somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সে শক্ত করে আমাকে জাপটে ধরে কানের কাছে মুখটি নিয়ে একটি কথাই বললো তাকে বিদায় করো না হলে তোমার সর্বনাশ হবে!!! (শেষ পর্ব )

১৯ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ৮:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব

বাস্তবতা মেনে ধীরে ধীরে শোক কাটিয়ে উঠলাম। নিজকে ভাসিয়ে দিলাম আবার ব্যস্ততার জোয়ারে। কাজের মধ্যে ডুবে থেকে সিমলাকে ভুলতে বৃথা চেষ্টা করতে লাগলাম।

সেদিন অনেক খাটা খাটুনি শেষে রাতে বাসায় ফিরলাম। খেয়ে দেয়ে কণাকে আগের মতোই তাড়া দিলাম দুধ দেবার জন্য। সকালেও খাইনি। মাথাটা যেন ধরে আছে! তার মুখ থেকে তোতা পাখির মতো মুখস্থ বুলিটা শোনার পর মাথাটা রাগে জ্বলে উঠলো। ইচ্ছে করলোম, তার গালে একটা থাপ্পর বসিয়ে দেই। খুব কষ্টে নিজকে সামনে নিলাম। তাকে শুধু বললাম খেয়ে দেয়ে রান্নাঘরের বাতিটা জ্বালিয়ে রেখে ঘুমিয়ে পড়তে।
রাত জেগে পড়াশোনা করি। লিখতে হতে পড়তেই হয়। না পড়লে লিখা যায় না। আজও পড়তে বসলাম। কিন্তু মনযোগ দিতে পারছিলাম না। প্ল্যান করলাম বিড়াল রহস্য উদ্ধার করতেই হবে। না হলে আমার কপালে কোনদিনই দুধ জুটবে না।

রাত তখন সাড়ে বারোটা। রান্নাঘরে কখনো যাই না। কণা হয়তো ভয় পাবে এই ভেবে আর হাড়ি পাতিল উল্টিয়েও দেখি না তাতে কি আছে, কি নেই। আজ যে করেই হোক দেখতে হবে বিড়ালটা কখন, কিভাবে, কোথা দিয়ে আসে। পা টিপে টিপে রান্নাঘরের সামনে গেলাম। দেখলাম বাতি জ্বলছে। শব্দ করলে হয়তো কণা জেগে উঠবে। শুনলাম হিস হিস করে একটা শব্দ। কোন মানুষ তো ঘুমানোর সময় এমন শব্দ করে না! খুব সন্তর্পনে দরজার কাছাকাছি গেলাম।

রহস্য কি?

দরজায় ফাঁক দিয়ে আমি যা দেখলাম তাতে ভয়ে একদম কাঠ হয়ে গেলাম। তাহলে আমি এতোদিন একটা ..... সঙ্গে বসবাস করছি! রহস্যের জালটা পুরোপুরিই খুলে গেলে আামর চোখের সামনে। নিঃশব্দে দুরু দুরু বুকে পা টিপে টিপে এসে শুয়ে পড়লাম বিছানায়। যা করার তাড়াতড়িই করতে হবে।

পরদিন সকালে বন্ধু পলাশের অফিসে গেলাম অনেক দিন পর সে তো আমাকে পেয়ে মহা খুশি। অন্য গালগল্প বাদ দিয়ে তাকে খুলে বললাম সব ঘটনা।সে প্রথমে আমার কথা বিশ্বাস করতে চায়নি। সে জানে, আমি মিথ্যা বলি না। অনেক বুঝানোর পর সে বিশ্বাস করলো, নাকি বিশ্বাস করার ভান করলো। তার কাছে পরামর্শ চাইলাম কিভাবে ওই

মানুষরুপী... কে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে পারি। এসিড থেকে শুরু করে আগুন, অনেকভাবে তাকে মারার চিন্তা-ভাবনা করে দেখলাম দুজনে। কিন্তু কোনটাই কারো মনঃপুত হলো না।

শেষে পলাশকে বললাম, দোস্ত এক কাজ কর। তোর লাইসেন্স করা রিভালভারটা দিয়ে....! আমার প্রস্তাবটা তারও পছন্দ হলো। পলাশের খুব ইন্টারেস্ট ছিল শুটিংয়ে। স্বপ্ন দেখতো বাংলাদেশ অলিম্পিক টিমের হয়ে শুটিংয়ে মেডাল জয় করবে এবং সেটাই হবে বাংলাদেশের অলিম্পিক গোল্ড মেডাল।

দুইদিন পর প্ল্যান মোতাবেক আমি আর পলাশ আমার বাসাতেই থাকলাম। তবে পলাশের একটা শর্ত ছিল, সে আগে দেখে নেবে আমার কথার সত্যতা কতোটুকু। এরপরই গুলি করবে।

লিখতে লিখতেই সিগারেট খেতে ইচ্ছা করলো। পাশে রাখা সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট নিলাম। ম্যাচটা থাকে আমার বেডের নীচে। তা নিতে যেতেই চোখে পড়লো ছোট্র একটি চিরকুট।

রাশেদ, কণা মানুষ নয়।
ও একটি মানুষরুপী সাপ।
প্লিাজ, আমাকে বিশ্বাস করো। আমি নিজ চোখে দেখে...। আর কিছু লেখা নেই। এটা তো সিমলার হাতের লিখা! ডসমলা তাহলে আমার এখানে এসেছিল? এই কণারুপী সাপই তখন তাকে হত্যা করেছিল! চিরকুটটা পলাশের হাতে দিলাম। সে তা পড়েও বিশ্বাস করতে চাইলো না। বললাম চল তাহলে। তুই আজ নিজের চোখেই দেখবি। রাত তখন প্রায় সাড়ে বারোটা। আমি জানি ওই সময়টাতেই কণা তার আসল রুপ ধারন করে। নিঃশব্দে দুজনে রান্নঘরের সামনে গেলাম। ভাগ্য ভালোই ছিল। কণা তখন তার আসল রুপ ধারণ করতে ব্যস্ত। পলাশের হাতে শক্ত করে রিভালভারটা ধরা। আমার মতো পলাশও দেখলো বিস্ময়কর ওই দৃশ্যটা। আমরা কণার পেছন থেকে দেখছিলাম। তাই সে বুঝতে পারেনি আমদের উপস্থিতি।

রুদ্ধশ্বাসে আমরা দেখছিলাম তার রুপান্তর। রান্নাঘরের শেলফে রাখা ছিল একটি ছোট আয়না। কণা সেদিকেই তাকিয়ে ছিল। হঠাৎ তার শাড়িটা খসে পড়লো। কণার হাত নড়ছিল না। অদৃশ্য কোন শক্তি তাকে বস্ত্রহীন করছিল। তারপর তার ব্লাউজ আর ব্রা-র হুক খুলে। লুটিয়ে পড়লো মাটিতে শাড়ীর উপর। সর্বশেষ পেটিকোট। পেটিকোটের ফিতা খুলে ফেললো। কণার পায়ের চারপাশে জড়ো হলো তার পরিত্যাক্ত আবরণ। সে সম্পুর্ণ নিরাবরণ! পেছন থেকে আমরা দেখছিলাম তার পিঠে এলায়িত ঘন চুলের রাশি। তার কাধ। কাধের দুই পাশ থেকে ঝুলছে ঝজু দুই হাত।

সুঠাম পিঠ। পাতলা কোমর। উন্নত নিতম্বদেশ। পুরিপুষ্ট উরু। সুগঠিত পায়ের চারিদিকে তার শাড়ি-ব্লাউজ-পেটিকোট। কালো মেয়ের কি মোহনীয় পশ্চাৎ আকৃতি! এই প্রথম কোন মেয়েকে আমরা এভাবে দেখলাম। কিন্তু ভয়ে আমরা দুজনেই কুকড়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ কণা আয়নার দিকে একটু ঝুকে পড়লো। আমরা দুজনই ভয়ে চোখ বন্ধ করালাম। কতক্ষন এভাবে ছিলাম জানি না। চোখ খুলতেই দেখি কণার বদলে তার শাড়ি-ব্লাউজের ওপর একটা লম্বা কালো সাপ। সাপের ফনাটা দুলে ওপরে উঠে কি যেন খুজছে। এরপর ধীরে ধীরে সামনের শেলফে রাখা অ্যালমুনিয়ামের পাতিলে মুখটা ঢুকিয়ে দুধ খেতে শুধু করলো।
ওই দৃশ্যটা এর আগেও একবার দেখেছি।

তবুও আজ আবার দেখতে দেখতে ভয়ে সারা শরীর শিউরে উঠলো।ওই সাপটাই রমিজ আলী এবং আমার প্রিয়তমাকে হত্যা করেছে। কারণ তারার হয়তো জেনে গিয়েছিল তার আসল রুপ। ভাগ্যিস সেদিন তাকে থাপ্পড় মারিনি। মারলো হয়তো ওই বিষাক্ত কালো সাপ আমাকেও ক্ষমা করতো না। এক ছোবলে পাঠিয়ে দিত প্রথিবীর ওপারে। মনে পড়লো যেদিন জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলেছিলাম সেদিন একটা মরা গাভী দেখেছিলাম। আরো দেখেছিলাম গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত সেই কুচকুচে একটি সাপ। আমার মতোই ওই সাপের নেশা বোধহয় দুধ খাওয়া। গাভীটি থেকে আর দুধ পাচ্ছিলা না তখন তাকে এক ছোবলে শেষ করে দিয়েছে।গাছে ঝুলে থাকা ওই সাপটিই তাহলে কণা।

এসব ভাবছিলাম, এমন সময় পলাশ কাধে ধাক্কা দিল। দেখলাম, সাপটি দুধ খাওয়া শেষ করে দরজায় দিকে আসতে শুরু করেছে। তাড়াতাড়ি আমরা কিছুটা ধুরে অন্ধকারে সরে গেলাম। রান্নাঘরের দরজার ফাক দিয়ে বেরিয়ে সে হেলেদুলে চললো আমার বেডরুমের দিকে। সে তাহলে বুঝে গেছে, আমি ও পলাশ তার সম্পর্কে জেনে গেয়েছি। সে একে-বেকে মেঝেতে গড়িয়ে চললো। চকচকে মসৃন তার কালো চামড়া। সে গিয়ে আমার রুমে ঢুকলো। আমরা দুজন দুরত্ব বজায় রেখে দেখছিলাম তার কান্ডখানা। হঠাৎ সাপটি থেকে ঘুরে তাকালো আমাদের দিকে।

পলাশকে চিৎকার করে বললাম, গুলি কর, গুলি কর। আমার চিৎকার বুঝতে পেরেছিল সেন। মুহুর্তেই সে এগিয়ে আসতে থাকলো আমাদের দিকে। মনে হলো এখন তার একটাই কাজ এবং তা আমাদের দুজনকে পৃথিবীর ওপারে পাঠানো। লকলকে জিভটা বের করে সে দ্রুত আসতে শুরু করলো আমাদের দিকে। কিছুটা অগ্রসর হতেই পর পর দুটো গুলি করলো পলাশ। একদম অব্যর্থ নিশানা। প্রথম গুলিটা আঘাত করলো ফণা তোলা মাথা বরাবর। দ্বিতীয়টা শরীরের মাঝখানে। একটু ঝাকি দিয়ে সাপটা নিশ্চল হয়ে গেল। দুজনে কাছে গেলাম। নিথর দেহ। তবুও আরেকটা গুলি খরচ করলো পলাশ। এতোক্ষন যা দেখেছে তা যেন হজম করতে খুব কষ্ট হচ্ছিল তার। এবার কাজ হলো, বিষাক্ত সাপটাকে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা।

কানের কাছে ফোনটা বাজতে শুরু করলো। রিসিভ করতেই শুনলাম, হ্যালো, এখনো ঘুমাচ্ছ? গতকার বলেছিলাম, তোমাকে নিয়ে সকাল দশটায় একটা কাজে যাবো। মোবাইল ফোনে প্রিয়তমা সিমলার কন্ঠটা শুনতেই তড়াক করে লাফ দিয়ে উঠলাম বিছানা থেকে। তাহলে এতোক্ষণ বেলা দশটা পর্যন্ত বিছানায় পড়ে পড়ে এই আজগুবি স্বপ্ন দেখছিলাম! ঘুমের মধ্যেই বাপ-মা হারা কাজের মেয়ে কণাকে নিয়ে কি সব আজেবাজে স্বপ্ন দেখছিলাম।

তার গায়ের রঙটা কালো বলে তাকে কালো সাপ বানিয়ে ফেলেছি। আসলে লেখকরা এ রকমই। কিসের মধ্যে কি! আর পান্তা ভাতে ঘি মাখিয়ে ফেলে।

ভাইজান, এই নেন আপনার দুধ। কাল বিড়ালটা দুধ খেতে পারেনি। অনেক সাবধানে রেখেছিলাম। বলে হাতে দুধের গ্লাস নিয়ে দাড়িয়ে থাকে আমার আশ্রিত অনাথ মেয়েটি। কণার পরণে নীল পাড়ের শাদা সুতি শাড়ী। নীল ব্লাউজ। পায়ে নীল ফিতার প্লাস্টিক দুটি স্যানডাল। এসবই আমার কিনে দেয়া। আমার প্রতি যতœ ও মমতায় ভরা তার কালো চোখ। সেদিন দুধ দিতে পারার সাফল্যে ওই দুই চোখে আনন্দের আভাস। তাকে ধন্যবাদ কিংবা কৃতজ্ঞতা কোনটাই জানাতে পারছিলাম না।
স্বপ্নের কথা মনে পড়তেই তার মুখের দিকে তাকাতে আমার ভীষন লজ্জা করছিল। স্বপ্নের কথাটা যদি তাকে বলি তাহলে সে কি ভাববে?

স্বপ্নটা একটা ছোট নামও দিয়েছি: আশ্রিত
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ৮:১৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছেলেবেলার অকৃত্রিম বন্ধু

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৯

খুব ছোটবেলার এক বন্ধুর গল্প বলি আজ। শৈশবে তার সাথে আছে দুর্দান্ত সব স্মৃতি। বন্ধু খুবই ডানপিটে ধরনের ছিল। মফস্বল শহরে থাকতো। বাবার চাকুরির সুবাদে সেই শহরে ছিলাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণা!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১২ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:১৭



নীচে, আমাদের দেশ ও জাতি সম্পর্কে আমাদের ১ জন ব্যুরোক্রেটের ধারণাকে ( পেশগত দক্ষতা ও আভিজ্ঞতার সারমর্ম ) আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি। পড়ে ইহার উপর মন্তব্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ড্রেনেই পাওয়া যাচ্ছে সংসারের তাবৎ জিনিস

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫০



ঢাকার ড্রেইনে বা খালে কী পাওয়া যায়? এবার ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (উত্তর) একটি অভুতপূর্ব প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। তাতে ঢাকাবাসীদের রুচিবোধ অথবা পরিচ্ছন্নতাবোধ বড় বিষয় ছিল না। বড় বিষয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

মোজো ইদানীং কম পাওয়া যাচ্ছে কেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৭


শুনলাম বাজারে নাকি বয়কটিদের প্রিয় মোজোর সাপ্লাই কমে গেছে! কিন্তু কেন? যে হারে আল্লামা পিনাকী ভাট ভাঁওতাবাজিদেরকে টাকা দিয়ে 'কোকের বিকল্প'-এর নামে 'অখাদ্য' খাওয়ানো হচ্ছিলো, আর কোককেই বয়কটের ডাক... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১২ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৮

আজ (১০ মে ২০২৪) রাত দুইটা দশ মিনিটে নিউ ইয়র্কের পথে আমাদের যাত্রা শুরু হবার কথা। এর আগেও পশ্চিমের দেশ আমেরিকা ও কানাডায় গিয়েছি, কিন্তু সে দু’বারে গিয়েছিলাম যথারীতি পশ্চিমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×