somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমকামী(১৮+)

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৮:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সারা পৃথিবীতে যখন সমকামীদের নিয়ে প্রচন্ড আলোড়ন- উন্নত বিশ্বর কোন কোন দেশে যখন সমকামীদের বৈবাহিক বৈধতা দেয়া হচ্ছে- ঠিক সে সময়টাতেও কিন্তু রাশিয়াতে সমকামীদের প্রচন্ড ঘৃনা করা হত!
দুজন পুরুষ বা দুজন নারী এমনকি তারা যদি আপন ভাই কিংবা বোনও হয়-এক বিছানায় পাশাপাশি ঘুমোলে তাদেরকেও সন্দেহের চোখে দেখত।
আমি দেখেছি দুবোন কিংবা দুভাই যদি একান্ত বাধ্য হত পাশাপাশি শুতে তাহলে একজন মাথা দিত উত্তরে একজন দক্ষিনে! প্রথমে বুঝিনি এমনতর শোয়ার গুঢ় রহস্য।
পরে এক রুশভাই আমাকে ব্যাখ্যা করে দিলে আমি বাকহারা হয়েছিলাম বেশ কিছুক্ষন।
আরো আশ্চর্যের কথা রুশ রমনীরা পারতপক্ষে মর্দ্দা কুকুর পোষেনা আর পুরুষরা তার উল্টেটা!
ওখানে যখন দুজন পুরুষ বা নারী পাশাপাশি হাত ধরে হাটলেও অনেকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে আড়চোখে তাকায়-তখনো কিন্তু আমরা বাঙ্গালীরা উদাসীন। দুজনের বিছানায় ছজন লেপ্টালেপ্টি করে ঘুমাই । বন্ধুকে কদিন পরে দেখলেই আবেগের অতিশয্যে বুকে জড়িয়ে ধরি , আড্ডায় রাত জেগে কেউ ক্লান্ত হয়ে পড়লে পাশে বসা বন্ধুর ঘাড়ের উপর মাথা রেখে বিশ্রাম নেই।
এসব দেখে ওরা চোখ বড় বড় করে ভাবে এরা কি গন সমকামী?
কেউ একজন মুখ ফুটে বলে ফেললই একদিন ‘ তোমরা কি..? ’ শুনে আমরা হাসতে হাসতে মরি!
কোন একদিন ছিল সমগ্র রাশিয়ায় পতিতালয় নেই বলে তারা গর্ব করত । কিন্তু এখন সেই দিন আর নেই । এখন এরা বড় বেশী সহজলভ্য হয়ে গেছে।
১৯৯৬ সাল মাত্র চারপাচ বছর আগে যেখানে রুশরা আমাদের বঙ্গের ( হকার্স মার্কেট)কেনা সস্তা জিনস দেখে ভিমড়ি খেত এখন তারাই ব্যাবহার করছে বিশ্ব বিখ্যাত ফ্যাশন হাউজের পোষাক। যা দেখে আমরা এখন ভিমড়ি খাই!
বড় বড় কাচে ঘেরা জাকজমকপূর্ন এসব কোম্পানীর শোরুম দেখে সদ্য গ্রাম কিংবা মফস্বল তেকে আসা মেয়েরা ফ্যাল ফ্যাল করে এখনো চেয়ে থাকে । ভিতরে সাজানো এককটা পোষাক তাদের সপ্নে পাওয়া অর্থের থেকেও মুল্যবান।
ভয়ে হাত দিয়ে ধরে দেখতে সাহস হয়না। কিন্তু সেই মেয়েটাই যখন দুদিন পরে তেমন একট পোষাক পরে আপনার নাকের ডগা দিয়ে পুরের সুবাস ছড়িয়ে গ্যাট গ্যাট করে হেটে যাবে তখন নিশ্চই দিনের বেলা খোলা চোখে সপ্ন দেখছেন ভেবে ডাক্তারের কাছে ছুটবেন ।
এটা কি সম্ভব ? হ্যা সম্ভব! তবে কিভাবে। ওই পোষাকটা সেই মেয়েটার হয়তোবা একরাতের কামাই। আর ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই আশা করি।
কাল রবিবার। ছুটির দিন। শীতের রাত। আটটাতেই রাস্তাঘাট ফাঁকা তবে পাব বার ডিসকো থেক আর ক্যাসিনোতে উপচে পরা লোকের ভীড়। রাত দশটার দিকে আমরা চার বন্ধু মিলে যাচ্ছিলাম অন্য এক বন্ধুর বাসায় সারারাত আড্ডা দেবার অভিপ্রায়। জাকির গাড়ি চালাচ্ছিল। ঐতিহাসিক রেড স্কোয়ারের পাশ দিয়ে একটু এগিয়ে যেতেই পিছনের সিটে আমার সাথে বসা সুদর্শন ও বাগ্মী নিঝুম জাকিরকে একটু গাড়ি স্লো করতে বলল। জাকির ঘাড় ঘুড়িয়ে হেসে বলর ‘কি ব্যাপার নিঝুম তোমার ধান্দা কি।’ তার চাহনী রহস্যজনক।
কিন্তু মেলা দিন পরে এই শহরে আসা গেঁয়ো আমি বুঝতে পারলামনা এই কথা ও চাহনীর তাৎপর্য!
নিঝুম চোখ মেরে বলল,‘ রাস্তার পাশ ঘেষে চালান। একটু ফাজলামী করি।’ ব্যাপারটা কি আমি উৎসুক চোখে তাকালাম রাস্তার পাশে আধো আলো অন্ধকারে প্রথমে ভাল করে বোঝা যায়নি ভাল করে লক্ষ করতেই বোঝা গেল বিশাল চওড়া কালচে পাথরের ফুটপাথ ঘেষে থাকা প্রতিটা ল্যাস্প পোস্ট গুলোর আড়ালে দাড়িয়ে আছে কোন নারী বা পুরুষ । কাড়িটা ফুটপাথ ঘেয়ে একটু স্লো হতেই ওদের কয়েকজন আড়াল ছেড়ে বেরিয়ে এল ।
‘ওই মহিলার কাছে যান।’ একটু দুরে দাড়ানো এক মহিলাকে উদ্দেশ্য করে নিঝুম জাকিরকে বলল ।
জাকির নির্দিস্ট স্থানে গাড়ি থামাতেই সেই ভদ্র মহিলা চারিদিকে ভাল করে নজর বুলিয়ে এগিয়ে এল । নিজুম ততক্ষনে পিছনের কাচ নামিয়ে ফেলেছে।
মহিলা কাছে এসে মাথাটা ঝুকিয়ে চাপা কন্ঠে বলল ‘, শুভসন্ধ্যা ভদ্রগন। আপনাদের কি প্রয়োজন?’
‘কি তোমার কাছে আছে?’ নিঝুমের সিরিযাস কন্ঠ শুনে আমি চমকে গেলাম।
মহিলা একটু চুপ থেকে বলল ,’ যা চাও ।যেরকম চাও সবই আছে।’
‘কি কেমন আছে একটু ব্যাখ্যা কর?’
‘বারো থেকে শুরু করে বাহান্ন সবই আছে । লম্বা খাটো শুটকি মুটকি এমনকি সেরা অভিজাত বংশের রুশ সুন্দরীকেও পাবে।তবে খরচটা একটু বেশী।’
নিঝুম মাথা নেড়ে বলল,‘ না চলবে না । আর কি আছে?’
মহিলা পিছনের একটা বাসার দিকে ইঙিত দিয়ে বললেন ‘আমার সাথে নেমে গিয়ে ওই বাসাটাতে চল ওখানে সবই আছে তুমি দেখে পছন্দ করে নিও।’
‘উহু ,তোমার ওখানে তো সব যুবতী আর নারী নাকি?’
‘হ্যা । অবশ্যই ।’ মহিলা দৃঢ় কন্ঠে বলল ।
’কিন্তু আমাদের যে দরকার অন্যকিছু ।’
‘কি দরকার?’ মহিলার কন্ঠে বিস্ময় ।
নিঝুম তাকে ইশারায় আরেকটু কাছে আসতে বলল । সে দুপাশে ঘাড় ঘুড়িয়ে ভাল করে লক্ষ্য করে মাথাটা আরেকটু কাছে নিয়ে এল॥
নিঝুম চাপা কন্ঠে বলল ,‘ আমাদের দরকার দুটো ছেলে। আছে তোমার কাছে ?’
কথাটা মাটিতে পরার আগেই ‘ও বজ্বা মোই!(ও মাই গড) বলে চিৎকার করে মহিলা সভয়ে ছিটকে পিছিয়ে গেল অনেখখানি! আমরা ভিতরে বসা সবাই মিলে একসাথে হো হো করে হেসে উঠলাম। জাকির গাড়ি ছেড়ে দিল একটু এগিয়ে যেতেই পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি মহিলাটি হা হয়ে বিস্ফোরিত নেত্রে আমাদের গমন পথের দিকে চেয়ে আছে।
সন্দেহ নেই তার এই জীবনে এমন ঘটনার সন্মুখিন হয়নি।
তবে একটা ব্যাপার দিনের মত পরিস্কার হয়ে গেল যে এরা সমকামীদের এখনও যেথেস্ট ঘৃনা করে !
৪২টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×