(সাতই নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসের এক স্বর্ণোজ্জ্বল দিবস। একদলীয় বিভীষিকাময় দিনগুলোকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে সিপাই জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে রুখে দেয়ার এই দিন। আজকের বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যে শত ফুল হাজার ধারায় ফুটছে , বহু সংবাদ মাধ্যমের বিকাশ ঘটছে, লক্ষ মানুষের মত প্রকাশের যে ধারা যাত্রা সূচিত হয়েছে তার শিকড় প্রোথিত রয়েছে এই দিবসে। সে কথা অনেকেই ভুলে গেছেন, কেউ কেউ তা ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ইতিহাসে দ্যুতিময় প্রভাতের বিকাশই কেবল ঘটেছে। আধার পালিয়ে গেছে বারেবারে। তবুও অন্ধকারের কাপালিক প্রভু এবং তাদের চেলারা নিবৃত্ত হননি। আজও তারা ওত পেতে থাকেন। আজও তারা কৃষ্ণ নি:শ্বাসে ডুবিয়ে দিতে চান মানুষের বিজয় গাথাকে। অন্ধকারের প্রভুদের অতীত এবং চলমান অপচেষ্টার প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হল শিশুতোষ উপন্যাস ঝিলিমিলি ভোর। আজ তার ১৬তম পর্ব পরিবেশিত হল।)
১৬ তম পর্ব
রুকার জ্বর আরও বেড়েছে। খালাম্মার মুখ থমথমে। ওর মাথায় বরফভর্তি ব্যাগ। পাশের টেবিলে অনেকগুলো অষুধ। ঝিনু প্রথম মনে করেছিলো রুকা বোধহয় ঘুমাচ্ছে। পরে দেখে ও কথা বলছে। তখনি ঝিনু টের পায় রুকা আবোল তাবোল বকছে। ঝিনু আস্তে করে ডাকে,
-‘রুকা। এই রুকা।’
রুকা তাকায়। লাল টকটকে চোখ। তারপর ওর দিকে তাকিয়ে বিচ্ছিরি ভাবে হেসে ওঠে।
-‘তুই ইন্দু। কি চাস?’ ইন্দু ওদের ক্লাসের সবচেয়ে পচা মেয়ে। লেখাপড়ায় লাড্ডু। অন্য মেয়েদের জিনিস সরিয়ে নেয়ার জন্য এরই মধ্যে বড় আপা ওকে দুইবার বেত মেরেছেন। আরেকবার এমন করলে স্কুল থেকে বের করে দেয়া হবে সে কথা ইন্দুকে জানিয়ে দিয়েছেন।
-‘আমি ইন্দু না। ঝিনু।’ ঝিনু কাঁদো কাঁদো গলায় বলে।
-‘না তুই ইন্দু। আমার পুতির মালা। ডল পুতুল। খুশি খুশি রংয়ের ভিউকার্ড সব তুই সরিয়ে নিয়েছিস। ফেরৎ দে। ওসব ফেরৎ দে।’
-‘রুকা ওতো ই্ন্দু না। ঝিনু। চিনতে পারছিস না?’ খালাম্মা বলেন।
-‘বেশ তাহলে একটা লম্বা লাঠি নিয়ে আয়। চুন্নি ইন্দুটাকে পিটাবো। আয় আমরা সবাই মিলে ওকে ধরব আর মারবো।’
রুকা চোখ বন্ধ করে। ঝিনু ওর মাথার কাছে বসে থাকে। তারপর এক সময় চলে আস্তে। ওর কান্না পেতে থাকে।