"ধর্মের নামে হত্যার হুমকি, রাষ্ট্র চুপ কেন?"
একে একে মিছিলের মত করে আসছে শিল্প-সংস্কৃতি তথা মুক্তচিন্তা এবং মতপ্রকাশের ওপর নানা আঘাত। কিছুদিন আগে ঢাকায় বিমান বন্দর চত্বরে অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ... ... তারা বেড়ে উঠছে এবং জীঘাংসার বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে চারদিক। সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে 'মান্দার' নাটকের প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে যে ঘটনা ঘটে গেল ও যাচ্ছে তা এই প্রতিত্রিয়ার বাষ্পকে আরও চড়িয়ে দেবারই আয়োজন। যে ভাষায় এই গোষ্ঠী প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করছে তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য ও গা শিউরানো। আল ইহসান পত্রিকায় ঘোষণা করা হয়েছে - "কাজেই দেরী নয়, এই নরপশু ইহুদি নাচারাদের, নরপিশাচ ধুমকেতু নাট্যপশু উদীচীর কুকুর ছানাদের যেখানেই পাওয়া যাবে, কতল, হত্যা, মস্তক ছিন্ন-ভিন্ন করার জন্য সকল মুসলমানকে একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।" শুধু আহ্বান নয় হত্যার জন্য পুরষ্কারও ঘোষণা করেছে তারা - "যে ব্যাক্তি এই সকল মুরতাদদেরকে কতল বা হত্যা করতে পারবে তাকে আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাতের পক্ষ থেকে উপযুক্ত পুরষ্কৃত করা হবে।"
এই প্রতিক্রিয়ার উপলক্ষ যে নাটক, সেখানে একজন সাধারণ মানুষ রসুল মিঞা, তাকে গালিগালাজ দিয়ে ডাকে অত্যাচারী, বৃক্ষ নিধনের হোতা জমিদার শ্যেনীর একজন লোক। আর রসুল মিযা শেষ পর্য্যন্ত তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে। বাঙালি মুসলমানদের আল্লাহ বা নবীর নামের সঙ্গে মিলিয়ে নাম রাখাটা অত্যান্ত সাধারণ ঘটনা। আর শিল্প যেহেতু জীবন বিচ্ছিন্ন নয় তাই সেখানেও একই ধরনের নাম ব্যাবহারও খুবই স্বাভাবিক। আর শেষ পর্য্যন্ত চরিত্রটির প্রতি নাট্যকারের দরদই প্রকাশিত হয়। আর রসুল মিয়াকে গালিগালাজকারীর ওপর দর্শকের ঘৃণা জন্মে।
- সচেতন শিল্পী সমাজ* কতৃক প্রকাশিত "ধর্মের নামে হত্যার হুমকি, রাষ্ট্র চুপ কেন?" লিফলেট থেকে উদৃত।
আজ পড়লাম এ বিষয়ে খোদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের ন্যাক্কারজনক অবস্থানের কথা! কি ভীষন অন্ধকারে আমরা পতিত হতে চলেছি, ভাবলে দিশেহারা হয়ে যাই। হায়, এমন দেশত আমরা কেউ কোন দিন কখনো চাইনি!
* রাজশাহীতে দেখলাম একই নামে মৌলবাদীরাও একটা ব্যানার করেছে! হায়, সচেতনতা !!