somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ রেলওয়ে

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোট বেলায় এত বেশী ট্রেনে উঠেছি যে ট্রেন জার্নির ব্যাপারে আমার আদিখ্যতা, উৎসাহ কোনটিই নেই। আমার বরং বাসই ভাল লাগে।
ঈদে কয়েকজন বলল, এবার ট্রেনে যাওয়া যাক। যমুনা নদীর উপর সেতু হওয়াতে এখন সরাসরী খুলনা যায় ট্রেন।

টিকেট করার জন্য ভোর হওয়ার অনেক আগেই কমলাপুর গিয়েও লম্বা একটা লাইনের পেছনে পড়ে গেলাম, বাঙালি এখন বেশ লাইন ধরতে শিখেছে, পথে, ঘাটে, মাঠে, অফিসে, সবখানে লাইন।
শেষ পর্যন্ত যখন কাউন্টারের সামনে যেতে পারলাম, তখন শুধুমাত্র এক্সট্রা বগিতে সিট আছে। অগত্যা তাই সই, এইবার ট্রেনেই যাব।

ট্রেন সকাল বা ভোর ছয়টা ত্রিশে, ছাড়বে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে আর আমরা থাকি হাতিরপুল। এত সকালে লাট বহর নিয়ে ক্যাব কুব না পেলে এক যন্ত্রণা। এক পরিচিতজনকে তাই অনুরোধ করলাম, যদি দয়া করে আমাদেরকে একটু নামিয়ে দিয়ে আসেন তার গাড়িতে করে... তিনি রাজি হলেন।

নির্দৃষ্ট দিনে যথাসময়ে স্টেশনে পেঁৗছে শুনলাম, ট্রেন আসতে আজ লেট হবে। পাক্কা দুই ঘন্টা পর ট্রেন আসলো সাড়ে আটটায়।
মেজাজ মুজাজ এমনিই খারাপ, তার উপর শালার ট্রেনে ক খ গ ঘ অনেশ্বর বিসর্গ সব বগি আছে মাগার এক্সট্রা বগি যে কোনটা, কেউ বলতে পারছেনা।
এক কিলোমিটার লম্বা ট্রেনের একবার এইমাথা একবার ওই মাথা করতে করতে শেষে জানা গেল ইঞ্জিনের পরেরটাই এক্সট্রা। উঠলাম ট্রেনে। মাত্র বসেছি সিটে, একজন এসে বলল, ভাই এই সিটগুলো আমাদের!!
তার নাকের সামনে আমাদের টিকেট নাড়িয়ে আমরা দেখিয়ে দিলাম। উনিও একইভাবে তার টিকেট দেখালেন। উপরি পাওনা হিসেবে জ্ঞান দিলেন, এইটা হল এক্সট্রা বগি 'জ' আর আপনাদের হল এক্সট্রা বগি 'খন্ডত্ত'।

তো খন্ডত্ত বগি কোথায়? জানা গেল, সেটা সাতাশটা বগির পর শেষ মাথায়। আবার বাক্স পেটরা নিয়ে দৌড়ে গিয়ে উঠলাম সেই বগিতে। ওমা! এখানে পুরো এলাহী কারবার!
সারা বগির কোথাও দাড়ানোর যায়গাটুকুও নেই।
ন্যাচারাল এক্রোব্যাটিক ক্যারিশমা দেখিয়ে সিটের কাছে পেঁৗছুলাম।
সিট খালি থাকার প্রশ্নই আসেনা। সিটগুলো আমাদের, বলতেই তারা এমন একটা এক্সপ্রেশন দিল যেন এরকম আজগুবি কথা জীবনে এই প্রথম শুনছে!! এক্সট্রা বগিতে আবার সিট রিজার্ভ থাকে নাকি?
একজন আবার গলা ঝেড়ে নির্দেশ দিয়ে দিল, ওই, কেউ উঠবিনা, দেখি কি করে....

অগত্যা আমরাই রণে ক্ষ্যান্ত দিয়ে ছুটলাম গাবতলীতে, যদি লঞ্চ পারাপার বাসও একটা পাই.....

প্রসঙ্গ কথা
বাণী বসুর একটা বই পড়েছিলাম, নামটা মনে আসছেনা। যথারীতি এ বইটাতেও প্রধান চরিত্র সদ্য একুশ পেরুনো কলকাতার প্রগতিশীল তরুণী মিঠু। তো মিঠু দেশত্মবোধে উত্তাল আদিবাসী এক তরুণকে সাথে নিয়ে হাওড়া স্টেশনে এক পৌঢ়াকে রিসিভ করার জন্য দাড়িয়ে আছে, এবং ট্রেন লেট। জনসমাগমের মধ্য থেকে কেউ একজন ইন্ডিয়ান রেলওয়ে আর ভারতের চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করছে। আর সেইটা শুনে দেশাত্মবোধযুক্ত আদিবাসি ছেলেটি জ্ঞান দিচ্ছে- যখন মাদার তেরেসা বা অমর্ত্য সেন নোবেল পায়, আমরা বলি আমার দেশের মানুষ, আর যখন কোন ভুল হতে থাকে তখন হল শালার ভারত.... এই টাইপ।

আমাদের চরিত্রও কাছাকাছি। আশরাফুল কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিলে আমরা বাঙালী/বাংলাদেশী হিসেবে গর্বিত হই আর কোন উল্টা পাল্টা হলেই এই পোড়া দেশ.....

আমারও এখন একটা গালি দিতে ইচ্ছে হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়েকে।

অন্য দিক
বাংলাদেশের বাইরে আমার একবার ইন্ডিয়ান রেলওয়েতে যাতায়াত করার সুযোগ হয়েছিল।
সবসময় কি হয় জানিনা, সেবার দেখেছিলাম, প্রতিটা বগির দরজায় সিট নাম্বার, প্যাসেন্জার এর নাম, এবং আমাদের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট নাম্বারটাও কাগজে প্রিন্ট করে সেঁটে দেওয়া ছিল। পাশাপাশি দুটো দেশ অথচ কত পার্থক্য...... কবে যে সভ্য হব....
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিয়াল ফিলিস্তিনীরা লেজ গুটিয়ে রাফা থেকে পালাচ্ছে কেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১১ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



যখন সারা বিশ্বের মানুষ ফিলিস্তিনীদের পক্ষে ফেটে পড়েছে, যখন জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে সাধারণ সদস্য করার জন্য ভোট নিয়েছে, যখন আমেরিকা বলছে যে, ইসরায়েল সাধারণ ফিলিস্তিনীদের হত্যা করার জন্য আমেরিকান-যুদ্ধাস্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসানের মা হিজাব করেন নি। এই বেপর্দা নারীকে গাড়ি গিফট করার চেয়ে হিজাব গিফট করা উত্তম।

লিখেছেন লেখার খাতা, ১১ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩


ছবি - সংগৃহীত।


ইফতেখার রাফসান। যিনি রাফসান দ্যা ছোট ভাই নামে পরিচিত। বয়স ২৬ বছর মাত্র। এই ২৬ বছর বয়সী যুবক মা-বাবাকে বিলাসবহুল গাড়ি কিনে দিয়েছে। আমরা যারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ এঁটেল মাটি

লিখেছেন রানার ব্লগ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৫৬




শাহাবাগের মোড়ে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম, মাত্র একটা টিউশানি শেষ করে যেন হাপ ছেড়ে বাঁচলাম । ছাত্র পড়ানো বিশাল এক খাটুনির কাজ । এখন বুঝতে পারি প্রফেসদের এতো তাড়াতাড়ি বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাইলট ফিস না কী পয়জনাস শ্রিম্প?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১২ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:৪০

ছবি সূত্র: গুগল

বড় এবং শক্তিশালী প্রতিবেশী রাষ্ট্রের পাশে ছোট ও দূর্বল প্রতিবেশী রাষ্ট্র কী আচরণ করবে ? এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অধিক্ষেত্রে দুইটা তত্ত্ব আছে৷৷ ছোট প্রতিবেশি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×