বলে কি এই সব! দেশের মানুষ এতো নাই এর মধ্যে বেঁচে আছে কিভাবে? আজন্ম যা দেখেছি তাইতো নিয়ম হওয়ার কথা - এখন যদি তা না থাকে তবে কি সমস্যা হওয়া উচিত নয়?
প্লেনের টিকেটের তারিখ তিনবার বদলানোর পরও যখন এয়ারপোর্ট গিয়ে ২২ ভ্রমনের ১২ ঘন্টা বসে থাকতে হয় হরতালের জণ্যে - তখন প্রবাসীদের মুখে একটাই কথা থাকে - "ইনহাস্থ ওয়াতানাম" - এইতো আমার দেশ। কিন্তু গত দুই বছর এই বিষয়টা না থাকায় কেমন যেন নিজের দেশকেও পরদেশ মনে হচ্ছিলো।
কিন্তু গত দুই সপ্তাহের ঘটনাবলীতে আমি আবার আশাবাদী হয়ে উঠছি - আমরা আমাদের দেশটাকে ফিরে পাবো - আগের মতো করেই -
দেখছি আমাদের জননেত্রী আরো গাঢ় রংগে লিপস্টিক পড়ে যথারীতি গুগলি ছুড়ছেন মুখ থেকে - যা বিপক্ষে দলের হৃদপিন্ডের মধ্য ভাগে গিয়ে আঘাত করছে।
দেখছি দেশনেত্রী জেলে থেকে হারানো জৌলুশ ফিরে পেতে মুখে আরেক প্রলেপ গাঢ় ম্যাকআপ মেখে আরাম কেদারায় বসে মাথা নাড়ছে আর মুচকি হাসছে। ভাবে প্রকাশ পাচ্ছে - চিটাগাংএ যা বলেছি তাই সই। আপোষহীনের কথার নড়চড় নাই। নির্বাচন না হলে সামরিক শাসন আসবে - তাতে আমাদের কি?
দেখছি একজন নেতা বলছেন - মিছিল মিটিং হলো নূন্যতম মৌলিক অধিকার। মৌলিক অধিকার? যে দেশের কোটি মানুষ একবেলা খেয়ে পরের বেলা কি খাবে - যে দেশের কোটি যুবক চাকুরী পায়না - যে দেশের লক্ষ লক্ষ মানুস বিনা চিকিৎসায় মারা যায় - সেখানে মিছিল করে রাস্তা বন্ধ করে শ্রমঘন্টা নষ্ট করা 'মৌলিক অধিকার'? মৌলিক অধিকার যে কি জিনিস বুঝার মতো জ্ঞানও মনে হয় আমরা হারিয়েছি। ড. ইউনুসের কাছে ঋণ হলো মৌলিক অধিকার। বটে।
সাহসী হচ্ছি দেখে আল্লার মাল থিয়োরীর প্রবর্তক গলায় গাঁদা ফুলের মালা নিয়ে হাসতে হাসতে হাসপাতাল কাম জেল খানা থেকে বেড়িয়ে আসে। এরা কথা বলে এমন ভাবে যেন ২ বছর মহাকালের কাছে তুচ্ছ।
প্রায় হতাশ হয়ে যাচ্ছিলাম - আমরা বোধ হয় দেশটাকে হারাতে যাচ্ছি। যেখানে ঘুষখোরদের সম্পদের উপর চাঁদা চাইলে সরকারী বাহিনী বিনাবিচারে হত্যা করে আর একটাই গল্প নির্বিকার চিত্তে পাঠ করে সংবাদ পাঠকগন। যেখানে সরকারের দূর্নীতি বিরোধী অভিযানের মধ্যেও জাতীয়তাবাদী অথবা আইনজীবি আর চিকিৎসকগন নীতি আর্দশের তোয়াক্কা না করে দূর্নীতিবাজদের মুক্ত করার পন করে। যেখানে একজন বিচারপতি কয়েক সেকেন্ডে একজন দূর্নীতিবাজকে মুক্তি দেয়। সেখানে হয়তো কেন একজন নেতা বা নেত্রী বলে উঠবে - ২০২০ সালে আমি দেশটাকে এইভাবে দেখতে চাই। আরেকজন বলে উঠবে না না আমি আরো উঁচুতে দেখতে চাই। ভয়েই ছিলাম - এই বুঝি দলের নেতারা নেত্রীবন্দনা বা দিয়ে আলোচনা করবে ২০২০ সালে আমাদের শিক্ষার হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে নেবো বা সবাই চিকিৎসার মৌলিক অধিকার পাবে।
আমার হতাশা কেটে গেছে। নেতারা ঠিক আগের মতোই ডজ ৬.০ থেকে উইন্ডোজ ৩.১ এর মধ্যে উঠানামা করছে। সেই পুরানো সুর - সেই পুরানো গান - মানি না মানবো না - নাই গদি ছাড়তে হবে।
আমি আরো আশাবাদী জামায়াতের সার্কাস দেখে। জামাত নির্বাচন নিয়ে বেকায়দায় পড়ে দুইনেতা বিএনপকে একটা লাগ ভেলকি লাগ বলে জেলে ঢুকে গেছে। যে মুজাহিদকে প্রশাসন খুঁজেই পেলো না - শুধু সেই না - বড়টাকে নিয়ে জেলে ঢুকে গেল। কি তামশা। আর রাস্তার যথারীতি পুলিশের মৃদু লাঠিচার্জের উদ্বোধনী অনুষ্টান হলো বাইতুল মোকাররমে উত্তর গেটে একদল নির্বোধ দলীয় কর্মীকে রাস্তায়ে ঠেলে দিয়ে। জামাতে আন্দোলনে এই অতি উৎসাহ আমাদের পুরানো বাংলাদেশই ফিরিয়ে দেয়। জামাতের সার্কাস দেখে নিম্চিত হলাম ফকরুদ্দীনরা দেশের কোন ক্ষতিই করতে পারেনি।
আবারো আমরা রাজনীতির লেখা দেখবো - দেখবো আমাদের পুরানো বাংলাদেশটাকে আসল রূপে।
ইয়াহু!
(ছবি - দৈনিক আমাদের সময়)
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০০৮ ভোর ৫:২২