মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে যায় মাঝে মাঝে, আশপাশের অনেকেই জানতে চায়- কেন? আমিও জবাব দিতে পারি না, শুধু বলি- জানি না কেন। মাঝে মাঝে ভাবি, কেন মনটা সময় সময় অন্যরকম খারাপ হয়ে যায়...তবে সে ভাবনাগুলোকে খুব গভীরে পৌঁছুতে দেই না। কেন যেন মনে হয়, এভাবে মাঝে মাঝে কারণ ছাড়া মন খারাপ হওয়া প্রয়োজন। থাক সে কথা। সেদিন এমনি ধারার একটি মনখারাপ করা সময় এসে দাঁড়ালো আমার জন্য নির্ধারিত কালের একটি অংশ জুড়ে। কত্ত করে চাইলাম এড়িয়ে যাই, পারিনি এড়াতে। চুক্তিবদ্ধ কর্মসময় পেরিয়ে মসজিদুন্ নববীতে এশা পড়লাম, তারপর বন্ধুদের বাসায় যাবো নিরেট আড্ডা দিতে; এই ছিল প্লান। কিন্তু হারামেই হয়ে গেল গতির পরিবর্তন। দকতূর (ডক্টর) ভাইয়ের কাজে কিছু সহযোগিতা যেন টেনে নিয়ে গেল সেদিকে।
বিকেল থেকেই মদীনার আকাশে খণ্ড খণ্ড মেঘেরা এসে জমতে শুরু করেছিল। আরসব দিনের চেয়ে আজকের আকাশটাকে যেন একটু বেশীই দেখছিলাম। আর মনের গভীরের কোথাও হতে যেন উত্থলিয়ে উঠছে কিছু আকাংখা- হে মেঘের স্রষ্টা! আজ কি বৃষ্টি দেবেন? বন্ধুটা আমার কবিতার এক অন্যরকম ভক্ত। দেখলেই কেবল কিছু বিশেষ বিশেষ লাইন আওড়ায়। বোঝাতে পারবো না এভাবে সে আমাকে কি পরিমাণ প্রেরণা দিয়ে যাচ্ছে। যদিও আজকাল বিগত দিনের চেয়ে লিখি কম। বাইরের লেনাদেনা সেরে কিঞ্চিৎ আড্ডামাখা সময় পেরিয়ে যখন ঘরে ফেরার জন্য হুইল ঘুরালাম। অমনি ঝমঝমাঝম ধ্বনি তুলে নেমে এলো দিন ব্যাপী মন খারাপের প্রতিবিধান। তুমুল বৃষ্টিতে গাড়ী চালানোর অভিজ্ঞতা আমার এই-ই প্রথম, গাড়িটি যেন তার দু'হাতের আঙ্গুল দিয়ে বৃষ্টির পানি থেকে দু'চোখ মুছে আমায় নিয়ে চলছিল কিং আব্দুল আযীয রোডে।
মনটা ভালো হয়ে গেল, যখন বাসায় পৌঁছি তখন গাড়ী থেকে নেমে স্বল্প দূরত্বটুকু কাকভেজা ভিজলাম। আহা! কি ঠান্ডা বাতাস...মুহূর্তে যেন আমায় পিছিয়ে নিল ১৯৯৩-৯৪ এর বৃষ্টিমুখর ঢাকায়। একদিন আগার গাঁওয়ের ঘাস আর লজ্জাবতী পাতাদের সাথে কাটিয়ে দিয়েছিলাম একটি বিকেল। আঁধার নামার সাথে সাথে নেমে এলো ঝুম বৃষ্টি, সাথের বন্ধুটিকে নিয়ে একটি বাড়ীর সিঁড়ি ঘরে আশ্রয় নিয়েছিলাম, তারপর হাল্কা বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বাস ধরে ঘরে ফেরা। তেমনি কত্ত দিন ভিজে জবজবে হয়ে বাসায় ফিরেছি, তখনকার খারাপ লাগা সময়গুলোকে এখন কি তীব্রভাবেই না অনুভব করছি...। গত পরশু থেকে অনেকেই নানাভাবে জানিয়েছে ও জানতে চেয়েছে বৃষ্টি হয়েছে কিনা, হলে কতটুকু, কেমন অনুভূতি; স্বদেশ আর স্বদেশী বৃষ্টিরা যেন প্রবাসীদের ডেকে ডেকে বলছে- 'কাছে থাকতে বুঝলি না রে আমি কি জিনিস...'।
মদীনার আকাশ জুড়ে এখন শরতের আনাগোনা, যদিও ভূপৃষ্টে সে-ই ঊষর বালু আর পোড়খাওয়া পাথরেরাই বর্তমান। তবু আকাশ পানে তাকিয়ে হারিয়ে যাই যেন আমার প্রিয় স্বদেশী আকাশে আকাশে...।
৪ নভেম্বর ২০০৮
মদীনা মুনাওয়ারা, সউদী আরব।
আলোচিত ব্লগ
নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।
আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?
সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন
মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.
গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন
=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=
©কাজী ফাতেমা ছবি
বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।
ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন