোখ খুলে দিতে সাহায্য করেছে তার নিজেরই অজান্তে। তার সাথে আরেকজন। সে আমার ছোট ভাইয়ের বন্ধু। ওয়াসীম। আমার বিশেষ সেই বন্ধুর সাথে কথা বলার পরই ছবি আঁকা নিয়ে কথা হচ্ছিল ওয়াসীমের সাথে। ..."কত ভাব আসে। কিন্তু, আঁকতে পারিনা। যত্তসব!"

আমার কথা শুনে ওয়াসীম বলে উঠে, "কেন, শরীয়তের বাঁধা?"

আমি বলি, "হু। তার সাথে আম্মাটাও।"

ও বলে উঠে, "ধুর! ওইসব কেন পাত্তা দেন? আমিতো ওত সব কিছুর ধার ধারিনা। নিজের যা মনে চায় করে ছাড়ি।"

ওর ওই কথায় আর, আমার বন্ধুর আমার ভেতর ঢুকিয়ে দেয়া সপ্নবিলাস
আমার ভেতরে ছড়িয়ে দিল এক অদ্ভুত আবেশ আর, ভাললাগার মিশ্রণ! আমি সব বাঁধার দেয়াল টপকে বেরিয়ে এলাম আমার ভেতর থেকে অন্য এক আমি।

সেদিন থেকেই আমি এবস্ট্রাক্ট মুডের ছবি আঁকতে লাগলাম পাতার পর পাতা।

আসলে হরেক রকম মানুষের সাথে মিশলে অনেক কিছু জানা যায়। অনেক কিছুর সংমিশ্রণ প্রবেশ করে মনে। মনের ভাব ডানা মেলে দেয়।

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০০৯ দুপুর ২:১১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×