somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হোয়াই ভায়াগ্রা...? (আব্‌জাব)

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ ইহা আব্‌জাব লেখা, পাকনা পুলাপাইন ছাড়া আর কেউ পড়লে এই লেখক দায়ী নয়।

মাথার চান্দির কাছে পাকাচুলটা নিয়ে আমার গর্বের শেষ নেই। একে ওকে ডেকে বলি, দেখতো মাথায় কিছু দেখিস কিনা? কেউ তাকায় কেউ তাকায় না। তবে আসল জিনিস কেউ খেয়াল করেনা। তখন নিজেই টেনে টুনে বের করে দেখাই। বলি, এই দেখ পাকাচুল, উইজডম হেয়ার! শোনার সাথে সাথে কেউ নিজের মাথার পাঁচটা কেউ দশটা উইজডম হেয়ার দেখিয়ে দেয়। আমার চেয়ে তাদের উইজডম যে পাঁচদশ গুন বেশি তার হাতে নাতে প্রমান! তাতে কি, কিছু উইজডম যে আমারো আছে সেইটা দেখিয়ে গর্ব করতে তো কোন দোষ নেই। তাই পাকা চুল নিয়ে আমার এই হম্বিতম্বি চলতেই থাকে।

কিন্তু আমার যা পোড়া কপাল, তাতে সুখ বেশিদিন সহ্য হবার নয়। অনেকে হয়তো এই কপাল চাপড়া চাপড়ি দেখে আমাকে অদৃষ্টবাদী ভেবে বসবেন। কিন্তু দোষটা কিন্তু আসলেই কপালের! নাইলে এই জ্বলজ্যান্ত পঁচিশ বছর বয়সে কেন হুঠ করে কপালের গ্রোথ হরমন নিঃসৃত হবে? আর কপাল বেটা কেন আর সবদিক ছেড়ে আমার সেই উইজডম হেয়ারের দিকে হাত বাড়াবে? প্রতিদিন রাতে কপালের সাথে চান্দির সম্মুখ সারির চুলদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। সকালে ঘুম থেকে উঠে বালিশের উপর পড়ে থাকা লাশ গুনি। হতাহতের সংখ্যা হিসাব করি। আমার উইজডম হেয়ারকে আর কতদিন এরা রক্ষা করতে পারবে এই সর্বগ্রাসী কপালের কবল থেকে কে জানে? তবুও ভুলভাল অনুমান করি। তারপর একসময় ছোটবোনের ঘরে গিয়ে তার ড্রেসিংটেবিলের সামনে মুখ চুন করে বসে থাকি।

আমার এই দুর্দশা দেখে ওর বুঝি মায়া হয়। একদিন দেখি একটা তেলের বোতল নিয়ে হাজির! সেই তেলের রঙ লাল টুকটুকে। ‘স্বপ্নে পাওয়া দৈব রেসিপিতে এই তৈল প্রস্তুত করিয়াছেন একজন স্বকবিরাজ’! ‘স্বকবিরাজ’ কী বস্তু কে জানে? তবে প্যাকেটের গায়ের লেখা থেকে জানা যায়, এই লোক কোন যেনতেন লোক না। রীতিমত ‘রবিন্দ্র পুরষ্কার প্রাপ্ত”!! বোনের কোন বন্ধুর খালা নাকি এই তেল মেখে ব্যপক উপকার পেয়েছে। তাই আমার যুদ্ধজয়ের জন্যেও সে এই তেল নিয়ে হাজির।

আমি সারাজীবন করলাম বিজ্ঞান সাধনা! তার পর এখন কি এই স্বপ্নে পাওয়া তেল মাখবো!! প্রচন্ড আক্ষেপের সাথে এই কথা যেই বলেছি বন্ধুদের সাথে। কোথায় তারা ‘ঠিক্‌ ঠিক্‌’ বলে উৎসাহ দেবে। তা না বলে, ‘দোস্ত আমিও বড় বিপদে মধ্যে আছি, এইসব যুদ্ধবিগ্রহ নিয়ে। তুই যদি উপকার পাস তাইলে আমারেও দিস কইলাম’! আমি বলি, যাহ্‌ শালা তোদের উইজডম হেয়ার বেশি থাকলে কি হবে, তোরাতো মোরালি ডেড’ ।

যাই হোক, আমি তো আর ছেড়ে দেওয়ার পাত্র না। অনেক গুগল টুগল করে, উইকিপোকা ঘেটে বের করলাম যে চুলদের শক্তি বাড়াতে লাগবে ‘ভিটামিন ই’। তারপরই পাড়ার ফার্মেসি থেকে কয়েকপাতা ‘ই-ক্যাপ’ কিনে হাজির হলাম বাসায়। প্রতিরাতে একটা ইক্যাপ সাবাড় করি। মৃতের সংখ্যা বাড়ে নাকি কমে, ঠিক বোঝা যায় না। তবুও আমি আমার অধ্যাবসায় চালিয়ে যেতেই থাকি। মাস খানেক পার হয়েছে। এমন সময় সেই বন্ধুদের একজন বলে, দোস্ত কি অবস্থা? দৈব তেলে কি কাজ হয়? আমি বলি, আরে নাহ্‌ অইসব দৈবটৈব ব্যপারে আমি নেই। আমি খাচ্ছি ‘ই-ক্যাপ’ মানে ভিটামিন-ই। আরে হালায় করচস কি? মালদার হয়ে যাবি তো। আমি বলি, মালদার আবার কি?... বুঝবি বুঝবি, সময় মত বুঝে যাবি।

সেদিন গেছি চোখের ডাক্তারের কাছে। রুটিন চেকআপ। ডাক্তার আমার চোখ টেস্ট করার জন্য তার যন্ত্রপাতি ঠিক ঠাক করছে। এমন সময় দেখি তার টেবিলে প্যাডের গায়ে ওষুধের বিজ্ঞাপন। হোয়াই ভায়াগ্রা? হোয়াই নট ই-ক্যাপ আমি তো নড়েচড়ে বসি। আরো এগিয়ে গিয়ে পড়ে ফেলি বাকিটা। হোলি ক্রাপ...! ভিটামিন-ই তে এইসবও করে নাকি? খাইসে!! সাথে সাথে গত এক মাস ব্যাপি আমার যে অতিরিক্ত ভয়াবহ ‘মর্মবেদনা’ তার কারণ ব্যখ্যা বিশ্লেষণ সহ ক্লিয়ার হয়ে যায়।

বাড়ি ফিরে এসে হন্তদন্ত হয়ে সেই দৈব তেল বের করি। সেখানে লেখা ‘চুল পড়া বন্ধ করে, চিন্তাশক্তি বৃদ্ধি করে, মাথা ঠান্ডা করে...’। তাড়াতাড়ি বোতল খুলে দিই মাথায় ঢেলে। ভুর ভুরে তীব্র গন্ধে ভরে যায় চার দিক। মেনথল দেওয়া আছে মনে হয়।

চুল এর কিছু হোক বা না হোক, মাথা তো ঠান্ডা হোক! এ কদিন চিন্তা শক্তির উপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে চলেছে, সে ঝড় অন্তত কিছুটা কমলেও হবে...

বিদায়।

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ(বাকি অংশ)- এই আব্‌জাব পড়ে দয়াকরে কেউ ভায়াগ্রা ছেড়ে ইক্যাপ ধরবেন না। এইটা নিতান্তই ভাইটামিন
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:৫২
৩৬টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×