কোনো দেশের মানুষের সংখ্যা দেখে বলা যায় না জনসংখ্যা বেশী না কম। এ জন্য কিছু বিষয় এবং সুযোগ-সুবিধা দেখতে হয়। এজন্য সাধারণত কোনো দেশের বা এলাকার সম্পদের অনুপাতে জনসংখ্যা পরিমাপ করা হয়। মানুষের জীবন ধারণের জন্য কৃষি উৎপাদনের জন্য উর্বর ভূমি এবং বিশুদ্ধ পানি মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এছাড়াও চিকিৎসা সুবিধা, শিক্ষা সুবিধা, বিশুদ্ধ বায়ু, বাসস্থান, অনুকূল তাপমাত্রা এগুলোও মানুষের জন্য প্রয়োজন। এসব প্রয়োজন মেটানোর মতো ব্যবস্থার সঙ্গে অতিরিক্ত জনসংখ্যা সম্পর্কিত।
ধরা যাক ব্রাজিলের যদি প্রতি বর্গ কিলোমিটারে দুইজন মানুষের প্রয়োজন মেটানোর মতো খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান প্রভৃতি সুবিধা থাকে তাহলে দুইয়ের বেশি জনসংখ্যা হলে ব্রাজিলের জনসংখ্যাকে অতিরিক্ত জনসংখ্যা বলা যাবে। কিন্তু আমেরিকার যদি প্রতি কিলোমিটারে ৫০ জন লোকের জন্য সুযোগ-সুবিধা থাকে তাহলে ৫০-এর বেশি লোক হলে তাকে অতিরিক্ত জনসংখ্যা বলা যাবে। এছাড়াও জনসংখ্যার জন্য বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিষয়ের গুরুত্ব আছে। যেমন মানুষের অক্সিজেন সরবরাহ করে গাছপালা। গাছপালা, বন্য জীব-জন্তুসহ প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে মানুষের বসবাসের পরিবেশ তৈরি হয়। এগুলো না থাকলে পরিবেশ কিংবা মানুষের টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ কারণেই সাহারা মরুভূমির জনসংখ্যার সঙ্গে বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনা করা চলবে না।
পৃথিবীর বিভিন্ন ধরনের সম্পদ রয়েছে। এর মধ্যে কয়লা, তেল, লোহা এগুলোর পরিচিত। মানুষ নিজেও একটি মূল্যবান সম্পদ। এছাড়াও মানুষ যে প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে বাস করে সেই পরিবেশ এবং ভূমি এক ধরনের সম্পদ। আমাদের প্রধান শহরগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। কারণ শহরগুলো আমাদের বহু চাহিদা মিটিয়ে থাকে।
পৃথিবীর সম্পদের ওপর সব মানুষের চাহিদা থাকলেও সম্পদের বণ্টন বা ব্যবস্থাপনা সেই চাহিদা অনুযায়ী হয় না। পশ্চিমি দেশগুলো যে ভোগ-বিলাস করে থাকে তার অধিকাংশই যোগান দেয় দরিদ্র বা অনুন্নত দেশগুলো। যদিও অনুন্নত দেশগুলো এসব বিলাস দ্রব্য ভোগ করার সুযোগ পায়না।
জনসংখ্যার তুলনায় অন্যান্য সম্পদ কম হলে মানুষের জীবনযাত্রার মান কমে যায় এবং মানুষ চিকিৎসা, শিক্ষা প্রভৃতির অভাব বোধ করে। জীবনযাত্রার মানকে মাপকাঠি ধরে অতিরিক্তি জনসংখ্যা নির্ণয় করা হয়। যখন কোনো অঞ্চলের জনসংখ্যা এতো বেশি হয়ে যায় যে, মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস এবং সেবার দীর্ঘস্থায়ী অভাব হয়, তখন সেই অঞ্চলে অতিরিক্ত জনসংখ্যা আছে বলা হয়।
জনসংখ্যা এবং জীবনযাত্রার মান (জনসংখ্যা-৬)
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
অপরূপের সাথে হলো দেখা
আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমরা কেন এমন হলাম না!
জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন
অভিমানের দেয়াল
অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি
২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১
তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন