somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হুমায়ূন আহমেদের সাক্ষাৎকার

১০ ই নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হুমায়ূন আহমেদের
সাক্ষাৎকার

হুমায়ূন আহমেদ আমাদের সময়ের অভাবনীয় এক জনপ্রিয় লেখকের নাম। কথাসাহিত্যে তার প্রতিভার বিস্তার ঘটলেও, তিনি শুরু করেছিলেন কবিতা দিয়ে। তারপর নাটক, ছোটদের জন্য লেখা, সাইন্সফিকশন, চলচ্চিত্র পরিচালনা- শিল্প-সাহিত্যের এমনি নানা বিষয়ে হাত দিয়েছেন এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে ছাপ রেখেছেন অনন্যতার।

এই অভাবনীয় জনপ্রিয় লেখকের সঙ্গে এক দীর্ঘ আলাপচারিতা ঘটে আরেক জনপ্রিয় লেখক ইমদাদুল হক মিলন-এর। সেই দীর্ঘ আলাপচারিতার উল্লেখযোগ্য অংশ পাঠকদের উদ্দেশ্যে নিবেদিত হলো। তাঁর ষাটতম জন্মদিনের প্রাক্কালে প্রকাশিত এই সাক্ষাৎকারটি পাঠকদের আরো আন্তরিকভাবে হুমায়ূন আহমেদকে চিনতে সহায়তা করবে।

ইমদাদুল হক মিলন: আপনি লেখক। তাই লেখালেখি দিয়েই শুরু করা ভাল। আপনার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ লেখা কি একেবারেই আচমকা? এর আগে আপনি কি কিছু লিখেছেন কখনো?
হুমায়ূন আহমেদ: কবিতা লিখেছি। দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় ছাপাও হয়েছে। তবে নিজের নামে লিখি নি। কবিতাগুলি আমার ছোটবোন মমতাজ আহমেদ শিখুর নামে পাঠাতাম। তার নামেই ছাপা হতো।

মিলন: উপন্যাসে আসার ঘটনাগুলো বলেন- এই ধরেন কীভাবে শুরু, কীভাবে আইডিয়াটা এলো মাথায়?
হুমায়ূন আহমেদ: প্রথমে তো আমি লিখলাম ‘শঙ্খনীল কারাগার’। যদিও প্রথমে এটা ছাপা হয়নি, কিন্তু উপন্যাস প্রথমে লেখা হয়েছিল ‘শঙ্খনীল কারাগার’। কিছুই করার ছিল না সেই সময়। আমার ঠিকমতো মনেও নেই। তবে এই উপন্যাসটা আমার বাবা পড়েছেন এটা আমার জন্যে খুবই আনন্দের একটা ঘটনা।

মিলন: মানে আপনার হাতে লেখা কপিটাই পড়েছেন?
হুমায়ূন আহমেদ: হ্যাঁ।
মিলন: পড়ে কী বললেন?
হুমায়ূন আহমেদ: আমাকে কিছু বললেন না। বাবার সঙ্গে আমাদের ভাইবোনদের দূরত্ব ছিল। বাবা সরাসরি আমাদের কিছু বলতেন না। ভায়া মিডিয়া কথা বলতেন। তাঁর যা বলার তিনি মা’কে বলতেন। মা আমাদের বলতেন।

মিলন: তিনি আপনার মা’কে কী বললেন?

হুমায়ূন আহমেদ: পৃথিবীর সমস্ত পিতাই সন্তানদের সামান্য প্রতিভাতেই মুগ্ধ হন। তিনিও হয়েছিলেন। তাঁর মুগ্ধতা যে উঁচু পর্যায়ে ছিল তার প্রমাণ পেলাম কিছুদিন পর। উনি তখন একটা রেডিও নাটক লিখে শেষ করেছেন। নাম ‘কত তারা আকাশে’।

হঠাৎ সেই নাটকের পাণ্ডুলিপি আমার হাতে দিয়ে বললেন- তুই তোর মতো করে ঠিকঠাক করে দে। আমি আমার এক জীবনে অনেক সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছি- ঐ দিনের সাহিত্য পুরস্কার সব পুরস্কারের উপরে।

ইমদাদুল হক মিলন: আমেরিকা থেকে আপনি ফিরে এলেন ’৮৪-এর দিকে বোধহয় ? তার আগে, মাত্র চারটা বই লিখে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছেন। এটা একটা অবিস্মরণীয় ঘটনা। আপনি ফিরে এসে আবার লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত হবার কথা ভাবলেন কী করে?

হুমায়ূন আহমেদ: হয়তো লেখালেখির বিষয়টা ভেতরে ছিল সবসময়। যদি ভেতরে থাকে তাহলে ‘লেখালেখি’ বিষয়টা মাথার গভীরে একধরনের চাপ দিতেই থাকে। এই চাপটা একটা কারণ হতে পারে। দেশে ফিরে এসেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে জয়েন করেছি। আবার আমি যে একজন লেখকও, ঐটাও তো মাথায় ছিল।

মিলন: লেখালেখির ক্ষেত্রে বড় গ্যাপ পড়লে একটা অস্বস্তি তৈরি হয়। আপনার সে অস্বস্তিটা কি তৈরি হয়েছিল যে, এতদিন পরে আমি আবার শুরু করলাম!
হুমায়ূন আহমেদ: এটা আসলে মনে করতে পারছি না। মনে হয় না ছিল। কারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে যারা লেখালেখি করে, তারা এগুলো নিয়ে মাথা ঘামায় না। অনেকদিন লিখিনি তাতে কি হয়েছে? আবার লিখব। ইচ্ছা না করলে আবার বন্ধ করে দেব।

মিলন: কিন্তু এই স্বতঃস্ফূর্ততা কি আপনার প্রথম থেকে ছিল নাকি আস্তে আস্তে?
হুমায়ূন আহমেদ: না, আমার মনে হয় এটা শুরু থেকেই ছিল। মাঝেমধ্যে এটা একটু কেটে গেছে, এটা বলতে পারো। কিছু কিছু লেখার ক্ষেত্রে খুবই চিন্তা-ভাবনা করে লাইনগুলো লিখতে হয়েছে। একটা লাইন লিখে দ্বিতীয় লাইনটির জন্যে অপেক্ষা করতে হয়েছে। দ্বিতীয় লাইন আসি আসি করছে, আসছে না। এই অবস্থা।

মিলন: এই যে দেশের বাইরে থেকে ফিরেই একটার পরে একটা বই আপনি লিখতে থাকলেন। তারপর ’৮৫-তে আপনি ‘এইসব দিনরাত্রি’ শুরু করেছিলেন। একটার পর একটা লেখা, পাঠককে মন্ত্রমুগ্ধ করা, এই যে এই অবস্থাটা তৈরি হলো, এর পেছনে রহস্যটা কি বলে আপনার মনে হয়?

হুমায়ূন আহমেদ: এই অবস্থা যে তৈরি হয়েছিল, এই বিষয়টার একটা নরমাল আর একটা আধিভৌতিক ব্যাখ্যা আছে।
মিলন: আপনি বলেন আমরা দুটোই শুনি।

হুমায়ূন আহমেদ: নরমাল ব্যাখ্যা হলো- আমি নাটক লেখা শুরু করলাম। আমাদের দেশে নাটকের দর্শক তো অনেক বেশি। ‘এইসব দিনরাত্রি’ বহু লোক দেখা শুরু করল এবং এরা মনে করল এই যে লোকটি নাটক লিখছে, তার একটা বই পড়ে দেখি না কেন! তারা বই কিনতে শুরু করল।

পাঠকদের আমার বইয়ের প্রতি আগ্রহী হবার পেছনে ‘এইসব দিনরাত্রি’ নাটকটা কাজ করেছে বলে আমার নিজের ধারণা। একজন নতুন লেখক লিখবে আর সঙ্গে সঙ্গেই তার বই বিক্রি হবে- এটা তো হবার কথা না। আমার ধারণা আমার নাটক দেখে লোকজন আগ্রহী হয়েছে, একটা বই পড়ে হয়তো সেকেন্ড বই পড়তে চেয়েছে- এটা হতে পারে।

আর আদিভৌতিক ব্যাখ্যা যেটা হলো- শহীদুল্লাহ হলে যখন থাকি, তখন একসঙ্গে প্রকাশকদের কাছ থেকে আমি হঠাৎ কিছু বড় অংকের টাকা পেয়ে গেলাম। ২৫-৩০ হাজার টাকা। সেই সময় ২৫-৩০ হাজার টাকা অনেক টাকা। বই বিক্রির টাকা। তখনো বই লেখা বাবদ অ্যাডভান্স দেয়া শুরু হয়নি।

যেহেতু টাকা পেয়েছি, আমার খুব হাত উশখুশ করছিল টাকাটা খরচ করার জন্য। কাজেই করলাম কী গুলতেকিন এবং বাচ্চাদের নিয়ে গেলাম ইন্ডিয়াতে। এই টাকা শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশ ভ্রমণ হবে এই হলো পরিকল্পনা।

প্রথমে গেলাম নেপালে, নেপাল থেকে দিল্লি। ভাবলাম এত কাছে যখন এলাম মরুভূমি দেখে যাই। জয়সলমীরের উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম। জয়সলমীরের পথে পড়লো আজমীর শরীফ। এত নাম শুনেছি পথে যখন পড়লই তখন ভাবলাম যে, আজমীর শরীফ দেখে যাই। আজমীর শরীফ গেলাম। আমার সবচেয়ে ছোট মেয়েটি, বিপাশা, সে খুবই বিরক্ত হয়ে গেল; বলল, কোথায় নিয়ে এলে?

চারদিকে ফকির। ফকিরে ভর্তি জায়গাটি। বিপাশার বয়স তখন তিন সাড়ে তিন; আমি তাকে বোঝালাম যে, এখানে একজন অতি বড় সাধু মানুষের কবর আছে। এখানে এলে আল্লাহর কাছে যা চাওয়া যায়, তা পাওয়া যায়।

দেখা গেল যে, এই কথা শুনে মানসিকভাবে সে স্বস্তি বোধ করলো। তখন তাকে নিয়ে গেলাম কবর জিয়ারত করতে, জিয়ারত শেষ করে চলে আসবো, দেখি বিপাশা দাঁড়িয়ে। ব্যাপার কী? বিপাশা বলল, আমি যেটা চেয়েছি সেটা তো পাইনি। না পেলে যাব না। আমি বললাম, মা, তুমি কী চেয়েছ?

বিপাশা বলল, আল্লাহর কাছে আমি এক হাজার বস্তা টাকা চেয়েছি। এই টাকা না পাওয়া পর্যন্ত এখান থেকে আমি যাব না। করবস্থানের পাশে রেলিংটা ধরে সে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো। আমি ও তার মা তাকে নিয়ে টানাটানি করতে লাগলাম।

না, সে এ জায়গা ছেড়ে নড়বে না। এদিকে বাংলাভাষাভাষী কিছু লোক ছিল, তারা খুবই মজা পেয়ে গেল। একটি মেয়ে এক হাজার বস্তা টাকা আল্লাহর কাছে চাইছে, না পাওয়া পর্যন্ত সে যাবে না-এটা তো মজার বিষয়ই। তখন বিপাশাকে বোঝালাম যে, এখন টাকাটা পেলে বরং সমস্যা হবে। এতগুলো টাকা দেশে নিয়ে যেতে হবে। কান্নাকাটি না করে চলো দেশে যাই। দেশে গেলে টাকাটা পেয়ে যাবে। অবশ্যই পাবে।

আমরা দেশে ফিরে এলাম। আসার পর পরই জলের মতো হুহু করে টাকা আসতে লাগল। কেউ যখন আমাকে জিজ্ঞেস করে লেখালেখি করে বিপুল অর্থ উপার্জন আপনি কীভাবে করলেন? আমি বলি, আমার ছোট মেয়ে বিপাশার কারণে করেছি- এখানে আমার কোনো হাত নেই।

মিলন: আপনি তো বহু বিষয়ে ইন্টারেস্টেড। এর মধ্যে আপনার একটি খুব প্রিয় বিষয় হচ্ছে ভূত এবং বহু স্মরণীয় ভূতের গল্প লিখেছেন আপনি। আপনার ছোট ছোট অনেক অভিজ্ঞতার কথা জানি আমরা। এই ভূত ব্যাপারটা নিয়ে আপনার বিশ্বাসটা কি?

হুমায়ূন আহমেদ: বিশ্বাসটা হলো- আমি মনে করি না ভূত বলে কিছু আছে। ভূত না থাকলেও ভূতের ভয় আছে। ভূতের ভয় আছে বলেই ভূতের গল্প আছে।
মিলন: তাহলে কী বলব? আপনি বানিয়ে বানিয়ে লিখেন?
হুমায়ূন আহমেদ: গল্প-উপন্যাস মানেই কি বানানো বিষয় না? গল্প-উপন্যাস তো ইতিহাস না। তারপরেও কিছু কিছু ব্যাপার ঘটেও যায়।

মিলন: আপনি লেখালেখির শুরুর দিকে কবিতা লিখেছেন, আপনার বোনের নামে সেগুলো ছাপা হয়েছে এবং হুমায়ূন আহমেদ নামেও একটি কবিতার কার্ড ছাপা হয়েছে। তাতে কি আপনার কবিতার প্রতি তীব্র টান প্রকাশিত হয় না?
হুমায়ূন আহমেদ: আমি একটি উপন্যাস লিখেছি। নাম ‘কবি’। তারাশঙ্করও এই নামে একটি উপন্যাস লিখেছেন- বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ উপন্যাসগুলোর মধ্যে এটি একটি।

সেইখানে আমার মতো একজন লেখকের আরেকজন কবিকে নিয়ে উপন্যাস লেখার ব্যাপারটি কি দুঃসাহসিক নয়? তারাশঙ্করের কবি ছিলেন সেই সময়ের কবি, আর আমার কবি হচ্ছে আজকের কবি। তাদের জীবনবোধ, জীবনকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।

তারাশঙ্করের কবি ছিল অতিদরিদ্র, আমার কবিও অতিদরিদ্র। দু’জনের মধ্যেই কাব্য প্রতিভা আছে। এই জিনিসটাকে নিয়েই লেখালেখির চেষ্টা করেছিলাম আর কি। তো এই উপন্যাসের জন্যেই কবিতার দরকার পড়ল। কাকে বলবো? ভাবলাম আমিই লিখি।

একইভাবে আমার একটি টিভি সিরিয়ালে গ্রাম্য গায়কের কিছু গানের দরকার ছিল। নাটকের গান তো, সিকোয়েন্স অনুযায়ী লিখতে হয়, কাকে দিয়ে গান লেখাবো? নিজেই লিখলাম। দায়ে পড়ে আর কি! আমি হলাম দায়ে পড়ে কবি, দায়ে পড়ে গীতিকার।

মিলন: ‘কবি’ উপন্যাসে যে টুকরো টুকরো কবিতার লাইন ব্যবহার করেছেন বা আপনার প্রথম উপন্যাস ‘শঙ্খনীল কারাগার’-এ যে কবিতার লাইনগুলো রয়েছে- ‘দিতে পারো একশ’ ফানুস এনে/ আজন্ম সলজ্জ সাধ একদিন আকাশে ফানুস ওড়াই।’ এটা একজন কবির লেখা কবিতা- তা আপনি যতই ঠাট্টা-তামাশা করুন না কেন! কবিতার ছন্দ, শব্দের ব্যবহার এসব নিয়েও আপনি অনেক ভেবেছেন। এ ব্যাপারে আপনার ব্যাখ্যা কী?

হুমায়ূন আহমেদ: না, আমি কোনো ব্যাখ্যায় যেতে চাচ্ছি না। আমি নিজেকে একজন গল্পকার মনে করি এবং গল্পকার পরিচয়েই আমি অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। কবিতাকে বলা হয় সাহিত্যের ফাইনেস্ট ফর্ম। এই ফাইনেস্ট ফর্মে কাজ করার মতা আমার নেই। গদ্যটা হয়তো খানিকটা লিখতে পারি। কবিতা নিয়ে মাঝে মাঝে একটু চেষ্টা চলতে পারে, তাই বলে নিজেকে কখনোই আমি কবি বলি না। সেই প্রতিভাও আমার নেই।

মিলন: স্বাধীনতাউত্তর সময়ে এদেশের সাহিত্যের দুটি শাখা খুবই ডেভেলপড্- কবিতা ও মঞ্চনাটক। এদেশের কবিদের সম্পর্কে আপনার অভিমত কি?
হুমায়ূন আহমেদ: বাংলাদেশের সাহিত্যে যারা কবিতা লিখছেন-আগে যারা লিখেছেন, এখন যারা লিখছেন তাদের কাব্য প্রতিভা সম্পর্কে আমার কোনো সংশয় নেই। বাংলাদেশ কবির দেশ।

মিলন: দু’চারজন পছন্দের কবির কথা কি বলবেন?
হুমায়ূন আহমেদ: আমার প্রিয় কবিদের মধ্যে অনেকেই আছেন- শামসুর রাহমান, নির্মলেন্দু গুণ আছেন। এছাড়া রয়েছেন আল মাহমুদ, এখন তার ব্যক্তিগত বিশ্বাস কবিতাকে কতখানি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, সেই প্রসঙ্গে আমি যাচ্ছি না।

ইমদাদুল হক মিলন: সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা সম্পর্কে আপনার কী ধারণা?
হুমায়ূন আহমেদ: কবিতার চেয়ে তাঁর গদ্য আমার বেশি পছন্দ, তার পরেও তিনি যে কবি সেটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।
মিলন: আপাতদৃষ্টিতে আপনি একজন গম্ভীর মানুষ। আপনার সঙ্গে কিছুক্ষণ মেশার পর বোঝা যায়, আপনি অসম্ভব একজন ঠাট্টা প্রিয় মানুষ। আপনি ঠাট্টা করেন, মজা করেন, চমৎকার গল্প বলতে পারেন। এই গুণগুলি কি আপনার ছোটবেলা থেকেই তৈরি হয়েছিল?

হুমায়ূন আহমেদ: আমাদের ভাই-বোনদের প্রত্যেকেই খুবই গল্পবাজ। আমার মাও গল্প করতে খুবই পছন্দ করেন। আমার বাবাও গল্প-গুজব করতে পছন্দ করতেন। ব্যাপারটা হয়তোবা জিনের মাধ্যমে এসেছে, জেনেটিক্যালি এসেছে।

আর গম্ভীর টাইপের মানুষ যেটা বলেছো, আমি তো বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছি, ২০ বা ২১ বছরের মতো, অধ্যাপকদের মুখে তো সবসময় একটা আলাদা ভাব তৈরি করে রাখতে হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই চামড়াটা ফেলে দিয়ে অরিজিন্যাল হুমায়ূন আহমেদ যখন বেরিয়ে আসে, তখন মনে হয় লোকটা খারাপ না।

মিলন: আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন কতদিন? ঐ সময় ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন ছিল? শিক হিসেবে আপনি কেমন জনপ্রিয় ছিলেন?
হুমায়ূন আহমেদ: আমি অধ্যাপনা করেছি প্রায় কুড়ি বছরের মতো। আমি জনপ্রিয় ছিলাম কি না, এটা এই মুহূর্তে বলা মুশকিল। আমার কোনো ছাত্র-ছাত্রী পাওয়া গেলে ওদেরকে জিজ্ঞেস করলে ওরা হয়তো বলতে পারত। আসলে হয়েছিল কী, আমি শেষের দিকে এমন একটা সাবজেক্ট পড়াতাম যেটা ছিল খুবই জটিল।

সাবজেক্টটা হচ্ছে, কোয়ান্টাম কেমিস্ট্রি। যে সমস্ত শিক্ষক এই সাবজেক্ট পড়ান তারা ছাত্রদের কাছে খুব দ্রুত আন-পপুলার হয়ে যান। কারণ এ ধরনের সাবজেক্ট খুব অ্যাবস্ট্রাক্ট। সাবজেক্ট অ্যাবস্ট্রাক্ট হওয়ায় কোনো ধরনের মেন্টাল ছবি দাঁড় করানো যায় না। অংকের সাহায্যে জিনিসটা বুঝতে হয়।

আর এমনিতেই তো আমাদের কেমিস্ট্রির ছাত্রদের মেথমেটিক্স জ্ঞানটা একটু কম থাকে অর্থাৎ সেইভাবে জোরালো জ্ঞান মেথমেটিক্সের ওপর থাকে না। বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীই বুঝতে পারে না, কী পড়ানো হচ্ছে। যখন বুঝতে পারে না তখন সাবজেক্টটার ওপর একটা বিতৃষ্ণা তৈরি হয়।

যিনি পড়াচ্ছেন তার প্রতিও বিতৃষ্ণা তৈরি হয়। এই জিনিসটা আমার ক্ষেত্রে ঘটেছে কিনা আমি বলতে পারব না। আমি খুবই চেষ্টা করেছি, যতটা সম্ভব সহজভাবে এই অ্যাবস্ট্রাক্ট জিনিসটি বোঝানোর। আমার কাছে মনে হয়, হয়তোবা পেরেছি। আমার দিক থেকে এই জটিল বিষয় তাদের বুঝানোর চেষ্টায় খাদ ছিল না।

আমি যখন দেখলাম কোয়ান্টাম মেথড ওরা বুঝতে পারছে না, আমি তখন এই বিষয়ে একটি বই লিখে ফেললাম বাংলায়। আমি এই বইয়ে যতটা পারি সহজভাবে বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছি।

মিলন: আমার মনে আছে, এই বই বেরিয়েছিল কাকলী প্রকাশনী থেকে। ওরকম বই বাংলা ভাষায় আপনার আগে কেউ লিখে নি, এই তথ্যটা কি আপনি জানেন?
হুমায়ূন আহমেদ: আমি সেটা জানি না। অতি জটিল একটা বিষয় নিয়ে বাংলায় মজা করে লেখার চেষ্টা করেছি। অনেকেই সায়েন্সফিকশন মনে করে এই বই কিনে নিয়ে ধরা খেয়েছে।
মিলন: এই বইটি কি আপনার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে সেইভাবে পপুলার হয়েছিল?
হুমায়ূন আহমেদ : আমি যতদিন ক্লাস নিয়েছি ততদিন তারা এই বইটি পড়েছে।

মিলন: আপনি এমন একটি দুরূহ বিষয়ের টিচার হবার পরও এত জনপ্রিয় একজন লেখক হয়ে গেলেন, এই বিষয়ে আপনার ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহ বা প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
হুমায়ূন আহমেদ: আমার প্রতি আগ্রহ তাদের বেশ ভালোই ছিল। রসায়ন অনার্স ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রী কম, হঠাৎ দেখি আমার ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রী বেশি বেশি লাগছে। ছাত্রসংখ্যা বড় জোর ৩০ হলেও, দেখা যেত উপস্থিত আছে ৪২/৪৩ জন। দেখা গেল, এরা কেমিস্ট্রির ছাত্র না। কেউ জিওগ্রাফির, কেউ সয়েল সায়েন্সের, আবার দেখা গেল কেউ কেউ এসেছে আর্টস ফ্যাকাল্টি থেকে।

ওরা এসেছে জাস্ট দেখার জন্য, এই লেখক মানুষটি কীভাবে ক্লাস নেয়। এটি যখন মোটামুটি জানাজানি হয়ে গেল তখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমাকে বলা হলো, আমি যেন আমার ক্লাসে বাইরের কাউকে এলাউ না করি। কাজেই পরবর্তীতে ক্লাস নেবার শুরুতে দেখে নিতে হতো, ক্লাসের ছাত্র কারা আর ক্লাসের বাইরের ছাত্র কারা।

মিলন: ছোটদের জন্য লেখালেখি নিয়ে আপনার ভাবনা কী? প্রথম ছোটদের জন্য কবে থেকে লেখা শুরু করেন?
হুমায়ূন আহমেদ: প্রথম লেখাটা বোধহয় ‘নীল হাতি’। কবে বের হয়েছিল সেটা ঠিকঠাক বলতে পারব না। অবজারভার গ্রুপ বাচ্চাদের জন্য একটা পত্রিকা বের করেছিল।

পত্রিকাটির নাম বোধহয় ‘কিশোর বাংলা’। ওটার প্রথম সংখ্যার জন্য লেখাটা দিলাম। ভয়ে ভয়ে ছিলাম, বাচ্চাদের জন্য প্রথম লেখা তোঃ কেমন হয়? ওটাই আমার প্রথম লেখা বাচ্চাদের জন্য। তারপর আমার নিজের বাচ্চারা যখন বড় হলো, তখন ওদের পড়ার জন্য ওদের উপযোগী করে বেশ ক’টি লেখা দাঁড় করাই। ওগুলোতে বেশিরভাগ চরিত্রগুলোর নাম ওদের নামেই- নোভা, শীলা, বিপাশা, নুহাশ।

একটা সময় বাচ্চাদের মুখের দিকে তাকিয়ে প্রচুর বাচ্চাদের বই লিখি। বাচ্চারা কিন্তু কঠিন পাঠক। বাচ্চাদের মা-বাবা আমাকে ধমক দিতে ভয় পায়। কিন্তু বাচ্চারা পায় না। তারা ধমক দিয়ে আমাকে বলে, কী ব্যাপার, নতুন বই কই? বই নাই কেন? তখন আমি খুব আনন্দ পাই। আমি তখন তাদের বলি, আগামী বইমেলায় তোমাদের জন্য নতুন একটা বই থাকবে। ওদের মুখের দিকে তাকিয়েই আমাকে কথা রাখতে হয়।

মিলন: আপনারা তিনভাই তিনবোন। আপনার এক ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবাল একজন বড় মাপের লেখক। আরেক ভাই আহসান হাবীব কার্টুন এঁকে রম্য লিখে বিখ্যাত হয়েছেন। একই পরিবারের তিনজন মানুষ তিনরকমভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। এ বিষয়ে আপনার অনুভূতি কেমন?

হুমায়ূন আহমেদ: এরা প্রত্যেকেই নিজ যোগ্যতায় আজকের পর্যায়ে পৌঁছেছে, নিজস্বভাবেই তারা প্রতিষ্ঠিত। এরা প্রত্যেকে আলাদা মানুষ। সাধারণভাবে একই পরিবারে দুই-তিনজন লেখক তৈরি হলে একজনের ছাপ অন্যজনের ওপর পড়ে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমার ভাইদের মধ্যে ছাপের কোনো ব্যাপার নাই। জাফর ইকবাল লিখছে একেবারে তার নিজস্ব স্টাইলে। আমার লেখার কোনো ছাপ তার মধ্যে নাই।

আহসান হাবীব লিখছে সম্পূর্ণ তার মতো করে। ছবি-টবি আঁকছে তার নিজস্ব চিন্তা থেকে। বড় দুই ভাইয়ের কোনো ছাপ তার মধ্যে নাই। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের আলাদা জায়গায় কাজ শুরু করেছে এবং ভালো কাজ করছে।

আমরা ভাইবোনেরা ইনকডিং মাই সিস্টার্স, যারা লেখালেখির লাইনে আসে নাই এরা প্রত্যেকেই যে কাজটি করে খুব সিনসিয়ারলি করে। এটা আমাদের পারিবারিক গুণ বলা যেতে পারে। আমরা ভাইবোনেরা কোনো কাজ হাতে নিলে সেটা ঠিকভাবে করব, এটা স্বতঃসিদ্ধ।

মিলন: বাংলা ভাষায় আপনার প্রিয় লেখক কারা কারা? যাদের লেখা আপনি সবই প্রায় পড়েছেন?
হুমায়ূন আহমেদ: একদম শুরু থেকে বলি। বঙ্কিমচন্দ্র। কেননা তাঁর গল্প তৈরির ক্ষমতা অসাধারণ। তারপর আমাদের শরৎচন্দ্র।

মিলন: একটি ভিন্ন বিষয়ে আপনাকে প্রশ্ন করতে চাই। বিষয়টি হলো ‘মৃত্যু-চিন্তা’। আমি জানি যে, আপনি মৃত্যু নিয়ে ভাবেন। জাগতিক বিষয়ের পাশাপাশি মৃত্যু-পরবর্তী জগৎ নিয়েও আপনি ভাবেন। আপনার মৃত্যু-চিন্তাটা কী রকম?

হুমায়ূন আহমেদ: আমি থাকব না, এই পৃথিবী পৃথিবীর মতো থাকবে। বর্ষা আসবে, জোছনা হবে। কিন্তু সেই বর্ষা দেখার জন্য আমি থাকব না। জোছনা দেখার জন্য আমি থাকব না। এই জিনিসটি আমি মোটেও নিতে পারি না। আগেও কখনো পারতাম না, এখনো যতই ঐদিকে এগিয়ে যাচ্ছি ততই আর পারছি না।

মিলন: বড় লেখকদের ক্ষেত্রে কালজয়ী শব্দটা বাংলা ভাষায় আছে। যারা সময়কে জয় করে নেন নিজের লেখার মধ্য দিয়ে। আপনি আপনার লেখার মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকবেন, এই ফিলিংসটা আপনার কেমন?
হুমায়ূন আহমেদ: এই বিষয়টা একেবারেই আমার মাথায় আসে না। আমিই নেই আর আমার লেখা লোকজন পাঠ করছে, এতে আমার কী যায় আসে?

মিলন: কিন্তু এরকম কি কখনো মনে হয় না, আমার যে লেখাগুলো আমি রেখে যাচ্ছি, তার মধ্যেই আমি বেঁচে থাকব, লোকজন আমাকে স্মরণ করবে?

হুমায়ূন আহমেদ: না, সেরকম মনে হয় না। মিলন, আমি তোমাকে সিরিয়াসলি বলছি, আই অ্যাম টেলিং ইউ ফ্রম মাই হার্টঃ এই চিন্তাটা কখনো আমার হয় না যে, ৫০ বছর পর লোকে আমার লেখা পড়বে, আমি কত ভাগ্যবান! আমি সারাজীবন লেখালেখি করেছি নিজের আনন্দের জন্যে।

মিলন: আপনি বললেন যে, বেশ কয়েকবার মৃত্যু খুব কাছ থেকে দেখেছেন। যখন আপনার বাইপাস সার্জারিটা হলো, যখন আপনাকে এনেসথেশিয়া দেয়া হচ্ছে, আপনার সেন্সটা অন্য জগতে চলে যাচ্ছে। এই যে ঘুমে তলিয়ে যাবার সময়টা, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার চেতনা ছিল, সেই মুহূর্তে আপনি বিশেষ কিছু কি ভেবেছেন? আপনার মনে পড়ে?

হুমায়ূন আহমেদ: আমি তো মুসলমানের ছেলে। ধর্ম-বিশ্বাসটা জন্মের পর থেকেই খুব শক্তভাবে মাথায় ঢোকানো। সেই মুহূর্তে আমি যে ক’টা সুরা জানতাম, বারবার সেগুলোই মনে মনে পড়ার চেষ্টা করেছি এবং সুরা পাঠের সঙ্গে সঙ্গে বেঁচে যাবার প্রার্থনা করছিলাম। পুত্র-কন্যা-স্ত্রী-ভাই-বোন এদের কারোর কথাই মনে হয়নি।

মিলন: আচ্ছা হুমায়ূন ভাই, বাংলাদেশ নিয়ে আপনি কী ধরনের স্বপ্ন দেখেন? এই দেশের স্বাধীনতার জন্য একটা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল, এই মুক্তিযুদ্ধে আপনার বাবা প্রাণ দিয়েছিলেন। বহু উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে এই দেশের আজকের প্রেক্ষাপটে আপনি অনেক বড় লেখক। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আপনি বাংলাদেশ নিয়ে কী স্বপ্ন দেখছেন?

হুমায়ূন আহমেদ: আমি আমার নিজের দেশ নিয়ে অসম্ভব রকম আশাবাদী। আমাকে যদি এক লক্ষবার জন্মাবার সুযোগ দেয়া হয় আমি এক লক্ষবার এই দেশেই জন্মাতে চাইব। এই দেশের বৃষ্টিতে ভিজতে চাইব। এই দেশের বাঁশবাগানে জোছনা দেখতে চাইব।


-ইন্টারনেট
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এখনো নদীপারে ঝড় বয়ে যায় || নতুন গান

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২০

এ গানের লিরিক আমাকে অনেক যন্ত্রণা দিয়েছে। ২৪ বা ২৫ এপ্রিল ২০২৪-এ সুর ও গানের প্রথম কয়েক লাইন তৈরি হয়ে যায়। এরপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি অন্য একটা গান নিয়ে। সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×