somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সনাতন ধর্ম (হিন্দু ) ও ইসলাম এর মধ্যে যোগ সম্পর্ক-৭ (নূহ (আঃ))

০২ রা জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১২:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



'যখনই কল্যাণকর কাজ ও সদগুণাবলী কম হয়ে যায় এবং পাপাচারের প্রসার ঘটে, তখন অবশ্যই সকল দেবতাদের বড় দেবতা পথ প্রদর্শনের জন্য একজন অবতার প্রেরণ বা একজন কৃতি পুরুষকে সৃষ্টি করেন ।' (শ্রীমত ভগবত পুরাণঃ ৯-২৪-৫৬)

এই ছিল দুনিয়াতে রাসূল প্রেরণর মূল উদ্দেশ্য । এখন নূহ (আঃ) এবং তার সময়ে সংঘটিত মহাপ্লাবনের ঘটনার সাথে সম্পর্কিত হিন্দুদের ধর্মগ্রন্হসমূহ থেকে উদ্ধৃতি ও প্রমাণ পেশ করছি ।

সাধারণভাবে এটা সকল বিদগ্ধ হিন্দু জানে যে, অতীতে এক বিশাল ব্যক্তিত্ব, পবিত্র জীবন ও বিখ্যাত ব্যক্তি অতীত হয়েছেন যাকে মানুষ মহানুভূ বলে স্বরণ করে । তার সময়ে আগত মহাপ্লবনের ধ্বংস থেকে বেচে যাওয়া একটি নৌযানের আরোহিদের মধ্যে ছিল সাত জন বিখ্যাত ঋষি । মহানুভু দুটি শব্দ দ্বারা গঠিতঃ মহা+নুভূ । মহা অর্থ বড় আর নুভূ-র অর্থ নিঃসন্দেহে নূহ (আঃ) । (Dubois in Hindu Manners, Customs & Ceremonies, p-48)

'নূহ (আঃ) এর সময় সংঘটিত মহপ্লাবণের অব্যবহিত পরেই হিন্দুস্হান (বা ভারতবর্ষ) আবাদ হয়ে যায় । (প্রাগুপ্ত, পৃ.১০০)

' এ সময় ভগবান মনুকে এইভাবে বললেনঃ ঠিক আছে, তুমি আমাকে ভাল করে চিনে ফেলেছ । হে পৃথিবীর রক্ষাকর্তা পরিচালক ! কিছুক্ষণের মধ্যেই পাহাড় পর্বত ও সকল খনিসহ পৃথিবী পানিতে ডুবে যাবে । সুতরাং, হে পৃথিবীর নেতা, সকল জীব-জন্তু ও মানবকুলের পরিচালক ! মানবকূল সহ সকল জীবজন্তু ও কীটপতঙ্গকে বাচিয়ে রাখার জন্য সকল দেবতাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এই মহা নৈাযানটিকে তৈরী করা হয়েছে । হে বিশ্বস্ত প্রতিনিধি , যত প্রকার জীব-জন্তু আছে, সেসব অসহায় প্রাণীকে এই জাহাজে আরোহণ করিয়ে তুমি তাদেরকে রক্ষা করো ।' (মৎস্য পুরাণঃ২৫-৩৫)

'অতঃপর সাতটি সমুদ্র সম্মিলিতভাবে একটির সাথে অপরটির মিলিত হয়ে যাবে এবং পুরো তিনটি দুনিয়া একত্রিত হয়ে যাবে । হে বিশ্বস্ত দূত আমার! ঐ প্রলংকর প্লাবন যখন শুরু হয়ে যাবে তখন ঐ বেদরূপী মহা নৈাযানে তুলে নিয়ো সকল জীবজন্তু, সকল প্রকারের খাদ্য খাবারের বীজগুলি এবং নিষ্পাপ মানব সন্তানদেরকে ।' (প্রাগুপ্ত শ্লোকঃ ১০-১১)

'হে অগ্নি ! নূহ আপনার রিসালাতের সত্যতা ঘোষণা করছেন ।"
(ঋকবেদঃ ৪-১৩-১)

উপরোক্ত মন্ত্রের আলোকে বেদ গ্রন্হসমূহের তর্জমাকারী গ্রীফিত তার ইংরেজী অনুবাদে একটি টীকা লিখেছেন । বলছেন, নূহ এক বিস্ময়কর ব্যাক্তিত্ব এবং গোটা মানবমন্ডলীর প্রতিনিধি ছিলেন । তিনি মানবজাতির পিতা (অর্থাৎ মহাবিপ্লবের পরে তাকে দ্বিতীয় আদম এবং প্রথম আইন কানুন পরিচালনাকারী )।

'হে অগ্নি ! আমি আপনাকে নূহ এর মতই ধর্মীয় নেতা, দায়ী (ধর্ম প্রচারক), ধর্ম শিক্ষক এবং প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি মনে করি ।' ( ঋকবেদঃ১১-৪৪-১)

'হে অগ্নি ! নূহ আপনার জ্যোতি সমগ্র মানবগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন ।" (প্রাগুপ্তঃ১৯-৩৬-১)

চারটি বেদের মধ্যে এই ভাবে ৭৫টি স্হানে নূহ (আঃ) এর নাম উচ্চারিত হয়েছে । ঋকবেদ এ ৫১ টি স্হলে, যর্জুবেদে -এ দু্ই জায়গায়, ১৪ জায়গায় অথর্ব বেদে এবং ৮ জায়গায় সাম বেদে হযরত নূহ (আঃ) এর নাম স্বরণ করা হয়েছে ।

বিদ্রিঃ নূহ (আঃ) এবং উনার কিস্তির সন্ধান লাভ সম্পর্কিত আমার এই পোষ্টটি পড়ে দেখতে পারেন ।


ঘৃণার আচ্ছাদন তুলে নাও পুনরায়
পরষ্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে যারা
মিলিয়ে দাও তাদের হে মহান !
বিচ্ছিন্ন ও বিভক্তির চিত্রটিকে মুছে দাও
কালের পর্দা থেকে ।.................-ড.ইকবাল ।

--চলবে...
সূত্র--
--জগদগুরু মুহাম্মদ (সাঃ) , শায়খুল উবুদিয়া ইমাম সাইয়েদ মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ ইবনে আবদুহু আল-হোসাইনী । রেনেসাঁ পাবলিকেশন্স ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১:০২
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×