somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে পুরো বাঙালি জাতি অসন্তুষ্ঠ। একটি কথা আবার মনে করিয়ে দিতে চাই, দেশ বিরোধী, এই সোনার বাঙলার শত্রুরা বাঙালিদের বাইরে। যুদ্ধাপরাধীর বিচার সম্পর্কিত ব্যাপার নিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। বাঙালিরা আবার গর্জে উঠেছে।

যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড ছাড়া অন্য যে কোনো শাস্তি দেওয়া দেশের কলঙ্ক। আমরা দীর্ঘ ৪১ বছর ধরে বাঙলাদেশকে অপমান করছি। বাঙলাদেশ প্রতিটি মুহূর্তে ধর্ষণ হচ্ছে। বলতে-শুনতে খারাপ লাগলেও এটিই অপ্রিয় সত্য।

যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা প্রধানমন্ত্রীর ভোট কামানোর একটি উপায়। প্রতিটি মিটিং, মিছিলে, সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাপরাধীর বিচার নিয়ে গর্ব করে। শুধু শেখ হাসিনা নয়, প্রতিটি প্রধানমন্ত্রী ভোট কামানোর জন্য বিভিন্ন উপায় বের করে। বর্তমান সরকারের ভোট কামানোর একটি উপায় যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা। আমরা ভালোভাবেই জানি, প্রধানমন্ত্রী যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তার ভেতরে কোনো প্রতিশ্রুতি তিনি রাখেন নি। বরং বিভিন্নভাবে বাঙলাদেশের জনগণদের প্রতারিত করছেন।

একটি যুদ্ধাপরাধী দলকে দেশের প্রধানমন্ত্রী সব সময় সমর্থন করছে। জনগণের কাছে ভোট ভিক্ষা চেয়ে আবার যুদ্ধাপরাধী দলকে সমর্থন করছে। তিনি কি বাঙালি জাতির জনকের কন্যা? এই নিয়ে প্রশ্ন সব বাঙালির মনে থেকে যায়। যে মানুষটি দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছেন, সেই মানুষটির কন্যা দেশটিকে কীভাবে ধ্বংস করছে! বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

যুদ্ধাপরাধীর বিচার এবং ট্রাইবুনাল ভেঙে দেওয়ার জন্য কয়েকদিন ধরে জামায়াত-শিবির হরতাল করছে। এই হরতালে সহযোগিতা করছে প্রধানমন্ত্রীসহ আইন রক্ষাবাহিনীরা। যুদ্ধাপরাধীর বিচার বন্ধ করার দাবিতে জামায়াত-শিবিরকে কিছু বলা হচ্ছে না। সরকার চুপ, পুলিশ প্রশাসন চুপ। এর মধ্যে সাধারণ মানুষ প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছে।

বাঙলাদেশের সরকার বিভিন্ন কথা মুখে বলে। কিন্তু বাস্তবে কোনো কথায়-ই রাখে না। কারণ প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলে জনগণকে দুর্বল করছে। এটি শুধুমাত্র ক্ষমতায় যাওয়ার একটি উপায়।

বর্তমান সরকার যদি আসলেই যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতো, তবে এ বিষয়ে আগে থেকেই কঠোর হতো। বর্তমান সরকারের উচিত ছিলো, জামায়াত-শিবির নামক যুদ্ধাপরাধী দলকে নিষিদ্ধ করা, প্রতিটি আইন রক্ষাবাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া উচিত ছিলো জামায়াত-শিবির দেখা মাত্রই গুলি করা; জনগণকেও জামায়াত-শিবিরকে যেভাবে হোক প্রতিহত করার ক্ষমতা দেওয়া উচিত ছিলো।

গতকাল একটি রায় হয়েছে। একজন যুদ্ধাপরাধী কসাই, ধর্ষক, নরপিশাচের শাস্তি যদি কয়েক বছরের জেল হয়, তবে সেখানে প্রশ্ন থেকে যায়, একজন যুদ্ধাপরাধী, কসাই, ধর্ষক কি একজন সাধারণ ডাকাত, খুনীর মতো? যদি তাই-ই না হতো, তবে প্রতিটি যুদ্ধাপরাধীর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ছাড়া অন্য কোনো শাস্তি নির্ধারণ করা হতো না।

অনলাইনে অর্থাৎ ব্লগে-ফেইসবুকে গতকালকের রায়ে সরকারকে অনেকে দোষী করছে না। যারা যুক্তিসঙ্গতভাবে সরকারকে দোষী করছে, তাদেরকে তারা গালি দিচ্ছে, মা-বাবা তুলেও কথা বলছে এবং বিভিন্ন উপাধীও দিচ্ছে। কারণ তারা আওয়ামী লীগান্ধ, সরকারান্ধ। সরকার, আওয়ামী লীগ খুন করলেও তাদের ভালো লাগবে, তারা সরকার, আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে।

অবশ্যই এই রায়ের জন্য সরকার প্রধান দায়ী। কেউ যদি বলে, এই রায়ে সরকারের কোনো হাত নেই, তবে সে বিবেকান্ধ, সরকারান্ধ, দেশের শত্রু। কারণ যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ মামলা করেছে। তাই এই বিচার হচ্ছে। কিন্তু এই আওয়ামী লীগ কে? এই আওয়ামী লীগ বর্তমান সরকার। সাধারণ একটি মানুষ কিংবা একটি দল বাদী হয়ে মামলা করলে এই কথাটি মেনে নেওয়া যেতো। কারণ পুরো আইন ব্যবস্থা তার কিংবা দলের কথা মানতো না। সরকার যেমন প্রতিটি দুর্নীতি, অন্যায়ের উৎস, তেমন সরকার দেশের সমস্ত ক্ষমতার উৎস। সরকারের কথা সবাইকে মানতে হবে।

সরকার ২ দলের কাছে ভালো হওয়ার জন্য এমন একটি জঘন্য কাজ করেছে। একদিকে একদলের কাছে ভালো থাকার জন্য যুদ্ধাপরাধীর শাস্তি দিয়েছে, অন্যদিকে জামায়াত-শিবিরের এই অশান্তিপূর্ণ হরতাল সমর্থন করে এই শাস্তি দিয়েছে। ভোটও পাবে, আবার ২ দলের কাছে ভালোও থাকবে।

বিএনপি ক্ষমতায় আসলে এই যাবজ্জীবনের সাজা বাতিল করা হবে। তখন সে আর ২ আঙ্গুল দেখিয়ে বাঙালিদেরকে অপমান করবে না, সরাসরি দেশটি ধ্বংস করবে। এই কথাটি শুধুমাত্র একজন যুদ্ধাপরাধীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না, প্রতিটি যুদ্ধাপরাধী, দেশবিরোধীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এবারের বিজয় দেশবিরোধীদের হয়েছে।

বাঙালিরা হারে না। আমরা বাঙালি না। আমরা অন্ধ, অবাঙাল। আমাদের কাছে নিজের জীবনটিই বেশি মূল্যবান। নিজের পেট চললেই হয়। নিজের মায়ের কথা ভাবি না। আমরা বাঙালি না। কারণ বাঙালিরা নিশ্চুপ করে থাকে না।

১ টি রায় দেওয়া হয়ে গেছে। এবার প্রতিটি যুদ্ধাপরাধীকে এই ধরণের শাস্তি দেওয়া হবে, এটুকু আমাদের নিশ্চিত ভেবে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির পিতার সন্তান না হতে পারে। কিন্তু আমরা বাঙালি, বাঙালি জাতির পিতার সন্তান। গর্জে উঠে আমাদের দেশের, বাঙালি জাতির পিতার পিতৃত্বকে প্রমান দেই; প্রমাণ দেই আমাদের বাঙালিত্বকে।

প্রতিটি যুদ্ধাপরাধীর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড নির্ধারণ করা হোক এবং তা বিলম্ব না করে অতি দ্রুত কার্যকর করা হোক; রায় যে কোনো দিন দেওয়ার নাম না করে বিচার কাজ শেষ করার পর পরই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হোক এবং তা অতি দ্রুত কার্যকর করা হোক। যুদ্ধাপরাধী দল, দেশবিরোধী দলকে নিষিদ্ধ করা হোক। এই সোনার বাঙলায় বাঙালি ছাড়া কোনো দেশবিরোধীদের ঠাঁই নাই।

যে যেভাবে পারেন, প্রতিবাদ করতে থাকেন। প্রতিবাদ থামাবেন না। প্রতিবাদের শেষ নেই, প্রতিবাদ চলতেই থাকবে। দেশটিকে সুন্দরভাবে বাঁচিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের। তাই গর্জে উঠুন। বিজয় আমাদের নিশ্চিত হবে। জয় বাঙলা।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:১১
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×