সমগ্র জাতি যখন সেনাবাহিনীর পিছনে উঠেপড়ে লেগেছে, গোটা জাতীই যখন বুদ্ধিজীবিতে পরিনত হয়েছে তখন একজন নিন্মবুদ্ধির মানুষ হিসেবে সবার উদ্দেশে কিছু আর্তনাদ করতে চাই। ২৫শে ফেব্রু্য়ারি বাংলাদেশ রাইফেলসের কিছু বিপ্লবী সৈনিক(আপনাদের ভাষায়) তাদের ওপর দীর্ঘ দিনের শোষন, বণ্চনা,অত্যাচার আর সেনা অফিসার দ্বারা নির্যাতন ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে যে আন্দোলন(আপনাদের ভাষায়)এর সুচনা করেছ তাতে সমগ্র জাতিই গণতন্ত্রের প্রতিফলন দেখেছে, বিডিআর জওয়ানদের প্রতি সমগ্র জাতির যে সহানুভুতি আর সেনাবাহিনীর প্রতি যে বিতৃষ্ণা তা টিভি চ্যানেলে বুদ্ধিজীবি নুরুল কবির (নিউ এইজ এর সম্পাদক) এর মত আরো অনেক বুদ্ধিজীবির বক্তব্য এবং হত্যাযজ্গ(আপনাদের ভাষায় বিপ্লব) চলাকালে জওয়ানদের সমর্থনে অন্ধ আমজনতার মিছিল দেখেই বোঝা গিয়েছে।
এখন আপনাদের বিতৃষ্ণার আধার সেই বাহিনীর একজন সদস্য হিসেবে আমারও বুক ফাটিয়ে চিত্কার করে বেরিয়ে আসা কথার অংশ বিশেষ আপনাদের উদ্দেশে বলতে চাই।বুকে হাত রেখে বলতে পারি যে, সৃষ্টিকর্তাকে সাক্ষী রেখে বলতে পারি যে সব অজুহাতকে উপলক্ষ্য করে জওয়ানরা হত্যাযজ্গ চালিয়েছে তার কোনো সত্যতা নেই।বিডিআর জওয়ানদের প্রতি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অপেক্ষা অন্য কোনো সংগঠন বেশী সহানুভুতিশীল হতে পারেনা। তাদের দুঃখ কষ্টের কথা সেনাবাহিনীর চেয়ে কেউ বেশী জানে বলে আমি বিশ্বাস করিনা, আমার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিশ্বাস করবওনা। আর সেই কারনেই আজ বিডিআর এর পলাতক সৈনিকরা সেনা অফিসারদের ফোন করে কান্নাস্বরে বলছে স্যার আমরা এখন কোথায় যাবো।আমাদেরকে তো আপনারা ছাড়া নেতৃত্ব দেয়ার কেউ নেই।আমরা কেনো এরকম করলাম । ঐ রকম দাবী দাওয়া তো আমাদের ছিলনা, কেনো যে সবার সাথে মিশে গেলাম স্যার আমাদের বাচান।
আমরা মনে মনে বলি আমরা তো তোমাদের কেউ না, তোমাদের বাচাতে পারে নুরুল কবিরের মত বুদ্ধিজীবিরা।সেই সকল বুদ্ধিজীবিরা যারা- "সেনাঅফিসারদের যখন হত্যা করা হচ্ছিল,যখন অফিসারদের পরিবারের স্ত্রীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হচ্ছিল,যখন অন্তসত্তা নারীর পেটে গুলি চালানো হোয়েছিলো, যখন নিস্পাপ শিশুদেরকে বেয়োনেটের মুখে বন্ধি রাখা হয়েছিলো" তখন যারা সেনাবাহিনীর বিষোদাগার নিয়েই ব্যস্ত ছিলো। তোমাদেরতো বাচাবে সেই বুদ্ধিজীবিরা যারা সেই মুহুর্তে টিভি চ্যানেলে নিজেদের অপরিসীম বুদ্ধির সাগরে বিডিআর জওয়ানদের বণ্চনা থেকে মুক্তির জাহাজ ভাসাচ্ছিলেন।তোমাদেরতো বাচাতে পারবে সেই সব ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া যারা মৃত্যু পথযাত্রী কোনো এক নারীকে হত্যায় তোমাদেরকে সহযোগীতা করেছিলো, যখন কেউ মোবাইলে কল করে বাচার জন্য সাহায্য চাচ্ছিলো, তখন যেই মিডয়া তা প্রচার করে টিভিতে দেখিয়ে জানিয়ে দিচ্ছিলো তোমাদেরকে, কোথায় আছে সেই জীবন ভিখারী মা, বোনেরা যাদের তোমরা খুজে বের করে তাদের মাংস খেয়েছো।এই গণতন্ত্রের প্রতীক অবাধ তথ্যের মিডিয়াই তোমাদের বান্চনা থেকে মুক্ত করবে, তোমাদের স্বাধীনতা এনে দিবে।
বাংলাদেশের যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে গিয়ে দাড়িয়েছে এই সেনাবাহিনী, কোনোদিনো পিছপা হয়নি, আজ সেনাবাহিনীর দুর্যোগের দিনে মানুষ সেনাবাহিনীর গায়ে থুথু মেরে হেটে গিয়েছে। এতোগুলো সেনাকর্মকর্তার হত্যা যেনো আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষের মনে প্রতিশোধের আগুন নিভিয়ে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে।কেউ কোনো দিন জানতে চায়নি যে অভিযোগ গুলো বিডিআর এর জওয়ান রা তুলেছিলো সেগুলো সত্য কিনা।
কেউ জানতে চায়নি এর উদ্দেশ্য কি দাবী পূরন করা নাকি দেশের কিছু অমূল্য সম্পদকে আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে শত্রুর কাছে আমাদেরকে দুর্বল করা।
যখন আমাদের চোখের সামনে আমাদের শ্রদ্ধেয় অফিসারদের ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হচ্ছিল তখন সেই হত্যায় সুযোগ দিয়ে আমরা রক্ষা গণতন্ত্র রক্ষা করছিলাম।
যখন হত্যাকারী বর্বরেরা তাদের উদ্দেশ্য সফল করা শেষ তখন বর্বদের মায়ের নির্দেশে আমরা পিলখানা বিডিআর সদর দপ্তরের বাতি নিভিয়ে পুরো এলাকা অন্ধকার করে বর্বদের পালিয়ে যেতে দিয়ে আরো একবার গণতন্ত্র রক্ষা করেছি।গণতন্ত্রের জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি বর্বদের মাকে।
আমরা বোধ হয় গণতন্ত্রের কৃতদাস। গণতন্ত্রের আচলে সবার গণতন্ত্র থাকলেও ওই কৃতদাসদের নেই। ৭১রে আমাদের প্রকৃত বুদ্ধিজীবিদের রাজাকারেরা হত্যা করেছিলো, আজ আমাদের পথপ্রদর্শকদের কারা হত্যা করেছে বলতো???