somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি মোবাইলের আত্বকাহিনী

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি নকিয়া ৩২২০। জন্ম ২০০২ সালের শেষের দিকে চীনে। গায়ের রং সিলভার । কিন্তু আমার ব্যাটারী খানা জার্মানীর তৈরী। যাই হোক জন্ম কাহিনী বলতে গেলে আপনারা বিরক্ত হতে পারেন তাই বেশী বাড়ালাম না।

আমাকে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসা হলো ইতালীতে । আমার কপাল খারাপ তাই আমাকে কিনল এক বাংলাদেশী, ভাবলাম ইতালীতে এসে কোন ইতালীয়ানের কাজে লাগব তা না পড়লাম এক বিদেশীর হাতে।যদিও আমার ধারনা কে ভুল প্রমাণিত করেছিল সে। কেনার পরদিনই আমি দীর্ঘ বিমান ভ্রমন করে বাংলাদেশ নামক একটি দেশে আসলাম। চীন কিংবা ইতালীতে আমার জীবন ছিল না , তাই আমি জানিনা সে দেশ গুলো এর চেয়ে সুন্দর ছিল কিনা । দেশ টা মানুষের স্বপ্নের মত, সবুজ ছায়া ঢাকা মায়া ভরা।

আমার প্রথম দিনটার কথা বলি বাংলাদেশে। আমার মালিক সতের বছরের ছেলেটা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। সে আমাকে হাতে নিয়ে কি বলল জানেন
"চেয়েছিলাম একটা লাল রংয়ের ফোন , পেলাম রঙিন ফোন কি মজা"।

ওর হাতে আমার দিন গুলো খুবই ভাল কাটছিল। কারণ সে আমাকে খুব বেশী কষ্ট দিত না। এবং সব সময়ই আমাকে খাবার দিয়ে পরিপূর্ণ রাখত। দীর্ঘ একটা বছর এভাবে কাটল। তার পর সে চলে এল গ্রাম থেকে শহরে। বদলাল আমার নাম্বার। জানেন সে কি নিল ডিজুস। আমি তো ভয়ে নেই কারণ আমি জানতাম ডিজুস কি । কিন্তু এবার ও সে আমাকে এবং তার সব বন্ধুদের আবাক করে রাতে আমাকে নিয়ে আরামে ঘুমোত। বছর খানেক পরে সে মাঝে মাঝে টেলিটক ব্যবহার করত। এই টেলিটকই আমার ও তার সর্বনাশ করল। ০১৫২ এই নাম্বারটা দিয়ে সে একটা মেয়ের প্রমে পড়ল। ওহ! কি যে কষ্ট সারা রাত আমাকে জ্বালাত, খিদেয় প্রাণ যা্য় যা্য় কিন্তু তার কোন মায়া নেই আমার জন্য। মায়া ্যত ঐ মেয়ের জন্য।


কিন্তু যখন সে বাংলালিংকের সাথে আমার সম্পর্ক করল আমার দষা রসা। দিন আর রাত নেই। কথা বলছে তো বলছেই। থামতেই আর চায় না। মাঝে সে আমার পেটে দুটো সীম লাগাল, যণ্রায় আমার পেটাই ফুলে গেল।একদিন ফেটেও গেল। কিন্তু তার কোন মাথা ব্যাথা নেই। এভাবেই কাটছিল আমার দিন আর রাত গুলো , কিন্তু ঘুম কি আমি তা ভুলেই গিয়ে ছিলাম।


শত কষ্টের মাঝে তার একটা কাজ আমার ভাল লাগত, সেটা হলো সে শুধু একটা মেয়ের সাথে ই ব্যাস্ত থাকত। ভুলেও সে কোন দিকে নজর দেয় নি। যদি কেউ চেষ্টা করত তাহলে তার কপালে খুব খারাপ কথা এবং অপমানিত ছাড়া আর কিছুই জুটতনা। তার অব্যশ একটা কারণও ছিল , একটা মেয়েকে সে প্রতি দিন সুন্দর সুন্দর এস এম এস পাঠাত। কিন্তু কল করত না। মেয়েটা কল করলে ধরত না। মাস তিনেক পরে সে মেয়েটার কল ধরলে মেয়েটা তাকে খুব জটিল কিছু কথা শুনায় তাই সে আর কোন দিন ঐ ভুল করেনি।

ST নামক মেয়ের ভালবাসা , রাগ ,অভিমান সব কিছু মিলিয়ে শেষের দিকে যখন আমার জীবনটা ভালই লাগ ছিল, তখনই আমার করুণ পরিণতি হলো। গ্রাম থেকে ফিরে সে যখন আমাকে খেতে দিয়ে দোকানের কাজে ব্যাস্ত ছিল তখন এক চোর আমাকে আমার সুখের জীবন থেকে দূরে নিয়ে গেল। চার বছরের সম্পর্ক ছিন্ন হলো।



যখন আমি অবৈধ হলাম তখন আর নিজের জীবন টাকে অসাধারণ থেকে অতি সাধারণ মনে হলো তাই আমি সাধারণই হয়ে গেলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জুন, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০৪
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×