somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেঘালয় রাজ্যে মেঘকন্যা

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ২:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যাবার উপায়

ঢাকা থেকে বাসে সিলেট। সিলেটে সোহাগ, গ্রীনলাইন সব বাস কোম্পানীর বাসই যায়। সিলেট থেকে সিএনজি ট্রাক্সি অথবা রেন্ট এ কার এ তামাবিল যেতে হবে। তামাবিল থেকে সীমান্ত পেরোলেই ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বিস্তার শুরু। মেঘালয় রাজ্যে অবস্থিত শিলং। বাংলাদেশে যে সীমান্তের নাম তামাবিল, ভারতে সে জায়গার নাম ডাউকি। শিলং যেতে হবে আপনাকে সড়ক পথেই। তামাবিল বর্ডার ক্রস করলেই মারুতি সুজুকি ট্যাক্সি এবং টাটা সুমো গাড়ি পাওয়া যাবে। শেয়ারে যেমন যাওয়া যায়, তেমনি গাড়ি রিজার্ভ করে যাওয়া ও সম্ভব। রিজার্ভ ট্যাক্সির ভাড়া ১০০০ থেকে ১২০০ রুপি শিলং পর্যন্ত। শিলং এ ছাপ্পান্ন বছর পর বিমানবন্দর চালু হয়েছে। প্লেনে যেতে হলে কলকাতা হয়ে যেতে হবে। তবে বাংলাদেশ থেকে সড়ক পথই যাওয়ার জন্য সহজ ও স্বল্পব্যয় সাপেক্ষ।

থাকবার বন্দোবস্ত

শিলং এ হোটেলের কোন অভাব নেই। বুকিং দিয়ে যেতে পারলে ভালো। কারণ পর্যটন সিজনে গিয়ে হোটেল খালি পাওয়াটা রীতিমতো ভাগ্যের ব্যাপার। ঢাকা থেকে বুকিং দেয়া যায়। যোগাযোগের জন্য টেলিফোন নাম্বার : হোটেল ব্রডওয়ে (০৩৬৪) ২২২৬৯৯৬,২২২০৮১৫। পুলিশ বাজারে বেশ কয়েকটা মাঝারি মানের হোটেল আছে। ৩৫০ রুপি থেকে ২০০০ রুপির মধ্যে রুম পাওয়া যাবে এ এলাকায়। এছাড়া ইন্টারনেটেও হোটেলের পাত্তা আপনি নিতে পারেন। হোটেল পেগাসাস ক্রাউন, সেন্টার পয়েন্ট,শিলং ক্লাব ইত্যাদি আছে থাকবার জন্য। http://www.centrepointshillong.com, http://www.rikynjai.com, http://www.hotelpolotowers.com, [email protected].

মেঘালয় রাজ্যে মেঘকন্যা

অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে সিলেটের তামাবিল সীমান্তে কোন ভীড় নেই সীমান্ত পার হবার জন্য। কয়লার ট্রাক বাদ দিলে তামাবিল শান্ত, নিরালা। চুপচাপ চেকিং রুম। বেলা সাড়ে দশটার মতো বাজে। মাত্র ৬জন মানুষ আমরা বসে আছি এন্ট্রি রুমে। খোলামেলা শান্ত পরিবেশ। বেনাপোলের মতো হৈ হুল্লোড় নেই। অমায়িক ব্যবহার তামাবিল সীমান্তে কর্মরত মানুষদের। সবার মুখে পান, চিবোচ্ছেন আয়েশ করে। দশটার আগে সীমান্ত খোলে না। আগের দিন রাতে সিলেট শহরে ছিলাম যাত্রার ধকল যেন কম হয় সেজন্য। সোহাগের এসি বাসে মগবাজার কাউন্টার থেকে উঠেছিলাম ২২.১০.০৮ বিকাল চারটায়। রাত নয়টায় পৌঁছে গেছি সিলেট। পরেরদিন সকাল সাড়ে আটটায় রেন্ট এ কার থেকে একটা কার ভাড়া করে আমরা দু’জন রওনা হয়েছি তামাবিলের উদ্দেশ্যে। মসৃণ রাস্তায় ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই চলে এসেছি তামাবিলে। এন্ট্রি রুমে বসা ভদ্রলোক আমাদের বলে দিলেন সাথে বাংলা টাকা বেশি থাকলে সরিয়ে ফেলতে। সাবধান থাকাই ভালো। একটা বাঁশ ক্রস করতেই ঢুকে গেলাম ভারতের সীমান্তে। সেখানকার চেকিং রুমে ঢুকে কোন বাধা বিপত্তি ছাড়াই বেরিয়ে এলাম। অত্যন্ত ভদ্র ব্যবহার তাদের। আমরা চেকিং রুম থেকে বেরিয়েই একটা মারুতি সুজুকি ট্যাক্সি রিজার্ভ করে ফেললাম। শিলং পর্যন্ত ভাড়া ১০০০রুপি। চালকের নাম সুরজিৎ এবং সে বাংলাভাষী।
কি অদ্ভূত ব্যাপার! বাংলাদেশের সীমানা যেখানে শেষ সেখান থেকেই শুরু নাতি উচ্চ সব পাহাড়ের। ডাউকি ব্রীজ পেরোলেই আবহাওয়ার এক চমকপ্রদ পরিবর্তন। এতক্ষণ যে গরমে ঘামচ্ছিলাম তা নেই, বরং বাতাসে আরামদায়ক ঠান্ডার আমেজ। রাস্তা ভালো, পাহাড়ি তবে বিপজ্জনক নয়। সুরজিৎদা তার ছোট ভাই মৃগাঙ্ককে সাথে নেবার আবেদন জানালো। আমরা আনন্দের সাথেই রাজি হয়ে গেলাম। ডাউকি বাজারে বাংলা টাকা কিছু ভাঙ্গিয়ে নিলাম। কারণ শিলং পৌঁছতে পৌঁছতে ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাবে এবং ডলার ভাঙ্গানোর সুযোগ না পেলে আমাদের জন্যে ট্যাক্সি ভাড়া দেয়া দুষ্কর হয়ে যাবে।
জায়গায় জায়গায় প্রাকৃতিক ছড়া বা ঝিরি অথবা ঝর্ণা যাই বলি একটু পর পর। আমরা ঝর্ণার মীতল পানিতে মুখ হাত ধুয়ে নিলাম রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে। সাঁই সাঁই করে গাড়ি ছুটছে। তামাবিল থেকে শিলং ৮২ কিলোমিটার। যে গতিতে চলছি তাতে ২টা আড়াইটার মধ্যে আমাদের শিলং পৌঁছে যাবার সম্ভাবনা আছে।
মাঝে মাঝে কয়লা বোঝাই ট্রাক আমাদের অতিক্রম করছে। মুগাঙ্কের বয়স ঊনিশ। সে ভিডিও এডিটিং এর কাজ করে। তার কথার ফুলঝুরিতে আমাদের চলার সময়টুকু আর ঝিমিয়ে পড়া থাকলো না। সে টপাটপ পান খাচ্ছে, সুরজিৎদাকেও দিচ্ছে। কথায় কথায় মৃগাঙ্ক বলে ফেললো সে জেমসের গানের কতটা ভক্ত। একবার সুযোগ পেলে সে বাংলাদেশে যাবেই যাবে। গিয়ে সে প্রথমে যাবে 'রুপসী বাংলা' কবিতার রচয়িতা কবির বাড়িতে। আমি একটু চমকে উঠলাম। এত্তটুকু ছেলে, যে বাংলাদেশের না, সে কেমন করে জীবনানন্দ দাশের কবিতার এমন ভক্ত হলো! কেন যাবা এ কবির বাড়ি দেখতে, জিজ্ঞেস করে ফেলি। ভাঙ্গা বাংলায় আসামের ছেলে মৃগাঙ্ক আমাকে যা বললো তা অনেক বড় কথা- দিদি, এ কবির কবিতা কেমন বুক ছুঁয়ে যায়! মনে হয় বাংলার রূপ আমি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি!
শিলং শহরের প্রবেশদ্বারে যখন পৌঁছেছি তখন ঠিক বাংলাদেশের সময়ে পৌনে দুটো বাজে। এখানে সব গাড়ি থামানো। আর যাওয়া যাবে না। রোড ব্লক। ছাপ্পান্ন বছর পর ভারতের প্রেসিডেন্ট শ্রীমতি প্রতিভা পাতিল মেঘালয় রাজ্যে এসেছেন বিমানবন্দর উদ্বোধন করতে। তিনি একটু পরে শহরে নামবেন, তিনি নেমে নির্ধারিত জায়গায় যাবার আগ পর্যন্ত গাড়ি যাবে না। আমরা বসে আছি। মৃগাঙ্কের সঙ্গে আড্ডাবাজিতে, গান শুনতে শুনতে আমরা একটুও বোরড হলাম না। ধৈর্য্য ধরে বসে থাকলাম এক ঘণ্টা।
যেতে যেতে চোখে পড়বে এয়ারফোর্সের নানা বেজ। এখানে উত্তর ভারতের এয়ারফোর্সের হেড কোয়ার্টার অবস্থিত। স্কুল ছুটি হয়েছে মাত্র। দারুণ প্রাণবন্ত বাচ্চারা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দল বেঁধে। এষানকার স্কুলগুলোতে বাংলাদেশের প্রচুর স্টুডেন্ট পড়াশোনা করে, তাদের ও দেখলাম। এতক্ষণ রাস্তা বন্ধ ছিল। স্বাভাবিকভাবেই রাস্তায় ট্রাফিক একটু বেশি কিন্তু কোথাও জ্যাম দেখলাম না। সবাই সুশৃংখলভাবেই যাচ্ছে। শিলং তো পৌঁছলাম। কিন্তু একে তো দিওয়ালির সময় তার উপর শহরে এসেছেন প্রেসিডেন্ট। বেচারা সুরজিৎদা পুলিশ বাজার এলাকায় বিভিন্ন হোটেলে আমাদের নিয়ে ঘুরছেন, কোথাও রুম খালি নেই। সেন্টার পয়েন্ট হোটেলে আমরা যে রুম খালি পেলাম তা আমাদের বাজেটের বাইরে, পার নাইট ২৭০০রুপি। শেষ পর্যন্ত ব্রডওয়েতে আমরা মোটামুটি টাইপের একটা রুম পেলাম, ১২৫০ রুপিতে। কোন ঠান্ডা নেই। বাঙ্গালী খাবার সবই পাওয়া যায়। আগামীদিন সুরজিৎই আমাদের চেরাপুঞ্জি নিয়ে যাবেন এমন কথা ঠিক করে সুরজিৎ চলে গেলেন তার এক জ্ঞাতির বাসায় রাত্রিযাপন করার জন্য।
২৪.১০.০৮, শুক্রবার আমাদের প্রথম কাজ ডলার ভাঙ্গানো। তারপর যাবো চেরাপুঞ্জি, বিশ্বের সবচাইতে বৃষ্টিবহুল এলাকা দেখব। ডলার ভাঙ্গাতে গেলাম স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াতে। সেখানে এত কিউ, আমাদের এক ঘণ্টা সময় সেখানেই শেষ। আজকে ট্যাক্সিতে সুরজিতের সাথে তার মামা অশোকও আছে, যিনি শিলং এ নিজের ট্যাক্সি চালান। চেরাপুঞ্জি শিলং থেকে ৫৪ কিলোমিটার। আসা যাওয়ায় সাত ঘণ্টার মতো লাগে। সেখানে আমরা বেশ দেরীতে রওনা হওয়াতে আমাদের চালক দাদারা একটু শংকিত। কারণ সাগরে নিম্নচাপ হয়েছে এবং কুয়াশা এই বেলা বারোটাতেও কোথাও কম নেই। আল্লাহর নাম নিয়ে আমরা চলছি।
চারিদিকে চুনাপাথর আর কয়লার পাহাড়। প্রাকৃতিক সম্পদ মেঘালয়কে ধনী বানিয়েছে অকৃপণ হাতে। আছে ইউরেনিয়ামও। চুনাপাথর সব রপ্তানি হয় বাংলাদেশেই, সিমেন্ট তৈরীতে লাগে। কয়লাও বাংলাদেশে ট্রাকে ট্রাকে যায়। এখানে দু’ধরনের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বসবাস - গারো এবং খাসিয়া। খাসিয়ারা তুলনামূলকভাবে গারোদের চাইতে এগিয়ে আছে। আছে দু সম্প্রদায়ের মাঝে রেষারেষি। পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে চলছে মেঘের খেলা।
চেরাপুঞ্জির পথে প্রথমে পড়বে একটা ভিউ পয়েন্ট। এখান থেকে বেশ বড়সড় একটা ঝর্ণা দেখা যায়। চেরাপুঞ্জিতে রিসোর্ট আছে। কেউ চাইলে থাকতে পারেন। http://www.cherapunjee.com.
পুরো ট্যুরে চেরাপুঞ্জির কাছে এক অখ্যাত হোটেলের খাবার সবচাইতে বেশি ভালো লেগেছে। দুপুরের খাবার সেরে আমরা গেলাম ঘড়যশধষরশধর ঋধষষং দেখতে। অনেক উপর থেকে পানি পড়ে নীচটা কেমন সবুজ হয়ে আছে। ঝর্ণার একদম কাছে চলে যাওয়া যায় সিঁড়ি বেয়ে। আমি 'নোয়াখালি' ফলস বলতেই সবাই হেসে উঠলো। আমি দেখলাম ঝর্ণার কাছে এসে একখন্ড মেঘ পথ হারিয়ে কেমন আটকে আছে। সুনসান পরিবশে। কোন ঝুট ঝামেলা নেই, কোন হকার আপনাকে টানাটানি করছে না। আপনি চাইলে সেখানে আনমনে বসেও থাকতে পারেন। হালকা কুয়াশা চারদিক কেমন বিষণ্ন আদুরে করে রেখেছে। এখানেই চেরাপুঞ্জি হলিডে রিসোর্ট অবস্থিত। যদি মন চায় নিবিড় একাকীত্বে থাকবার, তাহলে অনায়াসে এই রিসোর্টে একরাত যাপন করতে পারেন।
পথের এখানে সেখানে রাস্তার পাশে ছোট ছোট গুহামুখ দেখা যাবে, যেগুলো আসলে কয়লা উত্তোলনের খনির মুখ। স্থানীয়ভাবে একদম দেশী পন্থায় পাহাড় থেকে কয়লা আহরণ চলছে।
ইকো পার্ক থেকে বাংলাদেশ একদম স্পষ্ট দেখা যায়। বাংলা লিংক ফোনের নেটওয়ার্ক ও পাওয়া যায়। ইকো পার্কে ঢুকবার মুখেই আছে Missing Waterfall।সবচাইতে এক্সাইটিং স্পট আমাদের কাছে মনে হয়েছে 'Mawsmaicave' আলোর ব্যবস্থা করা একটা প্রাকৃতিক গুহা, যার একদিক দিয়ে ঢুকে আরেকদিক দিয়ে বেরোতে হয়। সরু চলার পথ, কোন জায়গায় একেবারে নুয়ে পার হতে হয়। সেই আদিম মানুষের গুহা জীবনের কথা মনে পড়ে। গুহার মধ্যে এখনো পানি চুইয়ে পড়ছে। দুর্বল চিত্তের মানুষ ভয় পাবে, গুহার আবদ্ধ পরিবেশে। কিন্তু নিজের পূর্বপুরুষদের জীবনযাত্রার পাঠ মিনিট দশেক নিতে মন্দ লাগবে না কারও। পাহাড়ি এলাকায় আ৭ধার নামে খুব দ্রুত। পাঁচটা বেজে গেছে। গুহা বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা গরম গরম চা খেয়ে ট্যাক্সিতে উঠে বসলাম। যে কুয়াশা তাতে গাড়ি চালানো একটু কষ্টকরই হবে। চেরাপুঞ্জিতে আরও যা দেখবার আছে Thangkharang Park, Khoh Ramhah,Green Rock Ranch, Sa-I-Mika Park,, Kynrem Falls সময় স্বল্পতার জন্য আমরা সব জায়গা কাভার করতে পারিনি।

ফেরার পথে বুঝলাম ঠান্ডা এবং কুয়াশা দু’টোই জাঁকিয়ে বসেছে। গাড়ি থামিয়ে অশোকদা পানি মেরে গাড়ির গ্লাস পরিষ্কার করলেন। স্পিড মিটার ষাটের উপর না তুলে সাবধানে সুরজিৎদা ড্রাইভ করে আমাদেরকে হোটেলে পৌঁছে দিলেন রাত আটটা নাগাদ। সুরজিৎদা পরেরদিন ডাউকি চলে যাবেন। রবিবার যেহেতু মার্কেট বন্ধ থাকে শিলং এ কথা হলো শনিবার অর্থাৎ পরেরদিন আমরা টুকটাক কেনাকাটা সেরে ফেলব। রবিবার অশোকদা আমাদের শহর দেখাতে নিয়ে যাবেন। শনিবার আমরা পুলিশ বাজার, বড়বাজার, লাইতুমখ্রা বাজার ঘুরলাম।
শনিবার রাত থেকেই নিুচাপের কারণে শুরু হলো বৃষ্টি। রবিবার এই বৃষ্টির মাঝেই আমরা বেরোলাম অশোকদার প্রমাণ সাইজের ছাতার ভরসায়।
সাত ডিগ্রী ঠান্ডা, তার সাথে তোড়ে বৃষ্টি এবং ঝড়ো বাতাস। আমরা মোটামুটি ধরা। শিলং ভিউ পয়েন্টে গিয়ে আমরা কিছুই দেখতে পেলাম না বৃষ্টির সাদা চাদর ছাড়া। শিলং ভিউ পয়েন্ট শহর থেকে দশ কিলোমিটার। এখান থেকে গোটা শহরটা না কি দেখা যায়। পর্যটশরা সবাই দেখলাম ঠান্ডায় জবুথবু। আমরাও কমবেশি ভেজাতে ঠান্ডা ভালোই লাগা শুরু হলো।
এলিফ্যান্ট ফলসটা দেখে মন ভালো হয়ে গেল। একদম ভিউ কার্ডের মতো একটা ঝর্ণা। দারুণ স্টাইলিশ, ছন্দোবদ্ধভাবে জল ঝরা মনে হয় একেই বলে! ঝর্ণাটার কাছে গেলে আমার মনে হলো জলের টুংটাং তরঙ্গ ও শুনতে পাওয়া যাবে। বুষ্টি ভীষণ বেড়ে যাওয়াতে আমাদের এলিফ্যান্ট ফলসের মায়া কাটিয়ে গাড়িতে উঠতে হলো।
Lady Hydari Park ছোট্ট একটা চিড়িয়াখানা। তবে লেকটা খুব সুন্দর। বৃষ্টির কারণে লেকের জলে বোটে করে ঘুরতে পারলাম না। সেখান থেকে গেলাম Don Bosco Cultural Centre এ। এখানেই দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বড় ক্যাথেড্রাল অবস্থিত।
পথেই দুপুরের খাবার খেয়ে বিকেলে আমরা চলে এলাম হোটেলে। আগামীকাল সোমবার, সকাল ৯টায় আমাদের ফিরতে হবে আবার ঢাকায়।
মেঘালয় রাজ্যে কয়েকটা দিন মেঘকন্যা হয়ে ভালোই ছিলাম, নিস্তরঙ্গ শিলং শহরে। প্রকৃতির কাছে গেলে মানুষের মন আপনাতেই ভারহীন হয়। বেরিয়ে পড়–ন নাগরিক জীবনকে কিছুদিনের জন্যে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে।

অন্যান্য তথ্য :
১. শিলং থেকে চেরাপুঞ্জি যাতায়াতে খরচ হয়েছে বারোশ রুপি রিজার্ভ ট্যাক্সিতে
২. শিলং এ সাইট সিয়িং এ খরচ রিজার্ভ ট্যাক্সিতে পাঁচশ রুপি
৩. সাথে শীতের পোশাক থাকাতে আমরা অকস্মাৎ আসা বৈরী আবহাওয়া সহজেই মোকাবেলা করতে পেরেছি। সুতরাং সাথে গরম কাপড় নিতে ভুলবেন না।
৪. নভেম্বর থেকে জানুয়ারি বরফ পড়ে, বরফ দেখতে চাইলে এখুনি যাবার পরিকল্পনা করুন।
৫. ৭ থেকে ১০ দিন থাকলে সব জায়গা দেখা সম্ভব
৬. গ্রুপে গেলে ৬জন আদর্শ সংখ্যা
৭. ইন্ডিয়ার ভিসা পেতে এখন সময় লাগে, যাবার অন্তত ১৫দিন আগে ভিসার ঝামেলা চুকিয়ে ফেলুন
৮. যাবার আগে পরিচিত কেউ না থাকলে সুরজিৎ (+৯১০৯৪৩৫১৭০৩৯৮) অথবা অশোক (+৯১০৯৪৩৬৭২৮৯০৯) কে ফোন করলে ট্যাক্সি নিয়ে উপস্থিত থাকবে। হোটেল ব্রডওয়েতে ফোন করলে বুকিং বা ট্যাক্সি বাংলাদেশ থেকে বসেই কনফার্ম করা সম্ভব।
৯. পুলিশ বাজারেই খাবারের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট আছে। এসব জায়গায় সহজেই খাওয়ার কাজটুকু সারতে পারবেন।
১০. সকাল দশটার আগে কোন প্রকারের দোকান বা অফিস খোলে না। এমন কি খাবারের দোকানও না।
১১. রাত ৯টার মধ্যে সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। খাবারের হোটেলও।
১২. রবিবার সব মার্কেট বন্ধ থাকে
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০০৯ রাত ১:৩০
২৬টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×