somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্র রাজনীতি, সামাজিক নোংরামি আর স্বপ্ন দেখার পাঁচালী...

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকাল জীবন কেরম জানি হতাশাগ্রস্ত থাকে...সমস্যাটা ধরতে অবশ্য খুব বেশী সময় ব্যয় করতে হয় না। রুটি-রুজির চাপে যখন আমলাতান্ত্রিকতায় গা ভাসাইতে হয় দিন দিন প্রতিদিন, তখন এর চাইতে আর কি ভালো চাইতে পারি মননের কাছে! তবুও যেহেতু পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়া বাঁচি...তাই হতাশারে ডিলেমা'র মতোন লাগে।

আজকের প্রথম আলো পত্রিকার স্টান্টবাজী দেখনের পর মনে হইলো কিছু একটা লিখি...লিখনের ক্ষমতা ছাড়া আর সবটাইতো হারাইছি প্রায়। যদিও অনেক অনুভূতি আছে, যারে শব্দে আনতে গেলে অনেক বড় কইলজা লাগে...নিজের কলিজা নিয়া সংশয় তৈরী হইছে দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত চর্চায়! আরো অস্বস্তি আছে হতাশার বোধ নিয়া, নিজের হতাশাগুলিরে একান্ত গোপন রাখনের চেষ্টা করি প্রতিনিয়তঃ, এরে যদি হিপোক্রিসি কয়...তবে আমি হিপোক্রিট...তবুও হতাশার সঞ্চারন চাই না

প্রথম আলো পত্রিকার বিশেষ সংস্করনে ছাত্র রাজনীতির হালচাল শিরোনামে বাংলাদেশের ছাত্র নামধারী গুন্ডাগো হাল হকিকত, তাগো সন্ত্রাস আর নৈরাজ্যের তালিকা প্রণয়ন করা হইছে। বাঙালীর মানস চেতনায় যেই ছাত্র রাজনীতি বিরোধী কপট ইমেজ লিপিবদ্ধ হইতেছে তারে আরো খানিকটা চাঙ্গা করা করা ছাড়া আর কোন উদ্দেশ্য আছে বইলা আমার পর্যবেক্ষণে ধরা খায় নাই। ছাত্র রাজনীতি বলতে আমরা যা বুঝি সেইটারে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করনের এই অপচেষ্টা গতো দুই দশক ধইরাই সুশীল নামধারী এই অংশ চালাইয়া যাইতাছে অকপট। সমাজের সংস্কৃতি মতোন গাইড়া বসা সন্ত্রাসের বিস্তার ছাত্র পেশার মানুষের মধ্যেও ঘটতেছে, এই চিত্র আমার কাছে কোন বিশেষ প্রপঞ্চ বইলা অনুভূত হয় না। যারা স্কুল কলেজে যায় তারা নিশ্চিত শুদ্ধাচারের কোন ব্রত নেয় না তাগো প্রতিষ্ঠানে। যখন রাষ্ট্র নাম প্রতিষ্ঠানই সন্ত্রাসীগো লালন করে, যখন সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্রের নির্বাহী আর আইনী সদস্য নির্বাচনে ভূমিকা রাখে তখন কেবল ছাত্রত্ব পারে না সন্ত্রাসী হিসাবে বাইরা উঠনের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করতে...এইটা আজকের যূগে দিবালোকের মতোন সত্য...

যদি আমরা মনে করি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একটা পবিত্র জায়গা সেইখানে সন্ত্রাসীগো ঠাই নাই তাইলেই কি সন্ত্রাসের সঞ্চারন সেইখানে নিষিদ্ধ হইয়া যাইবো!? আমার কোন আস্থা নাই এই চিন্তায়...সঠিক শিক্ষা কিম্বা সামাজিক বৈষম্যের সমাপ্তি ছাড়া কোনদিন একজন ছাত্রের সন্ত্রাসী কার্য্যকলাপে অংশগ্রহণ আমরা ঠেকাইতে পারুম না, এই বিষয়ে আমি সুনিশ্চিত। আমার এই চিন্তার পক্ষের যুক্তি বচনটাও অনেক গভীরতা ডিজার্ভ করে না...খুব সহজে কইতে পারি...একজন ছাত্রের পাশ দিয়া যখন একজন চোরাকারবারী কিম্বা একজন ভাড়াটিয়া কিলার লেটেস্ট মডেলের গাড়ি হাকাইয়া যায় তখন সেই ছাত্রের প্রাণে কোন মন্ত্রণা বাজবো বইলা আমরা প্রত্যাশা করি!? যেই ছাত্রের ভবিষ্যত কেবল প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মধ্য দিয়াই নিশ্চিত হওনের কোন সম্ভাবনা তৈরী করে না, তারে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড থেইকা নিবৃত্ত করনের কৌশল তবে কি?

ছাত্র রাজনীতি বইলা যখন এইসব ভাড়াটিয়া গুন্ডাগো আমরা জাস্টিফাই করি তখন আমাগো চেতনায় কোন কাপালিক নাঁচে!? তখন কি আমাগো মনে পড়ে না, যে ছাত্র সমাজের রাজনৈতিক চেতনার বিচ্ছুরনেই ছাত্র নামক সন্ত্রাসীরা অতীতে কেমনে ঝইরা পড়ছে ইতিহাসের তালিকা থেইকা!? তখন কি আমরা দেখতে পাই না যে, ছাত্র আন্দোলনের কারনেই পাঁচপাত্তর-আওরঙ্গ-অভি-নীরুরা এই দেশের ক্ষমতা বলয় থেইকা বিচ্যূত হওনের পথে গেছে! পুরাপুরি ভিজ্যুয়ালাইজ করনের পথে বাধা হয় আমাগো ক্ষমতার কাড়াকাড়িতে লিপ্ত থাকা রাজনীতিবিদগো অপকৌশল...তারা তাগো ক্ষমতার কামড়াকামড়ির হাতিয়ার হিসাবে সন্ত্রাসীগো নির্ভরতা খুঁজে...তারা বাঁচাইয়া রাখে তাগো অভীপ্সা...তারা সন্ত্রাসীগো ক্ষমতার সহচর পর্যন্ত বানাইয়া ফেলে...যারে কয় ছাত্র রাজনীতি, সেই ছাত্র রাজনীতিরে কোতুককর কইরা উপস্থাপিত করনের চক্রান্তে তারা নামে পুরাদমে...যারে তারা ভয় খায়...যার প্রসারণে তাগো মসনদের ভীত নইড়া যাওনের সমূহ লিপি উৎকীর্ণ থাকে...

সমাজের মধ্যে সকল অপরাধের শিকড় রাইখা আমরা কেমনে প্রত্যাশা করি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রওয়ানা দেওয়া স্কুল বালকের ব্যাগে একটা পিস্তল থাকবো না!? পিস্তলতো কোন মুদির দোকানে বেচে না! স্কুলের পাঠক্রমেতো পিস্তলের কোন ব্যবহারিক প্রয়োগ নাই! তবে কোত্থেইকা এই আগ্নেয় অস্ত্র আসে!? এই অস্ত্র কি দুর্লভ সমাজের করিডোরে? আমি এক্কেরেই তা মনে করি না। ছোটবেলায় জানতাম আমার মহল্লাতেই অস্ত্র ভাড়া দিতো কমপক্ষে দুইজন অস্ত্রের মালিক...সেই অস্ত্রের জিম্মাদার হইতো লোকাল পুলিশ আর স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা...সেই অস্ত্র যাইতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, সেই অস্ত্র যাইতো ব্যর্থ প্রেমিকের হাতে, সেই অস্ত্র যাইতো চান্দাবাজ মাস্তানগো হাতে...তাইলে এই সন্ত্রাসের লেইগা দায়ী আসলে কারা?

ক্ষমতার লড়াইয়ে যারা থাকে এই বৈষম্যমূলক সমাজের নিশ্চয়তা বিধানের কল-কাঠি নিয়া তারাই সন্ত্রাসের মূল হোতা...এই দেশের সন্ত্রাস হটাইতে যদি যথার্থ সদিচ্ছা থাকে আওয়ামি-বিএনপি কিম্বা জামায়াতি কারো...তাইলে এই সন্ত্রাস নির্মূল হওনটা এক্কেরেই কয়েক মুহুর্তের ব্যাপার...

বৈষম্যমূলক সমাজের প্রধান বৈশিষ্ঠ্য দুর্নীতি...এইটাই হইলো মোদ্দা কথা...তার বিপরীতে নীতি-আদর্শের ছাত্র রাজনীতিই কেবল পারে দিক নির্দেশনা দেখাইতে...কারন এই ছাত্রগোই আছে চিন্তার পরিসর...এই ছাত্ররাই যুক্তি করতে শিখে পাঠ্যক্রমে...

২.
বাবুয়া নামক এক ব্লগাররে নিয়া দেখলাম তুলকালাম হইছে গতো কাইল...তার একটা মুইছা দেওয়া মন্তব্য পাইলাম হাসিবের ব্লগ পোস্টে। সেইখানে সে তার বিরুদ্ধে যাওয়া দুইজন মানুষের শারিরীক বৈশিষ্ট্য নিয়া হাসি ঠাট্টায়রত হইতে চাইছে...একজন নারীরে নিয়া করা তার বিদ্রুপতো আছেই, উপরন্তু সে একজন পুরুষের চেহারা নিয়াও নোংরামিতে লিপ্ত হইছে...আমার কাছে বিষয়টারে খুব অ্যালার্মিং লাগছে...সমাজের এই নোংরামি এমন প্রকাশ্যে দেখনের দুর্ভাগ্যতো প্রতিদিন হয় না!

৩.
আসলেতো আশাবাদী মানুষ আমি! জানি আর মানি পরিবর্তন সম্ভব...প্রয়োজন কেবল মানুষের গর্জন আর তীব্র প্রতিবাদ...সন্ত্রাসীরা চিরকালই গুটিকয়েক...ভূক্তভোগী কোটি মানুষের তোড়ে তারা ভাইসা যাইবো এই স্বপ্ন দেখনের চেষ্টা করি অতএব...স্বপ্নটাই কয়দিন ভালোমতোন দেখার চেষ্টা করি না ক্যান...


সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:১১
১২টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×