আমাদের দেশের রাজনীতির যে ধারা সেটা আমাদের সহনশীলতা শিখায় না। আমরা কখনই মেনে নিতে পারি না যে, বহুদলীয় মতামত থাকতে পারে। অন্যের মতের কোন দাম থাকেনা আমাদের কাছে। নিজেরটাই ঠিক আর অন্যেরটা ভুল। আমি ভালো আর সবাই খারাপ। আর এই আচরণ থেকে আমাদের প্রতিহিংসার মনোভাব গ্রো করেছে। এটা আমরা ছোটবেলা থেকেই অন্যকে দেখে নিজের মনের ভিতর লালন করি। কিন্তু এই মনোভাব গুলো আমাদের পরিবর্তন করতে হবে।
আমাদের মতের বিরুদ্ধে কোন কিছু গেলেই আমরা মারামারি শুরু করে দেই। অন্যের সম্পদের উপর আমাদের কোন মায়া নেই। এই বিশেষ একটি কারণেই আমাদের দেশের সরকারী অফিস, যানবাহন, টয়েলেট, রাস্তা ইত্যাদির এই বেহাল দশা। কেউ দেখছে না বলেই একটা জিনিসের ক্ষতি করে মজা পায় মানুষ। যেমন, কেউ দেখছে না বলেই বাসের সিটের রেক্সিন ব্লেড দিয়ে কাটা হয়। ইত্যাদি এমন হাজারো উদাহরন আছে।
ঠিক তেমনি গতকাল একজন ছাত্রীর গাড়ীর দুর্ঘটনায় বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা রাস্তায় চলমান সব গাড়িগুলো ভেঙে ফেলল। এটা কেমন বিচার? এটা কেমন সভ্যতা? ধরে নিলাম প্রতিটা গাড়ীর ক্ষতি যদি একলাখ টাকা হয় তবে ১০০ টি গাড়ীর ক্ষতির পরিমান বিশাল একটি অংক দাঁড়ায়। সামগ্রিক ভাবে কিন্তু বিশাল। আর এই ধ্বংশলীলায় কিন্তু মানুষের জানেরও ক্ষতি হচ্ছে। তবে এটা ঠিক এই সবগুলো কাজ কিন্তু যে শুধু ক্ষতিগ্রস্থ লোকরাই করে থাকে তা নয়। একটি বিশেষ সুবিধাবাদী মহল তড়িৎ গতিতে তৈরী হয়ে যায়। আরেকটা দল থাকে যারা এটা করে মজা পায়। অনেকটা স্বেচ্ছাসেবকের মত। যেমন পকেটমারকে মারতে দেখলে তাকে মারার জন্য বহুত লোক জোগাড় হয়ে যায়, ঠিক তেমনি।
সত্যিই খুব দুঃখজনক ঘটনা। প্রতিবাদ হতে পারে মৌন, প্রতীকি ইত্যাদি। যেগুলোর বাহ্যিক চাকচিক্য কম কিন্তু যার থিম থাকবে বিশাল। যেটা একটা বড় ধাক্কা দিতে পারে যে কাউকে। মনে আঁচড় কাটতে পারবে।
আমাদের আচরণ গুলো পরিবর্তন করে সঠিক পথে চলা উচিত। কারণ মানুষ অনুকরন প্রিয়। মনে রাখতে হবে দেশটা আমাদেরই। এখানে আমরা ভাড়াতে থাকিনা। এটার ভালো হলে আমাদেরই হবে, আর খারাপ হলে আমাদেরই হবে। সমাজের প্রত্যেকটা স্তরের, প্রত্যেকটা পেশার মানুষকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৩:০১