somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বোকা মেয়ের ডায়রী.. .. ..২২শে ফেব্রুয়ারী,২০০৯

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১২:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ বিশাল একটি শব্দ উপহার দিলে তুমি আমাকে। বিশাল একটি শব্দ,ভীষণ রূঢ় একটি শব্দ।
"বেশ্যা" !!!
কি অবলীয়ায় তুমি উচ্চারণ করলে আমার অস্তিত্বের সাথে এই শব্দটি। মাত্র একটা শব্দের ব্যবহারে কত সহজে প্রেমিকা থেকে প্রস্টিটিউট হয়ে গেলাম আমি।এবং আজ বুঝতে পারলাম যে তোমার সেই প্রিয়তম বন্ধুটি ঠিকই বলেছিল। সত্যিই আমার নামের সাথে এই বিশেষ শব্দটি ব্যবহার করো তুমি।
আমার অপরাধ???
আমার অপরাধ ‘বোকা মেয়ের ডায়রী’ শিরোনামের এই লেখা।তোমার সম্মান বিনষ্টের ষড়যন্ত্র মূলক প্রয়াস এটা আমার।আমি তো বেশ্যা,তাই জীবনের বাজারে তোমার বিখ্যাত নামটা বিক্রি করে ব্যবসা করছি,নিজের অভিজ্ঞতা বিক্রি করছি লেখালেখির দুনিয়ায়।(একটু কষ্ট করে লেখা গুলো সব পড়ে দেখো,কোথাও তোমার নাম-পরিচয় পাও কিনা!! হতে পারি আমি খুব খারাপ কেউ,কিন্তু নিজের সবচাইতে ভালোবাসার মানুষটাকে বদনাম করার কাজ আমার মত খারাপ মানুষকে দিয়েও হবে না!)
যদি তাই-ই হয়ে থাকে প্রিয় রাজপুত্র,তাহলে তো আপনার চোখে এই পৃথিবীর সমস্ত লেখকেরাই বেশ্যা।তাই না???লেখকের অশ্রু পৃথিবী দেখতে পায় তার কলমের সাহায্যে। তার দহন অনুভব করে,সুখের স্পর্শ পায়,যন্ত্রণার কারণ বোঝে ।
আমি লেখক হতে পারিনি আজও,তবু আশ্রয় খুঁজেছি কলমের কাছেই সবসময়।আর আজ সেটাই আমার সবচাইতে বড় অপরাধ।
কিন্তু না,আপনি ঠিকই বলেছেন। যে শব্দটি আমার ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন,আমি ঠিক সেটাই। নিঃসন্দেহে সেটা!!!
কেন জানেন???
কারণ আমি আপনাকে ভালোবেসেছি। আপনার কুৎসিত তম ব্যবহারেও কোনোদিন মুখ ফেরাইনি আপনার থেকে।আমাকে নিঃসঙ্গতম করে রেখে চলে গেছেন আপনি বারবার-নতুন সঙ্গীনীর মাঝে সুখের অন্বেষন করতে। আর নির্বোধ আমি অপোই করে গেছি সবসময়।অন্য কারও সাথে নিজেকে বিনিময় করার কথা ভাবনাতেও স্থান দেইনি,আপনাকে ঠকাবার চিন্তা স্বপ্নেও আসেনি আমার। আপন দহনে নিজে জ্বলেছি অর্হনিশ,তবু আপনাকে ভুলে যাইনি একটি মুহূর্তের জন্যেও।কংক্রীটের এই নগরীতে কংক্রীটের মানবী হতে পারিনি এই বোকা আমি।
আর এসব করতে পারিনি বলেই আজ আমি “বেশ্যা”আপনার কাছে।বলতে পারেন-আপনাকে বোকার মত ভালোবাসার বিনিময়ে কি মূল্য নিয়েছি আমি আপনার থেকে?কি মূল্য নিয়েছি আমি যে আজ আমাকে “বেশ্যা” হতে হলো?
ওহহো,নিয়েছি তো! কত কিছু নিয়েছি!
আমার ভালোবাসার বাক্যের জবাবে নেট থেকে ডাউনলোড করা প্রেমপত্র নিজ হাতে লিখে দিয়েছেন আপনি।
একটা পেনস্ট্যান্ড,একটা পুতুল,চারটা গোলাপ।
একটা পাঁচ টাকার কয়েন,আপনার ব্যবহার করা একটা টিস্যু পেপার।
আপনার বন্ধ হয়ে যাওয়া হাত ঘড়িটা,বাতিল ঘোষনা করা মানিব্যাগটা।আর কিছুদিন আগে আপনার সেই শালটা।আমার সবচাইতে প্রিয়,কেননা সেই শালের শরীরে আপনার সৌরভ খুঁজে পাই আমি।
আরও নিয়েছি.. .. ..
আপনার জীবন থেকে সহস্র সহস্র মুহূর্ত।অসংখ্য এস.এম.এস। এমনকি আপনার কতগুলো ছবিও। এবং সবশেষে-- আজকের এই বহুমূল্য শব্দটা।
হ্যা,সত্যিই অনেক কিছু নিয়ে ফেলেছি!
আমার ভালোবাসার মূল্য ভালোই শোধ করেছেন আপনি।যেভাবে আপনি করেছেন,আর কেউ করতে পারতো কিনা সন্দেহ।এজন্যেই হয়তো আপনার অধিকার জন্মেছে আমাকে এই বিশেষ নামে সম্বোধন করার।
শেষ এস.এম.এস-এ আমাকে মরতে লিখেছিলেন.. .. ..
তবে তাই হোক রাজুপত্র!! আমার বিধাতার কাছে প্রার্থণা করবো আমি স্বয়ং-যেন পূরণ হয় আপনার এই ইচ্ছাও। কিন্তু যতদিন বেঁচে আছি,বাঁচার মতো করে বাঁচবো। নিজের দোষ-ত্রুটি দুনিয়ার চোখ থেকে আড়াল করে কাপুরুষের মতো বাঁচবো না,হিপোক্রেট হয়ে বাঁচবো না। এবং প্রার্থনা করবো প্রতিদিন.. .. .. আপনার ইচ্ছা পূরনের জন্যে।
জিতে গেছেন আপনি আজ। ভালোবাসার এই দাবায় আপনি জয়ী,আমি পরাজিত।আর কোনোদিন আমার আওয়াজ পৌছাবে না আপনার শ্রবণ সীমা পর্যন্ত, আর কখনও অসময়ে কেউ ফোন করে প্রশ্ন করবে না-“কি করো?”আপনার বকাবকির জবাবে কেউ আর বোকার মত হাসবে না।
আপনি জয়ী ভালোবাসার ফ্রন্টে,আমি পরাজিত। নিজের ভালোবাসার কথা যেমন চিৎকার করে স্বীকার করতে পারি আমি,পরাজয়ের কথাও পারি।আর এও বলতে পারি যে এত কিছুর পরেও আমি আপনাকে.. ..
থাক,সেই কথাটা। না হয় না-ই বললাম! আমার মুখে বাক্যটা আর শোভা পায় না। কেননা কেবল একজন “বেশ্যা” আমি আপনার জীবনে!!!


কিন্তু একটা কথা কি জানেন??
আপনার প্রতি আজও কোনো রাগ হচ্ছে না আমার,এমনকি ঘৃনাও নয়।যদি থেকে থাকে কিছু,তার নাম বোধহয় অভিমান।আর কষ্ট.. .. ..ভালোবাসার কষ্ট।কেন যেন এই জীবনে আপনি আমাকে একটুও বুঝতে পারলেন না!
এই লেখাটি প্রকাশিত হবার সাথে সাথেই আপনার উপহার দেয়া শব্দটি মুছে যাবে আমার অস্তিত্বের শরীর থেকে। শব্দটির আঘাত নয়, থাকবে কেবল কখনও না পূরণ হবার মত ত । বোকা মেয়ের নিবোর্ধ ভালোবাসাই আজ তাকে রা করবে ঘৃনার গ্লানি থেকে।
কিন্তু আপনার কি হবে?
কি করে বহন করবেন আপনি এত ভারী শব্দের দায়ভার?? যদি বিবেকবান মানুষ হয়ে থাকেন,তাহলে যে এই ভীষণ শব্দটা চিরকাল আটকে থাকবে আপনার বুকের মাঝে!!!

ভালো থাকুন আপনি রাজপুত্র।আমার সমস্ত সুখের বিনিময়ে কেবল আপনি ভালো থাকুন।


১৮টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×