somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কান্ডজ্ঞান বিবর্জিত উর্বর মস্তিষ্ক...

২০ শে নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার অতীব প্রিয় মানুষ। জহর দা। পুরো নাম জহর লাল কুরী। ফটোগ্রাফি করে চলেন। ছবি তোলা তার যতোটা না পেশা, তার চেয়ে বেশি হচ্ছে নেশা। তার স্টুডিওতে যাবেন কিংবা তাকে দিয়ে আপনার কোনো প্রিয়জনের বিয়ে/জন্মদিনের ছবি তুলবেন ? কোনো চিন্তা নেই, তিনি তুলে দেবেন। ছবি ডেলিভারির সময় বেশিরভাগ লোকজনই বলে- দাদা, টাকা নেই, পরে দিবো। জহরদা দিয়ে দেন। মাস শেষে দেখা যায়, সারা মাসে তার রোজগার যা হয়েছে তার চেয়ে খরচ বেশি।

এ বিষয়টা আমাদের বন্ধুদের ভয়ানক অপছন্দ। এ নিয়ে বহুবার তাকে বলেছি। আপনার সংসার আছে, ছেলে আছে। আপনার দোকানের খরচ আছে। এ ভাবে বিনে পয়সায় ছবি দিয়ে দিলে আপনার চলবে কী করে ? দাদা হাসেন। তাকে কোনোদিন মন খারাপ করতে দেখিনি। সবাইকে সারাদিন হাসি আর আনন্দে মাতিয়ে রাখেন মানুষটা। বৌদি মাঝে মধ্যে আমাদের বাসায় ডাকেন। তার সংসারের অভাবের কথা, ছেলের পড়াশুনার কথা, জহরদার দিল দরিয়া স্বভাবের কথা- আমাদের হাসতে হাসতে বলেন। দাদার বিরুদ্ধে বৌদি কোনো অভিযোগ করেন নাই কোনোদিন। খুব কম দম্পতির মধ্যে এমন আন্ডারস্টেন্ডিং দেখেছি। হবেই না বা কেনো ? দাদার মতো রসিক লোক আমার জীবনে আমি আর দেখিনি। প্রতিটি কথায় তার রসিকতায় আমরা হেসে খুন। যে কোনো আড্ডার তিনি মধ্যমনী।

এরশাদ চাচার শাসনামল তখন। এক নিঃশ্বাসে তিনি এরশাদের নাম বলতেন। তার ভাষায় এরশাদের নাম ছিলো- স্বশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক লেফটেনেন্ট জেনারেল আলহাজ্ব কবি হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ। পাশাপাশি তিনি এরশাদকে বলতেন- কান্ডজ্ঞান বিবর্জিত উর্বর মস্তিষ্ক। এর অর্থ জানতে চাইলে বলতেন, জানিনা। তিনি সবার কমন জহরদা। ছেলে বুড়ো সবাই তাকে দাদা নামেই ডাকে। এমনও দেখা গেছে, বাবা এবং ছেলে উভয়ই দাদা ডাকছেন। প্রায়ই দাদার সাথে মোবাইলে কথা হয়। সেই একই স্বরে কথা বলেন। একই ধরণের রসিকতা করেন। কেমন আছেন, জানতে চাই না। জানি, আজকাল তিনি বড়ো বেশি অর্থনৈতিক অনটনে আছেন। এখন ঘরে ঘরে ডিজিটাল ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা আছে। লোকজন ইদানীং আর স্টুডিওতে ছবি তোলেনা বললেই চলে। তবু তিনি তার পুরোনো স্টুডিও ব্যবসাটাকে আঁকড়ে ধরে আছেন। এটা শুধু তার ব্যবসা নয়, সন্তানের মতো। প্রায় ২০ বছরের সম্পর্ক যার সাথে...।

প্রিয় জহরদা, আপনি ভালো থাকুন। সবাইকে আনন্দ দেয়া এই আপনার জীবনটা আনন্দে কাটুক....
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৫:২৯
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙালী মেয়েরা বোরখা পড়ছে আল্লাহর ভয়ে নাকি পুরুষের এটেনশান পেতে?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:২০


সকলে লক্ষ্য করেছেন যে,বেশ কিছু বছর যাবৎ বাঙালী মেয়েরা বোরখা হিজাব ইত্যাদি বেশি পড়ছে। কেউ জোর করে চাপিয়ে না দিলে অর্থাৎ মেয়েরা যদি নিজ নিজ ইচ্ছায় বোরখা পড়ে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×