somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুমেরাং

২৫ শে জানুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১১:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাত সকালে গাড়ি নিয়ে বের হতেই মেজাজটা খিচড়ে গেলো রইসমিয়ার।গ্যারেজ থেকে বের হবার মুখেই একটা খোলা ম্যানহোল।সিএসজির পেছনের চাক্কাটা সেইটার মধ্যে পইড়া গেলো।শালার দ্যাশ একটা।ম্যানহোলের ঢাকনাও চুরি হইয়া যায়।চোর বাটপারে দ্যাশের পুরা বারোটা বাইজা গেছে।চোরগুলার কথা ভাইবাই কিনা মুখ ভর্তি থুথু এলো রইসমিয়ার।থুথুটা ফেলে সে সিএনজি থেকে নামলো।ধাক্কা দিয়ে তুললো গাড়িটাকে ম্যানহোল থেকে।আইজ একটা অপারেশন আছে।ম্যনহোলে সিএনজির চাকা পড়াটাকে কি অশুভ লক্ষন বলা যায়।রইসমিয়া আবার এইসব লক্ষন টক্ষন খুব মানে।সে যখন বিয়ে করলো, তখন বরযাত্রী যাবার সময় জোরা শালিক দেখলো, তখনই সে বুঝছে, যারে সে বিয়া করতে যাইতাছে সে খুব স্বামী সোহাগী হইবো।জোনাকী তারে খুবই সোহাগ করে।আফসোস এখনো জোনাকীরে সে ঢাকা নিয়া আসতে পারে নাই।তয় আইজকার মতো আর দুই একটা অপারেশনে যাইতে পারলে দুই মাসের মইদ্যেই সে নিজের একটা সিএসজি কিনতে পারবো।তখন সে এই সব কাম ছাইরা দিবো।বস্তিতে একটা ঘর নিবো, আর জোনাকীরে ঢাকা নিয়া আসবো।অইয়নরেও এইখানে একটা মাগনা স্কুলে ভর্তি করাইয়া দিবো।অইয়ন রইসমিয়ার দশ বছরের ছেলের নাম।সাহেবগো পোলাপানের নাম হয় এই রকম।অনেক আগে একবার তার গাড়িতে দুই ইউনিভার্সিটি পড়া পোলা মাইয়া উঠছিলো।নিত্যদিনই এমন উঠে।কিছু কিছু পোলা মাইয়া যে কি সব করে তার গাড়ির মধ্যে।কি আর করা বয়সের দোষ।রইস মিয়াও মাঝে মাঝে সামনের কাচের দিকে তাকাইয়া লুকাইয়া সেইসব দেখে।তার ভালোও লাগে।তবে সেই দিনের পোলা মাইয়া দুইটা তেমন না।পোলাটা কি সুন্দর কইরা কথা কয়।তারে কি সুন্দর কইরা মাইয়াটা ডাকতাছিলো।এক্কেরে ফিল্মের ডায়লগ।পোলাটা তারে বেশী ভাড়া দিছিলো।যাওয়ার সময় ‘মামা থ্যাঙ্কু’ বললো।রইস মিয়ার যে কি ভালো লাগলো।অই পোলাটারে মাইয়াটা অয়ন অয়ন বইলা ডাকতাছিলো।হের কয়েকদিন পরই রইসমিয়ার ছেলে হইলো।রইসমিয়া তার নাম রাখলো অয়ন।

রমিজের দোকানে চা রুটি খাইয়া রইসমিয়া মহাখালি পাম্প থেকে গ্যাস নিলো।আইজ সারাদিন কাজ কাম কম করলেও চলবো।সন্ধ্যার পর অপারেশন।।ভালো একখান দাও মারতে পারলে সান্টু ভাই কইছে এবার তারে বেশী টাকা দিবো।এর আগে সান্টু ভাইয়ের সাথে আরো দুইটা অপারেশন করছে সে।ভালোই পাইছে।একটু রিস্ক আছে কামটায়, তয় একটা দাওয়ে এক সপ্তাহের ইনকাম হইয়া যায়।সারাদিন ঢিলা ঢালা ভাবে ছয় সাতটা টিপ মাইরা সন্ধ্যার দিকে গুলশানে গেলো রইসমিয়া।এখন তার পার্টি চয়েস করতে হইবো।মালদার দেইখা নিতে হইবো।মালদার বুঝোনের কয়েকটা উপায় আছে।সাথে ব্যাগ থাকতে হইবো।মাইয়া নেওয়া যাইবো না।এরা চিল্লাচিল্লি বেশী করে।দেহা যাইবো এক চিল্লানিতে দুই থানার পুলিশ আইসা হাজির হইছে।মাইয়া গুলা থানাত গেলেও দাম পায়।লুলা পুলিশগুলা এইগুলানরে হেল্প করনের লাইগা হা কইরা থাকে।আর ব্যাটা মানুষ হইলে হাই দিয়া দিয়া ফাইল লিখ্খা কয় যান গা।গুলশানে সব মালদার পার্টির অফিস। আর তার অপারেশনের জায়গাও কাছেই।আবার পেসেঞ্জার যেইখানে যাইবো সেইখানের রাস্তাও তার অপারেশনের রাস্তাতে হইতে হইবো।পাঁচ ছয়টা টিপ ছাড়নের পর রইসিময়া মাঝবয়সী একজনকে সিএনজিতে তুললো।প্যাসেঞ্জার যাইবো মিরপুর।যাওনের পথেই পড়বো মহাখালীর ফাকা রাস্তা।ওইখানে সান্টু ভাই আর মনা ভাই থাকবো।গাড়ি ওইখানে নেওনের পড়ই একটু স্লো করতে হইবো।সান্টু ভাই আর মনা ভাইরে উঠোনের সুযোগ দিতে হইবো।তারপরের কাম সোজা।সান্টু ভাই আর মনা ভাই দুইপাশ থিকা চাক্কু ধরবো।কইবো ‘যা আছে বাইর কর’।মামু তখন বাপ বাপ কইরা বাইর কইরা দিবো যা আছে।হেরপর আস্তে কইরা ধাক্কা দিয়া ফালাইয়া দিলেই হইবো।এর আগে আরো দুইবার এমন করছে।রইসমিয়া মহাখালীর দিকে চালান শুরু করলো।এর মইদ্যে প্যাসেঞ্জারের ফোন দিলো কারে জানি।রসের আলাপ করতাছে।হে হে মামা বুঝবা ঠেলা একটুক পরে।সিএনজি যখন মহাখালীর আগে পেট্রোল পাম্পের কাছে আইলো, পেছন থেকে প্যাসেঞ্জার বললো তার কাছে পাঁচশ টাকার ভাঙতি নাই।রইসমিয়া যেন পেট্রোপাম্প থেকে ভাঙ্গিয়ে আনে।রইসমিয়ার মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।শালা দুই মিনিটি পর পড়তে যাইতাছো হাইজাকারের হাতে, এখন তুমি ভাঙতি দিয়া কি করবা।হাইজাকাররে কি তুমি ভাঙতি দিবা।সিএজি দাড় করিয়ে মনে মনে গজ গজ করতে করতে রইসমিয়া পাঁচশ টাকার নোটটা প্যসেঞ্জারের কাছ থেকে নিয়ে পাম্পের দিকে রওনা হলো।পাম্পের ক্যাশিয়াররে সে আগে থেকেই চিনে।ক্যাশিয়ার যখন নোট টা নিয়ে ভাঙতি গূলো দিচ্ছিলো, তখনই রইসমিয়া শুনলো সিএনজি স্টার্ট নেয়ার আওয়াজ।পেছনে তাকিয়ে দেখে তার পেসেঞ্জার তার ড্রাইভিং সিটে বসে এরমধ্যে স্টার্ট দিয়ে দিয়েছে আর সেটা চলতে শুরু করেছে।টাকা ঠাকা ফেলে রইস মিয়া দৌড়ে গেলো সেটাকে আটকানোর জন্য।কিন্তু ততক্ষনে সেটা বহুদুর চলে গেছে।সিএনজিটা আস্তে আস্তে দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেলো।রইসমিয়া দাড়িয়ে রইলো হতবাক হয়ে।কারন হাইজাক হলে কি করতে হয় তা তার জানা নেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ সকাল ১১:০৯
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০, কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×