বেদ গ্রন্হের সুহুফে উলা এবং যুবুরুল আউয়ালীন হওয়ার পক্ষে একটি জ্ঞানগত প্রমাণ এটাও যে, পূরাণ সহ হিন্দুদের অন্যান্য ধর্মীয় কিতাব সমূহে অনেক নবী (আঃ) এর উল্লেখ আছে । বেদগ্রন্হে নবীদের মধ্য হতে কেবল হযরত আদম (আঃ) এবং হযরত নূহ (আঃ) এর নাম পাওয়া যায় ।
কুরআন শরীফ সাক্ষী যে, হযরত আদম (আঃ) থেকে নিয়ে নবী করীম (সাঃ) পর্যন্ত প্রত্যেক নবী আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে প্রেরিত হয়েছেন । ইসলাম ধর্মকে দ্বীনে ফিতরাত বলা হয়েছে । যখনই কোন জাতি এ ফিতরাত দ্বীন থেকে সরে গেছে তখনই বাস্তব এবং সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে ভিন্ন ভিন্ন নাম নিয়ে বহু ভাগে বিভক্ত হয়ে আল্লাহমুখী মূল স্রোতধারা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে । পরবর্তীতে নিজেদের ভ্রান্তির উপর গৈারব করে চলেছে ।
এ দলছুট গ্রুপসমূহ নিজেদেরকে খৃষ্টান বলতে থাকে, ইহুদী বলতে থাকে আর পূর্বের নবী-রাসূলের উম্মতেরা নিজেদের নাম হিন্দু, বৌদ্ধ, যরুথ্রুষ্ট ইত্যাদি রেখে দিয়েছে । এখন বাস্তব অবস্হা দাঁড়িয়েছে এই যে, হিন্দু অধিবাসীদের মধ্যে দ্রাবিড় জাতি নূহ (আঃ) এর কওম এবং আর্যরা হল ইবরাহীম (আঃ) এর উম্মত এবং বৌদ্ধ জাতি হযরত যুলফিকল (আঃ) (সূরা -আম্বিয়া ৮৫)অর্থাৎ গৌতম বুদ্ধের উম্মাত । গৌতম বু্দ্ধ ফিতরাতে দ্বীন থেকে সরে যাওয়া হিন্দুস্তানীদেরকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন । তার দাওয়াত ছিলো মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে । কিন্তু কতবড় র্দুভাগ্য যে, আজ তারাই সবচেয়ে বেশী মূর্তি বানিয়ে নিয়েছে ।
ইতিবাচক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শয়তান সবসময় দ্বীনের নামে ধর্মহীন অপকর্মের দিকে সহজ সরল মানুষদের তাড়িয়ে নিয়ে যায় । মতলববাজ, কঠিন হৃদয়ের অধিকারী বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠির কায়েমী স্বার্থবাদী চক্র সত্যকে জনগণের দৃষ্টি থেকে আড়াল করার জন্য হরেক রকম অজুহাত খুজতে থাকে এবং মানুষকে পরষ্পরের ছিদ্রান্বেষণ করার জন্য উস্কানী দিতে থাকে । এই সাথে নতুন নতুন প্রথা এবং মনগড়া ধর্মীয় বিধি-নিষেধের প্রচলন ঘটায় । যেমন, কখনো বলা হয় যে, বেদ কেবল ব্রাক্ষণদের জন্যই সংরক্ষিত , যদি শুদ্র গণ কোনভাবে শুনেও ফেলে তবে তাদের কানের মধ্যে গলিত সীসা ঢেলে দেয়া হবে । কখনো আইন বানিয়ে দেয়া হয় যে, বেদের অমুক অমুক অধ্যায় খোদ ব্রাক্ষণও পড়তে পারবে না । এর অধিকার কেবল ঐ ব্রাক্ষণদের আছে যারা পুরোহিতরে আসনে অধিষ্ঠিত ।
হিন্দু প্রফেসর ডঃ বেদ প্রকাশের গ্রন্হ -'কল্কি অবতার ও মোহম্মদ সাহেব' একটি উদাহরণ । রহস্য উন্মোচন এবং সত্য উদঘাটনের সদিচ্ছা নিয়ে তিনি যখন বেদের মধ্যে তার অনুসন্ধানী মন নিবদ্ধ করেন তখনই তার সামনে সত্য উদ্ভাসিত হয়ে গেছে । তিনি অনুভব করেছেন এবং বুঝতে সক্ষম হয়েছেন, প্রকৃতপক্ষে সত্য দ্বীন এবং ফিতরাতের দ্বীন একটিই । আর আল্লাহ এক এবং আল্লাহর রাসূলগণ সবাই একই তাওহীদের পয়গাম নিয়ে এসেছেন । বেদসমূহে যে আখেরী 'পয়গম্বর' বা অবতারের উল্লেখ রয়েছে তা হলো প্রকৃতপক্ষে নবী করীম (সাঃ) । তিনি একদিকে বেদের মধ্যে উল্লিখিত 'কল্কি অবতার' এর বিশেষত্ব সামনে রেখেছেন অন্যদিকে সীরাতে তাইয়েবার উপর দৃষ্টি বুলিয়েছেন, এভাবে কলেমার অর্ন্তনিহিত তাৎপর্য তার কাছে দিবালোকের ন্যায় ষ্পষ্ট হয়ে গেছে ।
চলবে...........
তথ্য সূত্র---জগদগুরু মুহাম্মদ (সাঃ) , শায়খুল উবুদিয়া ইমাম সাইয়েদ মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ ইবনে আবদুহু আল-হোসাইনী । রেনেসাঁ পাবলিকেশন্স ।