পিলখানা বিদ্রোহে নিহত বিডিআরের কেন্দ্রীয় সুবেদার মেজর নূরুল ইসলামের (৫৫) ছেলে আশরাফুলের প্রশ্ন- তার বাবা কেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন থেকে বঞ্চিত হলেন।
আশরাফুলের পরিবার আপাতত গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে অপেক্ষায় আছেন সরকারের ডাকের অপেক্ষায়।
চার ভাই বোন। তার অবস্থান তৃতীয়। বড় দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। ছোট বোন নাসরীন আক্তার ইতি রাইফেলস স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী।
বেসরকারি এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আশরাফুল জানান, পারিবারিক উদ্যোগে ছয়দিন ঢাকার সব হাসপাতালে খোঁজাখুজির পর ঢাকা মেডিকেলের মর্গে পাওয়া যায় তার বাবার লাশ।
পরিবারে এখন একমাত্র পুরুষ আশরাফুল। তাই তার অনেক দায়িত্ব। অপ্রত্যাশিতভাবে বর্তানো সে দায়িত্বের চিন্তায় তিনি ক্লিষ্ট।
আশরাফুল বলেন, "আমার বাবাও তো শহীদ, উনার লাশ কেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন হলো না, উনি তো বিদ্রোহে অংশ নেন নাই। তার কি দোষ ছিলো আমাদের বলতে পারবেন?
অশ্র"সজল আশরাফুল যখন তার বাবার লাশ উদ্ধারের কথা বলছিলেন দৃষ্টি ছিল দূরে কোথাও। কান্না লুকানোর চেষ্টাও কি কিছুটা করলেন না!
লাশ নিয়ে দেশের বাড়ি পৌঁছানোর পর দাফনের সময় অন্তত পুলিশের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন আশরাফুলরা। থানার ওসি ও ইউএনওকে জানালে তারা ওপরে যোগাযোগের জন্য সময় চান। কয়েক ঘণ্টা পর তারা জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন বিডিআর সদস্যদের ব্যাপারে সরকারের কোন নির্দেশনা নেই। তাই সাধারণভাবেই লাশ দাফন করেন তারা।
তার বাবা বিদ্রোহী ছিলেন না জোরের সঙ্গে এ দাবি তুলে ধরে আশরাফুল বললেন, "ঘটনার দিন সকালে দরবার হলে গণ্ডগোল শুরু হলে ডিজি সাহেব আমার বাবাকে বলেন- মেজর সাহেব আপনি মাইকে সবাইকে ডাকেন, তাদের বলুন সবার দাবি বিবেচনা করা হবে। তখন আমার বাবা মাইকে ঘোষণা শুরু করলে ৪/৫ জন পোশাকধারী বিডিআর সদস্য তাকে গুলি করলে সেখানেই বাবা মারা যান।"
আশরাফুলের কথা, তার বাবা যে বিদ্রোহী ছিলেন না তা মিডিয়াতে বেঁচে যাওয়া বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার সাক্ষাতকারে ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে।
আশরাফুলের চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা চলছিল। একটিমাত্র পরীক্ষা দিতে পেরেছেন। ২৫ ফেব্র"য়ারি সকাল আটটায় পিলখানার বাসা থেকে বের হন।
"আবার কবে পড়াশোনা শুরু করতে পারব তা একমাত্র আল্লাহই ভালো জানে। আর ছোট বোনটারও সামনের মাসেই পরীক্ষা",একরাশ উদ্বেগ আশরাফুলের কণ্ঠে।
তথ্যসূত্র: বিডিনিউজ ২৪ ডটকম/এএনএস/এএল/এসকে/১৯৩৮ঘ.