দয়া একটি মহৎ গুন, এই গুনটির অধিকারীকে বলা হয় দয়াবান। মানুষ দয়াবান হইতে পারে কিন্তু দয়াময় হইতে পারে না। ঈশ্বর দয়াময় গুনে পূন্য বলে তাহাকে দয়াময় বলে।
কোন ব্যক্তি যদি একজন ক্ষুধার্তকে অন্নদান ও একজন পথিকের মাল লুণ্ঠন করে, একজন জলমগ্নকে উদ্ধার ও অন্য-কাউকে হত্যা করে তবে তাকে দয়াময় বলা যায় কি? হয়ত ইহার উত্তর হবে না। কিন্তু উক্তরূপ কার্যকলাপ সত্তেও ঈশ্বর আখ্যায়িত আছেন দয়াময় নামে।
আলোচনাস্বরূপ, জীবজগতে খাদ্য খাদক সম্পর্ক বিদ্যমান। যখন কোন সবল প্রানী দুর্বল প্রানীকে ধরিয়া ভক্ষন করে, তখন ঈশ্বর খাদকের কাছে দয়াময় বটে। কিন্তু তখন তিনি কি খাদ্য প্রানীর কাছেও দয়াময়? ঈশ্বর এক জীবকে অন্য জীবের খাদ্য নির্বাচন না করিয় নির্জীব পদার্থ অর্থাৎ সোনা, রূপা, লোহা, মাটি ইত্যাদি নির্বাচন করিতে পারিতেন কি না? না পারিলে কেঁচোর খাদ্য মাটি হইল কিরূপে?
কাহারও জীবন রক্ষা করা দয়ার কাজ বটে, কিন্তু কাহাকে বধ করা দয়ার কাজ নহে বরং দয়াহীনতার পরিচয়। আবার জন্ম ও মৃত্যুর সংখ্যার প্রেক্ষিতে বলা যায় ঈশ্বর যেই পরিমান সদয় সেই পরিমান নির্দয়। এক্ষেত্রে অনেকেই বলে থাকেন যে তিনি নিরাকার, নির্বিকার ও অনির্বচনীয় এক সত্তা। যদি তাহা নাই হয়, তবে পৃথিবীতে শিশুমৃত্যু, অপমৃত্যু এবং ঝড় বন্যা, মহামারী, ভূমিকম্প ইত্যাদির প্রানহানিকর ঘটনাগুলির জন্য তিনিই কি দায়ী নহেন?
চলবে..