somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্লান্তি

২৭ শে নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ৯:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আজ খুব সকালে ঘুম ভেঙেছে, সাধারণত এতো সকালে ভাঙেনা। উঠে দেখি বাইরে তখনও সূর্যের আলো ফোটেনি ঠিকমতো। ৩ বার বিছানা এপাশ-ওপাশ করে আড়মোড়া ভাঙলাম। ধুর ছাই! এমন একটা টাইমে ঘুমটা ভাঙলো, আরেকটু ঘুমাতে ইচ্ছে করছে কিন্তু সেটা আসছে না, আবার জেগে থেকে কি করবো তাও ভেবে পাচ্ছি না। তার ওপর আবার দেখি গায়ের ওপর থেকে কাঁথা সরালেই শীত লাগে। আমার আবার একটা বাজে স্বভাব আছে - কি গরম কি শীত, ফ্যান ফুল স্পিডে না ছেড়ে শুতে পারি না, কেমন জানি অস্বস্তি লাগে। মনে আছে আরো অনেক ছোট যখন ছিলাম তখন তুমুল শীতের রাত্রে আমি কম্বলের নিচে ঢুকে গুটিশুটি মেরে শুয়ে থাকতাম। পুরো শরীর থাকতো কম্বলের নিচে - যাকে কিনা মুড়ি দিয়ে শোয়া বলে। তো তখন কম্বলের ভেতরে শুয়ে শুয়ে আমি কম্বলের ভাঁজ এদিক-ওদিক করে গুহার মতো একটা আবহ তৈরি করার চেষ্টা করতাম, নিজেকে তখন বেশ গুহাবাসী গুহাবাসী বলে মনে হতো। গুহার ভেতরে আমি নিজের হাতের আঙ্গুল দিয়ে কৃত্তিম মানুষ বানিয়ে হাঁটাতাম। মাঝে মাঝে মাথার সাইডে কম্বল একটু ফাঁক করতাম, বাইরে দেখতাম, সেই ফাঁক দিয়ে হু হু করে ঠান্ডা বাতাস ঢুকে আমাকে কাঁপিয়ে দিতো। আর আমি সাথে সাথে ফাঁক বন্ধ করে আবার গুটিশুটি মারতাম। কিন্তু শরীরে হঠাৎ করে ধরা সেই কাঁপুনি ছাড়তে অনেক সময় লাগতো।

কতোদিন আমি আর এই খেলা খেলিনা ভেবে অবাক হচ্ছিলাম। একটু হাসিও পাচ্ছিলো এই ভেবে যে - এই বয়সে এসব ভাবছি, মানুষ শুনলে হাসবে আমার ওপর। কিন্তু কি করবো? বয়স বেড়েছে, মনটাতো আজো শিশুই থেকে গিয়েছে। সেই পুরনো খেলা খেলার একটা চেষ্টা চালালাম আজ সকালে। কাঁথা ছেড়ে পায়ের কাছে ভাঁজ করা কম্বলটা নিলাম। কম্বলের ভাঁজ খুলে নিজেকে তার ভিতর গলিয়ে দিলাম। কিন্তু হায়! আমার সে পুরানো জজবা তো আর ফিরে আসে না। বুঝলাম, হবেনা। উল্টো গরম লাগছিলো। আবার কাঁথার নিচে ঢুকলাম। আসলে জজবা আসবে কোথা থেকে? আর সব কিছুর মতো শহরের শীতেরও মনে হয় দাম বেড়েছে - হিসাব করে আসে। শেষ কবে শীতের বাতাস এসে আমার শরীরে কাঁপুনি ধরিয়েছে মনে নেই। শুধু শীত কেন? গত ৫ বছরে কোন জিনিসটা ঠিক মতো হয়েছে? প্রকৃতি? রাজনীতি? না না! উত্তর হলো দুর্নীতি। গত ২ বছরে একজন লোককে দেখেছি টিভিতে সারাদিন ধরে বলে বেড়ায় দুর্নীতিকে অমুক কারেঙ্গা, তমুক কারেঙ্গা। হায়রে! এ দেশের মানুষগুলা পিঁয়াজের মতো। যতোই ছোলা উঠাও না কেন, সেই পিঁয়াজই পাওয়া যাইবে। এই ছোলা উঠানোর জন্যে দেশব্যাপি শোভাযাত্রার প্রয়োজনটা তখন মাথায় ঢোকেনি, আজো ঢোকেনা।

বালিশের পাশ থেকে মোবাইলটা হাতে নিলাম। mig এ ঢুকে দেখলাম কেউ অনলাইনে আছে কিনা। কেউ নেই। অগত্যা হেডসেট কানে লাগিয়ে FM চালু করলাম। নাহ্! কোথাও ভালো কোন গান নেই। এবারে মোবাইলের মিউজিক প্লেয়ারে গেলাম।

"......চাঁদের আলো আজ যদি ভালো লাগে কাল হয়ে যায় ঝাপসা
আমার এ তরী যদি চলে যায় ফিরে আর আসবেনা..........
যতো ভালোবাসি তারে......দূরে রয়ে যাবে তা তো আমি জেনেছি.......


চোখটা বুজলাম। স্বর্গীয় অনুভূতি বলে একটা কথা আছে। কিছু কিছু গান আমাকে সেই অনুভূতি দেয়। নুপূর-১ ও পারেনি, কিন্তু নুপূর-২ পেরেছে। কারনটা কি অনিলা? হয়তো। চোখ দুটো একটু বুজে এসেছিলো, হঠাৎই তীব্র একটা আওয়াজে চোখ খুলে গেলো -

"পাখি পাকা পেঁপে খায়......."

ধুর! কিসের মধ্যে কি। স্টোয়িক ব্লিসের গান। চেইন্ঞ্জ। পুনরায় নুপূর-২ তে। এবার Repeat সহ। পুনরায় চোখ বোজা। পুনারায় মনে হুরপরীদের আনাগোণা।

কতক্ষণ পর জানি না। আবার একটু চোখ খুললাম। বাইরে আলো বাড়ছে, নেভি-ব্লু পর্দার মাঝখানের সাদা অংশের বাড়তি উজ্জ্বলতা দেখে বুঝলাম। একটা বিশাল হাই তুললাম। চোখ বন্ধ করলাম। অন্ধকার দেখছি... ... আরো অনেকেই দেখছে... ... কেউ ঘুমিয়ে... ... কেউ বা জেগে... ... কেউ বর্তমানে... ... কেউবা ভবিষ্যতে... ...
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১:৩০
২২টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে দেখা - ১৩ মে

লিখেছেন জোবাইর, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:০৩

১৩ মে ২০০৬


দমননীতির অদ্ভুত কৌশল
সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলের ওপর দমন নীতির আশ্রয় নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দ্রুত বিচার আইন ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে দমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁচা আম পাড়ার অভিযান

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৩ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২



গাজীপুর জেলার জয়দেবপুরের বাড়ীয়া ইউনিয়নের দেউলিয়া গ্রামে আমার প্রায় ৫২ শতাংশ জমি কেনা আছে। সেখানে ছোট একটি ডোবা পুকুর, অল্প কিছু ধানের জমি আর বাকিটা উঁচু ভিটা জমি। বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×