somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা এবং বিল ক্লিনটন পরিবার

০৭ ই নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে আমি দুটো কথা বলতে চাই। তার আগে বলে নিই, মানুষ হিসেব আমি অনেকটা তেলাপোকার মতো। তেলাপোকা যেমন সর্বভূক, তেমনি আমিও সর্ববিশ্বাসী। কোন কিছুকেই চট করে খারিজ করে দেয়ার পক্ষপাতী আমি না, কিছুই না, আমার মায়া লাগে।

আমার কাছে মনে হোমিওপ্যাথি কোন বিজ্ঞাননির্ভর চিকিৎসা ব্যবস্থা নয়। আমি চিকিৎসাবিজ্ঞানের কোন ছাত্র না, আবার বিজ্ঞান সম্পর্কে খুব বেশি খোঁজ খবর রাখি _এমনও না। তাহলে কীভাবে আমি বুঝলাম যে, হোমিওপ্যাথি বিজ্ঞান নয়। এর কারণ খুবই সহজ। যারা হোমিওপ্যাথির প্রচারণা চালান, তারা কথায় কথায় বলেন, এটি একটি বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থা। প্যারাসিটামলের গায়ে লেখা থাকেনা, এটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বানানো ওষুধ, টিভির গায়ে লেখা নাই , এটি বিজ্ঞান, কম্পিউটার একবারও বলে না, আমি সায়েন্স। বিজ্ঞান নিয়ে তারাই মাতামাতি করে, যাদের কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। যেমন হোমিওপ্যাথি, হস্তরেখা- ইত্যাদি। তারা বলে ব্যাপারটা বিজ্ঞানসম্মত , কিন্তু কেন ও কীভাবে বিজ্ঞানসম্মত সেটার কোন ব্যাখা আমি আজ অবধি কোথাও শুনিনি, কোন বিজ্ঞাপনে তার ব্যাখাও পড়েনি। আর বিজ্ঞান হচ্ছে ক্রমচলমান এবং বিকাশমান- একটি ব্যাপার। হোমিওপ্যাথির ছোট ছোট সুস্বাদু বলগুলো জন্ম ইস্তক আজ অবধি স্বাদে, বর্ণে , গন্ধে ও সাইজে একই আছে । এটি আর যাই হোক বিজ্ঞান হতে পারে না।

হোমিওপ্যাথি বিজ্ঞান নয়, এটি বিশ্বাস।
বিজ্ঞান এবং বিশ্বাসের মধ্যে পার্থক্য খুবই সামান্য (??)। হিলারী যদি বলেন চেলসির বাবা বিল কিনটন, তাহলে এটি বিজ্ঞান। আর বিল কিনটন যদি বলেন, চেলসি আমার মেয়ে- এটি বিজ্ঞান নয়, এটি বিশ্বাস।

কাজেই দেখা যাচ্ছে, বিশ্বাস ব্যাপারটি কম গুরুত্বপূর্ণ কোন ব্যাপার নয়। কাজেই হোমিওপ্যাথিকে আমি বিজ্ঞান নয় বলে উড়িয়ে দিতে চাই না।

ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আমার যা মনে হয়, আমাদের অনেক রোগের মূল হচ্ছে আমাদের মন। হোমিওপ্যাথির ডাক্তারদের অফুরন্ত সময়। অনেকে শেষ বয়সে এসে তেমন কোথাও সুবিধা করতে না পেরে- ছোট ছোট শিশি জোগাড় করে চেম্বার খুলে বসেন। ( আমি নিজেও শেষ বয়সে হোমিওপ্যাথি ডাক্তারি করার ইচ্ছা পোষণ করি। ) কাজেই ডাক্কারদের হাতে অফুরন্ত সময়। তাছাড়া চিকিৎসা চালানোর জন্য অন্যান্য অনুষঙ্গের কোন ব্যাপার তাদের হাতে নেই, যেমন রক্ত পরীক্ষা, ইসিজি, এমআরআই, এক্সরে ইত্যাদি। কাজেই তাদের একমাত্র কাজ হচ্ছে , রোগীর কথা মনোযোগ দিয়ে শোনা। রোগীর জন্য এটি একটি আনন্দদায়ক ব্যাপার। তারা মন খুলে কথা বলেন। এতে মন চাপমুক্ত হয়। আর মনের সাথে শরীরের একটা সম্পর্কও তো আছেই। কাজেই ...

আর তাছাড়া আমাদের কথা বলার মানুষের খুব অভাব। আমি একটা কথা বলছি, সেটা কথাটা মনোযোগ দিয়ে কেউ শুনছে, এটা অসামান্য আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায়- এই আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতাটি ঘটে।

আর পরীক্ষানিরীক্ষার ব্যাপার না থাকায়, চিকিৎসার ঝামেলাও খুব কম। কাগজ দেখে শিশি থেকে ছোট ছোট বল কায়দা করে বের করে মুখে পুরে দেওয়া আর এটা বিশ্বাস করা- রোগ মুল থেকে সাফ হয়ে যাবে।

এজন্য এই চিকিৎসা অনেক সময় কাজে দেয়।

একটা ছোট উদাহরণ দেই। গলায় কাঁটা বিধলে- দুই ধরণের চিকিৎসা আছে। এলোপ্যাথির কাছে গিয়ে চিমটা দিয়ে কাটা বের করা । এটি খুবই কষ্টদায়ক একটি অভিজ্ঞতা।
আর আছে হোমিওপ্যাথের কাছে যাওয়া। তারা একটা ওষুধ দেন। ওই ওষুধ খেলে, কাঁটা ২৪ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে গলে যাবে । বিশ্বাস করে যদি এই ওষুধ সেবন করা যায়, তাতে খুবই ভাল ফল দেয়। আপনি ওষুধ খাবেন, ভাবা শুরু করবেন কাটা গলতে শুরু করেছে, আপনি রিল্যাক্সড হবেন, আপনার অস্বস্তি কমবে। আর ডাক্তার তো বলেছেনই কাটা গলে যাবে ২৪ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে, কাজেই চিন্তা কি। গলার কাটা গলুক আর নাই গলুক, মাথায় যে চিন্তার কাঁটা বির্ধে ছিল- তা তো দূর হলে- বাকী টুকু তো এমনি এমনি হয়ে যাবে।

গলায় কাঁটা বিঁধলে বিশ্বাস করে হোমিওপ্যাথি খান, কাজে দেবে।

আর যদি কূট তর্ক তোলেন , যে ওষুধের এতো তেজ .... যে কাটা গলিয়ে ফেলে, সেই ওষুধ খেলে তো গলা , পেট, নাড়িভুড়ি সব গলে যেতে পারে - তাহলে গলার কাটার যন্ত্রণা তো বাড়বেই, পেট, বুক পর্যন্ত জ্বলে যেতে পারে ...

একজন হোমিওপ্যাথি নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন দেখলাম, তাকে ধন্যবাদ।
জয়তু হোমিওপ্যাথি।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১১:৩২
১৮টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠিক কোন বিষয়টা মৌলবাদী পুরুষরা শান্তি মত মানতে পারে???"

লিখেছেন লেখার খাতা, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ছবি - গুগল।


ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, রোজগার এর একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্মও। একটু স্মার্ট এবং ব্রেন থাকলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম থেকে রোজগার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×