somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঝিলিমিলি ভোর - (৭ই নভেম্বরকে নিয়ে একটা শিশুতোষ উপন্যাস)

২২ শে নভেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(সাতই নভেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসের এক স্বর্ণোজ্জ্বল দিবস। একদলীয় বিভীষিকাময় দিনগুলোকে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে সিপাই জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমে রুখে দেয়ার এই দিন। আজকের বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যে শত ফুল হাজার ধারায় ফুটছে , বহু সংবাদ মাধ্যমের বিকাশ ঘটছে, লক্ষ মানুষের মত প্রকাশের যে ধারা যাত্রা সূচিত হয়েছে তার শিকড় প্রোথিত রয়েছে এই দিবসে। সে কথা অনেকেই ভুলে গেছেন, কেউ কেউ তা ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ইতিহাসে দ্যুতিময় প্রভাতের বিকাশই কেবল ঘটেছে। আধার পালিয়ে গেছে বারেবারে। তবুও অন্ধকারের কাপালিক প্রভু এবং তাদের চেলারা নিবৃত্ত হননি। আজও তারা ওত পেতে থাকেন। আজও তারা কৃষ্ণ নি:শ্বাসে ডুবিয়ে দিতে চান মানুষের বিজয় গাথাকে। অন্ধকারের প্রভুদের অতীত এবং চলমান অপচেষ্টার প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হল শিশুতোষ উপন্যাস ঝিলিমিলি ভোর। আজ তার ১৩তম পর্ব পরিবেশিত হল।)



-‘যাগগে আজকের মত খেলা ঠং ঠং... মানে ছুটি। ছুটি গরম গরম রুটি।’ বলতে বলতে শান্তুকে নামিয়ে রাখে। চাচি ট্রে নামিয়ে রাখেন। তারপর শান্তুকে কোলে তুলে নেন।
-এই তোর পত্রিকা চাঁদ উড়ে যাবে না। বরং চা জুড়িয়ে যাবে। পত্রিকাটা রাখ যাবে। চা খা। ঝিনু তুইও চা খা।’
-‘আপনি খাবেন না।’
-‘এইতো নিচ্ছি।’ ঝিনুর প্রশ্নের জবাবে চাচি বলেন। চা পাপড় বিস্কুট হালুয়া মেলা কিছু এনেছেন। ভাইমনি সত্যিই বলেন,
-‘আমাদের আঙ্গুর ফল টক নয় ।’ এমন কথা শুনে চাচি খুশি গলায় বলেন,
-‘যাক বাপু তোমাকে আমার সার্টিফিকেট দিতে হবে না।’
গরম চায়ে আস্তে আস্তে চুমু দেয় ঝিমু । না হলে ঠোঁট পুড়ে যাাবে। ভাইয়া খাচ্ছে না । গিলছে। তাড়াতাড়ি শেষ করে পত্রিকা নিয়ে ফের বসবে আরকি ।
-‘তুমি ও পত্রিকা বাসায় নিয়ে যাও।’ চাচি বলেন।
-‘ জ্বি চমৎকার বুদ্ধি। ভাইমনি আর আব্বু দু’জনে মিলে চুল টুল ছিড়ে একদম টাক বানিয়ে ফেলুক আর কি! ওরা যখন মারবেন আম্মু চুক চুক করবেন। ওদের হাত থেকে সরিয়ে নিবেন। কিন্তু আববু ভাইমনি সরে গেলে আমার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলবেন, বাবা এসব আজে বাজে পত্রিকা কম পড়ে, পড়ার বইতো একটু বেশি পড়তে পারিস। এবং আম্মুর এই কথা ওদের মারের চেয়েও খারাপ।’
ভাইয়ার কাথায় ঝিনুর খুব হাসি পায়। চাচিও হেসে উঠেন।
-‘ঝুমরি কোথায় চাচি?’ ভাইয়া জানতে চান।
-‘আর বলনা। বাড়ি গেছে। আর এদিকে চুলো ঠেলে, শান্তুকে সামাল দিয়ে আমি কাহিল।’
শান্ত আবার মাটিতে নেমে গেছে। দুই হাতে দুটি বিস্কিট নিয়ে মাটিতে মাটিতে ঘসছে । চাচি কিছু বললেন না।
-‘ও ওর মতো খেলা করুক গে।’ চাচি এবার বললেন।
-‘ চাচা কোথায়?’ ভাইয়া জানতে চান।
-‘ বাজারে গেছেন।’
বলতে না বলতেই আরে ঐতো চাচা আসছেন। দু হাতে মন্ত দু থলি মাসের বাজার করে ফিরছেন। ঝিনু ঝিল মিলিয়ে উঠে ।
-‘চাচা আপনি অনেক দিন বেঁচে থাকবেন। আপনার কথা মনে করতে করতেই এসে গেছেন।’
-‘ তাই নাকি তোমরা কখন এসছো। ভাবি কেমন আছেন? বাসার খবর কি ?’ এটাই রফিক স্বভাব। তড়বড় করে সবার কথা জিজ্ঞাস করবেন। খুটিয়ে খুটিয়ে জবাব শুনে তবেই শান্ত হবেন। এবার চাচি প্রশ্ন করেন,
-‘তা বাজারে এতক্ষন কি করেছ? আর বলনা সে এক কান্ড।’ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়েন। তারপর বলেন,
-‘তোমাদের পাড়ার হারুর সাথে দেখা । ফিরে এসেছে তাহলে এত দিন পরে। ধরে নিয়ে বসাল সেই মৈত্রী সমিতির অফিসে। মজার ব্যাপার হল এতোদিন পরে ওটাও আজ খোলা দেখলাম। সব পুরান পান্ডারা মিলে গুলতানী মারছে। ফিসফাস করছে।’ চাচা একটু থামলেন। তারপর বললেন,
-‘ওরা সব বলাবলি করছিল জেল খানায় দুঘর্টনা না ঘটলে এতোদিনে অস্থায়ী সরকার নাকি হয়ে যেত। ওরা কি সব লিস্টি তৈরির কথাও বলছে। আমার আর ভাল লাগছিল না। পাক-বাহিনীর সাথে লড়েছি। গুলিতে একটা হাত প্রায় অকেজো হয়ে গেছে। সেত ছিল যুদ্ধের দিনকাল। স্বাধীন দেশে আবার কিসের লিস্টি কিসের কি! আর তা ছাড়া আমি তোদের লোক হতে যাব কেনো, আমি দেশের লোক। তবে এসব কথা ঠিক মুর্খে উপর বলতে পারিনি। কিন্তু না এক সময় বিরক্ত ধরে গেলো আমি উঠে চলে রওনা হলাম। সে সময় হারুটা বলে,
-‘দাদা দেখলেন তো ডালিম ফেটে কেমন রস বের হয়ে গেছে।’
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×