আর পারলাম না। অবশেষে হেরেই গেলাম। গত কয়েক বছর ধরে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছিলাম। যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটলো। ফলাফলের স্কোরবোর্ডে আমি পরাজিত অংক ধারণ করলাম। অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝেও জীবনকে টেনেটুনে এখান পর্যন্ত আনছি। এ অবস্থায় এসে জীবনটা আমার কাছে খুবই কঠিন হয়ে গেলো।
আমার জীবনের অসম্ভব সুখের ৭ মাস ২ সপ্তাহ কাটালাম বাঁধভাঙ্গার আওয়াজে। কিন্তু কিছু বিশ্রী বাস্তবতা সে সুখকে গিলে খেলো। এখন আর জীবনকেই বাঁচাতে পারছি না। সুখের হিসেবতো অনেক দূর। বিষয়টা যদি এইডস, কিডনি বা ক্যান্সার জনিত হতো, তবে হয়তো দান খয়রাতে রক্ষা পেতাম। কিন্তু এমনই এক সমস্যা যা দান খয়রাতেও মিটবে না। শুভাকাংখীদের আপসোসেই যার সীমাবদ্ধতা। সে বিষয়ে আর এগুচ্ছি না।
আমার ব্লগিং করাটা খুব অস্বাভাবিক ছিলো। কারন ব্যক্তিগত একটি কম্পিউটার বা নেট ব্যবহার আমার কাছে মাকাল ফলের মতো। যদিও কর্মের মারপ্যাঁচে পড়ে সে সুযোগটি পেয়ে গিয়েছিলাম। আগামি ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ থেকে তাও আর সম্ভব নয়। তারপর অকেজো হতে শুরু করবে সবাক নিক, আমার মেইল আইডি, ফেসবুক অ্যাকাউন্টসহ ভার্চুয়াল অস্তিত্ব। আস্তে আস্তে হারাতে থাকবো বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজের ভাই, বোন, বন্ধু আর প্রিয় সব লেখককে। হারাতে থাকবো এখানে যাদের সাথে মতবিরোধ আছে, তাদেরকে।
চারপাশের অনেকেই আমাকে প্রতিভাবান বলেন। কিন্তু প্রতিভাকে প্রস্ফুটিত করার মতো যোগান আমার কাছে নেই। আমার হারিয়ে যেতে অতটা কষ্ট হতো না। কিন্তু বাঁধ ভাঙ্গার আওয়াজে এসে আমি একটি পরিবারভুক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। সে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হতে স্বভাবতই আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। খুব কষ্ট হচ্ছে।
নিজের মনের অবস্থা প্রকাশ করতে পারছি কিনা জানি না, তবে আমি আমার এখানের স্বজনদেরকে ছেড়ে থাকবো কিভাবে তা ভাবতে কন্ঠরোধ হয়ে আসছে। কারণ জীবনের পুরো ২৩ বছরে সার্চ করলে যতটুকু সুখ বা আনন্দ বেরিয়ে আসবে তার ৯৯.৯৯ ভাগই ব্লগজীবনের এই ৭ মাস ২ সপ্তাহ সময়। এ সময়টাতে আমি কেবলই পেয়েছি। অনেক অনেক ভালোবাসা। খারাপ লাগা বলতে কেবল জামাত-শিবির তথা মৌলবাদ আর দেশবিরোধীদের আস্ফালন।
সত্যি তোমাদেরকে খুব ভালোবাসি। আমাকে তোমরা ভুলো না। যদি কখনো আবার সুযোগ হয়, তোমাদের সামনে আসবো।
তোমরা সবাই ভালো থেকো। খুব ভালো থেকো।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ ভোর ৪:১৩