somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করলে ‎‎গুনাহ হবে কি?

০৩ রা জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ২:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কুরআন, হাদীস ও বিবেক-বুদ্ধি অনুযায়ী
অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করলে ‎
‎গুনাহ হবে কি?



-প্রফেসর ডাঃ মোঃ মতিয়ার রহমান (এফ আর সি এস) ‎ ‎
মূল বিষয়
মু’মিনের ১ নং আমল হচ্ছে কুরআনের জ্ঞান অর্জন করা। আর ‎শয়তানের ১ নং কাজ হচ্ছে কুরআনের জ্ঞান থেকে মু’মিনকে দূরে রাখা ‎বা কুরআনের জ্ঞান অর্জনের পথে নানা রকম বাধার সৃষ্টি করা। অর্থাৎ ‎সকল মুসলিমের জন্যে সব ফরজের বড় ফরজ হচ্ছে কুরআনের জ্ঞান ‎অর্জন করা এবং সব থেকে বড় গুনাহ হচ্ছে কুরআনের জ্ঞান থেকে দূরে ‎‎থাকা। বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করেছি ‘মু’মিনের ১ নং কাজ এবং ‎শয়তানের ১ নং কাজ’ নামক বইটিতে। ‎
‎যে কোন সত্তা তার ১ নং কাজে সফল হওয়ার জন্যে সর্বাধিক চেষ্টা-‎সাধনা করবে, এটা স্বাভাবিক। তাই শয়তান তার ১ নং কাজে অর্থাৎ ‎কুরআনের জ্ঞান থেকে মানুষ বা মুসলিমদের দূরে রাখার কাজে সফল ‎হওয়ার জন্যে সব থেকে বেশি চেষ্টা-সাধনা করবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু ‎ভাবতে অবাক লাগে, ১ নং কাজটিতে তার (শয়তানের) সফলতা দেখে। ‎অনিষ্ঠাবান মুসলিমদের কথা দূরে থাক, আজ পৃথিবীর অধিকাংশ নিষ্ঠাবান ‎মুসলিমেরও কুরআনের জ্ঞান নেই। আরো অবাক লাগে যে সকল কথার ‎মাধ্যমে শয়তান মুসলিমদের কুরআনের জ্ঞান থেকে দূরে রেখেছে বা ‎কুরআনের জ্ঞান অর্জন করার পথে বাধার সৃষ্টি করেছে, সেগুলোর ধরন ‎‎দেখে। ঐ কথাগুলো যে অযৌক্তিক বা ধোঁকাবাজি, তা সাধারণ বিবেক-‎বুদ্ধির আলোকেও বুঝা সহজ। তারপরেও একটি জাতির অধিকাংশ লোক ‎কিভাবে তা মেনে নিলো, এটা একটা অবাক কাণ্ড। ‎
‘অজু ছাড়া কুরআন পড়া যাবে কিন্তু স্পর্শ করা যাবে না’-এ কথাটা ‎বর্তমান বিশ্বে মুসলিমদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচারিত। আর এর ব্যাখ্যা ‎‎থেকে মুসলিমরা ব্যাপকভাবে জানে ও মানে যে- মুসলিমরা‎
‎১. অজু ছাড়া কুরআন মুখস্থ পড়া যাবে কিন্তু স্পর্শ করে বা ধরে পড়া ‎যাবে না। ‎
‎২. অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা বা ধরা মহাপাপ। ‎
হাফেজ ছাড়া বাকি সব মুসলিমের কুরআনের অল্পই মুখস্থ থাকে। ‎আবার বেশির ভাগ মুসলিমের তাদের জাগ্রত জীবনের অধিকাংশ সময় ‎অজু থাকে না। তাই কথাটি অধিকাংশ মুসলিমের, জাগ্রত জীবনের ‎অধিকাংশ সময়, কুরআন ধরে পড়ার পথে এক বিরাট বাধা। অর্থাৎ ‎কথাটি অধিকাংশ মুসলিমের জন্যে কুরআনের জ্ঞান অর্জনের পথে এক ‎বিরাট বাধা। কথাটি যদি চালু না থাকত, তবে সকল বেঅজু মুসলিমের ‎পকেটে বা ব্যাগে কুরআন থাকতো এবং তা বাসায়, অফিসে বা পথে-‎ঘাটের যে কোন অবসর সময়ে পড়তে কোন অসুবিধা হত না। ফলে ‎তাদের কুরআন পড়ার অর্থাৎ কুরআনের জ্ঞান অর্জনের সময় অনেক ‎‎বেড়ে যেত এবং অনেক অনেক মুসলিম সহজে কুরআনের জ্ঞানে জ্ঞানী ‎হতে পারত। তাই কথাটা মুসলিমদের মধ্যে, কুরআনের জ্ঞানী লোক কম ‎‎থাকার একটা প্রধান কারণ।‎
কথাটি যদি কুরআন-হাদীস সম্মত না হয় তবে তা উচ্ছেদ করা ‎‎গেলে ইসলাম তথা মুসলিমদের অপরিসীম কল্যাণ হবে ভেবে কথাটার ‎বিপে বা পে কুরআন-হাদীস ও বিবেকের কী কী তথ্য আছে তা ‎পর্যালোচনা করে জাতির সামনে উপস্থিত করাই আমার এ প্রচেষ্টার ‎উদ্দেশ্য। ‎


ইসলামে অপবিত্রতার শ্রেণী বিভাগ ‎
ইসলামী জীবন বিধানে অপবিত্রতার শ্রেণী বিভাগ হল-‎


মানসিক অপবিত্রতা
ইসলামী জীবন বিধানে ঐ সব ব্যক্তিকে মানসিক দিক দিয়ে অপবিত্র ‎বলে যারা আক্বিদা-বিশ্বাসের দিক দিয়ে শিরকে নিমজ্জিত এবং যারা ‎কুরআনের যে কোন একটি বক্তব্যকেও মনের দিক দিয়ে অবিশ্বাস বা ঘৃণা ‎করে। ইসলামী পরিভাষায় এদের মুশরিক ও কাফের বলা হয়। এই ‎ধরনের ব্যক্তিরা গোসল করলেও মানসিক দিক দিয়ে পবিত্র হবে না। ‎কারণ, গোসল হচ্ছে শারীরিক অপবিত্রতা দূর করার উপায়। ‎
অন্যদিকে, যে ব্যক্তি কুরআন ও সূন্নাহের সকল বক্তব্যকে মন দিয়ে ‎বিশ্বাস ও ভক্তি করে, সে মানসিক দিক দিয়ে পবিত্র। কিন্তু প্রকাশ্যে ‎‎ঘোষণা দেয়ার আগ পর্যন্ত এটাতো আল্লাহ ছাড়া আর কারো পে বুঝার ‎উপায় নেই। তাই ইসলামী জীবন বিধানে মনের দিক দিয়ে পবিত্র ব্যক্তি, ‎যখন মুখে কালেমা তাইয়্যেবার ঘোষণা দেয়, তখনই শুধু তাকে ‎আনুষ্ঠানিকভাবে (ঋড়ৎসধষষু) মু’মিন বা ঈমানদার হিসাবে ধরা হয়। আর ‎‎সে যখন কালেমার দাবি অনুযায়ী কাজ করতে আরম্ভ করে, তখন তাকে ‎মুসলিম বলা হয়। এরকম ব্যক্তিরা শারীরিক দিক দিয়ে অপবিত্র হলেও ‎মানসিক দিক দিয়ে পবিত্র বা ঈমানদার থাকে। ‎
আবার কোন ব্যক্তির অবস্থা যদি এমন হয় যে, সে মুখে কালেমা ‎তাইয়্যেবার ঘোষণা দিয়েছে এবং ইসলামের কিছু কাজও (আমল) করছে ‎কিন্তু মনের দিক দিয়ে সে কুরআন ও সূন্নাহের সকল বক্তব্যের প্রতি ‎বিশ্বাস আনতে পারেনি, তবে সে মানসিক দিক দিয়ে অপবিত্র রয়েই ‎যাবে। এই ধরনের ব্যক্তিকে ইসলামী জীবন বিধানে মুনাফেক বলা হয়। ‎কুরআন বলছে, কিয়ামতে এদের স্থান হবে দোযখের সর্বনিম্ন স্তরে। ‎মানসিক পবিত্রতা-অপবিত্রতা সম্বন্ধে উপরোক্ত কথাগুলো কুরআন ও ‎হাদীসে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা পরে আসছে। ‎
শারীরিক অপবিত্রতা
ক. বড় ধরনের শারীরিক অপবিত্রতা
ইসলামী জীবন বিধান অনুযায়ী দু’ভাবে এ ধরনের অপবিত্রতা অর্জিত ‎হয়- ‎
‎১. যৌন মিলনের পর বা বীর্যপাতের পর এবং ‎
‎২. মেয়েদের মাসিক বা প্রসূতি স্রাব চলা অবস্থায়। এ ধরনের ‎অপবিত্রতা থেকে পবিত্র হওয়ার জন্যে গোসল করা প্রয়োজন। ‎
খ. ছোট ধরনের শারীরিক অপবিত্রতা ‎
এ ধরনের অপবিত্রতা হতে শরীর পবিত্র করার উপায় হচ্ছে অজু ‎করা। অনেক কারণেই শরীর এরকম অপবিত্র হয়। তবে তার মধ্যে ‎সব থেকে বেশি যা মানুষের হয় তা হচ্ছে প্রস্রাব, পায়খানা ও পায়ু ‎পথে বায়ু নির্গত হওয়া। ‎
পবিত্রতা-অপবিত্রতার ব্যাপারে ইসলামী জীবন বিধানের উপরে বর্ণিত ‎‎মৌলিক কথাগুলো জানার পর চলুন এখন, বিভিন্ন ধরনের অপবিত্র ‎অবস্থায় কুরআন পড়া, স্পর্শ করা ও শোনার ব্যাপারে বিবেক-বুদ্ধি, ‎কুরআন ও হাদিসের তথ্যগুলো দেখা যাক।‎
‘অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা পাপ’-কথাটির ব্যাপারে ‎
বিবেক-বুদ্ধির’ তথ্য‎
তথ্য-১‎
‎ সম্মানের দৃষ্টিকোণ‎
‘অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা পাপ’-কথাটার পে সাধারণ যে যুক্তি ‎‎দেখানো হয় তা হচ্ছে, এটা কুরআনকে সম্মান দেখানো। কোন গ্রন্থের, ‎বিশেষ করে ব্যবহারিক (অঢ়ঢ়ষরবফ) গ্রন্থের, সব চেয়ে বড় সম্মান হল, ‎তা পড়ে জ্ঞান অর্জন করা এবং সে জ্ঞান বাস্তবে প্রয়োগ করা। আবার ‎সাধারণ বিবেকের সর্বসম্মত রায় হচ্ছে, কোন গ্রন্থের জ্ঞান অর্জনের পথে ‎বিরাট বাধা সৃষ্টি করে এমন বিষয় দ্বারা ঐ গ্রন্থকে সম্মান করা বুঝায় না। ‎বরং তা হল ঐ গ্রন্থের চরম অসম্মান। ‎
‘অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা পাপ’-কথাটা কুরআনের মত ‎ব্যবহারিক গ্রন্থের জ্ঞান অর্জনের পথে একটা বিরাট বাধা। তাই, সাধারণ ‎বিবেক অনুযায়ী কথাটার দ্বারা কুরআনকে সম্মান করা নয় বরং চরম ‎অসম্মান করা হয়। সুতরাং ঐ রকম একটা তথ্য ইসলামের বিষয় হওয়ার ‎কথা নয়। ‎
তথ্য-২ ‎
‎ গুরুত্বের দৃষ্টিকোণ‎
মুসলিম সমাজে যে কথাটি ইসলামের কথা হিসাবে চালু আছে তা ‎হচ্ছে ‘অজু ছাড়া কুরআন পড়লে গুনাহ নেই কিন্তু স্পর্শ করলে গুনাহ।’ ‎‎কোন গ্রন্থ পড়ার কাজটি, তা স্পর্শ করা কাজটি অপো কোটি কোটি ‎‎গুণ বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কোন বিশেষ অবস্থায় বেশি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা ‎যাবে কিন্তু কম গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা যাবে না এটি একটি সম্পূর্ণ বিবেক-‎বিরুদ্ধ কথা। তাই বিবেক-বুদ্ধি অনুযায়ী সহজেই বলা যায় অজু ছাড়া ‎কুরআন পড়া যাবে কিন্তু স্পর্শ করা যাবে না-কথাটি সম্পূর্ণ বিবেক ‎বিরুদ্ধ। বিবেক-বুদ্ধি অনুযায়ী কথাটি হবে-‎
ক. অজু ছাড়া কুরআন পড়া গেলে তা স্পর্শও করা যাবে। ‎
খ. অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা না গেলে তা পড়াও যাবে না। ‎

তথ্য-২‎
‎ অন্য গ্রন্থের সহিত ব্যতিক্রমের দৃষ্টিকোণ‎
কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানুষ তা পড়ে জ্ঞান অর্জন করবে ‎এবং সে জ্ঞান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে। অন্যদিকে কুরআন ‎হচ্ছে আল্লাহর কিতাব, তাই মানুষের লেখা যে কোন বইয়ের তুলনায় সব ‎দিক থেকে তার একটা বিশেষত্ব থাকবে। যেমন কুরআন নির্ভুল কিন্তু ‎অন্য কোন গ্রন্থ তা নয়, কুরআনের সাহিত্য মানের সঙ্গে অন্য কোন ‎বইয়ের সাহিত্য মানের তুলনা হয় না ইত্যাদি। তাই অপবিত্র অবস্থায় ‎কুরআন ছোঁয়ার ব্যাপারেও অন্য গ্রন্থের থেকে কিছু ব্যতিক্রম থাকবে ‎এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই ব্যতিক্রম এমন হওয়া সাধারণ বিবেক ‎বিরুদ্ধ যে, তা কুরআন নাযিলের প্রধান উদ্দেশ্য সাধনের পথে অর্থাৎ ‎কুরআনের জ্ঞান অর্জনের পথে বিরাট বাধার সৃষ্টি করবে। ‘অজু ছাড়া ‎কুরআন স্পর্শ করা পাপ’-কথাটা কুরআন ধরে পড়ার পথে অর্থাৎ ‎কুরআনের জ্ঞান অর্জনের পথে একটা বিরাট বাধা। ‎
‘তাই গোসল ফরজ অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা নিষেধ’-কথাটি এ ‎‎দৃষ্টিকোণ থেকে উভয় দিকই রা করতে পারে। কারণ, একদিকে তা ‎‎যেমন অপবিত্রতার একটি অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করতে না দিয়ে ‎কুরআনের ব্যতিক্রমধর্মী গুণ বজায় রাখবে; অন্যদিকে তা বেশিণ ‎মানুষকে কুরআন ধরে পড়া থেকে দূরে রাখবে না। কারণ, একজন ‎মুসলিম বেশি সময় গোসল ফরজ অবস্থায় থাকে না। পরবর্তী নামাজের ‎আগে তাকে অবশ্যই গোসল করে পবিত্র হতে হয়। তাই বিবেক বলে ‎অপবিত্র অবস্থায় কুরআন স্পর্শ করা নিষেধ হলে তা গোসল ফরজ ‎অবস্থায় হওয়াই সকল দিক দিয়ে যুক্তিযুক্ত। ‎

‘অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা পাপ’ কথাটির ব্যাপারে ‎
আল-কুরআনের তথ্য‎
তথ্য-১‎
‎ গুনাহের কাজে সহায়তার দৃষ্টিকোণ
কুরআন ও হাদীস অনুযায়ী গুনাহের কাজে সহায়তা করা গুনাহ। যেমন, ‎সুদ খাওয়া, দেয়া, লেখা, সুদের সাী হওয়া সবই গুনাহ। কুরআন ও ‎হাদীস অনুযায়ী শয়তানের ১নং কাজ হল মানুষকে কুরআনের জ্ঞান থেকে ‎‎দূরে রাখা। অর্থাৎ সব গুনাহের বড় গুনাহ হল কুরআনের জ্ঞান থেকে ‎‎দূরে থাকা। ‘অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা পাপ’ কথাটি কুরআনের জ্ঞান ‎অর্জনের সময়কে ভীষণভাবে কমিয়ে দেয়। কারণ মানুষের জীবনের ‎‎বেশিরভাগ সময় অজু থাকে না। আর হাফিজ ব্যতীত অন্য সবাইকে ‎কুরআন ধরেই পড়তে হয়। অর্থাৎ ‘অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা পাপ’ ‎কথাটি সবচেয়ে বড় গুনাহের কাজটি সংঘটিত হওয়ার ব্যাপারে বিরাট ‎সহায়তা করে। তাই কুরআন অনুযায়ী এমন একটি কথা কোন মতেই ‎ইসলামের কথা হতে পারে না। ‎
তথ্য-২‎
‎ বিপরীতধর্মী বক্তব্য হওয়ার দৃষ্টিকোণ
সূরা নিসার ৮২ নং আয়াতের মাধ্যমে মহান আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন ‎আল-কুরআনে পরস্পর বিরোধী কোন বক্তব্য বা তথ্য নেই। কুরআন ‎অনুযায়ী কুরআনের জ্ঞান অর্জন করা সব ফরজের বড় ফরজ। আর ‘অজু ‎ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা পাপ’ কথাটি ঐ সব ফরজের বড় ফরজ কাজটি ‎করার পথে একটি বিরাট প্রতিবন্ধকতা। অর্থাৎ তথ্য দুটি পরস্পর ‎বিরোধী। কুরআনের জ্ঞান অর্জন করা সব ফরজের বড়ো ফরজ তথ্যটি ‎কুরআনের একটি স্পষ্ট তথ্য। তাই এ তথ্যের বিপরীত হওয়ার কারণে ‎‘অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা পাপ’ কথাটি কুরআন তথা ইসলামের কথা ‎হতে পারে না।‎
তথ্য-৩‎
‎ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ও বিবেক-বিরুদ্ধ হওয়ার দৃষ্টিকোণ ‎
সূরা আলে-ইমরানের ৭ নং আয়াতের মাধ্যমে পরোভাবে আল্লাহ ‎জানিয়ে দিয়েছেন যে, কুরআন তথা ইসলামে চিরন্তনভাবে মানুষের ‎বিবেক-বিরুদ্ধ থাকবে এমন ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য (মুহকামাত) কোন বিষয় নেই। ‎চিরন্তনভাবে বিবেকের বাইরের বিষয় হবে কুরআনের অতীন্দ্রিয় ‎‎(মুতাশাবিহাত) বিষয়সমূহ। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি ‎‘পবিত্র কুরআন, হাদীস অনুযায়ী ইসলামে বিবেক-বুদ্ধির গুরুত্ব কতটুকু ‎এবং কেন’ নামক বইটিতে। ‎
কুরআন পড়া, স্পর্শ করা এবং অজু-গোসল সবই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য বিষয়। ‎সুতরাং সূরা আলে-ইমরানের ৭ নং আয়াতের পরো বক্তব্য অনুযায়ী ঐ ‎সকল বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত বিবেক-বিরুদ্ধ কোন কথা কুরআনের ‎কথা নয় বা কুরআনের কথা হবে না। ‎
অজু ছাড়া কুরআন পড়া যাবে কিন্তু স্পর্শ করা যাবে না- একটি ‎সম্পূর্ণ বিবেক-বিরুদ্ধ কথা। তাই এই আয়াতের আলোকে বলা যায় ‎একথাটি কুরআন তথা ইসলামের কথা হতে পারে না। এ আয়াতের ‎আলোকে এ বিষয়ে তথ্যটি নিম্নের দু’টির একটি হবে-‎
ক. অজু ছাড়া কুরআন পড়া ও স্পর্শ করা উভয়টি যাবে, ‎
খ. অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা ও পড়া কোনটি যাবে না। ‎
আল-কুরআন থেকে কোন বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসার নিয়ম হল ঐ বিষয়ে ‎কুরআনের সকল আয়াতের বক্তব্য পাশাপাশি রেখে পর্যালোচনা করে ‎চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা। আর ঐ পর্যালোচনার সময় খেয়াল রাখতে হবে ‎একটি আয়াতের অর্থ বা ব্যাখ্যা যেন অন্য কোন আয়াতের বিপরীত না ‎হয় এবং অস্পষ্ট আয়াতের অর্থ বা ব্যাখ্যা‏ ‏‎স্পষ্ট আয়াতের বক্তব্যের সাথে ‎সামঞ্জস্যশীল হয়। ‎
তাই পূর্বে উল্লিখিত তথ্য দুটি এবং পরে আসা তথ্যের সাথে মেলালে ‎সহজে বলা যায় সূরা আলে-ইমরানের ৭ নং আয়াতের তথ্য হচ্ছে-অজু ‎ছাড়া কুরআন পড়া ও স্পর্শ করা উভয়টি সিদ্ধ।‎
তথ্য-৪‎
‎ সূরা ওয়াকি‘আর ৭৯ নং আয়াতের দৃষ্টিকোণ ‎
‘বে-অজু কুরআন স্পর্শ করা যাবে না বা গুনাহ’-এ কথা যারা বিশ্বাস ‎করেন এবং বলেন, তাদের নিকট ঐ কথাটার ব্যাপারে দলিল জানতে ‎চাইলে, প্রায় সবাই যে আয়াতটি বলেন, তা হচ্ছে-‎
لاَ يَمَسُّهُ إلاَّ الْمُطَهَّرُوْنَ.‏
তাই আয়াতখানির প্রকৃত অর্থ অর্থাৎ মহান আল্লাহ আয়াতটিতে কী ‎বলেছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা দরকার। ‎
আয়াতখানির মূল শব্দ (কবু ড়িৎফং) হচ্ছে তিনটি। যথা-মাস্ ‎‎(‎مَسٌّ‎), হু (‎هُ‎) এবং মুতাহ্হারুন (‎مُطَهَّرُوْنَ‎)। এই তিনটি শব্দের সঠিক ‎অর্থ নিতে পারলে আয়াতখানির সঠিক বক্তব্য বোঝা যাবে। অন্যথায় তা ‎কখনই সম্ভব হবে না। ‎
মূল শব্দ তিনটি অপরিবর্তিত রেখে আয়াতখানির সরল অর্থ দাঁড়ায়-‎‘মুতাহ্হারুন ব্যতীত ঐ কুরআন কেউ মাস্ করতে পারে না। ‎
আয়াতখানির মূল তিনটি শব্দের যে সকল অর্থ আরবী ভাষায় হয় বা ‎যা আল-কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে তা হল-‎
‎ মুতাহ্হারুন ‎‏(مُطَهَّرُوْنَ)‏
‎১. অজু বা গোসল করে পবিত্র হওয়া মানুষ, ‎
‎২. নিষ্পাপ সত্তা বা ফেরেশতা।‎
‎ ঐ কুরআন: ‎
‎১. পৃথিবীর কুরআন‎
‎২. লওহে মাহফুজে রতি কুরআনের মূল কপি।‎
‎ মাস্ (‎مَسٌّ‎)‎
‎১. স্পর্শ করা,‎
‎২. শাস্তি ভোগ করা (সূরা আল-আন’আমের ৪৯ নং আয়াত),‎
‎৩. অত্যাচারে জর্জরিত করা (সূরা বাকারার ২১৪ নং আয়াত),‎
‎৪. সম্মুখীন হওয়া বা ধারে-কাছে আসা (সূরা হিজরের ১৫নং আয়াত),‎
‎৫. স্ত্রী সহবাস (সূরা মায়েদার ৬ নং এবং নিসার ৪৩ নং আয়াত),‎
‎৬. কুপ্ররোচনা বা ধোঁকা দেয়া (সূরা বাকারা, ২৭৫নং আয়াত)।‎
আল-কুরআনের তাফসীরের নীতিমালা (উসূল) হল একটি আয়াতের ‎‎কোন শব্দের যদি একাধিক অর্থ হয় তবে শব্দটির সে অর্থটি নিতে হবে ‎‎যেটি নিলে-‎
‎ আয়াতটির অর্থ আগের ও পরের আয়াতের সাথে সামঞ্জস্যশীল হয় ‎
‎ অন্য আয়াতের সাথে সামঞ্জস্যশীল হয়,‎
‎ শানে নুযুলের (নাযিলের পটভুমি) সাথে সামঞ্জস্যশীল হয়,‎
এরপরও যদি নিশ্চিত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো না যায় তবে পর্যালোচনা করতে ‎হবে ঐ বিষয়ে-‎
‎ রাসূল (সা.) এর বক্তব্য তথা হাদীস,‎
‎ সাহাবায়ে কিরামগণের বক্তব্য,‎
‎ পূর্ববর্তী মনীষীদের বক্তব্য,‎
‎ বর্তমান মনীষীদের বক্তব্য। ‎
কুরআন শরীফের আয়াতের তাফসীরের ব্যাপারে উপরোক্ত তথ্যগুলো ‎সামনে রেখে চলুন এখন আয়াতখানির সঠিক অর্থটি বের করার চেষ্টা ‎করা যাক-‎

‎ আয়াতখানির শানে নুযুল‎
মক্কার কাফেররা রাসূল (সা.) কে গণক, যাদুকর ইত্যাদি বলত। ‎তারা বলে বেড়াতো শয়তান কুরআন নিয়ে এসে মুহাম্মাদ (সা.) কে পড়ে ‎পড়ে শিখিয়ে দেয়। তারপর মুহাম্মাদ (সা.) সেটা অন্যদের জানায়। ‎কাফেরদের এই প্রচারণার উত্তরে মহান আল্লাহ আলোচ্য আয়াতখানিসহ ‎আরো কয়েকটি আয়াতে বক্তব্য রেখেছেন। যেমন সূরা শুয়ারার ২১০-‎‎২১২ নং আয়াতে বলা হয়েছে-‎
‏.‏
অর্থ: এটা (কুরআন) নিয়ে শয়তান অবতীর্ণ হয় নাই। এ কাজ তাদের ‎জন্যে শোভনীয় নয় এবং তারা এর সামর্থ্যও রাখে না। তারাতো ‎‎(অবতীর্ণের সময়) এটা শোনা হতেও দূরে চলে যেতে বাধ্য হয়। ‎
‎(শুয়ারা : ২১০-২১২) ‎
‎ শানে নুযুল এবং আগের ও পরের আয়াতের বক্তব্যের আলোকে ‎আলোচ্য আয়াতের প্রকৃত অর্থ‎
আয়াত খানির আগের ও পরের আয়াতসমূহ অর্থাৎ সূরা ওয়াকিয়ার ৭৭-‎‎৮১ নং আয়াত ‎
অর্থ: আলোচ্য ‎‏)‏‎৭৯‎‏ ‏নং) আয়াতের মূল তিনটি শব্দ হুবহু রেখে আয়াত ‎ক’খানির সরল অর্থ হবে- উহা এক অতীব উচ্চ মর্যাদার কুরআন। যা ‎আছে এক সংরতি গোপন কিতাবে লিপিবদ্ধ। মুতাহ্হারুনরা ব্যতীত ‎‎কেউ তা (ঐ কুরআন) ‘মাস’ করতে পারে না। এটাতো মহাবিশ্বের রবের ‎নিকট থেকে নাযিল হয়েছে। এই বক্তব্য কি তোমাদের ধারণাকে মলম ‎দিয়ে ঢেকে দেয় না (মিথ্যা প্রমাণিত করে না)? ‎
ব্যাখ্যা: ৭৯ নং আয়াতে ঐ কুরআন বলতে যে কুরআনকে বোঝানো ‎হয়েছে সে কুরআন সম্বন্ধে ৭৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে, তা আছে এক ‎সংরতি গোপন কিতাবে। ‘সংরতি গোপন’ শব্দ দুটির মাধ্যমে ‎সহজেই বোঝা যায় এখানে লওহেমাহফুজের কুরআন তথা কুরআনের ‎মূল কপিখানি যা লওহেমাহফুজে ‘সংরতি’ আছে তার কথা বলা ‎হয়েছে। কারণ পৃথিবীর কুরআন সংরতি ও গোপন কোনটিই নয়। যে ‎‎কেউ পৃথিবীর কুরআন যেকোন অবস্থায় ধরতে, পড়তে ছিঁড়তে ও ‎অপমানিত করতে পারে। ‎
এ তথ্যগুলো সামনে রেখে ৭৯নং আয়াতের মূল শব্দ তিনটির ‎‎দু’ধরনের অর্থ ধরে আয়াতখানির যে দু’ধরনের ব্যাখ্যা করা যেতে পারে ‎তা হল-‎
ক. উহা এক অতীব উচ্চ মর্যাদার কুরআন, যা লওহেমাহফুজে সংরতি ‎আছে। নিষ্পাপ ফেরেশতা ব্যতীত ঐ লওহেমাহফুজের কুরআনের ‎ধারে কাছেও কেউ যেতে পারে না। (পৃথিবীর কুরআন) মহাবিশ্বের ‎রবের নিকট থেকে নাযিল হওয়া। এ বক্তব্য কি তোমাদের ধারণাকে ‎‎(শয়তান কুরআন নিয়ে এসে মুহাম্মাদকে শুনায়) মিথ্যা প্রমাণিত ‎করে না?‎
খ. উহা এক অতীব উচ্চ মর্যাদার কুরআন, যা লওহেমাহফুজে সংরতি ‎আছে। অজু বা গোসল করে পবিত্র হওয়া মানুষ ব্যতীত ঐ ‎লওহেমাহফুজের কুরআন কেউ স্পর্শ করতে পারে না। (পৃথিবীর ‎কুরআন) মহাবিশ্বের রবের নিকট থেকে নাযিল হওয়া। এ বক্তব্য কি ‎‎তোমাদের ধারণাকে (শয়তান কুরআন নিয়ে এসে মুহাম্মাদকে ‎শুনায়) মিথ্যা প্রমাণিত করে না?‎
আয়াত ক’খানির এ দু’টি ব্যাখ্যার কোনটি গ্রহণযোগ্য হবে এ প্রশ্ন করলে ‎আমার তো মনে হয় পৃথিবীর সকল বিবেকসম্মত মানুষ একবাক্যে বলবে ‎প্রথমটি অবশ্যই গ্রহণযোগ্য হবে এবং দ্বিতীয়টি কখনই গ্রহণযোগ্য হতে ‎পারে না। তাই তাফসীরের মূল নীতিমালার আলোকে সহজেই বলা যায় ‎সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নং আয়াতের ব্যাখ্যা হল-‘নিষ্পাপ ফেরেশতা ব্যতীত ‎লওহেমাহফুজের কুরআনের ধারে-কাছেও কেউ যেতে পারে না’। ‎
চলুন, এখন দেখা যাক আয়াতটির তরজমা ও তাফসীরের ব্যাপারে ‎বিখ্যাত তাফসীরকারকগণ কী বলেছেন-‎
ক. বিখ্যাত তাফসীরকারক ইবনে কাসীর (রহ.) তাঁর তাফসীর গ্রন্থে এই ‎আয়াতের তাফসীরে লিখেছেন, ‘যারা পূতঃ পবিত্র তারা ব্যতীত অন্য ‎‎কেউ তা স্পর্শ করে না। অর্থাৎ শুধু ফেরেশতারা এটা স্পর্শ করে ‎‎থাকেন’। তাহলে ইবনে কাসীর (রহ.) ঐ আয়াতে ‎‏ مُطَهَّرُوْنَএর ‎অর্থ ‘নিষ্পাপ ফেরেশতা’ বলেছেন। (পৃষ্ঠা নং ২৮৫ ও ২৮৬, ১৭তম ‎খণ্ড, ২য় সংস্করণ, তাফসীর পাবলিকেশন কমিটি, ঢাকা, বাংলাদেশ)‎
খ. মুফতি শফি (রহ.) তাঁর তাফসীর গ্রন্থ মা‘আরেফুল কুরআনে এই ‎আয়াতটির তাফসীরে লিখেছেন-‎
‎ বিপুল সংখ্যক সাহাবী, তাবেয়ী এবং তাফসীরবিদের মতে, সূরা ‎ওয়াকিয়ার ৭৯ নং আয়াতে ‎‏ مُطَهَّرُوْنবলতে ফেরেশতাদের ‎বুঝানো হয়েছে যারা পাপ ও হীন কাজকর্ম থেকে পবিত্র। অর্থাৎ ‎বিপুল সংখ্যক সাহাবী ও তাবেয়ীর মতে, ঐ আয়াতে ‎مُطَهَّرُوْن‎ ‎শব্দের অর্থ ‘নিষ্পাপ’। ‎
‎ কিছু সংখ্যক তাফসীরবিদ মনে করেন, কুরআনের ঐ বক্তব্য ‎মানুষের জন্যেও প্রযোজ্য হবে এবং পবিত্র বলতে তাদের ‎বুঝানো হবে যারা ‘হদসে আকবর’ ও ‘হদসে আসগর’ থেকে ‎পবিত্র। (পৃষ্ঠা নং ৩০, ৮ম খণ্ড, ১ম সংস্করণ, ইসলামিক ‎ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ) ‎
গ. হজরত আশরাফ আলী থানবী (রহ.) তাঁর তাফসীর গ্রন্থে এই ‎আয়াতের তরজমা ও তাফসীর করেছেন, ‘তাকে নিষ্পাপ ‎‎ফেরেশতাগণ ব্যতীত কেউ স্পর্শ করতে পারে না’। ‎
ঘ. মাওলানা মওদূদী (রহ.) তাঁর তাফসীর গ্রন্থ তাফহীমুল কুরআনে এই ‎আয়াতের তাফসীরে লিখেছেন, এই আয়াতে ‎مُطَهَّرُوْن‎ শব্দ ‎‎ফেরেশতাদের বুঝাবার জন্যে ব্যবহৃত হয়েছে যারা সর্বপ্রকার ‎অপবিত্র আবেগ-ভাবধারা ও লালসা-বাসনা হতে পবিত্র। অর্থাৎ ‎মাওলানা মওদূদীও (রহ.) ‎مُطَهَّرُوْن‎ অর্থ নিষ্পাপ বলেছেন। (পৃষ্ঠা ‎নং ১২৫-১২৯, ১৭ তম খণ্ড, ১ম সংস্করণ, আধুনিক প্রকাশনী, ঢাকা, ‎বাংলাদেশ)‎
‎ সুতরাং ‘নিষ্পাপ ফেরেশতা ব্যাতীত কেউ লোহমাহফুজের ‎কুরআনের ধারে-কাছেও যেতে পারে না’ সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নং ‎আয়াতের এ ব্যাখ্যার পে আছে-‎
‎ শানে নুযুল,‎
‎ আয়াতটির আগের দুটো আয়াতের বক্তব্য,‎
‎ পরের দুটি আয়াতের বক্তব্য,‎
‎ একই বিষয়ে অন্যান্য আয়াতের বক্তব্য, ‎
‎ বিপুল সংখ্যক সাহাবায়ে কিরামের বক্তব্য,‎
‎ বিপুল সংখ্যক তাবেয়ীর বক্তব্য। ‎
আর ‘অজু বা গোসল করে পবিত্র হওয়া ব্যক্তিরা ব্যতীত পৃথিবীর কুরআন ‎‎কেউ স্পর্শ করতে পারে না’ আয়াতখানির এ ব্যাখ্যার পে আছে ‎শুধুমাত্র কিছু সংখ্যক তাফসীর কারক। ‎
তাই নিশ্চয়তাসহকারেই বলা যায় সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নং আয়াতের ‎ব্যাখ্যা, ‘অজু বা গোসল করে পবিত্র হওয়া ব্যক্তিরা ব্যতীত কেউ পৃথিবীর ‎কুরআন স্পর্শ করতে পারবে না’ এ কথা বলার অর্থ হচ্ছে শানে নুযুল, ‎কুরআনের অন্যান্য আয়াতের বক্তব্য, বিপুল সংখ্যক সাহাবীর বক্তব্য এবং ‎বিপুল সংখ্যক তাবেয়ীর বক্তব্যকে অস্বীকার করে কিছু সংখ্যক ‎তাফসীরকারকের বক্তব্যকে মেনে নেয়া। অর্থাৎ এটি ইসলামে কোন ‎মতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ‎
তাই ‘কুরআন স্পর্শ করার আগে অজু করতে হবে’ কথাটার ভিত্তি ‎হচ্ছে আল-কুরআন, এ তথ্যটা একেবারেই ঠিক নয়। এই অতীব সত্য ‎কথাটি মুফতি শফী (র.) তাঁর তাফসীর গ্রন্থে এভাবে উল্লেখ করেছেন-‎‘যেহেতু বিপুল সংখ্যক সাহাবী ও তাবেয়ী মতভেদ করেছেন, তাই অনেক ‎তাফসীরবিদ অপবিত্র অবস্থায় কুরআনপাক স্পর্শ করার নিষেধাজ্ঞার ‎ব্যাপারে কুরআনের আয়াতকে (সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নং আয়াত) দলিল ‎হিসেবে পেশ করেন না। তারা এর প্রমাণ হিসেবে কয়েকটি হাদীস পেশ ‎করেন মাত্র’। (সে হাদীসগুলোয় কী তথ্য আছে তা ব্যাখ্যাসহকারে পরে ‎আসছে।)‎

তথ্য-৫‎
‎ নামাজ আদায় ও কুরআন আরম্ভ করার আগে যা করার কথা কুরআনে ‎উল্লেখ আছে এবং যা করার কথা তথায় উল্লেখ নেই, তার দৃষ্টিকোণ‎
নামাজের আগে অজু বা গোসল করে পবিত্র হওয়া ইসলামের একটা ‎‎গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক (ফরজ) আমল। আর মৌলিক বলেই মহান আল্লাহ ‎আল কুরআনের ২টি সূরায় এ তথ্যটি বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করে ‎‎রেখেছেন। চলুন, এখন দেখা যাক নামাজের আগে অজু-গোসল করার ‎কথাটা আল্লাহ কুরআনে কিভাবে উল্লেখ করেছেন-‎
অর্থ: হে মু’মিনগণ, যখন তোমরা নামাজের জন্যে উঠবে তখন স্বীয় ‎মুখমণ্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে। মাথা এবং গোড়ালি পর্যন্ত ‎পা মাসেহ করবে। যদি তোমরা অপবিত্র হও তবে গোসল করে পবিত্র ‎হবে। আর যদি রোগাক্রান্ত হও অথবা প্রবাসে থাক অথবা তোমাদের ‎‎কেউ প্রস্রাব-পায়খানা সেরে এসে থাকে বা তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস ‎করে থাক, অতঃপর পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করে ‎নিবে। অর্থাৎ ঐ মাটির দ্বারা (মাটির পর হাত রেখে সেই হাত দ্বারা) স্বীয় ‎মুখমণ্ডল ও হস্তদ্বয় মুছে ফেলবে। (এ আদেশ দ্বারা) আল্লাহ তোমাদের ‎কষ্ট দিতে চান না। বরং এর দ্বারা তিনি তোমাদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ‎করতে চান এবং তোমাদের প্রতি তাঁর নেয়ামত (কল্যাণ কামনা) পরিপূর্ণ ‎করে দিতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। ‎
আর সূরা নিসার ৪৩ নং আয়াতে আল্লাহ আদেশটা এভাবে উল্লেখ ‎করেছেন-‎
অর্থ: হে ঈমানদারগণ, তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাক, তখন নামাজের ‎ধারে-কাছেও যাবে না, যতণ না বুঝতে পার কী পড়ছো। অনুরূপভাবে ‎‎গোসল ফরজ অবস্থায়ও নামাজের কাছে যাবে না, যতণ না গোসল ‎কর। কিন্তু মুসাফির অবস্থার কথা স্বতন্ত্র। আর যদি তোমরা অসুস্থ কিংবা ‎সফরে থাক অথবা তোমাদের মধ্য থেকে যদি কেউ প্রস্রাব-পায়খানা হতে ‎এসে থাকে বা স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে থাকে কিন্তু পানি না পাওয়া যায়, ‎তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নিবে অর্থাৎ ঐ মাটি দ্বারা মুখ এবং ‎হাত মাসেহ করে নিবে। নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা মাশীল। ‎
সুধী পাঠক, ল্য করুন, নামাজ পড়ার আগে অজু বা গোসল করে ‎শরীর পবিত্র করা ইসলামের একটা মৌলিক কাজ বা আমল বলে মহান ‎আল্লাহ তা বিস্তারিতভাবে ও পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে, আল কুরআনের অনেকটা ‎জায়গা নিয়ে, স্পষ্টভাবে, জানিয়ে দিয়েছেন। কুরআন নামাজের চেয়ে ‎অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই কুরআন পড়া বা স্পর্শ করার আগে ‎পবিত্রতা অর্জন করা দরকার বা গুরুত্বপূর্ণ হলে, আল্লাহর তা আরো ‎বিস্তারিত ও স্পষ্টভাবে, কুরআনের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়ার কথা। কিন্তু ‎কুরআন পড়া বা স্পর্শের আগে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে এমন একটি ‎কথাও আল-কুরআনের কোথাও উল্লেখ নেই (সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নং ‎আয়াতে আল্লাহ এ বিষয়ে আদেশ দিয়েছেন বলে যে কথা বলা হয় তা ‎‎মোটেই সঠিক নয়, সেটা পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে।) পান্তরে কুরআন ‎পড়ার আগে যে কাজটি অবশ্যই করতে হবে, তা মহান আল্লাহ স্পষ্টভাবে ‎জানিয়ে দিয়েছেন সূরা নাহলের ৯৮ নং আয়াতে নিম্নোক্তভাবে-‎
অর্থ: অতএব যখনই তোমরা কুরআন পাঠ করতে শুরু করবে, তখনই ‎অভিশপ্ত শয়তান হতে (শয়তানের ধোঁকাবাজি হতে) আল্লাহর নিকট ‎আশ্রয় চাইবে। ‎
অর্থাৎ মহান আল্লাহ কুরআন পড়া শুরু করার সময় পবিত্রতা অর্জন ‎করতে না বলে যে কাজটি বাধ্যতামূলকভাবে করতে বলেছেন তা হল, ‎ইবলিস শয়তানের ধোঁকাবাজি থেকে তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা। ‎কারণ, কুরআনের জ্ঞান থেকে মানুষকে দূরে সরানো হচ্ছে শয়তানের ১ ‎নং কাজ এবং সে কাজে শয়তান সফল হওয়ার জন্যে সর্বোতভাবে চেষ্টা ‎করে। তাই আল্লাহর সাহায্য না পেলে শয়তানের ঐ সকল ‎‎ধোঁকাবাজিমূলক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে কুরআনের জ্ঞান অর্জন করা ‎কারো পে সম্ভব হবে না। ‎
তাহলে দেখা যাচ্ছে, কুরআন দেখে‏ ‏পড়া, মুখস্থ পড়া বা পড়ানোর ‎আগে যা বাধ্যতামূলকভাবে করতে হবে বলে আল্লাহ জানিয়েছেন, তা ‎হচ্ছে শয়তানের ধোঁকাবাজি থেকে তাঁর নিকট আশ্রয় চাওয়া। অন্যদিকে ‎কুরআন পড়া, স্পর্শ করা অথবা অন্য কোন কাজের আগে পবিত্রতা অর্জন ‎করতে হবে এমন কোন কথা আল্লাহ কুরআনের কোথাও উল্লেখ ‎করেননি। ‎
তাই কুরআন পড়া, পড়ানো বা স্পর্শ করার আগে অজু বা গোসল ‎করে পবিত্রতা অর্জন করতে হবে এমন কোনো কথা যদি সহীহ হাদীসে ‎‎থেকেও থাকে (অজু করার কথা নেই) তবে তা হবে ইসলামের একটা ‎অমৌলিক বিষয়। কারণ, যে বিষয়টা কুরআনে প্রত্য, পরোভাবে ‎উল্লেখ নেই বা তা কুরআনের উল্লেখিত কোনো মূল বিষয়ের মৌলিক ‎বাস্তাবায়ন পদ্ধতিও নয়, তা সহীহ হাদীসে থাকলেও সেটা হবে ‎ইসলামের একটা অমৌলিক বিষয়। বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করেছি ‎‘পবিত্র কুরআন, হাদীস ও বিবেক-বুদ্ধি অনুযায়ী ইসলামের মৌলিক বিষয় ‎ও গুরুত্বপূর্ণ হাদীস কোন্গুলো তা জানা ও বুঝার সহজতম উপায়’ নামক ‎বইটিতে। ‎

‘অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা যাওয়া না যাওয়ার ব্যাপারে ‎কুরআনের তথ্যের সার-সংপে ‎
ক. আল-কুরআনের মাধ্যমে শুধুমাত্র নামাজ পড়ার আগে অজু বা ‎‎গোসল করে পবিত্র হওয়ার প্রত্য (উরৎবপঃ) নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ‎অন্য কোন কাজ করার আগে অজু বা গোসল করে পবিত্র হওয়ার প্রত্য ‎‎(উরৎবপঃ) বা পরো (ওহফরৎবপঃ) কোন নির্দেশ কুরআনে দেয়া হয় ‎নাই। এই ‘অন্য কাজের’ মধ্যে কুরআন পড়া, পড়ানো, স্পর্শ করাসহ ‎অন্য সকল কাজই অন্তর্ভুক্ত। ‎
খ. বিভিন্ন ধরনের তথ্যের মাধ্যমে কুরআন পরোভাবে জানিয়ে ‎দিয়েছে ‘অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা যাবে না বা পাপ’ কথাটি কুরআন ‎বিরুদ্ধ কথা এবং ‘অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা যাবে’ কথাটি কুরআন ‎সিদ্ধ কথা। ‎
‘অজু ছাড়া কুরআন স্পর্শ করা পাপ’ কথাটার ব্যাপারে ‎
হাদীসের তথ্য‎
পূর্বের আলোচনা থেকে আমরা জেনেছি, অজু বা গোসল করে পবিত্র ‎না হয়ে কুরআন স্পর্শ করা নিষেধ বা পাপ-এ ধরনের কোন কথা আল-‎কুরআনে নেই। তাই ঐ রকম কোন কথা যদি ইসলামে থেকেই থাকে ‎তবে তা অবশ্যই হাদীসে থাকতে হবে। চলুন, এখন দেখা যাক এ বিষয়ে ‎হাদীসে কী কী বক্তব্য আছে।‎
তথ্য-১‎‏.‏
অর্থ: ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। একদা রাসূল (সা.) শৌচাগার ‎হতে বের হয়ে আসলে তাঁর সামনে খাবার উপস্থিত করা হল। তখন ‎‎লোকেরা বলল, আমরা কি আপনার জন্যে অজুর পানি আনব না? তিনি ‎বললেন, যখন নামাজের প্রস্তুতি নিব শুধু তখন অজু করার জন্যে আমি ‎আদিষ্ট হয়েছি।‎ ‎ (তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী) ‎
তথ্য-২‎
ইবনে মাজাহ উপরোক্ত হাদীসটির ন্যায় একই রকম বর্ণনাসম্বলিত আর ‎একটি হাদীস আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণনা করেছেন।‎
হাদীস দু’খানির সম্মিলিত ব্যাখ্যা: হাদীস দুখানির ব্যাখ্যা বুঝার জন্যে ‎তিনটি বিষয় আগে ভালো করে বুঝে নিতে হবে। যথা-‎
ক. হাদীস দুটোয় রাসূল (সা.) স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘তাঁকে শুধু নামাজ ‎পড়ার আগে অজু করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’ সমগ্র কুরআন ‎পর্যালোচনা করলেও দেখা যায়, তথায় নামাজ পড়ার আগে অজু বা ‎‎গোসল করে পবিত্র হওয়ার জন্যে দুটো সূরার মাধ্যমে (নিসা ও ‎মায়েদা) সরাসরি ও বিস্তারিতভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অন্য ‎‎কোন কাজ করার আগে অজু বা গোসল করতে হবে এমন কোন ‎কথা আল-কুরআনে প্রত্য, পরো বা ইঙ্গিতেও উল্লেখ করা হয় ‎নাই। অর্থাৎ হাদীস দুটোর বক্তব্য কুরআনের বক্তব্যের অনুরূপ। তাই ‎হাদীস দুটোর বক্তব্য প্রায় কুরআনের বক্তব্যের ন্যায় শক্তিশালী এবং ‎বিষয়ে অন্য কোন হাদীস এ হাদীস দুটোর থেকে বেশি শক্তিশালী ‎হতে পারে না। কারণ, তা হতে হলে সেই হাদীসকে কুরআনের ‎‎থেকেও বেশি শক্তিশালী হতে হবে, যা কখনই হতে পারে না। ‎
খ. হাদীস দুটোতে রাসূল (সা.) অজু কথাটা সুনির্দিষ্টভাবে ‎‎(ঝঢ়বপরভরপধষষু) উল্লেখ করেছেন। গোসলের কথাটি তিনি এখানে ‎উল্লেখ করেননি। ‎
গ. হাদীস দুটো দু’জন বিখ্যাত সাহাবী ইবনে আব্বাস (রা.) ও আবু ‎হুরায়রা (রা.) সরাসরি রাসূল (সা.) এর উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ণনা করেছেন ‎এবং তা চারটি হাদীস গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, আবু ‎হুরায়রা (রা.) হচ্ছেন সর্বাধিক হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবী। ‎
হাদীস দুখানির ব্যাপারে উপরের তথ্যগুলো সামনে রেখে চলুন এখন তার ‎বক্তব্যকে ব্যাখ্যা করা যাক। খাওয়ার আগে অজু করা লাগে ভেবে, ‎‎শৌচাগার হতে বের হয়ে রাসূল (সা.) খেতে বসতে গেলে অজুর পানি ‎আনবে কিনা এ প্রশ্নটি সাহাবায়ে কিরামগণ তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। ‎সাহাবায়ে কিরামগণের ঐ প্রশ্নের উত্তরে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষটি সহজেই ‎বলতে পারতেন, ‘খাওয়ার আগে অজু করার দরকার নেই।’ কিন্তু তা না ‎বলে তিনি বললেন, ‘তিনি নামাজ পড়ার আগে অজু করার জন্যে আদিষ্ট ‎হয়েছেন।’ অর্থাৎ তিনি স্পষ্ট করে বলে দিলেন কুরআনের মাধ্যমে তাঁকে ‎শুধু নামাজ পড়ার আগে অজু কথা জানানো হয়েছে। অন্য কোন কাজ ‎করার আগে অজু করার কথা জানানো হয় নাই। এই অন্য কাজের মধ্যে ‎‎যেমন পড়বে খাওয়া-দাওয়া, চলাফেরা, চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য। ‎‎তেমনি তার মধ্যে পড়বে রোজা থাকা, জিকির করা, দোয়া করা, কুরআন ‎ও অন্যান্য গ্রন্থ দেখে বা মুখস্থ পড়া বা পড়ানো, কুরআন স্পর্শ করা ‎ইত্যাদি। ‎
তাহলে পুস্তিকার আলোচ্য বিষয়ের ব্যাপারে কুরআনের বক্তব্যের ‎অনুরূপ বক্তব্য সম্বলিত অর্থাৎ প্রায় কুরআনের আয়াতের ন্যায় শক্তিশালী ‎এই হাদীস দুটোর বক্তব্য থেকে স্পষ্টভাবে জানা যায়-‎
ক. কুরআন দেখে বা মুখস্থ পড়া বা পড়ানোর জন্যে অজুর প্রয়োজন নেই।‎
খ. কুরআন স্পর্শ করার জন্যেও অজু করার দরকার নেই। ‎
গ. কুরআন পড়া বা স্পর্শ করার আগে (গোসল ফরজ অবস্থায়) ‎‎গোসল করতে হবে কিনা এখানে সে বিষয়ে কিছু বলা হয় নাই।‎
চলুন, এবার দেখা যাক অন্য হাদীসে আলোচ্য বিষয়ের ব্যাপারে কী কী ‎বক্তব্য আছে-‎
তথ্য-৩‎
এ হাদীসটির পুস্তিকার আলোচ্য বিষয়ের সাথ
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ২:৫২
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রম্য

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪১


জাতীয় পরিচয় পত্রে ভূল সংশোধন কক্ষে মহিলা অফিসার বললেন - কি করতে পারি?

- সুতির নাইটি টা ঠিক করতে হবে।

এই শুনে মহিলা তো রেগে আগুন। খেঁকিয়ে উঠলেন রীতিমতো।
- অসভ্যতা করছেন?... ...বাকিটুকু পড়ুন

ওহাবী বাতিল মতবাদের স্বরূপ উন্মোচন

লিখেছেন মীর সাখওয়াত হোসেন, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৭

নজদী ওহাবীদের সম্পর্কে আলােচনা করার পূর্বে নজদ দেশ সম্পর্কে আলােকপাত করতে চাই। আরবের মক্কা নগরীর সােজা পূর্ব দিকের একটি প্রদেশের নাম নজদ । এখন উক্ত নজদ দেশটি সৌদি আরবের রাজধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘূর্ণিঝড় রিমাল সর্তকতা।

লিখেছেন কাল্পনিক_ভালোবাসা, ২৬ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩

প্রিয় ব্লগারবৃন্দ,
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় রিমাল প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে এবং ইতিমধ্যে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোর ব্লগারদের কাছে যদি স্থানীয় ঝড়ের অবস্থা এবং ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফ্রিল্যান্সার ডট কম

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৬ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৭

কাজের বুয়া ফ্রিল্যান্সার মাসে কামায় লাখ
হুমড়ি খেয়ে ডিগবাজি তায় পঙ্গপালের ঝাঁক
টিপলে বাটন মোবাইলটাতে ডলার আসবে রোজ
ডট কম কোচিং সেন্টার আমরাই দেব খোঁজ।

অমুকের বউ তমুকের ঝি হাতিয়ে নিচ্ছে সব
তোমরা মিছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিংশ শতাব্দীতে পৃথিবীতে চিরতরে যুদ্ধ বন্ধের একটা সুযোগ এসেছিল!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৬ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০৩


মনে হয় শুধু মানুষের কল্পনাতেই এমন প্রস্তাবগুলো উপস্থাপন সম্ভব- যদি বাস্তবে হত তবে কেমন হত ভাবুন তো?
প্রত্যেকটি দেশের সমস্ত রকমের সৈন্যদল ভেঙে দেওয়া; সমস্ত অস্ত্র এবং সমর-সম্ভার, দুর্গ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×