somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অতুলপ্রসাদ সেন।

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অতুলপ্রসাদ সেন।
মোদের গরব মোদের আশা/ আ মরি বাংলা ভাষা। মাত্র একটি গানের জন্য অতুল প্রসাদ সেন চিরকাল বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে রইবেন। অথচ এই বাংলা ভাষাপ্রেমীর জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কেটেছিল বাংলার বাইরে। অসম্ভব দানশীল ছিলেন অতুলপ্রসাদ। জীবনের উপার্জিত অর্থ অধিকাংশই ব্যয় করেছিলেন জনকল্যাণে। এমন কী তিনি তাঁর বাড়িটিও অবধি দান করে গিয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর লেখা সমস্ত গ্রন্থের স্বত্ব বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কল্যাণে দান করে যান।

আমাদের জন্য আনন্দের সংবাদ এই যে-অতুল প্রসাদ সেন-এর জন্ম হয়েছিল ঢাকায়। ১৮৭১ সালের ২০ অক্টোবর। অবশ্য অতুলপ্রসাদের আদি নিবাস ফরিদপুরে, ফরিদপুরের দক্ষিণ বিক্রমপুরের মগর গ্রামে। ছেলেবেলায় অতুলপ্রসাদের বাবা মারা যায়। যে কারণে মায়ের হাত ধরে মাতামহের বাড়িতে উঠে আসতে হয়েছিল। ঘটনাটি পরিনামে শাপে বর হয়েছিল। কেন? বলছি। অতুলপ্রসাদের মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্ত ছিলেন সুকন্ঠ গায়ক, গানও লিখতেন। ভক্তিগীতি। কালীনারায়ণ গুপ্ত দৌহিত্র অতুলকে সঙ্গীতে হাতেখড়ি দিয়েছিলেন নিশ্চয়ই। পরবর্তী জীবনে অতুলপ্রসাদ খ্যাতনামা আইনজীবি হলেও গানের জন্যই দু’বাংলার বাঙালি আজও তাঁকে মনে রেখেছে।
গানের পাশাপাশি কালীনারায়ণ গুপ্ত বিদ্যা অর্জনকেও গুরুত্ব দিতেন। যে কারণে গান শেখার পাশাপাশি অতুলের পড়াশোনাও চলছিল।
১৮৯০। প্রবেশিকা পাস করল অতুল। তারপর শুরু হল কোলকাতা জীবন। প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যয়ন। তারপর বিলেত গেলেন “ল” পড়তে। ফিরে এসে কোলকাতায় আইন ব্যবসা শুরু করলে। আমাদের জন্য আনন্দের সংবাদ এই যে- রংপুরে ছিলেন কিছুদিন আইনব্যবসা করেছিলেন অতুলপ্রসাদ।
পরে লক্ষৌতে স্থায়ীভাবে বাস করতে শুরু করেন। আমৃত্যু লক্ষৌতেই ছিলেন । তাইই তখন বলছিলাম-মাত্র একটি গানের জন্য অতুল প্রসাদ সেন চিরকাল বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে রইবেন। অথচ এই বাংলা ভাষাপ্রেমীর জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কেটেছিল বাংলার বাইরে।
পেশাগত জীবনে সফল ছিলেন। লক্ষৌর বার অ্যাসোসিয়েশনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
অতুলপ্রসাদের বাড়িতে সন্ধ্যায় বা গানের আসর বসত। বিখ্যাত সব ওস্তাদরা আসতেন। গান পাগল ছিলেন অতুলপ্রসাদ। একবার গানের সুরের ঝোঁক চাপলে আদালত মক্কেল ভুলে যেতেন।
সব মিলিয়ে অতুলপ্রসাদের গানের সংখ্যা ২০৬। এর মধ্যে ৫০-৬০টি জনপ্রিয়।
তাঁর গানকে তিন ভাগে ভাগ কর যায়। (ক) স্বদেশিসঙ্গীত। (খ) ভক্তিগীতি ও (গ) প্রেমের গান।
অতুলপ্রসাদের গানের সমগ্রর নাম “কাকলি”। ১৯৩০ সালে (২ খন্ডে) বেরয় কাকলি। ৭১টি গানের স্বরলিপি আছে কাকলিতে। কাকলি সম্পাদনা করেছেন সাহানা দেবী। সম্পর্কে অতুলপ্রসাদের মামাতো বোন হন সাহানা দেবী। অন্য গানগুলি গ্রথিত হয়েছিল “গীতিপুঞ্জ” নামক বইয়ে। ১৯২২ সালে কোলকাতা থেকে প্রথম গানের রেকর্ড বেরয় অতুলপ্রসাদের । গানে কন্ঠ দিয়েছেন সাহানা দেবী ও হরেন চট্টোপাধ্যায়।
পরে আরও রেকর্ড বেরিয়েছিল। তবে সে সব গানে সুরতালের বিকৃতির অভিযোগ উঠেছিল।
লক্ষৌ ছিল তৎকালীন উত্তরভারতের সঙ্গীতের অন্যতম কেন্দ্র। উল্লেখ্য বাংলায় ঠুংরির প্রচলন করেছিলেন লক্ষৌর বিশিস্ট সঙ্গীতজ্ঞ নবাব ওয়াজেদ আলী শাহ্। লক্ষৌজীবন গভীর প্রভাব রেখেছিল অতুলপ্রসাদের সঙ্গীতজীবনে। অতুলপ্রসাদই প্রথম ঠুংরি অঙ্গে বাংলা গানের প্রচলন করেন। রাগপ্রধান ঢংয়ে বাংলা গান রচনা তাঁর থেকেই শুরু। যার ফলে বাংলা গানে একটা নতুনত্ব এসেছিল। পরবর্তীকালে নজরুল যার আরও বিকাশ সাধন করেন।
যা হোক। অতুলপ্রসাদ-এর ঠাঁই আজও বাঙালির হৃদয়ে। তার কারণ আছে।
বিশিষ্ট গবেষক খান মোহাম্মদ সাঈদ লিখেছেন-His moder garab, moder asha/ a mari bangla bhasa (Our pride, our hopes the Bangla language) speaks of his love for his mother tongue. This song inspired our people during the language movement and the War of Independence. It has retained its charm even now. He enriched Bangla songs through his experiments with lyrics, tune, measure, pathos, etc. He died in Lucknow on 26 August 1934. (বাংলাপিডিয়া)

তথ্যসূত্র-বাংলাপিডিয়া।

অতুলপ্রসাদের গান শোনার জন্য-
Click This Link


Click This Link


সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:২৮
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×