সিঙ্গাপুরে যখন নামলাম তখন ভোর। তাই শহড়টা অনেক বেশী খোলামেলা আর পরিষ্কার লাগছিল। এই দেশে গিয়ে আমার বারবার যা মনে আসছিল তা হচ্ছে বাংলাদেশের সাথে তুলনা।
সিঙ্গাপুর তো আকাশ থেকে পাওয়া ধনী দেশ না। মূলত সিপোর্ট কে কেন্দ্র করে তাদের বানিজ্য গড়ে উঠেছে। আমি যখন রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম তখন রাস্তায় কোন জ্যাম দেখি নাই। এর একটা কারন হচ্ছে বড় বড় রাস্তা। আরেকটা কারন ট্রাফিক আইন মেনে চলা। আমি না বুঝে রাস্তা পার হওয়ায় এক ট্যাক্সি ড্রাইভার আমার দিকে এমনভাবে তাকালো যেন আমি অশিক্ষিত একজন মানুষ হটাত সভ্য একটা দেশে চলে এসেছি। তারপর থেকে আমি সবরকম ট্রাফিক আইন মেনে চলেছি। আর এতে আমার ভালও লেগেছে। আমি ভাবি আমাদের সাথে তাদের পার্থক্য কোথায়। বড় রাস্তা আমাদের নেই, তবে ট্রাফিক আইন তো আমরা মেনে চলতে পারি। এর জন্য তো আর সিঙ্গাপুরিয়ান হতে হয় না। বাংলাদেশে বা ঢাকায় স্কুল/কলেজ পড়ুয়া মানুষ এত বেশী যে আমরা সহজেই ট্রাফিক আইন মেনে চলার কথা ভাবতে পারি। আমি অনেক গভীর রাতে খালি রাস্তায় দেখেছি লাল বাতি জ্বলার কারনে গাড়ী থেমে গিয়েছে।
সিঙ্গাপুর অনেক সুন্দর সাজান গোছান দেশ। পোস্টারিং, মাইকিং বা চিকা মারা নেই। একবারেই যে নেই তা না। সেরাঙ্গুন এলাকায় এসবের অনেক ব্যবহার দেখেছি। এমনকি রাস্তায় কোন ট্রাফিক আইন মানতে দেখি নাই সিঙ্গাপুরের এই অঞ্চলে। এমনকি একজন ভিখারীও দেখেছি। উল্লেখ্য যে এই এলাকায় বাংলাদেশী, ভারতীয়, শ্রীলঙ্কান বেশী। আমেরিকার নিউইয়র্ক, শিকাগোর কিছু কিছু রাস্তায় নাকি ঠিক একই কারনে আমেরিকা থেকে বিচ্ছিন্ন মনে হয়। 'ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে'।
আমাদের সীমিত সম্পদ। মানুষ হিসেবে আমরা অনেক বড় মনের। অন্যের বিপদে এভাবে আর কোন দেশের লোক ঝাপিয়ে পরে কিনা জানি না। শুধু কিছু নাগরিক আচরন ঠিক করতে পারলে আমাদের অবস্থান কত উপরে উঠে যেত। আমরা চাইলেই দেশের অর্থনীতিতে বড় কোন পরিবর্তন করতে পারব না। জিডিপি, জিএনপি ইত্যাদি ইত্যাদি বদলাতে পারব না। কিন্তু খুবই ছোট ছোট কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে হয়ত লাইফ স্টাইল অনেক উন্নত হয়ে যেত।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৫:০৫