somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘেন্না ধরে গেছে নিজের প্রতি, দেশের প্রতি

০২ রা মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এতগুলো আর্মী অফিসারকে মেরে ফেললো, কেন যেন আমার তেমন কষ্ট লাগছে না। সম্ভবত খুব নিকটের কেউ মারা পড়ে নি, যেমন আমার বাল্যবন্ধু স্বপন মারা যেতে পারতো, বাবু মরতে পারতো - ওরা দুজনেই বিডিআর এ কাজ করে গেছে। মারা যেতে পারতো একটু সিনিয়র ফ্রেন্ড সালেহ, এলাহী (এই পোস্টটা লেখার সময় পর্যন্ত জানতাম এলাহী ভাই নিরাপদ আছেন, কিন্তু পোস্টা দেবার ঠিক বিশ মিনিট পরে একটা পোস্ট এলো এলাহী ভাইয়ের ৬দিন যাবত নিঁখোজ সংবাদ, এই পোস্টা আমার জন্য এখন অর্থহীন হয়ে গেছে। এখন আমার শোক হচ্ছে, ভীষণ ভীষণ শোক হচ্ছে, এলাহী ভাই ক্যান্টনমেন্টের ওসি না কি যেন বলে, ছিলেন, সিএমএইচ এর সামনে বাসা ছিল যখন, অনেক দিন এমবিএর গ্রুপ এসাইনমেন্ট করেছি একসাথে)। বছর তিনেক আগে তারাও ছিল। বিডিআর এর সৈনিক হিসাবে আছে আমার পরিচিত দুটো ছেলে। একজন তো হেভী কাবাডি খেলে, চ্যাম্পিয়ন পদকও পেয়েছে। কিন্তু তারা কেউ মারা পড়ে নি।

তবে আমার যে কষ্ট তেমন লাগছে না এটা নিয়ে আমি কিঞ্চিত বিরক্ত। কষ্ট লাগার কথা। লাগা উচিত। আর্মী অফিসারদের করুন কাহিনী সম্বলিত কিছু পোস্ট, পত্রিকা-টিভিতে ইন্টারভিউ দেখেপড়েও আমার অত বেশী মন বিষন্ন হচ্ছে না, যতটা হবার কথা ছিল। রাষ্ট্রীয় শোক নিয়েও আমি রাষ্ট্রের মতই মাতম করতে পারছি না। দিব্যি চলছে আমার সবকিছু।

বিডিআরদের বিদ্রোহ বা ধ্বংষযজ্ঞও আমাকে উৎফুল্ল করে নাই। এর পেছনে কি কারণ, ষড়যন্ত্র জানতে তেমন আগ্রহ নেই। হয়তো কারণটা এমন হতে পারে যে এসব বিষয়ে আসল কারণ কখনও জানা সম্ভব নয়, অথবা সরকারী তদন্তে যা বলা হয় বাস্তবতা হয়তো থাকে ভিন্ন কিছু।

কিন্তু বিডিআর-আর্মী সংঘর্ষ নিয়ে আমি আরো উদাসীন হয়ে পড়ছি। এমন একটা ঘটনা চোখের সামনে দেখতে হলো এটা মানতে পারছি না। যারা মরেছে বা যারা মারা পড়বে তাদের কেউ আমার আত্মীয় বা বন্ধু বা প্রিয়জন থাকলে আমি হয়তো মুষড়ে পড়তাম। অথবা বিডিআর যদি বিএসএফ মারতো হয়তো একটু আনন্দিত হতাম, গর্বিত হতাম অথবা ইন্ডিয়া বা আফ্রিকার কোন দেশের হাতে যদি মারা পড়তো আমাদের আর্মীর সৈনিক, অফিসার শোকাতুর হতাম। হয়তো মৃতদের জাতীয় বীর হিসাবে স্যালুট করতাম সাথে সাথেই।

কিন্তু বিডিআর মেরেছে আর্মীকে, আমাদের গর্বিত আর্মী মরেছে বিডিআরএর হাতে। কেমন যেন একটা অসহনীয় নির্লিপ্ততা ছেয়ে বসেছে আমাকে। ঘেন্না ধরে গেছে স্বজাতির প্রতি। আর্মী এত নিরীহভাবে মারা পড়লো কেমনে? এত শক্তিহীন কি আমাদের আর্মী? বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। আর বিডিআর? গর্ব করার মুখটা রাখলো না। এতদিন সীমান্তে ঝামেলা হইলে বিডিআর এর প্রশংসা করতে শুনতাম মানুষকে বুক ফুলিয়ে - কিন্তু এখন!

নাহ! এসব বিষয় নিয়ে আমি কিছুই বলতে পারি না। কারো জন্য শোক করতে পারছি না। ঘেন্না ধরে গেছে নিজের প্রতি, দেশের প্রতি, ওয়াক থু! এই দেশে আমি বাচি!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০০৯ বিকাল ৩:৪১
১৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×