somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবুলের "ভাবমূর্তি" আর লতিফের "বিশ্বাসঘাতকতা"

২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত কয়েকদিন যাবত চরম ঠান্ডা চলছে টরন্টোয়। মাইনাস ১৫ থেকে মাইনাস ত্রিশের মধ্যে উঠানামা করছে। তার তুলনায় আজকে দিনে ছিলো প্লাস এক। মনে হচ্ছিলো বসন্তের হাওয়া বইছে। টুপি আর গ্লাভস ছাড়া হেটে হেটে যখন গাড়ীর পার্কিং এর দিতে যাচ্ছিলাম - তখন হঠাৎ মনে হলো - ভাবমূর্তি শব্দের অর্থটা আসলে কি?

বিগত জোট সরকারের সময়কালে রাজাকার মন্ত্রী আর এমপিদের মুখে দেশের ভাবমূর্তির কথা শুনে শুনে মনে হতো এই বিষয়টা হয়তো মধ্যপ্রাচ্যের থেকে আমদানী করা কোন বিষয়। মধ্যপ্রাচ্যের রাজা বাদশারা কথা কথায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয় দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার তাগিদে।

কিন্তু গত কয়েকদিন আগে বাংলাদেশের নতুন যোগাযোগমন্ত্রীর মুখে ভাবমূর্তির কথা শুনে আবার মনে হলো - আসলে বিষয়টা কি!

রেল ভবনে চুরি (!) করতে গিয়েছে কে বা কারা। এরা একই সাথে চিটাগাংগের অফিসেও একই ঘটনা ঘঠিয়েছে। লক্ষনে মনে হচ্ছে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। রেলের কোয়ার্টারে বড় হওয়ার সুবাদে এতোটুকু বলতে পারি - বাংলাদেশের কোন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যদি টপ টু বটম চোরের কারনে পুরষ্কার দেওয়া হয় - তবে রেল বিভাগের কথা আগে আসবে। সেখানে জেনারেল ম্যানেজার থেকে পিয়ন পর্যন্ত চুরি করে। তার উপরে সড়ক বিভাগের পর সবচেয়ে বেশী জমির মালিক হলো রেল বিভাগ। উপর তলার কর্তারা রেলের বিশাল জমি ছয় নয় করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়। সাম্প্রতিক চুরির সাথে রেলের ভিতরের কোন বড় ধরনের দূর্নীতিকে ধামাচাপা দেবার একটা প্রক্রিয়া হয়তো থেকে থাকবে। কিন্তু যথাযথ তদন্ত না হওয়া পর্যণ্ত সকল ধারনা শুধু ধারনাই থাকবে।

মজার বিষয় হলো এই ঘটনা পুলিশ প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগের পর এতোদ্রুত সমাধান করে ফেলেছে - যে কেউ যদি ভেবে বসে এরা পুলিশকে জানিয়েই কাজটা করেছে - তা হলে কি তাকে দোষ দেওয়া যাবে?

এই ঘটনায় উদ্গিগ্ন যোগাযোগ মন্ত্রী যেভাবে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্টের ষড়যন্ত্র আবিষ্কার করলেন - তাতে আবারো বোকা হয়ে ভাবলাম - আসলে আবুল হোসেন সরকারের ভাবমূর্তির সাথে চুরির ঘটনার যোগসূত্রটা পেলেন কোথায়। পুলিশকে যথাযথ সময়ে যৌক্তিকভাবে তদন্ত করে বিষয়টা সুরাহা করতে না দিয়ে মন্ত্রী সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্যে পুলিশকে যেভাবে সক্রিয় করলেন - তাতে হয়তো আসল অপরাধী আড়ালেই থেকে যাবে। দ্রুত তদন্ত করে জজ মিয়ার নাটকের কাহিনী ভুলতে পারিনি বলেই আবুল হোসেনের সরকারের ভাবমূর্তি নিয়ে চিন্তিত ও পুলিশের দ্রুত ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন দেখে ভাবছি - আবারো কি সেই রাস্তায় বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে "ভাবমূর্তি" আবুল হোসেন!

(২)

পশ্চিমে ভোটার এপ্যাথি বলে একটা কথা চালু আছে। ভোটাররা ভোট দিতে যায়না। আস্টেলিয়া ভোটারদের ভোট দিতে বাধ্য করার আইন করেছে। কিন্তু ওবামাকে ভোট দিতে যেভাবে মানুষ গেছে - তাতে আমেরিকনরা আশাবাদী হয়েছে - মানুষ ভোট দেয়।

বিরাট সফল একটা সংসদ নির্বাচনের পর একই দিনে উপজেলা নির্বাচন করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশন ফ্লপ মেরেছে। পর্যাপ্ত প্রচারের অভাব আর শহরে বসবাসকরা ভোটারদের ছুটি না থাকায় বিরাট অংশের মানুষ ভোট দেয়নি। তা ছাড়া উপজেলা বিষয়টা মানুষের কাছে পরিষ্কার না থাকায় মানুষ ভোট দিতে উৎসাহ বোধ করেনি। তার উপর বিভিন্ন যায়গায় সরকারী দলের প্রভাবে নির্বাচনের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রশ্ন হলো - নির্বাচনী আইনে যেখানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থীদের দলীয় পরিচয় থাকবে না - কিন্তু প্রচারমাধ্যমগুলো যথাসম্ভব দলীয় পরিচয় নিয়ে ব্যস্থ থেকেছে। প্রকাশ্যে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেওয়াও হয়েছে। তাই দলীয় পরিচয় লুকিয়ে ভাসুরের নামের মতো উচ্চারন করার চেয়ে সরাসরি দলীয় ভাবে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা দরকার।

প্রচার মাধ্যমে সরকারী দলের প্রভাব বিস্তারকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী আসছে আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের নাম। যদিও আগের যে কোন মন্ত্রীর আচরনের তুলনায় এই ঘটনা তেমন কিছুই না - তারপরও নতুন সরকারের প্রতি মানুষের সুউচ্চ বিশ্বাসের সাথে "বিশ্বাসঘাতকতা" করেছে মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাস। আশা করছি লতিফ বিশ্বাস এবং উনার নেতারা বুঝতে পারবেন যে উনি গনতন্ত্রের নবযাত্রায় একটা রোডব্লক বসিয়ে দিয়েছেন একটা স্থানীয় নির্বাচনে অসদাচরন করে - সেই রোডব্লকটা সরানোর একমাত্র পথই হলো মন্ত্রীসভা থেকে লতিফ বিশ্বাসের বিদায়।

আর যে এমপিদের নামে অভিযোগ এসেছে - আশা করছি নির্বাচন কমিশন কোন রকম দ্বিধা ছাড়াই এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। যতটুকু জানি কুমিল্লার মঞ্জুরুল ইসলাম মুন্সীর জেল হয়েছে নির্বাচনী আইন ভঙ্গ করার অপরাধে - তাহলে কক্সবাজারের এমপি বদির জেল হবে না কেন?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ২:০৫
১৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×