somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রবাসী কল্যান তহবিল লুটপাট সমাচার - অপশাসনের আরেকটা নমুনা।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যথাযথ পরিসংখ্যানের অভাবে ধরে নেওয়া হয় - প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশী দেশের বাইরে থাকে। অর্থাৎ প্রতি ১৫ জন বাংলাদেশীর মধ্যে ১ জন দেশের বাইরে থাকে। দেশের বাইরে থাকা বাংলাদেশীরা দেশকে দুই ভাবে সাহায্য করে। প্রথমত নিজেরা ঘুষ-দূর্নীতির সাথে নেই বলে রাষ্ট্র তথা জনগনের সম্পদ লুটপাটের উৎসব থেকে নিজেদের মুক্ত রাখে। দ্বিতীয়ত প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা পাঠিয়ে দেশের পরনির্ভশীলতা থেকে মুক্ত রাখে।

এই মানুষগুলো মালোশিয়া থেকে আরব দেশের কঠিন অবস্থায় থেকে প্রচন্ড পরিশ্রম করে দেশে অর্থ প্রেরন করে। বিনিময়ে বিমানবন্দর থেকে শুরু করে দেশের সর্বত্র তাদের জন্যে অপেক্ষা করে হায়েনার দল। এই হায়েনাদের নজর থাকে তাদের পকেটে দিকে।

শুধু মাত্র স্যুটকেসের গায়ে এয়ারলাইন্সের ট্যাগ লাগানো থাকার কারনে একজন প্রবাসীকে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে গাবতলী বাস স্টান্ডে। আর বিমানবন্দরে সুরত মিয়ার হত্যার বিচার করার মতো শাসন বা বিচার ব্যবস্থা যে নেই তা প্রবাসীরা সবাই জানে।

প্রবাসীদের মানুষ হিসাবে বিবেচনা করার চেয়ে অর্থ উপার্জনকারী জন্তু হিসাবেই বিবেচিত হয় বলে মনে হয়।

(২)

মালয়েশিয়া আর সৌদী আরবে বাংলাদেশী শ্রমিকদের দূর্দশা দেখার পর যখন শুনলাম দেশে "প্রবাসী কল্যান মন্ত্রনালয়" জন্ম নিয়েছে - ভেবেছিলাম হয়তো এবার প্রবাসী - বিশেষ করে শ্রমিকদের জন্যে সরকার কিছু একটা করবে।

কিন্তু দীর্ঘকাল সেই মন্ত্রনালয়ের অস্তিত্ব নিয়ে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ভেবেছিলাম - হয়তো এরা বড় কিছু বা ভাল কিছু করার পরিকল্পনা করছে। কিন্তু ওরে কার্যকলাপের নমুনা পেলাম যখন একটা বড় অংকের ডলার পাঠালাম। ছোট ভাই ফোনে যে অংকের ডলার পেয়েছে বললো - হিসাব করে দেখলাম হাজার ডলারে ত্রিশ ডলার কম। মেজাজ খারাপ করে এখানকার ব্যাংকে গেলাম - ওরা কিছুই বলতে পারলো না। পরে খোঁজ খবর করে জানলাম সেই ডলার "প্রবাসী কল্যান তহবিলের" সারচার্জ হিসাবে কেটে রাখা হয়েছে।

তারপর ভাবছিলাম আমাদের টাকাগুলো কোন কথা না বলেই কেটে নিয়ে করা হচ্ছেটা কি?

আজ দুদকের সূত্র জানলাম -

১) প্রবাসী কল্যাণ তহবিল এবং ইরাক-কুয়েত প্রত্যাগত বাংলাদেশীদের কল্যাণে জাতিসংঘের অর্থসাহায্যপুষ্ট হাউজিং কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প থেকে ৩৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, এই প্রকল্পের জন্য দেড়শ কাঠা জমি কেনা হয় ২৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকায়। কিন্তু রেজিস্ট্রেশনের সময় জমির মূল্য দেখানো হয় ১৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এ ক্ষেত্রে ৫ কোটি ৩০ লাখ টার ওপর প্রযোজ্য কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।

একই প্রকল্পে ৫'শ টি এপার্টমেন্ট করার জন্য ৬ টি ভবন নির্মাণের কথা ছিল। কিন্তু একটি ভবনও পুরোপুরি নির্মাণ না হলেও দুইটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। বাস্তবে তারা কাজ করেছে মাত্র ৫ কোটি টাকার। এ ক্ষেত্রে ৩০ কোটি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।

২) প্রবাসীদের জন্য হোস্টেল কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প থেকে নির্মাণ ব্যয় বাবদ ৫২ কোটি ১৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

এই প্রকল্পে সরকারের কাছ থেকে লিজ নেওয়া জমিতে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের জন্য একটি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। কিন্তু পরে ওই লিজ বাতিল হলেও নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কোনো কাজ না করেই ৫২ কোটি ১৪ লাখ টাকা তুলে নেয়।

৩) ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত সময়ে একজন সচিব ও ওই সময়ের সরকারি দলের চার জন সাংসদ বিদেশ ভ্রমণের জন্য ওই কল্যাণ তহবিল থেকে বেআইনীভাবে ১৩ কোটি ৭৯ লাখ তুলে নিয়েছেন।


ধর্ম আর বিসমিল্লাহর রাজনীতি ওয়ালারা প্রবাসীদের রক্ত পানি করার টাকার লোভও সংবরন করতে পারেনি। এর চেয়ে লজ্জার আর কি থাকতে পারে।

পৃথিবীর অনেক উন্নয়নশীল দেশের প্রবাসীদের সেই দেশের এমবাসেটর হিসাবে মর্যাদা দেওয়া হয়। ফিলিপিন্সে ক্রিসমাসের সময় দেশে বেড়াতে যাওয়া প্রবাসীদের মন্ত্রী মর্যাদার লোকজন মর্যাদার সাথে বরন - আর আমরা যখন বিমানবন্দরে নামি তখন আমাদের বরন করে রক্তচক্ষু কাস্টম অফিসারগন - যাদের আচরনে মনে হয় - আমরা এক একজন স্বর্ণচোরাকারবারী।

তার উপর জোট সরকারের সৃস্ট প্রবাসী কল্যান মন্ত্রনালয়ের যে কীর্তিকলাপ জানলাম তাতে সরকারের দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিয়ে কল্যান তহবিলে পূর্নহিসাব জনসমক্ষে জানাতে হবে এবং তহবিল লুটপাটের জন্যে দায়ীদের দ্রুত বিচারের সন্মুখিন করে প্রবাসীদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ তৈরী করতে হবে। নতুবা প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানোর বাদ দিয়ে আবারো হুন্ডির দিকে ঝুঁকে পড়বে।


(সূত্র - Click This Link)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১:০৮
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×