somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যানজট ব্যবসার সমাপ্তি হবে কবে ? নির্বাচনী ইস্তেহার অনুসারে যানজট ব্যবসার প্রসার সম্ভাবনা রয়েছে

০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ঢাকার রাস্তায় যানজটের খবর আবার সংবাদ শিরোনাম হয়ে আসছে। বিভিন্ন রাস্তায় যানজট। নগরের ব্যস্ত মানুষের সময় থমকে গেছে আবার। মানুষ আবারও চিৎকার করবে এই জট হতে মুক্তির। আবারও কি আসবে নতুন নতুন সব চমৎকপদ পরিকল্পনা? কারণ বড় বড় পরিকল্পনা মানেই বড় অংকের ব্যবসা, জনগন কত লাভবান হলো তা বিবেচনার প্রয়োজন নেই। পরিকল্পনা বাসত্দবায়ন যখন লাভ, তখন যানজট সমস্যার সমাধান কেন? আর এ কথা প্রমান করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে এখনই সরকারের প্রশ্ন করা উচিত, আগের পরিকল্পনাগুলোর কার্যকারিতা কেন হয়নি। আর নতুন এ পরিকল্পনা যদি সমাধান না আসে তাহলে দার ভার কার হবে? আগের পরিকল্পনাগুলোর কেন কাঙ্খিত লক্ষ্যের দিকে নিতে পারেনি? মানুষকে জিম্মি করে বা সমস্যাকে প্রকট করে ব্যবসার এই ফন্দিগুলো আমরা সাধারণ মানুষ বুঝলোও নীতিনির্ধারক কেন বুঝে না তা সত্যিই বিস্ময়কর।

ঢাকার রাস্তায় যানজট নিরসনে অনেক পরিকল্পনা হয়েছে। নেয়া হয়েছে অনেক পদক্ষেপ, কিন্তু কার্যকর বা ফলপ্রসু সমাধান আজও আসেনি। কি কারণ হতে পারে এ অবস্থার? পরিকল্পনার ভুল বা দূরদর্শিতার অভাব? দূনীতি? না স্বার্থ সংশ্লিস্ট সিদ্ধান্তের ফলাফল? পরবর্তী সময়ে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহনের পূর্বে এ বিষয়গুলো বিবেচনা করা প্রয়োজন।

ঢাকার রাস্তায় যানজট হ্রাসের লক্ষ্যে এক সময় দিনে ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়, তার পর দুরপাল্লার বাস, তার পর ভিআইপি রোডে রিকশা, তার পর ঢাকার অনেক স্থান হতে রিকশা নিষিদ্ধ করা হয়। মাঝে রাস্তায় আলাদা করে রিকশা চলাচলেরও ব্যবস্থা করা হয়। রাসত্দা পরাপারের জন্য ফুটওভার ও আডার পাস দিয়ে হাটার রাস্তা করা হয়। কিন্তু সুফল আসেনি। তবে হয়েছে কিছু লোকের ব্যবসা। এই লোকগুলোই নতুন নতুন তথ্য দিয়ে সরকারকে বিভ্রান্ত করে, ব্যবসা করে থাকে। ট্রাক, বাস, রিকশা কে যানজটের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলেও প্রাইভেট গাড়ী বা ছোট গাড়ী নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন না করাটা সত্যিই বিস্ময়ের বিষয়। ঢাকার রাস্তায় যানজটের অন্যতম কারণ হচ্ছে ক্রমবর্ধমান প্রাইভেট গাড়ী। রাস্তায় দুই পাশে আগে যেখানে রিকশা চলাচল করতো এখন সেই রাস্তাগুলোতে প্রাইভেট গাড়ী দখল করে আছে।

থাইল্যান্ডের অনুকরণে যাতায়াত ব্যবস্থা করার কথা বলা হচ্ছে। অথচ থাইল্যান্ডে ফ্লাইওভার, স্কাইট্রেন এবং অনেক রাস্তা থাকার পরও এখনো যানজটের সমস্যা আছে। কারণ উপর দিকে রাসত্দা যতই করেন, নিচে তো নামতে হবেই। ফ্লাইওভার দিয়ে যাতায়াত করতে হলে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়, প্রাইভেট গাড়ীর বৃদ্ধির কারণে বায়ু ও শব্দদূষণ বেড়েছে। বেড়েছে যাতায়াত খরচ। তবে কি ঢাকাকে থাইল্যান্ডের মতো বানাবো হবে, যাতে বায়ুদুষণ ও শব্দদূষণ বাড়ে, বেড়ে যায় মানুষের যাতায়াত খরচ। কেন কোপেন হেগেন, সুইজারল্যান্ড ইত্যাদি দেশের অভিজ্ঞতা নেওয়া হচ্ছে না?

ঢাকা শহরের অনেক মানুষ হেটে বা বাসে চলাচল করে। কিন্তু এ ব্যবস্থা উন্নয়ন করতে কোন আশানুরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। রাস্তায় হাঁটার পরিবেশ খুব ভাল নয়। রাস্তায় ছায়া বা বসার ব্যবস্থা নেই। ফুটপাতে গাড়ী দখল করে রাখে, নোংরা অবস্থা রাসত্দার, বাসে উঠতে জান বেরিয়ে যায়, নেই যাত্রী ছাউনি, রোদে বৃষ্টিতে ভিজতে হয়। কিন্তু এগুলোর ঠিক করার জন্য কোন প্রকল্প না করে, করা হবে ফ্লাইওভার বা মাটির নিচ দিয়ে যাতায়াতের, কারণ ওখানে অনেক ব্যবসা, অনেক টাকা। এ পরিকল্পনাগুলো রেল লাইন না বাড়িয়ে স্টেশন আধুনিকায়ন করা মতোই ব্যবসায়িক পরিকল্পনা। অথচ রেল লাইন বাড়ানো হলে ট্রেন জট আরো কমানো এবং ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো যেতো। মানুষকে স্টেশনে বসে থাকতে হতো না।

পৃথিবীর যে কোন দেশেই যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে পাবলিক পরিবহন, হাঁটার পরিবেশ উন্নত, সাইকেল মতো যানবাহন বৃদ্ধি করেছে এবং প্রাইভেট গাড়ী নিয়ন্ত্রণ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু আমাদের দেশে খুব সুকৌশলে এই বিষয়গুলোর প্রতিগুরুত্ব আরোপ না করে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে, ফলে সমাধান আসছে না। নষ্ট হচ্ছে দেশের অর্থ। বিগত দিনের কাজগুলো সমাধান না করলে কেন আবার ঐ একই ধরনের কাজ করতে যাচ্ছি?

এখনই সময়। খুজে বের করতে হবে, বিগত দিনে কারা ভুল/অকার্যকর/স্বার্থ সংশ্লিস্ট পরিকল্পনা দিয়েছে। পরবর্তী সময়ে যে কোন ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনায় এদের বাদ দেওয়া উচিত। এ বিষয়টি পরিস্কারভাবে সরকারকে বোঝানো উচিত এ ধরনের লোকদের দিয়ে আগামী দিনেও কাজ হবে না। তাদের থেকে ভুল পরিকল্পনার জন্য ক্ষতিপুরণ আদায় করতে হবে। তারা হয় দায়িত্ব অবহেলা, দূনীতি বা কোন কিছু পাবার লোভ বা ভয়ে এ ধরনের অদূরদর্শী সিদ্ধানত্দ নিয়েছে। তারা কখনোর জাতির জন্য দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে না। এ সকল ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী/প্রতিষ্ঠান বর্জন করাও সময় এসেছে এখন। দক্ষ, দেশপ্রেমী, আনত্দরিক, বুদ্ধিমান ইঞ্জিনিয়ার, পরিকল্পনাকারী, ব্যবসায়ীদের নিজে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন এ পরিকল্পনার অর্থ যেভাবেই প্রদান করা হোক না কেন, যোগান দিতে হয় সারা দেশের মানুষের। সারা দেশের মানুষের কষ্টের অর্থ যেন কিছুতেইএ ধরনের নিত্য নতুন চমৎপদ অর্থহীন পরিকল্পনার মাধ্যমে খরচ না করতে পারে সেদিকে এ সরকারের তীক্ষ দৃষ্টি করা প্রয়োজন। যদি এ সকল বিষয়ে না ভেবে শুধু তোষামদকারী ও সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় তবে ভুলের সম্ভাবনা আরো বৃদ্ধি পাবে বিগত দিনের মতোই, কিছু দিন জন্য সমস্যার সমাধান হলেও আবারও নতুন পরিকল্পনা করতে হবে নতুন সমস্যা সমাধানের জন্য।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×