somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্বিতীয় বিবাহ..থুক্কু..বিবাহের দ্বিতীয় কিস্তি

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেষ পর্ব-
:Dএতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন যুথি আমার প্রেমিকা। আমার নিধর্নী প্রেমিকা। অবশ্য সব প্রেমিকের কাছেই তাদের প্রেমিকারা ভালবাসার সম্পদে ধনী। কিন্তু হীরার প্রসঙ্গ আসার পর থেকে কেন জানি ভালবাসার সম্পদে মন ভরছে না। ভালবাসার সম্পদের সাথে সাথে অর্থসম্পদও যে জরুরী তা যেন একটু একটু করে বুঝতে পারছি।
ঢাকায় জীবনযাত্রা এত ব্যয়বহুল যে প্রতিমাসে বড়ভাইয়ের পাঠানো আড়াই হাজার টাকায় আমার কিছুই হয় না ;যদিও থাকি হলে এবং অন্যান্যদের মত সিগারেট খাই না।
সে কারণেই মাত্র একটা টিউশনি করাই যেখানে আমার বন্ধুবান্ধবেরা দুটোর নিচে করায়ই না। আর যুথির সাথে প্রেমটা আমার হয়েছে এই টিউশনি করাতে গিয়েই।
আপনারা হয়তো ভাবছেন যে যুথি আমার ছাত্রী। ব্যাপারটা একটু অন্যরকম।যুথি আমার ক্লাস টু শর্মির এর ছাত্রীর একমাত্র ছোটখালা। সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি পিতা মারা যাওয়ায় এবং কোন বড় ভাই না থাকায় সে তার বোনের সংসারে থাকে এবং জগু বাবুর পাঠশালা অর্থাৎ জগন্নাথ কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স পড়ে। সে অবশ্য এর আগে তার মা এবং ছোট ভাইয়ের সাথে মামার বাড়িতেই থাকত কিন্তু সেখানে মামাত ভাইদের অসদাচরণ এবং পরবর্তীতে জগন্নাথে চান্স পাওয়ায় এবং স্বল্পবেতনে অগ্রণী ব্যাংকে চাকরিরত তার একমাত্র দুলাভাই মানুষটাও ভাল হওয়ায় সে বড়বোনের সাথে ঢাকায় থাকছে।
ছাত্রী পড়াতে যেয়ে ছাত্রীর খালার সাথে প্রেম হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। তবে যুথিকে ছাত্রীর বাড়িতে বার কয়েক দেখলেও ওকে দেখামাত্র প্রেম এমন কোন অনুভুতি আমার মধ্যে আসেনি। ছিপছিপ গড়নের শ্যামলা মেয়েটিকে দেখে হৃদয়ে হুলস্থুল পড়ে যাওয়ার মত কোন অবস্থা আমার হয়নি। বিশেষত যেখানে আমাদের সংখ্যা গরিষ্ট মেয়ে মেডিকেলে ফর্সা মেয়ের সংখ্যা নেহাত কম নয়। আর আমাদের দেশে ফর্সা মেয়েকেই সুন্দরী বিবেচনা করা হয়।
একদিন নীলক্ষেতে মেডিকেলের বই কিনতে যেয়ে দেখি অন্য পাশের দোকানে দাড়িয়ে যুথি বেশ মোটা সাইজের একটা বই দরদাম করছে। ও আমাকে খেয়াল করেনি। আর আগ বাড়িয়ে ওর সাথে কথা বলার মত কোন আগ্রহ আমার নেই। তবে দোকানদারের চড়া গলায় শ্লেষ্মাতক কথাবার্তা এবং যুথির মিনমিনে কন্ঠস্বর আমাকে আগ্রহী করে তোলে।
আমি এগিয়ে যেয়ে ওকে আড়াল করে ওর পিছনে দাড়াই দোকানীর চড়া কন্ঠস্বরের কারণ জানতে।
মধ্যবয়সী দোকানী যেন আমাকে পেয়ে তার নালিশ শোনানোর একজন লোক পায়।
দোকানী আমার উদ্দেশ্যে বলে ‘দেখেন তো ভাই এতগুলো বই ঘাটাঘাটি করে এত উচু র‌্যাক থেকে বই পেড়ে দেখানোর পর দরদাম সব ঠিক করার পর এখন উনি বলছেন বই নেবেন না। নেবেন না তো আগেই বলতে পারতেন। তাহলে এসব ফাজলামী করার কি মানে হয়?
যুথি লজ্জায় অধোবদনের কারণে আমাকে খেয়াল করে না। সে আবারও মিনমিনে কন্ঠে বলে ‘ বললাম তো ভুল হয়ে গেছে। আসলে আমি বই কেনার জন্য যে টাকাটা রেখেছিলাম সেটা ব্যাগে না ঢুকিয়ে চলে এসেছি। টাকা বের করতে যেয়ে দেখি টাকাটা আনা হয়নি।’ সে এক নিশ্বাসে এতগুলো কথা বলে ডান পাশে তাকাতেই আমার সাথে চোখাচোখি হয়।
সে কিছুটা লজ্জিত ,কিছুটা আনন্দিত কন্ঠে বলে ‘আপনি!
দোকানী একটু ঘাবড়ে গেল। সে আমাকে সাক্ষী মেনেছিল। আর এখন আমি মেয়েটির পরিচিত জেনে সে আশাংখা করতে লাগল ঝাড়ি খাওয়ার।
কিন্তু আমি নির্বিরোধী মানুষ। ঢোড়াসাপ!
আমি দোকানীর কাছে বইটার দাম জানতে চাইলাম। দোকানী দাম জানালে আমি ম্যানিব্যাগ থেকে টাকাটা বের করলাম। ভাগ্য আজ বেশ কিছু টাকা পকেটে ছিল!
যুথি না না করে বলল ‘আমি পরে এসে কিনে নিয়ে যাব। আপনি শুধু শুধু....’
সে বাক্য শেষ করার আগেই আমি বললাম ‘ এখন আমার টাকা দিয়ে বই কিনে নিয়ে যান। আজ বাড়ীতে গেলে টাকাটা দিয়ে দেবেন। তাহলেও তো হলো।’
সে কি বলবে বুঝতে না পেরে নিচু মাথা ঝাকিয়ে বলে ‘তা করা যায়।
বই কিনে আমরা নীলক্ষেত থেকে বেরিয়ে আসি। সে কোন কথা বলছে না দেখে আমিই কথা বলি ‘এখন কোথায় যাবেন? বাসায়?’
‘মানে.. হ্যা.. বাসায়।’ সে যেন অনিচ্ছাসত্ত্বেও বলে।
‘চলেন রাস্তার ওপারে যাই। ওখান থেকে বাসে উঠবেন।’ মেয়েটাকে বাসে তুলে দেয়ার দায়িত্ব অনুভব করি।
‘ আপনাকে বোধ হয় ঝামেলায় ফেললাম। টাকাটা দিয়ে হয়তো আপনি আপনার জন্য কোন বই কিনতে এসেছিলেন।’ যুথি এক নাগাড়ে এত গুলো কথা বলে থেমে যায় কথা বেশি বলে হয়ে গেছে বিবেচনা করে।
‘আমার বই পরে কিনলেও চলবে। আমি এদিকে প্রায়ই আসি। আপনার বোধ হয় এদিকে খুব একটা আসা পড়ে না।’
‘ না। কলাবাগান থেকে বাসে উঠে সোজা কলেজে চলে যাই এবং কলেজ থেকে আবার বাসায় চলে আসি। আজ বই কিনব বলে নেমে পড়লাম।’
‘এবং বই কিনতে যেয়েই বিপত্তি।’ আমি মেপে হাসলাম।
সে রাস্তার ওপারে যেয়ে তারপর বলল ‘ মানে ..আমি একটু ..পাবলিক লাইব্রেরী..
‘পাবলিক লাইব্রেরীতে যাবেন?’ আমি জিজ্ঞেস করি।
‘হ্যা..মানে .এদিকে তো নামা হয় না ,তাছাড়া বান্ধবীরা বলছিল একটা বইয়ের কথা.. কিন্তু আমি ঠিক লাইব্রেরীটা কোথায় চিনি না তো যদি একটু বলে দিতেন।
‘ঠিক আছে আপত্তি না থাকলে আমার সাথে রিক্সায় উঠে পড়–ন। আপনাকে লাইব্রেরীতে দিয়ে তারপর ওপাশ দিয়েই মেডিকেলে যাব।’
আমরা দুজনে পাশাপাশি রিকশায় বসি এবং জানিনা কোন অজানা কারণে মেয়েটিকে আমার ভাল লাগতে থাকে। আগেই বলেছি সে সুন্দরী নয় শ্যামলাবর্ণা এবং রোগাটে। কিন্তু আমি তার সবকিছুতেই মুগ্ধ হতে শুরু করি।
সে আমার কাছ থেকে ধার নেয়া টাকাটা দিতে দেরি করে। আমি অবশ্য চাপ দেই না। কিন্তু আড়াইশ টাকার মায়া ত্যাগ করার মত মনমানসিকতা তখনও অর্জন করিনি। হঠাৎ করে ওকে আবার একদিন দুপুরে আবিস্কার করি আমাদের মেডিকেলের কলেজ চত্বরে। যুথি আমার জন্যই অপেক্ষা করছিল। আমি দু’তিনজন বান্ধবীর সাথে বের হয়ে এসে ওকে দেখে বিব্রত বোধ করি। বান্ধবীরা ও কে জানতে চাইলে আমি ওকে আমার কাজিন হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেই এবং ও জগন্নাথে পড়ে শুনে ওরা আসস্ত হয় যে ঢাকা মেডিকেলের কোন ছেলে নিশ্চয় জগন্নাথের কোন টিপিক্যাল মেয়ের প্রেমে পড়বে না। ওরা ওদের হোস্টেলে চলে যেতেই আমি কিছুটা রুক্ষ্ কন্ঠে যুথিকে জিজ্ঞেস করি ‘আপনি হঠাৎ এখানে? কোন রুগী-টুগী আছে নাকি?
সে জড়িত কন্ঠে বলে ‘ন-না। এই পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। কি মনে করে জানি নেমে পড়লাম। ও আচ্ছা আপনার টাকাটা।’ বলে সে তার ব্যাগ থেকে টাকাটা বের করে আমার হাতে দিল।
টাকা তা সে যে ভাবেই আসুক,মন ভালো করার সবচেয়ে কার্যকরী ওষুধ। আমার মন ভালো হয়ে গেল। তাছাড়া বান্ধবীরা চলে যাওয়ায় এবং যুথি পাশে থাকায় বেশ ভালো লাগতে লাগল।
আমি বললাম ‘বাসায় যাওয়ার তাড়া আছে নাকি?
সে মৃদু কন্ঠে বলল ‘কেন?
‘না। এম্নি। ক্লাস শেষতো ভাবলাম আপনার যদি সময় থাকে তো কোথাও ঘুরে আসা যায়।’
যুথি হেসে সম্মতি দিল এবং ওর হাসিতে কি যাদু ছিল জানিনা ,বোধ হয় অমন সরল হাসি দেখেই আমি বুঝতে পারলাম আমার ভিতরে কিছু একটা হয়ে যাচ্ছে। একটা ছেলে একটা মেয়ের ভিতরে হঠাৎ কি দেখে যে প্রেমে পড়ে যায় সেটাই একটা রহস্য!
আমরা রিকশা নিলাম লালবাগ কেল্লা যাওয়ার উদ্দেশ্যে। ও কখনো লালবাগ কেল্লা দেখেনি। ও আসলে কিছুই দেখেনি। জগন্নাথে পড়া সত্বেও আহসান মঞ্জিল দেখেনি। ঢাকার কোন দর্শনীয় স্থান ওর দর্শন করা হয়নি।
লালবাগ কেল্লা দর্শন শেষে নির্জন স্থানে পা ঝুলিয়ে বসে অনেকক্ষণ কথা বললাম। অবশ্য অধিকাংশই পড়াশুনা সংক্রান্ত। তবে আমি জানি কিছুদিনের মধ্যে পড়াশুনার প্রসংগর পাঠ আমরা কাটিয়ে উঠব এবং তা বিয়ে সংক্রান্ত আলোচনায় গড়াবে। কারন এ ব্যাপারে আমিই অগ্রগামী হব। আর আমার বিশ্বাস আমার এ প্রস্তাবে ওর না করার কোন যৌক্তিকতা থাকবে না। আমি ওকে ভালবেসে ফেলেছি ,ওকেও আমাকে ভালবাসতে হবে।
আমি ওকে নিয়েই আমার হোস্টেল সীমানায় ফিরে এলাম এবং চাংখারপুলের বিখ্যাত ‘নীরব’ রেস্টুরেন্টে নিয়ে দুজনে দুপুরের খাওয়া নিরবেই শেষ করলাম। সংগত কারণেই বিল আমি মেটালাম। ও কোন বিষয়ে কোন রকম আপত্তি করল না। ও বোধ হয় আমার আগেই আমার মনের খবর বুঝে ফেলেছে। মেয়েরা আগেভাগেই অনেক কিছু বুঝে ফেলে।
এরপর থেকে আমাদের রুটিন দাড়াল এরকম , যুথি জগন্নাথ থেকে ক্লাস করেই হোক আর না করেই হোক দুপুর একটার মধ্যে মেডিকেলের ভাস্কর্যের নীচে এসে বসে থাকে। আমি ক্লাস শেষ করে যত দেরীতে বেরোই না কেন ও বসেই থাকে। তারপর দুপুরের ঠা ঠা রোদে রিকশা নিয়ে দুজনে বেরিয়ে পড়ি দর্শনীয় স্থানের উদ্দেশ্যে। ওকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে ঢাকার সব দর্শনীয় স্থান দেখানোই আমার প্রধান কাজে পরিণত হয়েছে। আর এই সব দর্শনীয় স্থান দেখার ফাকে ফাকে আমার নিজেদেরকে দর্শন করি,একে অন্যকে আবিস্কার করি। কোন কোন দিন সব কিছু দেখে শুনে আসতে আমাদের সন্ধে হয়ে যায়। তখন দুজনে একসাথেই ওদের বাসায় যাই। আমি পিচ্চিটাকে পড়াতে বসি। ওর বোন ওর দেরী করে ফেরা নিয়ে কোন কথাই বলে না। বোধ হয় ওরা আমাদের ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে। ইদানীং দেখি নাস্তাও বৈচিত্র্য চলে এসেছে। আগে যেখানে রুটিন মাফিক বিস্কিট আর চা দিত এখন সেখানে লাচ্চা সেমাই ,নুডুলস ,পিঠা ,মিস্টি ইত্যাদি সম্বলিত প্লেট দেখা যাচ্ছে। এখন তো আর আমি শুধু তাদের টিচার নয়,ঘনিষ্ঠ সম্পকে আবদ্ধ হয়ে গেছি।

ঈদের দিন বিকালে বড়ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে বড় ভাইকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বড়ভাইয়ের এক চাচাত শালা জিয়া আসে। ভাইয়ের শ্বশুরবাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে মাইল সাতেক রাস্তা দুরে। জিয়া আমাকেও নিয়ে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে থাকে। আমার প্রবল আপত্তিতে সে মা,ভাই ও ভাবীর সাথে কি যেন শলাপরামর্শ করে। আমি ওর হাত থেকে বাচতে তাড়াতাড়ি বন্ধুদের আস্তানায় যাওয়ার পরিকল্পনা করি। কিন্তু আমার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই মা ও ভাবীর অনুরোধে এবং ভাইয়ের আদেশ সহ জিয়ার সন্ধ্যের মধ্যে আমাকে পৌছে দেয়ার চুক্তিতে আমিও ভাইয়ের সাথে একই মোটরসাইকেলে চড়ে বসি।
ও বাড়িতে পৌছতেই আমাকে সাদর অর্ভ্যথনা,ঠাট্রার সর্ম্পকের আত্মীয়াদের রঙ্গরসিকতা এবং বয়স্কা মহিলাদের কানাঘুষায় আমার বুঝতে বাকি থাকে না যে এত পীড়াপীড়ি করে আমাকে এখানে নিয়ে আসার রহস্যটা কি!
আমাকে ঈদের সময় ছাড়া পাওয়া দুষ্কর বিবেচনা করে হীরার বাবা-মা হীরাকে নিয়ে ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ি এসে উঠেছে এবং আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে তাদের আমাকে দেখাসহ আমাকেও মেয়েটাকে দেখানোর উদ্দেশ্যে।
তবে আমাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে মেয়ে দেখানো হলো না। ওরাও আমার সাথে আত্মীয় হিসাবে ভালমন্দ জিজ্ঞেস সহ পড়াশুনার খোজ খবর ,বিদেশ যাওয়ার ব্যাপার এসব নিয়ে কৌতুহলী ভঙ্গিতে আলাপ করতে লাগল।
আর আমিও সাধারন ভাবে অসাধারণ হীরাকে দেখলাম।
আমার কিছু সমস্যা আছে। কল্পনা জনিত সমস্যা। আমি কোনকিছু সমন্ধেই আগেই বেশ করে কল্পনা করি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় আমার কল্পনার জিনিসের সাথে বাস্তব জিনিসের মিল খায় না এবং আমি হতাশ হই। গতবার জানুয়ারীতে কক্সবাজার সুমুদ্র সৌকত দেখতে যেয়ে আমার একই অবস্থা। আমার কল্পনায় যা ছিল তার সাথে খুব অল্পই মিল পেলাম। সৌকত ভর্তি গরম বালি ,টোকাই ,ফটোগ্রাফার ,হাটবারের মত জনাকীর্ন লোকসমাগম আমাকে হতাশ করল। বন্ধুরা অবশ্য বলল যে প্রায় সবারই এরকম হয়। একমাত্র ব্যতিক্রম তাজমহল। কল্পনাকেও হার মানায়। কল্পনা করে কেউ তাজমহলের উর্ধ্বে উঠতে পারেনি।
হীরাকেও আমি কল্পনায় একটা মুর্তিতে সাজিয়েছিলাম এবং যথারীতি ভেবেছিলাম ওকে দেখার পর আমার মোহভঙ্গ হবে। গ্রামের লোকজন সুন্দর বলতে ফর্সাকেই বোঝে। হয়তো দেখব রক্তশুন্যতায় ভোগা দীর্ঘকায়া কোন শ্বেতী রোগী।
হীরাকে দেখেই আমি চমকে উঠলাম। হীরা যথার্থই হীরা। এক কথায় খাপ খোলা তলোয়ার। এই হেলেন যেখানেই যাবে সেখানেই একটা করে ট্রয় নগরী ধ্বংস হবে। গোটা পৃথিবী ধ্বংস করে দেয়ার জন্য এরকম একটা মেয়েই যথেস্ট। এরকম সুন্দরী মেয়েদের জন্য যুগে যুগে পুরুষেরা ডুয়েল লড়ছে ,জীবন বিসর্জন দিয়েছে। আর আমি! না চাইতেই, শুধু সম্মতিতেই এরকম হুলস্থুল রূপবতীকে বিনা ডুয়েলে বিনা যুদ্ধে পেতে যাচ্ছি। এও কি সম্ভব!
আমার তাজমহল দেখতে যাওয়ার ইচ্ছে উবে গেল। আর কোথাও যেয়ে আমার কল্পনাকে হার মানানোর প্রয়োজন নেই। তাজমহল আমার ঘরেই চলে আসছে। আর আসছে গোটা সাম্রাজ্য।
মানুষ তার জীবনের কতটুকুই তার নিজের জন্যে করে? সব কিছুর মধ্যেই একটা লোক দেখানো ভাব থাকে না? আমাদের সব কিছুই তো অন্যের কাছে নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রতিপন্ন করার জন্য। গিনেজ বুকে নাম ওঠানোর জন্য এক চীনা ডাক্তার উনপঞ্চাশ দিন না খেয়ে কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শুধু অন্যের কাছে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব পতিপন্ন করার জন্য।
আমার মধ্যেও এই বোধটা কাজ করতে লাগল। অনন্য সুন্দরী একটা মেয়ে নিয়ে পাশে পাশে ঘুরব। সবাইকে সদম্ভে দেখাবো দেখ আমি কি পেয়েছি। তারা হতাশায় দীর্ঘশ্বাস ফেলবে।

আমি এই বিয়েতে মত দিলাম।




২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×