somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টাঙ্গুয়ার হাওরে চরম মানবিক বিপর্যয়ে ৫৬ হাজার মানুষ

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে মানবিক বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। গেল ৫ বছরে বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না দিয়ে হাওর ব্যবস্থাপনার কারনে ঐ এলাকার ৫৬ হাজার মানুষ বেকার জীবন যাপন করছে। হাওর ব্যবস্থাপনায় আসা জেলা প্রশাসন এ হাওরটিতে তাদের কর্তৃত্বে আনার প্রাক্কালে জনসাধারনকে ঐ এলাকায় একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরী ও একটি কাঁচ ফ্যাক্টরী গড়ে তোলে তাতে কাজ দেয়ার আশ্বাস দিলেও গত ৫ বছরে এধরনের কোনো উদ্যোগই নেয়নি। আর রক্ষনাবেক্ষনের নামে আসা সরকারের ১ কোটি টাকা আত্বসাতেরও অভিযোগ উঠেছে খোদ জেলা প্রশাসনের সাবেক দুই ডিসি'র বিরুদ্ধে। তবে হাওর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন বলেছে কাজ হচ্ছে পরিকল্পনা মাফিক, টাকা আত্বসাতের অভিযোগ সত্য নয়।

শীত, গ্রীষ্ম,বর্ষা আর হেমন্ত একেক ঋতুতে একেক রুপ সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের। নভেম্বরে হাওরের পাড় জেগে উঠা শুরু হয়ে এপ্রিলের বৃষ্টিপাত শুরুর আগ পর্যন্ত এক নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্যরে হাতছানি দেয় এ হাওরটিতে। এসময়টাতে সারি সারি হিজল করচের বাগ এবং হাওরের শান্ত জলে লাখো অতিথি পাখি কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠে । নানা সুস্বাদু মাছের জন্য বিখ্যাতও এ হাওরটি। তাই হাওরপাড়ের ৮৮টি গ্রামের ৫৬ হাজার মানুষের জীবিকার প্রধান উৎস এ টাঙ্গুয়ার হাওর। সরকার ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল টাঙ্গুয়াকে দেশের আরও কয়েকটি এলাকার মত পরিবেশগতভাবে বিপন্ন এলাকা ঘোষনা করে। ২০০০ সালের ২০ জানুয়ারী এর জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশ রায় হাওরটিকে দেশের ২য় রামসার এলাকা মনোনীত করা হয়। রামসার নীতিমালায় বলা হয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে এটি পরিচালনার জন্য। ২০০৩ সালের নভেম্বর হতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন হাওরটিতে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করলেও গেল ৫ বছরে হাওর পাড়ের ৫৬ হাজার মানুষের বিকল্প কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। আর তাই বাধ্য হয়ে হাওরের মাছ চুরি করে জীবিকা নির্বাহ করছে হাওর পাড়ের মানুয়েরা। পেটের দায়ে মাছ চুরি করতে গিয়ে এখন পেশাদার চোর উপাধি জুটেছে তাদের কপালে। এ পর্যন্ত প্রায় দুই শতাধিক চুরির মামলা হয়েছে তাদের উপর। ঘরের কোনায় পানি অথচ সে পানিতে পা ফেলার অধিকার নেই পেশায় প্রধান এসব মৎস্যজীবি মানুষের। হাওরপাড়ের এসব মানুষেরা কেউ চুরি অথবা খেয়ে না খেয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছে।

এদিকে হাওর ব্যবস্থাপনার জন্য আসা সরকারের ২কোটি ৫০লাখ টাকার মধ্যে ১ কোটি টাকা আত্বসাতের অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসনের সাবেক দুই ডিসির বিরুদ্ধে। এনিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, যে পরিমান জ্বালানী ও ভরন পোষন ব্যয় ধরা হচ্ছে প্রকৃতভাবে তা খুবই নগন্য। টাঙ্গুয়ার দায়িত্ব পালনে সহকারী কমিশনারদের যে পরিমান পেট্রোল দেয়া হয় কাগজে স্বাক্ষর করতে হয় তার দ্বিগুন। আর এসব মোটা অংকের ব্যয় দেখিয়ে ঐ সাবেক দুই ডিসি মোট বরাদ্ধের ৮০ভাগ টাকাই বেহাত করেছে। একদিকে এখান থেকে সরকার কোনো ধরনের রাজস্বতো পাচ্ছেইনা বরং প্রতি বছর ভর্তকী দিয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন টাঙ্গুয়ার এলাকার মানুষকে আগে বাঁচাতে হবে তার পর অন্য কিছু।
এবিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফরিদ আহমদ ভুঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, টাঙ্গুয়ার হাওরে কাজ হচ্ছে সরকারের পরিকল্পনা মাফিক। হাওর পাড়ের মানুষদেরকে নিয়ে ভাগ বাটোয়ারা পদ্ধতিতে খুব শীঘ্রই মাছ ধরা হবে। টাকা আত্বসাতের অভিযোগ সঠিক নয় বলে তিনি জানিয়েছেন।

সরকার কাগজে কলমে কি পরিকল্পনা করছে অথবা ভবিষ্যতে কি করতে থাকবে সেটা হাওর পাড়ের এসব মানুষের দেখা বিষয় নয়। হাওরের মানুষ অতি দ্রুত কাজ চায়, কাজ করে দুমোটো ভাত খেতে চায় আর এই বিষয়টি নিয়ে সরকার এগিয়ে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা ভুক্তভোগি মানুষের।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:১৮
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের চার খলিফার ধারাবাহিকতা কে নির্ধারণ করেছেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৭




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব)... ...বাকিটুকু পড়ুন

×