somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম ও বিজ্ঞান : পর্ব- ১২

০৮ ই জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধর্ম ও বিজ্ঞান : পর্ব- ১২
Click This Link
রায়হান



"Whosoever would not seek the LORD God of Israel should be put to death, whether small or great, whether man or woman." (2 Chronicles 15:13)



যে গ্রন্থে নেই কোন ইরাশনাল ও বর্বর অনার কিলিং প্রথা, নেই কোন নারী শিশু হত্যার অনুপ্রেরণা (বিশেষ অনার কিলিং), নেই কোন ইরাশনাল ও বর্বর সতীদাহ প্রথা (বিশেষ অনার কিলিং), নেই কোন ইরাশনাল ও বর্বর ডাইনীদাহ প্রথা, নেই কোন বর্ণবাদ প্রথা, নেই কোন জাতিভেদ প্রথা, নেই কোন ক্রীতদাস প্রথা, নেই কোন অস্পৃশ্য প্রথা, নেই কোন যৌতুক প্রথা, নেই কোন নরবলি প্রথা, নেই কোন বিশ্বাসের জন্য জোর-জবরদস্তি, নেই কোন এয়াপোস্টেট হত্যা, নেই কোন ব্ল্যাসফেমার হত্যা, নেই কোন বিধর্মী হত্যা, নেই কোন পাথর মেরে হত্যা, নেই কোন আগুনে পুড়িয়ে হত্যা, নেই কোন পর্ণগ্র্যাফিক বর্ণনা, নেই কোন ইনসেস্ট, নেই কোন অরিজিনাল সিন, নেই কোন প্রিভিয়াস সিন, নেই কোন মুন গড, নেই কোন সান গড, নেই কোন ম্যান গড, নেই কোন মাঙ্কি গড, নেই কোন ফাদার-সান-হলিঘোস্ট গড, নেই কোন প্রিস্টহুড, নেই কোন সন্ন্যাসবাদ, নেই কোন কুসংস্কার, নেই কোন, নেই কোন, নেই কোন …… এর পরও এরকম একটি গ্রন্থের বিরুদ্ধে যারা বছরের পর বছর ধরে পরিকল্পিতভাবে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আমজনতাকে অন্ধকারে রাখার চেষ্টা করে - তারাই আসলে অযুক্তিবাদী, অন্ধবিশ্বাসী, অমানবিক, অসৎ, প্রতারক, ফ্যানাটিক, এক্সট্রিমিষ্ট, ও প্রতিক্রিয়াশীল বাইগট। এই ধরণের মানবতাবিরোধী ও এয়ান্টি-সোসাল এলেমেন্টদের থেকে সাবধান থাকতে হবে।



বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, “রতনে রতন চেনে, শূয়রে চেনে কচু।” বাইবেলেও যীশুখ্রিস্ট অনুরূপ অথচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা বলেছেন :



"Give not that which is holy unto the dogs, neither cast ye your pearls before swine, lest they trample them under their feet, and turn again and rend you." (Matthew 7:6)



বাইবেলের এই ভার্সে কুকুর ও শূয়র বলতে সম্ভবত নাস্তিক ও বিধর্মীদের বুঝানো হয়েছে, যদিও স্বঘোষিত নাস্তিকদের লেখাতে ভুলেও এই ধরণের ভার্স কোট করা হয় না। কারণ তাদের উদ্দেশ্যই হচ্ছে (অপ)নাস্তিকতা, (অপ)বিজ্ঞান, (অপ)যুক্তিবাদ, ও (অপ)সংশয়বাদ প্রচারের আড়ালে ইসলাম ও মুসলিমদেরকে টেররিষ্ট, এক্সট্রিমিষ্ট, ফ্যানাটিক, স্যাটানিক, ইভিল, হেইটফুল, ইন্ট্যলারান্ট, ভায়োলেন্ট, সুইসাইড বোম্বার, ব্যাকওয়ার্ড, ব্লাইন্ড বিলিভার, এয়ান্টি-উম্যান, এয়ান্টি-সায়েন্স, ইত্যাদি প্রমাণ করা। তবে যাদেরকেই বুঝানো হোক না কেন, ভার্সের অন্তর্নিহিত অর্থ কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।



কোরআনের ২:২২২ নাম্বার আয়াতে নারীদের মাসিক রজঃস্রাবকে ‘অসুস্থতা’ বা ‘অশুচি’ বলাতে এবং ২:২২৩ নাম্বার আয়াতে নারীদেরকে ‘টিল্‌থ্‌’ বা ন্যাচারাল শষ্যক্ষেত্রের সাথে তুলনা করাতে হতদরিদ্র একটি দেশের কিছু প্রভূভক্ত দাস-দাসী কোরআনকে নারী বিদ্বেষী ও অবৈজ্ঞানিক বলে প্রোপাগান্ডা চালায়। বিজ্ঞানের জাত মেরেছে রে! এশিয়া-আফ্রিকার হতদরিদ্র দেশের কিছু নারীরা যে প্রভূদের কোলে বসে ইসলামকে নারী বিদ্বেষী বলে কান্নাকাটি করে সেই প্রভূরা নিজেদের ধর্মগ্রন্থের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে মনে মনে হয়ত বলে, “বোক্কা মেয়েরা কোথাকার!”



যে দেশে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই দু’বেলা পেট ভরে খাওয়ার জন্য সংগ্রামে রত, যে দেশে শিক্ষার হার আশংকাজনকভাবে কম, যে দেশে বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয় না বললেই চলে, যে দেশে যৌতুক প্রথা ও আরো কিছু কারণে নারীরা মাঝে-মধ্যেই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, যে দেশে খুব কম পরিবারেই হয়ত নারীদেরকে এক-তৃতীয়াংশ সম্পত্তি দেওয়া হয়, যে দেশে, যে দেশে -- যেগুলো সম্পূর্ণরূপে ইসলাম বিরোধী; অথচ সেই দেশেরই গুটিকয়েক নারী নিজেদেরকে ‘এক্স-মুসলিম’ ঘোষণা দিয়ে ড্রেস কিছুটা সংক্ষিপ্ত করে প্রভূদের কোলে বসে ইসলামকে নারী বিদ্বেষী বলে কান্নাকাটি করে! একাধিক স্বামীর জন্য কান্নাকাটি করে! ব্যভিচার ও চুরি-ডাকাতির শাস্তির ভয়ে কান্নাকাটি করে! কাগজে-কলমে হলেও আর ইকটু বেশী সম্পত্তির জন্য কান্নাকাটি করে! কান্নাকাটি করে! কান্নাকাটি করে!



এরা কিন্তু নিজেদেরকে ‘এক্স-মুসলিম’ ঘোষণা দেওয়ার আগে এগুলোর কোনটির জন্যই কান্নাকাটি করেনি! নিদেনপক্ষে এরকম কোন প্রমাণ নাই। অথচ নিজেদেরকে ‘এক্স-মুসলিম’ ঘোষণা দিয়েই এগুলোর জন্য কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। এদের উদ্দেশ্য তাহলে বুঝতেই পারছেন। মুসলিম নারীরা তো একাধিক স্বামীর জন্য রাস্তায় রাস্তায় কান্নাকাটি করে না। এমনকি তাদেরকে একাধিক স্বামী অফার করা হলেও তারা হয়ত ঝাড়ু নিয়ে তেড়ে আসবে! কারণ তারা খুব ভালভাবেই জানে যে, অবস্থার উপর ভিত্তি করে বাস্তবিক দৃষ্টিকোণ থেকে পুরুষের জন্য বিষয়টি সম্ভব হলেও নারীর জন্য অসম্ভব। ফলে অবাস্তব কোন কিছুর জন্য তারা কান্নাকাটি করে না। তারা এও জানে যে, এটি ইসলামের কোন মৌলিক টিচিং বা অবশ্য করণীয় কিছু নয়। কিন্তু কিছু অমুসলিম ও স্বঘোষিত এক্স-মুসলিমরা মুসলিম নারীদের হয়ে চোখের জল ফেলছে কেন? মায়ের চেয়ে সৎ-মায়ের দরদই বেশী নাকি! একদিকে মুসলিম নারীদের পোষাক নিয়ে পথে-ঘাটে-মাঠে-স্কুলে-টক’শোতে জংলিপনা চলছে অন্যদিকে আবার তাদের অধিকারের জন্য মায়াকান্না করে পায়ের জলে চোখ ভাসানো হচ্ছে! ভন্ডামোর তো একটা সীমাও থাকা উচিত।



শেখ হাসিনা পরিষ্কার করেই বলেছেন, “আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় গেলে কোরআন ও সুন্নাহ্‌ বিরোধী কোন আইন করা হবে না। আমি একমাত্র আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো কাছে মাথা নত করি না।” একই কথা তো ইসলাম লেবেলধারী দলগুলিও বলে! প্রকৃতপক্ষে শেখ হাসিনা যা বলেছেন তা দেড় বিলিয়নেরও বেশী মুসলিমদেরই কথা। অথচ কেউ কেউ আওয়ামিলীগকে ‘ধর্মহীন’ দল মনে করে বা কৌশলে ‘ধর্মহীন’ দল বানিয়ে দেওয়া হয়! একটি দেশের নির্বাচিত নারী প্রধানমন্ত্রী যখন এমন কথা বলেন তখন কিছু দুধের মাছি ইসলামে নারীদের ‘স্ট্যাটাস ও অধিকার’ নিয়ে দিন-রাত মায়াকান্না করে কেন? তারা কৌশলে এই বিষয়টাকে ইসলাম লেবেলধারী দলগুলোর উপর চাপিয়ে দেওয়ারই বা চেষ্টা করে কেন? এই দুধের মাছিরা আসলে কারা? এদের উদ্দেশ্যটা কী?



আচ্ছা বলুন তো, কোরআনে নারীদের ‘এক-তৃতীয়াংশ সম্পত্তি’ কি বাংলাদেশ ও এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটি? কোরআনের ‘ওয়াইফ বিটিং ভার্স’ কি বাংলাদেশ ও এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটি? ‘একজন পুরুষের স্থলে দু’জন নারী’ সাক্ষী দেওয়ার জন্য কোর্টে হাজির হওয়া কি বাংলাদেশ ও এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটি? ‘পুরুষের একাধিক ওয়াইফ’ কি বাংলাদেশ ও এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটি? মুসলিম নারীদের মডেস্ট ড্রেস কি বাংলাদেশ ও এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটি? আপনাদের কী মনে হয়? এগুলোকেই কিন্তু বাংলাদেশ সহ এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে বিভিন্ন ফোরাম ও মিডিয়াতে চিহ্ণিত করা হচ্ছে। অর্থাৎ কোরআন হচ্ছে এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যা! কেউ কেউ আবার সরাসরি না বলতে পেরে কৌশলে এগুলোকে রাজাকার ও ইসলাম লেবেলধারী দলগুলোর উপর চাপিয়ে দেওয়া শুরু করেছে। কেউ কেউ আবার রাহুগ্রাসে জর্জরিত পাকিস্তান ও যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের ঘাড়েও চাপিয়ে দেয়। এদের কাছে ইসলাম ও মুসলিম মানে হচ্ছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান! এরা যে কোন্‌ স্বর্গে বাস করে, কে জানে!



যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ - আফগানিস্তান। সেখানে যুগ যুগ ধরে সাম্রাজ্যবাদী সৈন্যের পদচারণা। মানুষ প্রতিনিয়ত খুন অথবা যখমের শিকার হচ্ছে। মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তাই নেই। বেশীরভাগ মানুষ একবেলাও শান্তিমত খেতে পারে না। এমনকি শান্তিমত ঘুমাতে পর্যন্ত পারে না। অথচ এরকম একটি দেশকে বার বার টেনে এনে ইসলাম ও মুসলিমদের সমালোচনা করা কতটা যৌক্তিক? তাও আবার এয়ান্টি-মুসলিম মিডিয়ার নিউজের উপর ভিত্তি করে? এরা কি আফগানিস্তানের গ্রাউন্ড রিয়্যালিটি সম্পর্কে আদৌ অবগত? আফগান পুরুষরা কি রাস্তায় রাস্তায় উইচ হান্টিং-এ নেমেছে? তারা কি তাদের নিরপরাধ বিধবা নারীদেরকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করছে? তারা কি যৌতুক না দেওয়ার কারণে নারীদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন চালাচ্ছে? তারা কি ধর্ষিতা নারীকে ধর্ষকের সাথে জোর করে বিয়ে দিচ্ছে? উত্তর যদি ‘না’ হয় তাহলে তারা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে নারীদের বিরুদ্ধে কী এমন করছে যে তার জন্য বিশ্বব্যাপী হৈচৈ করা হচ্ছে এবং তার সাথে ইসলাম ও দেড় বিলিয়ন মুসলিমদেরকেও জড়ানো হচ্ছে?



এমনকি ইরানকে আক্রমণের হুমকী দেওয়ার পর থেকে সেই দেশকেও কৌশলে টেনে নিয়ে আসা হচ্ছে। ইরানকে আক্রমণের ‘লেজিটিমেট পরিবেশ’ সৃষ্টির জন্য এও বলা হচ্ছে যে, ইরানে নারীদেরকে জোর করে বোরখা পরানোর কারণে ইরানকে আক্রমণ করা উচিত! এরা আসলে কারা? এদের উদ্দেশ্যটা কী? এরা কি আদৌ ইরানের নারীদের স্ট্যাটাস ও অধিকার সম্পর্কে অবগত? প্যাগান তথা বস্তুবাদী মন-মানসিকতার লোকজন মনে হয় উপরের পোশাক, যাহা স্বচক্ষে দেখা যায়, ছাড়া অন্য কিছু বোঝে না! ইরানে ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টদের মধ্যে প্রায় ষাট ভাগ নারী। মালয়েশিয়ার প্রায় সবগুলো ইউনিভার্সিটিতে পুরুষের চেয়ে নারীদের সংখ্যা বেশী, যেটা আমেরিকাতেও হয়ত বিরল। এই বিষয় নিয়ে না হয় অন্য একদিন।



যাহোক, আবুল কাসেম (ফেক নাম) ও তসলিমা নাসরিনের মত হতদরিদ্র একটি দেশের কিছু প্রভূভক্ত দাস-দাসী যেখানে উপরোল্লেখিত দুটি আয়াতের প্রসঙ্গ তুলে কোরানকে নারী বিদ্বেষী ও অবৈজ্ঞানিক বলে প্রোপাগান্ডা চালায়; সেখানে প্রফেসর কেইথ মূর ও টিভিএন প্রাসাদ এর মত এমব্রায়োলজির এক্সপার্ট তারই মধ্যে আবার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা খুঁজে পান! উপরের প্রবাদটি তাহলে নিছকই একটা প্রবাদ বাক্য নয়! তার সাথে বাস্তবতারও মিল আছে। বাইবেলে যীশুখ্রিস্টও বাস্তব কথাটাই বলেছেন। বিশ্বাস না হলে নীচের ভিডিওটা মনোযোগ দিয়ে শুনে দেখুন :



Click This Link


এই ভিডিওতে পাঁচ-ছয় জন বিজ্ঞানী কোরানের বিভিন্ন আয়াতের উপর লেকচার দিয়েছেন। ভিডিওটি মনোযোগ দিয়ে শুনে ভেবে দেখুন : শুধুমাত্র ঘুষ দিয়ে যে কোন একটি গ্রন্থের উপর বিজ্ঞানীদের দ্বারা এরকম লেকচার দিয়ে নেওয়া সম্ভব কি-না, কোরআন ও বিজ্ঞানীদেরকে ডিসক্রেডিট বা ডিফেম করার উদ্দেশ্যে যেভাবে প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। এরকম একটি ভিডিও দেখে রেসিস্ট মন-মানসিকতার লোকজন তো রাগে-ক্ষোভে-ঘৃণায় নিজের মাংস নিজে ছিঁড়ে খাবেই। দুর্বল হার্টের কেউ কেউ হার্ট এটাকও করতে পারে। কিন্তু ‘সরি’ বলা ছাড়া মুসলিমদের তাতে করার কিছু আছে বলে মনে হয় না। সম্ভব মনে করলে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও ঘুষ দিয়ে তাদের ধর্মগ্রন্থের উপর এরকম বা এর চেয়েও আকর্শনীয় ভিডিও তৈরী করে নিতে পারে, তাদের বিশ্বাসকে ‘শক্তিশালী’ করার জন্য। মুসলিমরা তাতে মোটেও মাইন্ড করবে না। কারণ তারা ‘পরশ্রীকাতরতা’ নামক ভাইরাসে যেমন আক্রান্ত নয় তেমনি আবার তাদের হার্টও অতটা দুর্বল নয়। বড়জোর অযৌক্তিক বা প্রতারণামূলক কিছু নজরে পড়লে সেটাকে তারা খন্ডন করতে পারে মাত্র। তবে ইতোপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, একটি ধর্মগ্রন্থের মধ্যে ‘বৈজ্ঞানিক তথ্য’ বা ‘মিরাকল’ একজন মানুষকে কোনভাবেই এই ‘মহাবিশ্বের ক্রিয়েটর’ বা ‘ক্রিয়েটরের জন্মদাতা পুত্র’ প্রমাণ করে না। এমনকি ‘বৈজ্ঞানিক তথ্য’ বা ‘মিরাকল’ একটি গ্রন্থকে অটোমেটিক্যালি এই ‘মহাবিশ্বের ক্রিয়েটরের বাণী’ হিসেবেও প্রমাণ করে না। ফলে ইসলামের সাথে প্রতিযোগীতা করতে যেয়ে কিছু প্রাচীন ধর্মগ্রন্থকে মডার্ণ যুগে টেনে নিয়ে এসে তার মধ্যে বৈজ্ঞানিক তথ্য বা মিরাকল খোঁজার মধ্যে কোনরকম যৌক্তিকতা আছে বলে মনে হয় না। এর পরও আমজনতাকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে কেউ কেউ হাল ছাড়তে নারাজ। কোরআনের সাথে প্রতিযোগীতা করতে যেয়ে কেউ যদি অন্য কোন ধর্মগ্রন্থকে টেনে নিয়ে আসতে চায় সেক্ষেত্রে তাকে সেই ধর্মে বিশ্বাসী হয়ে আসতে হবে, অবিশ্বাসী হয়ে নয়।



কারো কারো দৃষ্টিতে এই বিজ্ঞানীরা সহ ড. মরিস বুকাইলী (ফ্রেঞ্চ), ড. গ্যারি মিলার (ক্যানাডিয়ান), ইউসুফ এস্টেস (আমেরিকান), আব্দুর রহমান গ্রীন (বৃটিশ), ড. মুরাদ হফম্যান (জার্মান), প্রফেসর জেফরি ল্যাং (আমেরিকান), ইউসুফ ইসলাম (বৃটিশ), ড. বিলাল ফিলিপ্স (ক্যানাডিয়ান), ড. জামাল বাদাউই, জাকির নায়েক, শাবির আলী, ও হারুন ইয়াহিয়ার মত স্কলাররা হচ্ছেন অজ্ঞ, অপবিজ্ঞানী, অসৎ, প্রতারক, মিথ্যেবাদী, ঘুষখোর, ইত্যাদি। এমনকি আইনস্টাইন বা নিউটন কোরআনের স্বপক্ষে কিছু বললেও তাঁদেরকে অপবিজ্ঞানী ও ঘুষখোর বলে প্রোপাগান্ডা চালানো হতো। তাঁদের ভাগ্য ভাল যে, তাঁরা কিছু বলেননি! অন্যদিকে আলি সিনা (ফেক নাম), সৈয়দ কামরান মির্জা (ফেক নাম), আবুল কাসেম (ফেক নাম), ইবনে ওয়ারাক (ফেক নাম), আকাশ মালিক (ফেক নাম), আসগর, তসলিমা নাসরিন, ওয়াফা সুলতান, ও আয়ান হিরসি আলীর মত চরম ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী ফ্যানাটিক বাইগট এবং তাদের ইভ্যাঞ্জেলিস্ট গুরু ড. উইলিয়াম ক্যাম্পবেলের মত লোকজন হচ্ছেন মহা-জ্ঞানী, মহা-বিজ্ঞানী, মহা-দার্শনিক, মহা-যুক্তিবাদী, মহা-সৎ, মহা-সাধু, মহা-দরবেশ, ইত্যাদি। ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে এদের লেখাকে গডের বাণীর চেয়েও বেশী কিছু হিসেবে বিশ্বাস করা হয়! এমনকি আফগান মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরাও কোরআনকে অতটা অন্ধভাবে বিশ্বাস করে বলে মনে হয় না!



এবার নিরপেক্ষ মন-মানসিকতার ও সত্য সন্ধানী লোকজন কি বিজ্ঞানীদের সরাসরি কথাকে বিশ্বাস করবেন, যাঁরা কখনোই কোন ধর্ম বা তার ফলোয়ারদের বিরুদ্ধে কোনরকম ঘৃণা-বিদ্বেষ বা মিথ্যে প্রোপাগান্ডা চালাননি; নাকি অন্ধকার টিউবের ইসলাম- মুসলিম বিদ্বেষী কিছু ফ্যানাটিক বাইগট, প্রতারক, ও আপাদমস্তক মিথ্যেবাদীদের লেখাকে বিশ্বাস করবেন - সেটা বিচারের ভার না হয় তাদের উপরই ছেড়ে দেওয়া হল।



যেখানে ড. গ্যারি মিলার, আব্দুর রহমান গ্রীন, প্রফেসর জেফরি ল্যাং, ও ইউসুফ এস্টেসের মত পশ্চিমা বিশ্বের ডজন ডজন সৎ ও স্মার্ট লোকজন ইসলাম গ্রহণ করে ড. বুকাইলীর লিখা বইকে ডিফেন্ড করছেন (হয়ত শতভাগ নয়), কোরআনকে কাভার-টু-কাভার ডিফেন্ড করছেন, এমনকি হাদিসকে পর্যন্ত ডিফেন্ড করতে লজ্জাবোধ করছেন না; সেখানে হতদরিদ্র কিছু দেশের কিছু প্রভূভক্ত দাস-দাসী কোরআন ও ড. বুকাইলীর বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা চালিয়েই যাচ্ছে! জাকির নায়েক বা আব্দুর রহমান গ্রীন বা ড. গ্যারি মিলারের মত স্কলারদের মুখোমুখী দাঁড়ানো তো দূরে থাক, এমনকি ইঁদুরের গর্ত থেকে ও বেনামে আমার মত কারো সাথে লিখিত ডিবেট করার মতই তো এদের সাহস নাই! ইতোমধ্যে সবাই সেটা প্রত্যক্ষ করেছেন নিশ্চয়। কারণ অপরাধীরা খুব ভাল করেই জানে যে তারা অপরাধী। ফলে অন্ধকার থেকে আলোর জগতে আসতে অপরাধীরা সব সময়ই ভয় পায়।



জেনারেল চ্যালেঞ্জের পাসাপাসি সরাসরি নাম উল্লেখ করে কয়েক জনকে ওপেন ডিবেট চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া আছে, যাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট কিছু কেসও দাঁড় করানো হয়েছে। সভ্য জগতের নিয়ম অনুযায়ী কারো বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট কোন কেস থাকলে সেই কেস থেকে নিষ্কৃতি না পাওয়া পর্যন্ত তাকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা হয়। অথচ সেই অপরাধীরা অন্ধকার গলি থেকে তাদের অপরাধ চালিয়েই যাচ্ছে। এমনকি এই পৃথিবীর বুক থেকে ‘ইসলাম ও মুসলিম’ ইরাডিকেশনের জন্য আবুল কাসেম, কামরান মির্জা, আসগর, ও আলি সিনার মত স্বঘোষিত এক্স-মুসলিমরা দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সঠিকভাবে বললে বলতে হবে, এই মুসলিম নামধারীদেরকে দিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে নেওয়া হচ্ছে। এরা নিজেদেরকে ‘এক্স-মুসলিম’ ঘোষণা দিয়ে ফেক মুসলিম নাম নিয়ে ইঁদুরের গর্ত থেকে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা, বিদ্বেষ, মিথ্যে প্রোপাগান্ডা, ও হলি ওয়ার শুরু করেছে। এরা মুসলিমদেরকে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতিও দেখাচ্ছে। ফলে এই টেররিষ্ট ও অপরাধীদের গডফাদার, প্রমোটার, মদদদাতা, ও সুরসুরিদাতা কে বা কারা - সেটাই দেখার বিষয়।



"I have learnt a lot from FFI. It has taught me that Islam can be defeated. Today, FFI is no more the site of Dr Sina. FFI belongs to the entire humanity, who wants a world free of Islamist terror and bloodshed, who wants to release the vast number of innocent Muslims, who are the victims of Islam, from the dangerous doctrine. Islam is barbaric, false, and imperialistic-this is the message of FFI to the world…History will record these intrepid authors as the harbingers of a new era that will be free of Islam. Perhaps the greatest strength of FFI is that it has launched a grass root movement to demystify Islam, and to subdue Islam so that the civilization will be spared from the barbarism of Islamic incursion." (Abul Kasem – a fake name)



(তথাকথিত ‘এক্স-মুসলিম’ দাবিদারেরা ফেক মুসলিম নাম নিয়ে এয়ান্টি-মুসলিম রেসিস্ট ও কমিউনাল গ্রুপের সাথে যোগ দিয়ে ইঁদুরের গর্ত থেকে ইসলাম ও মুসলিম ইরাডিকেশনের জন্য আদাজল খেয়ে লেগেছে। এরা কতদূর কী করতে পারে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।)



আরো মজার বিষয় হচ্ছে, এশিয়া-আফ্রিকার হতদরিদ্র কিছু দেশের এরাবিক নামধারী কিছু দাস-দাসী যেখানে আমেরিকা-ইউরোপে যেয়ে বাংগালীর দশতলা বিল্ডিং দেখার মত বেহুঁস হয়ে নিজেদেরকে ‘এক্স-মুসলিম’ দাবি করে প্রভূদের কোলে বসে ইসলামকে নারী বিদ্বেষী হিসেবে প্রচার করছে - ইসলাম ও মুসলিমদেরকে বিভিন্নভাবে হেয় ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে -- সেখানে আমেরিকা-ইউরোপের মাটিতেই ইসলাম গ্রহণের হার সবচেয়ে বেশী এবং তাদের মধ্যে আবার নারীদের সংখ্যাই বেশী! এই দাস-দাসীরা আমেরিকা-ইউরোপের কোন্‌ অন্ধকার টিউবে যে বাস করে, কে জানে! এরা মনে হয় জানেই না যে, মুসলিমরা ইসলাম ও কোরআনে বিশ্বাস করে; অন্য কোন ধর্মে নয়! এরা আরও জানে না যে, যে দেশ জ্ঞান-বিজ্ঞানে যত বেশী অগ্রসর, সে দেশে ইসলাম গ্রহণের হার তত বেশী। অন্যদিকে যে দেশ জ্ঞান-বিজ্ঞানে যত কম অগ্রসর, সে দেশে ইসলাম গ্রহণের হারও তত কম। সেই বাংলা প্রবাদ, “রতনে রতন চেনে, ছাগলে চেনে ঘাস!”



তারা যে শুধু ইসলাম গ্রহণ করেই ক্ষান্ত হচ্ছেন, তা কিন্তু নয়। তাদের মধ্যে অনেকেই আবার বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে ইসলামকে রীতিমত ডিফেন্ডও করছেন। তারা এতটাই ডিভোটেড, এতটাই প্রাউড, ও এতটাই কনফিডেন্ট যে, তাদের দেখলে জন্মসূত্রে মুসলিমরা লজ্জা পেয়ে যাবে! কারো বিশ্বাস না হলে কোথাও না যেয়ে শুধুমাত্র ইউটিউবে Sheikh Yusuf Estes, Dr. Gary Miller, Abdur Raheem Green, Dr. Bilal Philips, Khalid Yasin, Yusuf Islam, Yusuf Chambers, Dr. Murad Hoffman, Prof. Jeffery Lang, Hamza Yusuf Hanson, Yassir Fazaga, Abdal-Hakim Murad, Idris Tawfiq, Abdullah Hakim Quick, Jermaine Jackson, Malcolm X, Dr. Alan Godlas, Michael Wolfe, Dr. Ingrid Mattson, Yvonne Ridley ইত্যাদি নাম লিখে সার্চ দিয়ে তাদের লেকচারগুলো শুনে দেখতে পারেন। এ ছাড়াও ইউটিউব ও ইন্টারনেট জুড়ে পশ্চিমা বিশ্বের শত শত কনভার্ট/রিভার্ট পাওয়া যাবে, যারা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ইসলাম, মুসলিম, ও প্রফেট মুহাম্মদের বিরুদ্ধে ঘৃণা-বিদ্বেষ ও মিথ্যে প্রোপাগান্ডার জবাব দিচ্ছেন। তদের মধ্যে বেশীরভাগেরই বয়স আবার তিরিশের আশে-পাসে - অর্থাৎ ইয়ং জেনারেশন।



(চলবে …)
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×