শুক্রবারের অর্ধ-দিনলিপি
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
বাবা বলে উঠল আমারও খিচুরি খেতে ইচ্ছা করছিল যাক তোর ভাইয়ার কল্যানে আজকে খিচুরি খাওয়া যাবে।
জয়তি বলল তোমার ইচ্ছে করছে মাকে বললে না কেন বাবা? তুমি কি মাকে ভয় পাও? বলেই হেসে ফেলল দুজন। না সেটা না। আসলে তোর মার কষ্ট হবে দেখে বলি নি।
ভাইয়া টেবিলে এসেই বলল, আব্বা পেপারটা দাও। বাবা বলল আমি পড়ছিতো। না বাবা তুমি জয়তির সাথে গল্প করছ। আমি ওর সাথে গল্প করতে করতে পেপার পড়ছি। দুটা কাজ একসাথে হয় না, সেটা তুমিই বলো আর এখন তুমি তাই করছ........ব্যস শুরু হয়ে গেল শুক্রবারের ঝগড়া নাম্বার টু। অবশ্য জয়তীর দেখতে ভালই লাগছে এবং অবধারিত ভাবে পরের সিনের জন্য অপেক্ষা করছে।
অপেক্ষ করতে না করতেই মা রান্নাঘর থেকে বের হয়ে ছো মেরে পেপারটা নিয়ে গেল এবং খিচুরির বোলটা টেবিলে রেখে বলল আর একটা কথা বললে কারও পেটে আজকে নাস্তা ঢুকবে না। বিশেষ করে তোমার, বলেই বাবার দিকে তাকাল।
ইয়োর অনার ডিয়ার ওয়াইফ-এখানে আমার দোষটা কি দেখলেন আপনি? বাবা বলে উঠল। আমি তোমার পুত্রের আগে ঘুম থেকে উঠেছি সো আমার অধিকার বেশি পেপার পড়ার। মা বলল তুমি মনে হয় নাস্তা করতে চাচ্ছ না আজকে? এটা শুনে বাবা বাদে আমি আর ভাইয়া হেসে উঠলাম। সাথে সাথে মাও হেসে উঠল এবং একটু পরে বাবাও সেই হাসিতে যোগ দিল আমাদের সবার সাথে। পুরো পরিবেশটা যেন কেমন হয়ে গেল সবার সেই সম্মিলিত হাসিতে।
এরই মাঝে ভাইয়া পেপারের দিকে হাত বাড়াতেই, মা বলে উঠল আগে নাস্তা। ভাইয়ার আকর্ন বিস্তৃত হাসি দেখেই বোঝা গেল আজকের সকালে বাবার আর পেপার পড়া হচ্ছে না। বাবা মুখ খুলতে যাবে তখনই মা তর্জনি দিয়া বাবার ঠোট চেপে ধরে ভাইয়াকে বলল, পেপার পড়ে আমার কাছ থেকে বাজারের লিস্ট নিয়া যাবি। আজকে তুই বাজার করবি।
এটা শুনে আমি আর বাবা হো হো করে হেসে উঠলাম, আর ভাইয়ার মুখটা কাল হয়ে গেল। ভাইয়া বলল ঠিক আছে যাও পেপার পড়ার দরকার নাই আমার। মা বলল, তাহলে নাস্তা খেয়ে তাড়াতাড়ি বাজারে যা। ভাইয়া করুন দৃষ্টি করে বাবার দিকে তাকাল, চোখে মিনতি "বাবা প্লিজ হেল্প"। বাবা বেশ কবার এড়ানোর চেষ্টা করল সেই মিনতি কিন্তু পরে আর পারল না, বলল আচ্ছা যা যা তোর যেতে হবে না। ভাইয়া বলে উঠল আমার "লক্ষী বাবা"। এটা শুনে জয়তীও বলল "আমার লক্ষী বাবা", আর বাবা মার দিকে তাকিয়ে বলল "আমার লক্ষী বৌ"। বাবার কথা শুনে সবাই একসাথে হেসে উঠল আবার। জয়তী খেয়াল করল মা লজ্জায় একটু গোলাপী হল হয়ত আর বাবার হাতে হালকা চড় দিয়ে বলল তুমি না.........
হাসতে হাসতেই সবার চোখ দিয়েই কফোটা করে অশ্রু গাল বেয়ে পরে গেল। তবে ঠিক বোঝা গেল না এগুলো কি সুখের না দু:খের অশ্রুফোটা?
ছবি: gravitasfreezone.files.wordpress.com
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শৈল্পিক চুরি
বহুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কোথায় বেনজির ????????
গত ৪ মে সপরিবারে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ। সঙ্গে আছেন তার স্ত্রী ও তিন মেয়ে। গত ২৬ মে তার পরিবারের সকল স্থাবর সম্পদ... ...বাকিটুকু পড়ুন
‘নির্ঝর ও একটি হলুদ গোলাপ’ এর রিভিউ বা পাঠ প্রতিক্রিয়া
বেশ কিছুদিন ধরে একটানা থ্রিলার, হরর এবং নন ফিকশন জনরার বেশ কিছু বই পড়ার পরে হুট করেই এই বইটা পড়তে বসলাম। আব্দুস সাত্তার সজীব ভাইয়ের 'BOOKAHOLICS TIMES' থেকে এই বইটা... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগে বিতর্ক করার চেয়ে আড্ডা দেয়া উত্তম
আসলে ব্লগে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ইত্যাদি বিতর্কের চেয়ে স্রেফ আড্ডা দেয়া উত্তম। আড্ডার কারণে ব্লগারদের সাথে ব্লগারদের সৌহার্দ তৈরি হয়। সম্পর্ক সহজ না হলে আপনি আপনার মতবাদ কাউকে গেলাতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগে প্রাণ ফিরে এসেছে!
ভেবেছিলাম রাজিবের অনুপস্হিতিতে সামু রক্তহীনতায় ভুগবে; যাক, ব্লগে অনেকের লেখা আসছে, ভালো ও ইন্টারেষ্টিং বিষয়ের উপর লেখা আসছে; পড়ে আনন্দ পাচ্ছি!
সবার আগে ব্লগার নীল আকাশকে ধন্যবাদ... ...বাকিটুকু পড়ুন