somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উপেক্ষিত জনগণ

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাষ্ট্র হয়তো নিজ অস্তিত্বের প্রয়োজনেই নির্যাতনপ্রবন এবং আধিপত্যবাদী, এবং এই আধিপত্যের চর্চা করতে অনেক সময়ই মৌলিক অধিকারগুলোকে লঙ্ঘন করে রাষ্ট্র।

যদিও বাংলাদেশের প্রথম প্রধান মন্ত্রী তাজউদ্দীন এবং কামরুজ্জামান বামপন্থি হয়ে কট্টর ডানপন্থী মুজিবকে প্রভাবিত করে আওয়ামী লীগকে মধ্যপন্থী একটি দলে রুপান্তরিত করতে সক্ষম হয়েছিলো কিন্তু বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার সমাজতান্ত্রিকতার চর্চা করেছিলো শুধুমাত্র ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানসমুহকে রাষ্ট্রীয়করণের মাধ্যমেই , এর পূর্বে কিংবা পরবর্তীতে বামপন্থী প্রবনতা ছিলো না রাষ্ট্র এবং এর পরিচালকদের মানসে।

বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি পৈত্রিক সূত্রেই পাকিস্তানের ইসলামমনস্কতাকে ধারণ করেছে, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশ ছিলো এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানকে নৈতিক, সামরিক সহায়তা দিয়েছিলো যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে।

যুক্তরাষ্ট্র ইউসিস এবং নিজস্ব কুটনৈতিকদের সহায়তায়, মূলত বাংলাদেশের সাংবাদিক এবং লেখকদের একাংশের বিবেক ও লেখনী কিনে রেখেছিলো স্বাধীনতাপূর্ব সময়ে। এবং এইসব লেখকদের একাংশ সস্তা অনুবাদ করে যুক্তরাষ্ট্রের সমাজতান্ত্র বিরোধী প্রচারণায় সহযোগী হিসেবে কাজ করতো।

এইসব অতীত ইতিহাস টেনে আনবার কোনো প্রয়োজন ছিলো না, তবে বাংলাদেশ রাষ্ট্র জন্মের পরে রাষ্ট্রীয় মদতে রাষ্ট্রীয় সহিংসতার শিকার হয়েছে মূলত বামপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা। এবং জাসদের উত্থান ঠেকানোর জন্য জাতীয় রক্ষী বাহিনী গঠন করে বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ড চালিয়ে যাওয়া এবং কথিত ৩০ হাজার বামপন্থীকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে হত্যা করবার ঘটনার কোনো তদন্ত হয় নি ৭৫ পূর্ববর্তী সময়ে।

বাংলাদেশ রাষ্ট্র বাম ও ধর্মনিরপেক্ষ ভাবধারা বিরোধী একটি রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে পরিচিত করেছে এবং এর যাবতীয় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এটাকেই প্রমাণিত করে।

নতুন রাজনৈতিক সরকার আসবার পরে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে, যদিও অনেক অপরাধেই সরাসরী আওয়ামী লীগ কর্মীদের সংশ্লিষ্ঠতা ছিলো না কিন্তু দেশের সামগ্রীক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, এবং পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ভেতরে স্থবিরতা এবং আলস্যও হয়তো দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির কারণ।

গতকাল সকালে দুটো খবর পড়লাম পত্রিকায়, সাহারা খাতুনের বক্তব্য - দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে- এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করবে।

একই সাথে পত্রিকায় সংবাদ এসেছে চরমপন্থী[ পড়তে হবে মূলত বিচ্ছিন্ন উগ্র বামপন্থী] একজনকে প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে ক্রস ফায়ারে হত্যা করেছে র‌্যাব।

এটা নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো সরকার তথা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটা পরিস্কার অবস্থান দাবি করলেও আপাতত আমার আশংকা অপারেশন ক্লিনহার্টের মতো একটা সর্বাত্মক সন্ত্রাসী বিরোধী অপারেশন এখন সময়ের ব্যাপার, যেকোনো দিন সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে যৌথ বাহিনীর সহায়তায় এবং মূলত এর শিকার রাজনৈতিক সরকারের সময়েও যেমন বিচ্ছিন্ন বামপন্থী দলের রাজনৈতিক কর্মী এবং সন্ত্রাসীরা হয়েছিলো, যেমনটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়েও উগ্রপন্থী হিসেবে বামপন্থী কিংবা বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির নেতা কর্মীদের ধরে ধরে ক্রস ফায়ারে হত্যা করা হয়েছে, এই অপারেশনেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

অবশ্যই প্রবাসী এবং ঘাপটি মেরে থাকা সন্ত্রাসীরা মাথা চাড়া দিয়েছে, চাঁদাবাজী শুরু হয়েছে, বিভিন্ন খোলসে চাঁদাবাজী চলছে, দখল নিয়ে অন্তর্দলীয় কোন্দল এবং সংঘাতও শুরু হয়েছে, দলের আভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা এখনও ধ্বসে না পড়লেও নেতৃত্বের লড়াই এবং অর্থের লড়াই গোপনে গোপনে চলমান। এই পরিস্থিতিতে যেকোনো দিন আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের নামে একটা সন্ত্রাস বিরোধী অপারেশন শুরু হবে।

যদিও মানবাধিকার রক্ষার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে সরকারের তবুও বিচার বহির্ভুত অনেকগুলো হত্যার ঘটনা ঘটবে এই অপারেশনে। এবং এই হত্যাকান্ডগুলোর কোনো বিচার হবে না। এবং যদিও উগ্র ডান পন্থী রাজনৈতিক দল ও ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা গ্রেনেড, রাইফেল, বোমা তৈরীর সরঞ্জামসহ ধরা পড়বে কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে ক্রস ফায়ার কিংবা এমন বিচারবহির্ভুত হত্যা করে তাদের নিশ্চিহ্ন করবার কোনো ঘটনা ঘটবে না, কিন্তু একই সমতলে সন্ত্রাসী চিহ্নিত করে বামপন্থীদের হত্যা করবার ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

মুলত রাষ্ট্রীয় চরিত্র বিবেচনা করলে বাংলাদেশের মতো ইসলামমনস্ক একটি দেশে যে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রতা চাইছে তার ক্ষেত্রে এই কট্টর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব বিরোধী অবস্থান নেওয়াটাই স্বাভাবিক।

রাষ্ট্র এবং এর পরিচালকেরা নিজের ক্ষমতার চর্চা অব্যহত ও নিরঙ্কুশ রাখবার জন্য তার নিজস্ব পেটোয়া বাহিনীকে ব্যবহার করতে পারে যেকোনো সময়েই, তবে এই কট্টর অবস্থান নেওয়ার কারণে যদি সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয় কিংবা সাধারণ মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়, বাংলাদেশ কি সেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিকার করতে পারবে কিংবা নিজের এই অমানবিক ক্ষমতার চর্চা বন্ধ রাখতে পারবে।

যাই ঘটুক না কেনো, ভোটের অধিকার প্রয়োগের পর থেকেই মূলত উপেক্ষিত হতে থাকে জনগণ পরবর্তী ভোটের সময়ের আগ পর্যন্ত এই উপেক্ষা অব্যহত থাকে।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×