somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যাদুর পেন্সিল

১১ ই নভেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যাদুর পেন্সিল আহা যাদুর পেন্সিল
আমার থাকতো যদি এমন একটি যাদুর পেন্সিল!
তাতে যা আঁকা যায়, যদি সত্যি হত
তবে হাতের মুঠোই পেতাম রে ভাই বিশ্ব নিখিল!!

ছোটো বেলায় গানটি খুব খুব প্রিয় একটা গান ছিলো আমার। চাচু আমাকে শিখিয়েছিলেন স্কুলের একটা অনুস্ঠানে গাইবার জন্য। সেই থেকে আজ অব্দি গানটি আমার সমান প্রিয়।
তবে এইগানটির প্রতি বিশেষ প্রীতি আমার পেন্সিল কথাটির জন্য নয় যাদুর পেন্সিল দিয়ে যা আকতাম তাই সত্যি জীবন্ত হয়ে উঠবে এই ভাবনাটাই আমাকে ভাবাতো, স্বপ্ন রাজ্যে উড়ে বেড়াতাম গানটি গাইবার সময়।পেনসিল দিয়ে কখনও কখনও বাবাকে আঁকবার বৃথা চেস্টাও করেছিলাম।ভাবলে ব্যাপারটা এখন খুব খুব হাস্যকর লাগে।

সে যাইহোক, ক্লাস ফাইভের আগ পর্যন্ত, লেখাপড়ার মধ্যে তেমন কোনো মজা খুঁজে পেতামনা যতটা পেতাম ছবি আঁকায়।তাই যেখানে যে পেনসিল কলম যা পেতাম তাই দিয়েই চলত শিল্পচর্চা। এর মাঝে সবচেয়ে লোভনীয় ছিলো মায়ের গোলাপী ক্যাপ লাগানো ফাউন্টেন পেনটি।এত সুন্দর আর কোনো পেন আমি আমার জীবনে আর কখনও দেখিনি।

সে যাই হোক সে পেনটি ধরা ছিলো আমার জন্য নিষিদ্ধ। কিন্তু আমাকে যে কাজটিই নিষেধ করা হত সেকাজটিই আমি সবার আগে করবার জন্য প্রানপন চেস্টাই নিয়োজিত থাকতাম। মা কখন কিচেনে যাবে সে অপেক্ষায় থেকে , কিচেনে যাওয়া মাত্র দৌড় লাগাতাম ঐ পেনটি দিয়েই আঁকিবুকি আকতে। উলটা পালটা আঁকিবুকি কেটে পেনের নিব ভোতা করে দিতাম। হাজার বকা পিটুনিতেও আমাকে কেউ আমার এ্যডভেনচার থেকে নিরস্ত করতে পারতোনা।

আমার জন্য বরাদ্দ ছিলো শুধু হলুদ কালো ডোরাকাটা রয়েল বেংগল টাইপ কিছু পেনসিল। তবে সেসবের মধ্যেও একবার খুব সুন্দর মিষ্টি গন্ধযুকত ইরেজার সহ একটি পেনসিল সেট এনে দিলো আমার এক মামা। বিদেশ থেকে। দুটি পেনসিল, সাথে ইরেজার, রুলার সব একি ডিজাইন, মিকিমাউস মিনিমাউস। এই জানের সমান প্রিয় পেনসিল বক্সটি আমি পারি তো চোখের আড়াল হতে দিতাম না।

আরো একটি অদ্ভুত সুন্দর পেনসিল দিয়েছিলো আমার এক প্রিয় বান্ধবী সীমা। সবুজ বনজংগল আঁকা পেনসিলটির দিকে তাকালেই সবুজ শ্যামল প্রকৃতিপ্রেমী হয়ে যেতাম যেনো ঐ বয়সেই।

পেনসিলের সাথে বিভিন্ন রকম বিভিন্ন আকৃতির ইরেজারও আমার ভীষন পছন্দের ছিলো।তবে সেগুলো নানা ছল ছুতোয় কিনতাম ঠিকি কিন্তু প্রানে ধরে ব্যবহার করতে পারতাম না। আমার এই পেনসিল প্রীতি দেখে আমার ছোটো খালা বললেন একটা কাজ করলে কেমন হয়? পেনসিল শেষ হবার আগে আগে একটু থেকে যেতেই তুই সেসব না ফেলে দিয়ে জমিয়ে রাখলেই পারিস?শেষে পেনসিলের শেষাংশ জমানোর এক মজার খেলায় মেতে উঠলাম।

এক হরলিকসের বোতল পেনসিল-শেষাংশ জমিয়েছিলাম।পেনসিল গুলো ছোটো হয়ে যেতেই সমান মাপের করে করে ঐ বোতলে ভরে রাখতাম। উদ্দেশ্য যে ছিলোনা কিছু তা নয় , ভেবেছিলাম অনেকগুলো জমলে পরে একটা কিছু শিল্পচর্চা করা যাবে সেসব দিয়ে।

কিন্তু সে ইচ্ছে মাঠে মারা গেলো। প্রথম যেবার পড়তে গেলাম বাড়ীর বাইরে , দেশের বাইরে, ফিরে এসে দেখি, আমার শখের পেনসিলের বোতলটি গায়েব হয়ে গেছে।কি পরিমান দুঃখ পেয়েছিলাম এই বয়সেও, তা বলে বুঝাতে পারবোনা।

তবে সে দুঃখ কিছুটা লাঘব হয়েছিলো তারপরপরই প্রিয় একজন মানুষের দেওয়া ঝলমলে সোনালী একটি পেনসিল উপহারে। সেই পেনসিলটি আমি একদিনের জন্য ও ব্যবহার করিনি। রেখে দিয়েছি জুয়েলারী বক্সে।
আমার জুয়েলারী বক্সে পরম নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে আমার প্রিয় সে পেনসিল টি।
মাঝে মাঝে বক্সটি খুলে দেখি। আবার সযতনে সাজিয়ে রাখি সবার আড়ালে। ছোট্ট বেলার সেই যাদুর পেনসিল গানটির মত যাদুকরী মোহ ছড়ায় আমার লুকিয়ে রাখা ঝলমলে সোনালী পেনসিলটি।

কিন্তু আমি আর এখন যাদুর পেনসিল ভেবে সে পেনসিল দিয়ে ছোট্ট বেলার মত কোনো ছবি একে অপেক্ষায় থাকিনা। প্রতীক্ষা করিনা ছবিটির মুর্তমান সত্যি হয়ে ওঠার!!!

কিছুদিন আগে হঠাৎ ভাঙ্গা পেন্সিলের এই নিচের লেখাটি পড়ে নস্টালজিক হয়ে পড়লাম। তাই লিখে ফেললাম কিছু হাবিজাবি।
Click This Link

কৃতগ্গতা তোমাকে ভাঙ্গা পেন্সিল!!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩
৫৪টি মন্তব্য ৬৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×