somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-১২

২১ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফেনীতে পরিচিত ডাকতার আছেন কয়েকজন । তাগো কাছে যাওন যাইব না । ঘুইরা ঘুইরা একটা অপরিচিত চর্ম যৌন ও সেক্স বিশেষজ্ঞর কাছে যাই । ডাক্তর পরথমেই বউ আর আমার বয়স জিগান । কই বউয়ের বয়স আঠার বচ্ছর । বউরে নিয়া আইলেন না কেন ? বউ পর্দা করে । পুরুষ ডাকতরের সামনে আনন যাইব না । আর এইসব বিষয় নিয়াতো আরো বেশি শরম পায় । ডাকতর জানতে চান বিয়ার পরথম থাইকাই কি এই অবস্থা নাকি ? সিগারেট খান নাকি ? নাউযুবিল্লাহ, সিগারেট খাওয়ার প্রশ্নই আসে না । ডাকতর বলেন প্রথম প্রথম এইরকম হৈতেই পারে । অত দুশ্চিন্তার কিছু নাই । আত্নবিশ্বাস রাখতে হৈব। ভাইঙা পড়লে অবস্থা আরো খারাপ হৈয়া যাইতে পারে । ওয়াইফরে নিয়া আইতে পারলে ভালো হৈত । সমস্যাডা মিটাইতে দুইজনেরই সাহায্য লাগব । একটা মহিলা ডাকতরের ঠিকানা দিয়া কন বউরে নিয়া ঐখানে যাইতে । ওষুধ দিলেন কিছু । রাইতে খাওনের পর খাইতে । তয় বারবার বৈলা দিলেন ওষুধের চাইতে বেশি দরকার হৈল ভালোমত বুঝাপড়া । দুইজনেরই ।

একটু স্বান্তনা পাই মনে । যেইরকম ভাবছিলাম সমস্যা অত কড়া না । তয় ঔষধ নিয়া পড়লাম ঝামেলায় । একা মানুষ ঔষধ খাইয়া আবার কি সমস্যায় পড়ি কে জানে । একটা খাইয়া দেখলাম পরদিন রাইতে । করলাম আকাম । তিনবার এস্তেন্জায় একবার রেললাইনে যাইয়াও দেখি অবস্থা ঠিক হয় না । রাইতে ঘুম হৈল না । পরদিন ঔষধগুলা পুকুরে ফালাইয়া দিলাম । নামডা লেইখা রাখলাম । লিবিডেক্স ২ ।

খালেদারে বুঝানির দরকার সমস্যাডা কুন জায়গায় । কিন্তু সাহসে কুলাইতেছিল না ঐদিকে যাওনের । কিছুদিন দোটানায় থাইকা একদিন বাকীর খাতা লৈয়া গেলাম । বাকী বুঝাইতে বুঝাইতে হাত একটু এদিক সেদিক করাতেই খালেদা হাতের উপরে বাথাপ্পর দিয়া হাত সরাইয়া দিল । পাত্তাই পাইলাম না । একান্তে সময়ওতো পাওন যাইব না । কেমনে বুঝাই । ওর মিজাজের যে অবস্থা ঐদিনের মত করনের কুনো সাহসই পাইলাম না । বিফল হৈয়া ফিরৎ আইতে হৈল ।

রুজার ঈদ কুরবানির ঈদ দুইডা পার হৈয়া গেল । খান ছাবের বাড়ীতে টেলিফুন কৈরা বড় ভাই খবর দিলেন সামনের সপ্তাতে আইতাছেন । বাড়ীতে একটা খুশি খুশি ভাব । বড় ভাইরে এয়ারপোর্ট থাইকা আননের লাইগা ঢাকা যাইতে হৈব । যাওনের সময় মাধাইয়া বাসস্ট্যান্ড পরা হওনের সময় মনডা হুহু কৈরা উঠল । আয়েশার কি হৈল জানিনা । জানতে মন চায় । কিন্তু সাহসে কুলায় না । খারাপ কিছু শুনার আশংকা আছে আবার কাউরে কিছু না বৈলা পলাইয়া আসনের শরমও আছে । এই মুখ কেমনে দেখামু মাহবুবের মায়াবতী আম্মার সামনে । ঘটনা সবাই জাইনাও যাইতে পারে । তাইলে পড়ুম আরেক সমস্যায় ।

বড় ভাইরে চিননই যায় না । মোডা হৈয়া গ্যাছে প্রায় দেড়গুন । ধবধবা সাদা লম্বা কুর্টা মাথায় লাল চেকের চাদর । তার উপরে আবার কালা একটা রিং এর মত । পুরা নবীর দেশের মাইনষের মত লাগে । আহা কি নুরানি চেহারা । আল্লাহপাকের কি রহমত ঐ দেশডার উপর । ভাইরে নিয়া গেরামে ফিরা যাওনের সময় মাধাইয়া করস করনের সময় আবার খারাপ লাগে । ভাই আসাতে ভালও লাগে । জীবনে সুখ দুঃক দুইডাই আছে ভালোমত বুঝি । কিন্তু মনের গভীরের ক্ষত কেন শুকায় না বুঝি না । সারাক্ষণ একটা খচখচ নিয়াই মনে হয় বাঁচতে হয় । খচখচ নাই মনের কোনার এইরকম মানুষ হয়ত নাই দুনিয়ায় ।

বাড়ীতে চান্দের হাট চলে সপ্তাহখানেক । বড় ভাইর বন্ধুরা আসেন গেরামের, গেরামের বাইরের । সাথে দেয়া জিনিস নিয়া বিভিন্ন জায়গায় যাই আমি । টর্চলাইট, ক্যামেরা, সুনো পাউডার শ্যাম্পু , কম্বল এইগুলা নিয়া ছাগলনাইয়া চৌদ্দগেরাম এমনকি নোয়াখালি পইর্যন্ত যাইতে হয় । ভালোই লাগে । যে বাড়ীতেই যাই আদর সমাদর করে । খবর বার্তা জিগায় নিজ নিজ আপনজনের ।

সন্ধ্যায় সন্ধ্যায় ছুড ভাইবোনডি আমি আম্মা মিলা বড় ভাইরে নিয়া গোলা হৈয়া বৈসা নবীর দেশের কাহিনী শুনি । আহা কি বিস্তীর্ণ দেশ । শতশত মাইল মরুভুমি । তার মইধ্যে একেকটা পাক পবিত্র শহর । পাথরের ঘরবাড়ি । একেক খাজুর আপেলের সমান । বাংলাদেশে আসে যেইগুলা সেইগুলা চিটাগুলা যেগুলা নিচে ঝইরা পইড়া থাকে । নবির দেশের চিটাগুলাই যদি আমাগো কাছে এত মজা লাগে তাইলে আসলগুলা না জানি কত মজা । আর লুকজনের কি দরাজ দিল । মাদরাছার জৈন্য চাঁদা চাইলেই ৫০/৬০ রিয়াল বাইর কৈরা দেয় । বাংলাদেশি ট্যাকায় হাজারের উপরে । রুজার একমাস বড় ভাইর নিজে ইফতার করতে হয় নাই । মসজিদে মসজিদে কত ইফতারি । সেহেরীর খাবারও পাঠাইয়া দেন শেখরা । খাওনের লুক নাই । শেখেরা সব নিজেগো বাসায় ইফতারি করেন । মিছকিনদের লগে বৈসা উনারা খাইতে চান না । আহা কত সম্পদ উনাগো । কত বাহারি খাওনদাওন । মিছকিন গো লগে বৈসা ওদের ভাগে কম দিতে চান না । কি দরাজ দিল ।

আর নবির দেশে মাডির কি গুন । বড় ভাইর কাহিনীগুলা স্বপ্নের মত লাগে । ফল ফলাদির জৈন্য গাছ লাগাইয়া অপেক্ষা করতে হয় না । একই ক্ষেতে একদিক দিয়া চারা লাগানো হৈতাছে আরেক দিয়া ফল পাইড়া নিয়া যাইতাছে কামলারা । আল্লাহপাক বাবা আদমরে যখন দুনিয়ায় পাঠান বাবা আদম লাঙল নিয়া মাঠে গেলে মাটি তারে কয়, আপনিতো আমারা যৌবনে আসেন নাই । যৌবনে যদি আসতেন এখনই ফসল নিয়া যাইতে পারতেন । এখনতো আমার বৃদ্ধকাল । বীজ ছড়াইয়া একটু ঘুইরা আসেন , ফসল নিয়া যাইয়েন । সেই মোজেজার দেশ আরব । আল্লাহপাকের খাস নেয়ামতের দেশ । সেইদেশের মাইনষের ঈমান মজবুত হৈব না ত কি আমাগো মত বেদ্বীন দেশের মাইনষের ঈমান মজবুত হৈব ?

এর মধ্যে আব্বাজান আবার একটা প্যাঁচ লাগাইয়া বসেন । বড় ভাইরে নিয়া একদিন নারানকরা মাদরাছার এক হুজুরের বাড়িতে যান । সন্ধ্যায় দেখি মিষ্টি নিয়া আইছেন । কেম্নে কি কিছুই বুঝলাম না । বড় ভাইরে বিয়া পড়াইয়া ফালানো হৈছে । আমি জানি না । আমারে একটু জানানোরও প্রয়োজন দেখলেন না আব্বা ? মতামত না নেন ঠিকাছে তাই বৈলা জানানোও হৈব না ? আম্মারে গিয়া জিগাইলাম । আম্মা জানেন । কিন্তু স্বামীর হুকুম তিনি অমান্য করতে পারেন না । স্বামীর কড়া হুকুম ছিল আর কাউরে যেন জানানো না হয় কাম হৈয়া যাওয়ার আগ পইর্যন্ত । ঘরে এখন আমার একটু পাওয়ার আছে । আব্বারে গিয়া জিগাইলাম । আব্বা পাত্তাই দিলেন না । যা করছি তোমাগো ভালোর লাইগাই করছি । দ্বীনি পথের মাইয়া পাইছ । শুকুর আলহামদুলিল্লাহ কৈরা থাক । মাইয়ার বাপ খালি তাবলীগ করে দেইখা । নাইলে সেই বংশে যাওয়ার সাধ্য আমাগো ছিল না ।

মিজাজটা খিঁচড়াইয়া গেল । এত করলাম সংসারের জৈন্য । আর এত বড় একটা কাজে আমার মতামত নেয়ার দরকার মনে করল না কেউ ? অপমান হজম কৈরা ঠিক করি । বন্ধুবান্ধব আত্নীয়গো কাছে মুখ দেখোনোর লাইগা হৈলেও একটা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করতে হৈব । আব্বা নিজের ক্ষেমতা দেখাইছে । আমি আমারডা দেখামু ।
------------------------------------------------
কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-১১
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:৩৪
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×