somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিত্য সংলাপ-১

১৫ ই নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ সন্ধ্যার দিকে মহসিন হলে বন্ধুর কাছে গেলাম। উদ্দেশ্য ছিল কিছু নোট নিব। কারণ পরীক্ষা চলছে। তার রুমে দুজন নেতা বসেছিলেন। ছাত্রদলের সভাপতি একজন আরেকজন কী একটা জানি।

কিছুক্ষণ পরে তারা রুম থেকে বের হলে হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। নেতা মানুষেরা নাকি কম কথা বলেন। কথা যেখানে যতটুকু বলার দরকার ঠিক ততটুকুই। আমি আমার এই বিশাল দেহখানা নিয়ে যখন প্রবেশ করলাম ছোট্ট রুমটাতে তখন নেতা আমাকে দেখেও না দেখার ভান করলেন। যেন আমি একটা কীট পতঙ্গ গোছের কিছু হব। সালামের উত্তর তো দিলেনই না, একবার জিজ্ঞাসাও করলেন না, আমার নাম কী অতথা কোথায় থাকি।

দুজন নেতা রুম থেকে বের হবার পর বেশ ভাল লাগছিল। কিন্তু তখনই বন্ধুকে দেখলাম প্যান্টে পা চালিয়ে দিল।

বললাম, কই যাস?
-চল বের হই। সন্ধ্যার সময় কিছু খেতে ইচ্ছে করছে।
-তপনকে একটা ফোন দে, ওরেও নিয়ে যাই।
তপন থাকে সূর্যসেন হলে। তাকে ফোন দিতেই জানা গেল আমাদেরকেই সূর্যসেন হলে যেতে হবে।

মহসিন হলের পেছনের নির্জন রাস্তাটা দিয়ে হেটে দু'জন গল্প করতে করতে যাচ্ছি। একটু একটু শীত, তার সাথে যোগ হয়েছে পাতা পোড়ানোর গন্ধ। আহ! সন্ধ্যেটা কী যে চমৎকার!

বন্ধুদের সাথে কথা বলতে গেলে সবথেকে বেশি যে জিনিসটা প্রাধান্য পায় সেটা হলো, আমার তো কিছুই হল না।
মানে প্রেম পীড়িতি বলে এখনও কিছু হল না।
এই নিয়েই দুজনের মধ্যে কথা চালাচালির এক পর্যায়ে সূর্যসেন হলের কাছে চলে এলাম।

তপন সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল। আমি তপন, আর দিপু তিনজন মিলে হাটা ধরলাম টিএসসির দিকে। তপনের মুখে গানের কলি ফুটছে। মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে আমাকে বলছে, তোর তো কোন চিন্তা নাই, পড়া সব শেষ।
-হ! তরে কইছে। পড়ি কখন যে পড়া শেষ হবে?
-ওদিকে দিপু হেসেই যাচ্ছে। দিপুর এই স্বভাবটা আমার ভাল লাগে। সে কারণে অকারণে হাসতে পারে। অনেক হাসে। তার হাসির যেন কোন শেষ নাই। হাকিম চত্বরের ওখানে তিনজনে মিলে তিনটা পাকোড়া খেলাম। আজকে সসটা ভাল হয়েছে।

এখানে একেক দিন একেকটা জিনিস ভাল হয়। কোনদিন সসটা ভাল হয়, কোনদিন, পাকোড়ার ভেতরের জিনিস মজাদার হলেও বাইরে ভাল মত ভাজি হয় না। আবার কোনদিন দেখা যায় একেবারে সবই বাজে, শুধু প্ল্যাটটা ঝকঝকে পরিস্কার। মানে পাকোড়াও ভাল, প্ল্যাটও পরিস্কার, এরকম কোনদিন পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।

টিএসসির চত্বরে উঠে অনেক্ষণ আলাপ হলো। আলাপের বিষয় বস্তু, আমাদের দিকে কেন মেয়েরা তাকায় না, কবে তাকাবে, এখনও হলো না তো আর কবে হবে, মেয়েরা আসলে কী চায়, ছেলেরাই কী চায়।

দিপু বলে উঠল, যদি একটা মেয়েকে তুই ভালোবাসিস সত্যিকার অর্থে, কিন্তু তার হাতটা ধরবি না এরকম সংকল্প করে রাখেছি তাহলে ভুলে যা তাকে, কারণ ছ্যাকা সে তোকে দিবেই।

আমি বললাম, মাথা খারাপ করিস না তো আমার, বহুত টেনশনে আছি পরীক্ষা নিয়ে। কথাটা বলতেই কথাগুলো ঘুরে গেল পরীক্ষার দিকে। কিন্তু ঘুরে ফিরে বিষয় বস্তু একটাই। আমিও ডুবে যাই তাদের আলোচনায়। তপন অনেক চিন্তায় থাকে। ঢাকা শহরের আর গ্রাম গঞ্জের যে অবস্থা তাতে তার মনে হয় না কপালে একতা সৎ মেয়ে জুটবে। সতী মেয়ে পাওয়া তো ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে আজকাল।

কথাকতটা সত্য কতকটা মিথ্যা বলতে পারি না। এইভাবেই কথার তরে কখন যে শাহবাগ মোড়ের কাছে চলে এসে পড়লাম তার খবরও নাই। এক কাপ চা খাওয়া হলো না। কারও পকেটে আজকে টাকা নাই। সেখানে সময়ের স্বল্পতার জন্য আড্ডার ইতি টানতে হলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই নভেম্বর, ২০০৮ রাত ৯:৫৭
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জলদস্যুরা কি ফেরেশতা যে ফিরে এসে তাদের এত গুণগান গাওয়া হচ্ছে?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭


জলদস্যুরা নামাজি, তাই তারা মুক্তিপণের টাকা ফেরত দিয়েছে? শিরোনাম দেখে এমনটা মনে হতেই পারে। কিন্তু আসল খবর যে সেটা না, তা ভেতরেই লেখা আছে; যার লিংক নিচে দেওয়া হলো।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×