somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাচা

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

করিম চাচা, কিপট্যা টাইপের সবার সাথে অমায়িক ব্যবহার করেন কারো সাথে চাচার ঝগড়া লাগে না তেমনি একটা ঘটনা, সুরুজ একটা মাঝারি আকারের লাউ (কদু) নিয়ে বাজারের দিকে রওয়ানা দিছে পতিমধ্যে চাচার সাথে দেখা, সুরুজ বলল, স্লামালেকুম চাচা,
চাচা : সালাম তো দিবে ব্যাটা, মুরব্বীকে তো সালাম-ই দিতে হয়। তা কই যাও।
সুরুজ : চাচা বাজারে যাই লাউ বেঁচতে।
চাচা : তর লাউ তুই তো বিক্রি করবি।
সুরুজ : তাইলে চাচা যাই?
চাচা : যাবি তো সময় কি বইস্যে আছে, যা যা।

সুরুজ বাজার থেকে ফিরতে ফিরতে বিকেল হয়ে গেল, রাস্তায় আবারও চাচার সাথে দেখা। দেখেই সুরুজ বলল, জানেন চাচা কি ঘটনাই ঘটল!
চাচা : কি হইচ্যা?
সুরুজ : আমি লাউ নিয়্যা বসলাম, একজন খরিদ্দার আইসা জিগাইলো দাম কতো?
চাচা : জিগাইবো না?
সুরুজ : আমি কইল্যাম দশ টাকা।
চাচা : তর লাউ তুই তো দাম কবিই।
সুরুজ : খরিদ্দার কইলো, তিন টাকা।
চাচা : খরিদ্দারের তো কিছু কওনের আছে।
সুরুজ : আমি কইল্যাম, তর বাপে লাউ কোনদিন খাইছো?
চাচা : এমন দাম কইল্যে তুই কইব্যি।
সুরুজ : শুইন্যা ব্যাটা আমারে চড় মারলো।
চাচা : বাপ তুইল্যা কথা কইল্যে কি ছাইড়া দিব?
সুরুজ : আমি জোরে একটা চড় দিলাম।
চাচা : তরে মারছে তুই কি ছাইড়্যা দিবি?
সুরুজ : এরপর পুলিশ আইলু
চাচা : মারামারি করল্যে তো পুলিশ আইবুই।
সুরুজ ; আমারে ধইরা থানা নিয়া গেল।
চাচা : পুলিশে ধরল্যে থানায় তো নিবই।
সুরুজ : কিন্তু বেশীক্ষন রাখলো না ছাইড়্যা দিল।
চাচা : ছাড়তে হইবো, পুলিশ ব্যাটা কি জানেনা তুই করিমের ভাতিজা।

চাচার এমন অনকে ঘটনা আছে, আরেকদিন চাচা বাজারে গেছে লুঙ্গি কিনতে, দশ টাকা দিয়া লুঙ্গি কিনে সেটা তিন বছর পড়ার পর ছিড়ে গেল চাচা সেটা কেটে গামছা বানাল। মাস তিনেক পর এইটাও ছিড়ে গেল, চাচা পরে টুপি বানাল, ঐটাও ছিড়ে গেল, এবার রুমাল বানাল এটা ছিড়ে যাবার পর চাচা সেটাকে পোড়াল এবং সেই ছাই দিয়ে দাঁত মাজতে মাজতে পুকুর পারে গিয়ে কুলি করল এবং মাথায় হাত দিয়ে বসে রইল, এই পথ দিয়ে সুরুজ যাচ্ছিল, চাচাকে বলল- চাচা, মন খারাপ নাকি? চাচা বলল- ভাতিজারে আর বলিস না, আমার দশটা টাকাই জলে গেল!

চাচায় ছোটবেলার গল্প শোনায়- আমারে নিয়া ছফিনা বো গেছি ক্ষেতে, ছফিনা বো আমারে নিয়া পাটক্ষেতে ঢুকলো, ইয়া লম্বা লম্বা পাঠ দাড়াইলে দেখা যায় না। আমি কই ছফিনা বো পাটক্ষেতে কির লাইগ্যা যামু, বো কয়- আয় পরে বুঝবি। কিছুক্ষন পর বাইরে পাটের লড়ন চড়ন দেইখ্যা মধু মিয়া কয়- পাটক্ষেতে কেডা রে? আমি কই- আমি আর ছফিনা বো ঘন পাতা বাছি। (দুঃখিত বাকিটা অপ্রকাশিত চাচা বলে নাই)

বছর দশেক আগে চাচার বাবা মারা গেল, চাচায় তো কাঁদতে কাঁদতে বিনাশ। সবাই স্বান্তনা দিল, কাইন্দ্যে না আমরাই তোমার বাপ, চাচা শান্তি পাইয়া কান্না বন্ধ করলো, পরের বছরই মারা গেল চাচার মা, চাচায় তো দিশেহারা, চিৎকার করতে করতে কইলো আমার মায় নাইরে আমার মায় নাই। সবাই আবার স্বান্তনা দিল আমরাই তোমার মা কাইন্দো না। চাচার কান্না শেষ। দুই বছর পর চাচার বউ গেল মারা, চাচায় কান্দে আর কান্দে, একদিন দুইদিন এইভাবে এক সপ্তাহ। সবাই কয় করিমের বাবায় মরলো, মায় মরলো করিমরে তো এতো কাঁদতে দেখি নাই এখন দেখি বউয়ের জন্য্ এতো কান্না? ও করিম বউয়ের লাইগ্যা এতো মায়া? চাচায় কয়- দূর এসব কিছু না আমার বাবা মরল সবাই কইল আজই থাইক্যা আমরা তোমার বাবা, মায় মরলো সবাই কইল আইজ থাইক্যা আমরা তোমার মা, কিন্তু আমার বউডা মরলো কেউ এখনও কইলো না- আইজ থাইক্যা আমি তোমার বউ!
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×